Monday, June 16, 2025
Home Blog Page 4

নব নব সৃষ্টি| নবম শ্রেণী| প্রশ্ন-উত্তর সমাধান । Naba Naba Sristi| Class 9| Question- Answer Solved|

1

নব নব সৃষ্টি

সৈয়দ মুজতফা আলি

ক)১ নম্বরের প্রশ্নঃ

. ‘নব নব সৃষ্টিরচনাংশে কোন্ কোন্ ভাষাকে লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেনআত্মনির্ভরশীল?

উত্তর: ‘নব নব সৃষ্টি’ রচনাংশে লেখক প্রাচীন যুগের হিব্রু,গ্রিক, আবেস্তা,সংস্কৃত এবং আরবি ভাষাকে ‘আত্মনির্ভরশীল’ বলেছেন।

. “প্রাচীন যুগের সব ভাষাই তাই |”—প্রাচীন যুগের কোন্ কোন্ ভাষার কথা লেখক উল্লেখ করেছেন?

উত্তর: লেখক প্রাচীন যুগের সংস্কৃত, হিব্রু, গ্রিক, আবেস্তা এবং কিছুটা পরবর্তীযুগের আরবি ভাষার কথা বলেছেন।

. লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে বর্তমান যুগের কোন্ কোন্ ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয়?

উত্তর: লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে বর্তমান যুগের ইংরেজি এবং বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয়।

পাঠানমোগল যুগে আরবি ফারসি থেকে শব্দ গ্রহণ করতে হয়েছিল কেন?

উত্তর: পাঠান-মোগল যুগে আইন-আদালত, খাজনাখারিজ নতুন করে দেখা দেওয়ায় আরবি-ফারসি ভাষা থেকে শব্দ গ্রহণ করতে হয়।

সে সম্বন্ধেও কারও কোনো সন্দেহ নেই।‘—কোন্ বিষয়ে সন্দেহ নেই?

উত্তর: শিক্ষার মাধ্যমরূপে ইংরেজির বদলে বাংলা গ্রহণ করলে প্রচুর পরিমাণে ইউরোপীয় শব্দ বাংলায় প্রবেশ করবে এ বিষয়ে কারও কোনো সন্দেহ নেই।

. ‘নব নব সৃষ্টিরচনাংশে লেখক রান্নাঘর থেকে কী কী তাড়ানো মুশকিল বলেছেন?

উত্তর: ‘নব নব সৃষ্টি’ রচনাংশে লেখকের মতে রান্নাঘর থেকে আলুকপি এ জাতীয় বিদেশি সবজি তাড়ানো মুশকিল।

.“হিন্দি উপস্থিত সেই চেষ্টাটা করছে‘—হিন্দি কোন্ চেষ্টা করছে?

উত্তর: হিন্দি থেকে আরবি, ফারসি এবং ইংরেজি শব্দ তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টার কথা এখানে বলা হয়েছে |

নব নব সৃষ্টিরচলাংশে ব্যবহৃতআলালহুতোমবলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: আলাল’ হল আলালের ঘরের দুলাল, লেখক প্যারীচাঁদ মিত্র। ‘হুতোম হল হুতোম প্যাঁচার নকশা, লেখক কালীপ্রসন্ন সিংহ।

৯ হিন্দি ভাষাসাহিত্যের বঙ্কিম কাকে বলা হয়?

উত্তর: হিন্দি ভাষাসাহিত্যের বঙ্কিম বলা হয় বিখ্যাত সাহিত্যিক মুন্সী প্রেমচাদকে।

১০এস্থলে আর একটি কথা বলে রাখা ভালো।”—কী কথা বলেছেন লেখক?

উত্তর: বলার ভাষা তার বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করে, এ কথা বলেছেন লেখক।

১১ লেখকের মতে শংকরদর্শন আলোচনায় কোন্ ভাষার ব্যবহার স্বাভাবিক হবে?

উত্তর: শংকরদর্শন আলোচনায় সংস্কৃত ভাষার আধিক্য থাকাটাই স্বাভাবিক সৈয়দ মুজতবা আলী।

১২ কোন্ পত্রিকার সম্পাদকীয় রচনার ভাষায় গাম্ভীর্য আছে বলেছেন?

উত্তর: লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে, বসুমতী পত্রিকার সম্পাদকীয় রচনার ভাষায় গাম্ভীর্য আছে৷

১৩ লেখকের মতে বাংলায় যেসব বিদেশি শব্দ ঢুকেছে তার মধ্যে কোন্ কোন্ ভাষা প্রধান?

উত্তর: বাংলায় যেসব বিদেশি শব্দ প্রবেশ করেছে তার মধ্যে আরবি, ফারসি এবং ইংরেজি অন্যতম।

১৪. স্কুলকলেজ থেকে যে আমরা সংস্কৃতচর্চা উঠিয়ে দিতে চাই না তার অন্যতম প্রধান কারণ কী বলেছেন লেখক?

উত্তর: বাংলা অনেকাংশেই সংস্কৃত ভাষার ওপর নির্ভরশীল, তাই শিক্ষাক্ষেত্রেও সংস্কৃত ভাষার চর্চা বন্ধ করা হয়নি।

১৫. কোন্ বিশেষ বিশেষ বিদ্যাচর্চায় ইংরেজি অবশ্যই প্রয়োজন বলে লেখক মনে করেন?

উত্তর: দর্শন, নন্দনশা, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যার মত বিদ্যাচর্চায় ইংরেজি অবশই প্রয়োজন বলে লেখক মনে করেন।

১৬. “এই দুই ভাষা থেকে ব্যাপকভাবে আর নূতন শব্দ বাংলাতে ঢুকবে।”—কোন্ দুই ভাষা কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর: ‘নব নব সৃষ্টি’ রচনাংশে সৈয়দ মুজতবা আলী দুই ভাষা বলতে আরবি এবং ফারসি ভাষার কথা বলেছেন।

১৭. হিন্দি গদ্যের ওপর কোন্ ভাষার প্রভাব পড়ার কথা বলেছেন লেখক?

উত্তর: হিন্দি গদ্যের ওপর ফারসি ভাষার প্রভাব পড়ার কথা বলেছেন লেখক |

১৮ ভারতীয় আর্যরা কোন্ ভাষার সৌন্দর্যে বেশি অভিভূত হয়েছিল?

উত্তর: ভারতীয় আর্যরা ফারসি ভাষার সৌন্দর্যে বেশি অভিভূত হয়েছিল।

১৯.উর্দু সাহিত্যের মূলসুর কোন ভাষার সঙ্গে বাঁধা বলেছেন লেখক?

উত্তর: উর্দু সাহিত্যের মূলসুর ফারসির সঙ্গে বাঁধা বলেছেন লেখক।

২০. ইরানে নবীন ফারসি ভাষার উদ্ভব ঘটেছিল কীভাবে?

উত্তর: আর্য ইরানি ভাষা এবং সেমিতি-আরবি ভাষার সংঘর্ষে ইরানে নবীন ফারসি ভাষার উদ্ভব ঘটেছিল।

২১, ইরানে আর্যইরানি ভাষা সেমিতিআরবি ভাষার সংঘর্ষে ভারতবর্ষে কী হয়েছিল?

উত্তর: ইরানে ইরানি ভাষা ও সেমিতি-আরবি ভাষার সংঘর্ষে ভারতবর্ষে সিন্ধি, উর্দু ও কাশ্মীরি সাহিত্যের সৃষ্টি হয়।

২২. “ভারতবর্ষীয় তিন ভাষা ফার্সির মতো নব নব সৃষ্টি দিয়ে ঐশ্বর্যশালী সাহিত্যসৃষ্টি করতে পারল না।”—ভারতবর্ষের তিন ভাষা কী কী?

উত্তর: ভারতবর্ষীয় এ তিন ভাষা’ বলতে সিদ্ধি, উর্দু এবং কাশ্মীরি ভাষাকে বোঝানো হয়েছে।

২৩. ‘নব নব সৃষ্টিরচনাংশে লেখক কোন্ উর্দু কবির কথা উল্লেখ করেছেন?

উত্তর: ‘নব নব সৃষ্টি’ রচনাংশে লেখক উর্দু কবি ইকবালের কথা উল্লেখ করেছেন|

২৪ কে, উর্দুকে ফারসির অনুকরণ থেকে নিষ্কৃতি দিতে সক্ষম হয়েছিলেন?

উত্তর:উর্দু ভাষার কবি ইকবাল উর্দু ভাষাকে ফারসির অনুকরণ থেকে কিৎি নিষ্কৃতি দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

২৫, সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যসৃষ্টি কোনটি ?

উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন যে, বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যসৃষ্টি হল পদাবলি কীর্তন।

২৬, “ সাহিত্যের প্রাগ এবং দেহ উভয়ই খাটি বাঙালি।”—কোন্ সাহিত্যকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: ‘নব নব সৃষ্টি’ রচনাংশে পদাবলি কীর্তন সম্পর্কে আলোচ্য উধৃতাংশটি ব্যবহৃত হয়েছে।

২৭ কোন দেবতা বাংলায় খাটি কানু রূপ ধারণ করেছিলেন?

উত্তর : মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণ বাংলায় খাঁটি কানুরূপ ধারণ করেছিলেন।

২৮ প্রেমচন্দ্র কোন ভাষা বিস্তৱ ব্যবহার করেছেন?

উত্তর : প্রেমচন্দ্র হিন্দিতে আরবি-ফারসি ভাষা বিস্তর ব্যবহার করেছেন।

) নম্বরের প্রশ্ন উত্তরঃ

সংস্কৃত ভাষা আত্মনির্ভরশীল‘—কেন সংস্কৃত ভাষা সম্পর্কে কথাবলা হয়েছে?

উত্তর: লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলেছেন কারন কোনো নতুন চিন্তা, অনুভূতির প্রকাশের জন্য নতুন শব্দের প্রয়োজন হলে সংস্কৃত ভাষা তা অন্য ভাষা থেকে ধার করার কথা কখনওই ভাবে না| পরিবর্তে নিজের শব্দভাণ্ডারে তার খোঁজ করে। নিজের ভাণ্ডারে থাকা ধাতু বা শব্দ খোজে যার সামান্য অদলবদল করে কিংবা পুরোনো ধাতু দিয়েই নতুন শব্দটি তৈরি করা যেতে পারে। এই কারণেই সংস্কৃতকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলা হয়েছে|

বর্তমান যুগের ইংৱেজি বাংলা আত্মনির্ভরশীল নয়।”—‘নব নব সৃষ্টিপ্রবন্ধে প্রাবন্ধিক কীভাবে এই সিদ্ধান্তে  উপনীত   হয়েছেন?

উত্তর: প্রাচীন যুগের সংস্কৃত ভাষা তো বটেই, তা ছাড়া হিব্রু, গ্রিক, আবেস্তা প্রভৃতি সব ভাষাই ছিল আত্মনির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান যুগের ইংরেজি ও বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয়। কারণ, প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ গৃহীত হয়েছে ও হচ্ছে। পাঠান-মোগল শাসন যুগে আইন-আদালত, খাজনাখারিজ ব্যাপারে নতুন নতুন শব্দের জন্য আরবি ও ফারসি ভাষা থেকে শব্দ নিতে হয়েছিল। তার পরবর্তী ইংরেজ শাসন যুগে ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে নিতে হয়েছে কিংবা হচ্ছে অন্যান্য ভাষা থেকে শব্দ। ইংরেজির মাধ্যমে প্রচুর ইউরোপীয় শব্দ আমাদের বাংলা ভাষায় ঢুকেছে। কাজেই বর্তমান বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয়।

.“বিদেশি শব্দ নেওয়া ভালো না মন্দ সে প্রশ্ন অবান্তর“—কেন লেখক কথা বলেছেন আলোচনা কর।

উত্তর: বাংলা ভাষা কখনোই আত্মনির্ভরশীল নয়। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আমরা ভিন্ন ভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ নিয়েছি এবং সেই প্রক্রিয়া এখনও বজায় রয়েছে। পাঠান ও মোগল যুগে আইন-আদালত ইত্যাদি প্রসঙ্গে প্রচুর আরবি ও ফারসি শব্দ গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী যুগে ইংরেজি ভাষা থেকেও এই শব্দ নেওয়া হয়েছে | তার পরিমাণ এতটাই বেশি যে, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ হয় না। লেখকের মতে, শিক্ষার মাধ্যমরুপে ইংরেজিকে বর্জন করে বাংলা গ্রহণ করার পরে এই প্রবণতা আরও বাড়বে। ফলে বিদেশি শব্দের আমদানি করার ভাবনা যখন বন্ধ করা যাবে না, সেক্ষেত্রে তার ভালোমন্দ নিয়ে ভাবা নিতান্তই অর্থহীন।

এস্থলে আর একটি কথা বলে রাখা ভালো” –বক্তা কোন স্থলে কী কথা বলে রাখা ভালো বলেছেন ?

উত্তর – বক্তা মুজতবা আলী তার নব নব সৃষ্টি’ প্রবন্ধাংশে হিন্দি ভাষার অন্য ভাষাকে বর্জনের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিদ্যাসাগর, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এমনকি হিন্দি সাহিত্যের প্রেমচন্দ্র যেভাবে নিজ নিজ সাহিত্যে অন্য ভাষার ব্যবহার করেছেন, সে প্রসঙ্গের রেশ টেনেছেন। তার মতে, রচনার ভাষা সর্বদা বিষয়বস্তুর উপর নির্ভরশীল। উদাহরণ হিসেবে তিনি ব বলেছেন, শংকর দর্শন, মোগলাই রেস্তোরাঁ, বসুমতীর সম্পাদকীয় ও বাঁকা চোখের ভাষা কখনোই একরকম হবে না।

তখনই সেটা গ্রহণ করতে চেয়েছে এখানেসেটাবলতে কী কথা বলা হয়েছে? যখনই সেটা গ্রহণ করতে চাওয়া হয়েছে তাৱ ফলই বা কী হয়েছে

 উত্তর : ‘সেটা বলতে এ কথা বলতে চাওয়া হয়েছে যে, ধর্ম, সাহিত্য, রাজনীতি যখনই যার মধ্যে বাঙালি সত্য শিব ও সুন্দরের খোঁজ পেয়েছে তখনই সে তা গ্রহণ করেছে। গ্রহণ করতে চাওয়ার ফলে এই হয়েছে যে, গতানুগতিক পথা’, ‘প্রাচীন ঐতিহ্য’-এর দোহাই দিয়ে সে প্রচেষ্টায় বাধা দিতে গেলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়েছে। সে বিদ্রোহ উদ্ধৃঙ্খলতায় পরিণত হওয়ার উপক্রম হলে তার বিরুদ্ধে আবার বিদ্রোহ হয়েছে।

ধর্ম বদলালেই জাতিৱ চরিত্র বদলায় না।’-কাৱ লেখা কোন্ ৱচনার অংশবিশেষ? উদ্ধৃতিৱ প্রসঙ্গ নির্দেশ কৱে। 

উত্তর : আলোচ্য উদ্ধৃতিটি প্রবন্ধকার সৈয়দ মুজতবা আলীর  লেখা প্রবন্ধ ‘নব নব সৃষ্টির অংশবিশেষ।বাঙালি হিন্দুর ভিতরেই বিদ্রোহ কেবল সীমাবদ্ধ নয়।বাঙালির মধ্যে মুসলমান ধর্মের লোকও আছে। তারা হিন্দু থেকে মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে। কিন্তু বাঙালি হিন্দুর মতো বাঙালি মুসলমানদের মধ্যেও একই বিদ্রোহের প্রবণতা বিদ্যমান। ধর্ম পরিবর্তনের ফলে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি।

স্কুল থেকে সংস্কৃত চর্চা উঠিয়ে না দেবার কারণ প্রসঙ্গে বক্তা কী বলেছেন?

উত্তর – সংস্কৃত ভাষা অত্যন্ত উন্নত ও সমৃদ্ধশালী। নতুন শব্দ তৈরির ব্যাপারে অসামান্য দক্ষতা আছে এই ভাষার। প্রাচীনকাল থেকে এদেশে সংস্কৃত চর্চা ছিল বলে বহু সংস্কৃত শব্দ বাংলায় ঢুকেছে, ঢুকছে এবং আগামীতে যতদিন এ ভাষা থাকবে ততদিন ঢুকবে। স্কুল-কলেজ থেকে সংস্কৃত চর্চা উঠিয়ে না দেবার কারণ বাংলায় এখনও আমাদের প্রচুর সংস্কৃত শব্দের প্রয়োজন। সংস্কৃত ই চর্চা উঠে যাওয়ার অর্থ বাংলা তার প্রধান খাদ্য থেকে বঞ্চিত হবে।

পৃথিবীতে কোনো জিনিসই সম্পূর্ণ অসম্ভব নয়।বক্তা কোন প্রসঙ্গে এরূপ মন্তব্য করেছেন?

উত্তর – উদ্ধৃতাংশটি মুজতবা আলীর নব নব সৃষ্টি নামক রচনাংশ থেকে গৃহীত। যে-কোনো ভাষার শব্দভাণ্ডার অন্য ভাষা থেকে গ্রহণ করা আগন্তুক বা কৃত ঋণ শব্দ দ্বারা সমৃদ্ধ হয়। তাই হিন্দি সাহিত্য হিন্দি থেকে আরবি, ফারসি ও ইংরেজি শব্দকে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টাটা শুরু করেছে। লেখক হিন্দি সাহিত্যিকদের এই প্রচেষ্টাকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছেন এবং তাদের প্রতি অনুপ্রেরণাসূচক এই উক্তিটি করেছেন।

ভাটিয়ালিৱ নায়িকা, বাউলেৱ ভক্ত, মুৱশিদিয়াৱ আশিক পদাবলিৱ শ্রীরাধা একই চৱিত্ৰ’-ভাটিয়ালি, বাউল, মুরশিদিয়া শ্রীরাধার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 

উত্তর;  ভাটিয়ালি : বাংলাদেশের মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে নৌকার মাঝি-মাল্লাদের গান। উল্লেখযোগ্য লোকসংগীত।

বাউল : বাউল সম্প্রদায়ের রচিত গান।

মুর্শিদি : মুর্শিদি হল গুরুবাদী মুসলমান সম্প্রদায়ের ভাব ও গান। 

শ্রীরাধা : রাধা হলেন কৃষপ্রেমিকা ও গোপবালা। পিতা বৃষভানু, মাতা কলাবতী ও স্বামী আয়ন ঘোষ। তিনি ঈশ্বর জ্ঞানে কৃষ্ণকে মনপ্রাণ সমর্পণ করেন।

১০সংস্কৃত চর্চা উঠিয়ে দিলে আমরা অন্যতম প্রধান খাদ্য থেকে বঞ্চিত হব।লেখক কথা বলেছেন কেন?

উত্তর : নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী মনে করেন আমরা যে ভাষার চর্চা বেশি করি তার শব্দ আমাদের বাংলাতে ঢোকে বেশি। সংস্কৃত বেশি চর্চার ফলে বাংলায় বিস্তর সংস্কৃত এককালে ঢুকেছে। স্কুল-কলেজের পাঠ্য বিষয় থেকে সংস্কৃত তুলে না দেওয়াই শ্রেয়। কারণ বাংলা ভাষাতে এখনও সংস্কৃত শব্দের প্রয়োজনীয়তা আছে। লেখক সেজন্য বলেছেন যে, সংস্কৃত চর্চা উঠিয়ে দেওয়ার অর্থ হল বাঙালির অন্যতম খাদ্য থেকে বঞ্চিত হওয়া।

১১ আলাল’, ‘হূতোমশংকৱদর্শন’-এর পরিচয় দাও। 

উত্তর : ‘আলাল’ শব্দটি ‘আলালের ঘরের দুলাল’ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। প্যারীচাঁদ মিত্রের ছদ্মনাম হল ‘টেকচাদ ঠাকুর। তিনি ছদ্মনামে চলিত বাংলায় ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ‘আলালের ঘরের দুলাল’ উপন্যাসটি লেখেন।

কালীপ্রসন্ন সিংহের লেখা ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’ গদ্যরচনার সংক্ষিপ্ত নাম ‘হুতোম। কলকাতার কথ্য বাংলায় লেখা সেই আমলের কলকাতার বাবু চরিত্রের বর্ণনা নিয়ে লেখা  ১৮৬১-৬২ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়।

শংকরাচার্য বিশ্বের সেরা দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম। লেখক তাঁর দর্শনকে বলেছেন শংকরদর্শন। অদ্বৈতবাদ নিয়ে তাঁর দর্শন।

গ) বড় প্রশ্ন উত্তর

১।বিদেশি শব্দ ব্যবহার বিষয়ে লেখক মুজতবা আলীর ভাবনার পরিচয় দাও।
অথবা, বিদেশি শব্দ নেওয়া ভালো না মন্দ সে প্রশ্ন অবান্তর।‘—কে এমন মনে করেন? তার এমন মনে হওয়ার কারণ কী লেখো।

উত্তর – লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘নব নব সৃষ্টি রচনাংশে বর্তমানে বিদেশি শব্দ নেওয়া ভালো না মন্দ সে বিষয়ে প্রশ্ন অবান্তর বলে মনে করেন।

লেখকের মতে, দৈনন্দিন জীবনে আলু-কপি কিংবা বিলিতি ওষুধের মতই আমাদের ভাষাতেও বিদেশি শব্দ থেকে যাবে এবং ভবিষ্যতে তা আমদানি করাও বন্ধ করা যাবে না। প্রাচীন কাল থেকেই বাংলা ভাষায় সংস্কৃত, আরবি, ফারসি প্রভৃতি শব্দ অনায়াসে মিশেছে। ইংরেজি ভাষার বদলে বাংলা ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে চালু করার ফল হাতেনাতে পাওয়া গেছে। কেউ কেউ জোর করে বিদেশি শব্দ বর্জনের চেষ্টা করলেও মুজতবা আলী জানিয়েছেন, বিখ্যাত লেখকেরা অনেকেই সাদরে বিদেশি শব্দ গ্রহণ করেছেন। যেমন রবীন্দ্রনাথ স্বচ্ছন্দে লিখেছেন আবু দিয়ে, ইজ্জৎ দিয়ে, ইমান দিয়ে’… ইত্যাদি। এখানে ‘আব্রু, ইজজৎ’, ইমান’ আরবি শব্দ। আবার নজরুল ইসলামই বাংলায় আরবি শব্দ ইনকিলাব ঢুকিয়ে গিয়েছেন। বিদ্যাসাগর সাধু গদ্যে বিদেশি শব্দ ব্যবহার না করলেও, অসাধু রচনায় আরবি, ফারসি প্রচুর ব্যবহার করেছেন। নিষ্ঠাবান পণ্ডিত হলেও হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বিদেশি শব্দ বিশেষত আরবি-ফারসির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করাকে বোকামি মনে করতেন। এমনকি হিন্দি সাহিত্যে প্রেমচন্দ্রও বিস্তর আরবি-ফারসি ভাষা ব্যবহার করেছেন। এইসব দৃষ্টান্ত দিয়ে প্রাবন্ধিক বুঝিয়ে দিয়েছেন বিদেশি শব্দের ব্যবহার নিয়ে বর্তমানে প্রশ্ন তোলাই অবান্তর।

২।বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যসৃষ্টি তাৱ পদাবলি কীর্তনে।এই মন্তব্যেৱ স্বপক্ষে লেখকের বক্তব্য লেখো বাঙালির চরিত্রে বিদ্রোহ বিদ্যমান’– লেখকের অনুসরণে আলোচনা করো। 

উত্তর : সৈয়দ মুজতবা আলী বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যসৃষ্টি তার পদাবলি কীর্তনে। পদাবলি সাহিত্যের দেহ ও প্রাণ দুই-ই খাঁটি বাঙালি। পদাবলি সাহিত্যের কানু বা কানাই মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণের খাঁটি বাঙালি রূপ। পুরাণ ও ভাগবতের শ্রীরাধা পদাবলি সাহিত্যে খাঁটি বাঙালি মেয়ে। ভাটিয়ালির নায়িকা, বাউলের ভক্ত, মুরশিদিয়ার আশিক আর পদাবলির শ্রীরাধা একই চরিত্র।

 প্রবন্ধকার সৈয়দ মুজতবা আলী মনে করেন বাঙালির চরিত্রে বিদ্রোহ বিদ্যমান। সে রাজনীতি, ধর্ম, সাহিত্য যাতেই যখনই সত্য-শিব-সুন্দরের খোঁজ পেয়েছে, তখনই সে সেটা গ্রহণ করতে চেয়েছে। কেউ তখন তাকে ‘গতানুগতিক পন্থা’ বা ‘প্রাচীন ঐতিহ্য’-এর দোহাই দিয়ে সে চেষ্টায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেই সে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। বিদ্রোহ উচ্ছঙ্খলতায় পরিণত হলে তার বিরুদ্ধে আবার বিদ্রোহ করেছে। এই বিদ্রোহের প্রবণতা কিন্তু হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সব বাঙালির মধ্যেই বিদ্যমান। ধর্ম পালটালেও জাতিগত চরিত্র থেকেছে অপরিবর্তিত।

৩।ধর্ম বদলালেই জাতিৱ চরিত্র বদলায় না।’-উৎস প্রসঙ্গ নির্দেশ কর। উদ্ধৃতিৱ তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: আলোচ্য উদ্ধৃতিটি প্রখ্যাত প্রবন্ধকার সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের শেষে সৈয়দ মুজতবা আলী বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যসৃষ্টি ও বাঙালি চরিত্রের বিদ্রোহ সম্পর্কে আ্লোচনা করেছেন। বৈষব পদাবলি কীর্তনে খাঁটি বাঙালিয়ানার পরিচয় ফুটে উঠেছে। মহাভারতে শ্রীকৃয়, পুরাণ ও ভাগবতের শ্রীরাধা যথাক্রমে বাঙালি পুরুষ ও বাঙালি নারী হয়ে উঠেছেন বৈষ্ণব পদকর্তাদের কলমে। আবার আরবী ও ফারসী ভাষার নানা শব্দও বাঙ্গালী  নিঃসন্দেহে গ্রহণ করেছে।বাঙালি চরিত্রে বিদ্রোহের পরিচয় মিলেছে রাজনীতি, ধর্ম, সাহিত্যের ক্ষেত্রে যেখানে সত্যশিব-সুন্দরের সন্ধান পেয়ে তা গ্রহণের বিরুদ্ধে বাধা এসেছে, সেখানে সেই বাধার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রকাশ দেখা গেছে।এই বৈশিষ্ট্য কেবল হিন্দুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। যারা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যেও সমানভাবে বিদ্যমান। এটিও বাঙালি জাতীয় চরিত্রের আর-একটি বৈশিষ্ট্য। তা হল ধর্ম যেন বাইরের আবরণ। আচ্ছাদনের পরিবর্তন দেহগত কাঠামোকে যেমন পালটায় না, তেমনি ধর্মও জাতিগত চরিত্রকে পালটাতে পারেনি বলেই বাঙালি চরিত্রের বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যটি হিন্দু-মুসলমান এই ধর্মগত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও অটুট থেকেছে। 

৪।ফল যদি ভাল হয় তখন তারা না হয় চেষ্টা করে দেখবেন।কী চেষ্টা করে দেখার কথা এখানে বলা হয়েছে? এবিষয়ে বাঙালি সাহিত্যিকদের ভূমিকা কী ছিল?

উত্তর – সমালোচকদের মতে, একটা ভাষা তখনই। আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠে যখন নতুন শব্দের প্রয়োজনে বিদেশি। শব্দের মুখাপেক্ষী না থেকে নিজস্ব শব্দভাণ্ডার থেকেই শব্দ খুঁজে এনে প্রয়োগ করে। হিন্দি উপস্থিত সেই চেষ্টাটা শুরু করেছে। হিন্দি সাহিত্যিকেরা হিন্দি থেকে আরবি, ফারসি এবং ইংরেজি শব্দ বর্জন করতে শুরু করেছে। এখানে এই প্রচেষ্টার কথাই বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাঙালি সাহিত্যিকদের ধারণা ছিল বেশ স্পষ্ট। বাংলায় সংস্কৃত অন্যান্য প্রাচীন ভাষার মতো বা শব্দ সৃষ্টির ক্ষমতা ছিল না। তাই নতুন শব্দ বা বিষয়-ভাবনার অভিনব চিন্তা-ভাবনার প্রকাশ করতে বিদেশি ভাষার প্রয়োজন। ইংরেজিকে শিক্ষার মাধ্যমরূপে বর্জন করার ফলে বাংলায় প্রচুর ইউরোপীয় শব্দ প্রবেশ করেছে। রচনার সঙ্গে পারম্পর্য রক্ষা করলে বিদেশি ভাষা ব্যবহারে অসুবিধা নেই। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিদ্যাসাগরের মত ব্যক্তিত্বরা অনায়াসেই আরবি-ফারসির ব্যবহার বাংলায় । করে গেছেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তো এই দুই ভাষার বিরোধীদের আহাম্মুখ’ বলেছেন। ‘আলাল ও ‘হুতোম’-এর ভাষার যেমন ঐতিহাসিক প্রাসঙ্গিকতা আছে ঠিক তেমনি শংকর দর্শন, বসুমতী’র সম্পাদকীয় ভাষা কিংবা ‘বাঁকা চোখের ভাষা ও ভিন্ন। ভিন্ন প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। এককথায় রচনার ভাষা। বিষয়ানানুগ হলে ভাষা সমৃদ্ধ ও ঐশ্বর্যশালী হয়।

Click here To Download  The PDF

কী করে বুঝব| অষ্টম শ্রেণী প্রশ্ন- উত্তর সমাধান| Ki Kore Bujhbo| Class 8| Question-Answer Solved

2

কী করে বুঝব

আশাপূর্ণা দেবী

 

বিষয়সংক্ষেপ

ছ-বছরের বুকু তাদের বাড়ির বাইরের উঁচু চাতালে খেলা করছিল। এমন সময় একটি রিকশা এসে থামে তাদের বাড়ির সামনে। রিকশা থেকে দুজন বেশ স্বাস্থ্যবতী মহিলা এবং একটি বুকুরই বয়সি মোটা ছেলে নেমে তাদের বাড়িতে আসে। তারা বুকুকে জিজ্ঞাসা করে, তার মা বাড়িতে আছে কি না এবং তাকে  খবর দিতে বলে যে, উত্তরপাড়া থেকে ছেনু মাসিরা এসেছেন। মা সে খবর শুনে খুব রেগে গেলেন এবং বিরূপ মন্তব্যও করে বসলেন। অথচ বাইরে এসে খুব আনন্দের সঙ্গে তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে লাগলেন। বুকু আর চুপ করে না-থেকে মায়ের বিরূপ মন্তব্যগুলি অতিথিদের সামনে প্রকাশ করে দিল। ছেনু মাসিদের সঙ্গে আসা ছেলেটি আলমারি ভেঙে বই বের করে ছড়ালে তাকেও বেশ কয়েকটি কথা শুনিয়ে দেয় বুকু। বাবা অফিস থেকে ফিরে অতিথিদের সম্পর্কে কী মন্তব্য করেছেন, তাও বুকু সবাইকে জানিয়ে দেয়। মা নানাভাবে তাকে থামানোর চেষ্টা করলেও বুকু থামেনি। আসলে বুকুর মা আজই তাকে বারবার করে শিখিয়েছে, সর্বদা সত্য কথা বলতে হয় এবং কোনো কিছু গোপন করতে নেই। অথচ তার সামনে সত্য-মিথ্যা দুটি ঘটনাই ঘটে চলেছে। তাই সে সব সত্য কথাগুলিকে বলে চলেছে। অতিথিরা চলে গেলে মা ও বাবা তাকে বেদম প্রহার করতে থাকলে সে এক সময় ডুকরে কেঁদে উঠে বলে মা তাকে সত্য কথা বলতে শিখিয়েছে। সে কী করে বুঝবে, যে “আসলে কী করতে হবে?” আসলে বড়দের তৈরী করা ন্যায় ও অন্যায়ের জটিল নিয়ম বুকু বুঝতে পারে নি, তাই অপ্রিয় সত্য কথা বলে সে বিরাগের পাত্র হয়ে উঠেছে।

হাতেকলমে

. আশাপূর্ণা দেবীর লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখো। 

উঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা দুটি উপন্যাসের নাম হল ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ও ‘সুবর্ণলতা।

. আশাপূর্ণা দেবী তাঁর সাহিত্যকৃতির জন্য কোন কোন্ বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন ?

উঃ আশাপূর্ণা দেবী তাঁর সাহিত্যকৃতির জন্য ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’, ‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’, ‘লীলা পুরস্কার’ ও ‘জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করেন।

একটি বাক্যে উত্তর দাও :

. বুকু কোথায় বসে খেলা করছিল ?

উঃ বুকু বাড়ির বাইরের রোয়াকে বসে খেলা করছিল

. রিকশা থেকে কারা নামলেন ?

উঃ  রিকশা থেকে নামলেন দুটি বেজায় মোটাসোটা ভদ্রমহিলা আর বুকুর বয়সেরই একটি ছেলে সম্পর্কে তাঁরা বুকুর মায়ের ছেনুমাসি, বেনুমাসি এবং বেনুমাসির ছেলে ডাম্বল।

. ডাম্বল আলমারি ভেঙে কার বই নামিয়েছিল ?

উঃ  ডাম্বল আলমারি ভেঙে বুকুর সেজোকাকার বই নামিয়েছিল।

. বুকুর মা কী কেনা ছিল ?

উঃ  বুকুর মার সিনেমার টিকিট কেনা ছিল।

. বুকু আর বুকুর সেজো খুড়িমা অতিথিদের জন্যে কী কী খাবার নিয়ে আসে ?

উঃ বুকু আর বুকুর সেজো খুড়িমা অতিথিদের জন্য বড়ো বড়ো রাজভোগ, ভালো ভালো সন্দেশ, শিঙাড়া, নিমকি আর চা নিয়ে আসে।

. বুকু কোন্ স্কুলে ভরতি হয়েছিল

উঃ বুকু ‘আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভরতি হয়েছিল।

নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

. বুকু খেলতে খেলতে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় কেন ?

উঃ বুকু তাদের বাড়ির বাইরের সামনের চাতালে বসে খেলা করছিল। হঠাৎ তাদের বাড়ির সামনে একটি রিকশা এসে থামে। বুকু দ্যাখে, সেই রিকশা থেকে দুজন খুব মোটাসোটা মহিলা এবং তাদের সঙ্গে বুকুর মত বয়সেরই একটি মোটা ছেলে নামল। বুকু এত স্বাস্থ্যবতী মহিলা আগে কখনও দেখেনি। তাছাড়া সে অবাক হয়ে ভাবছিল এই তিনজন মোটা মানুষ কীভাবে রিক্সার খোলের মধ্যে জায়গা পেয়ে বসতে পেরেছিলো। অদৃশ্যপূর্ব অদ্ভুতদর্শন মানুষগুলিকে দেখে ও তাদের সেই রিক্সার থেকে নামতে দেখে সে খেলতে খেলতে তাকিয়ে অবাক হয়ে গিয়েছিল।

.২। সিঁড়ি ভেঙে আর উঠতে পারব না বাবা’ –কারা একথা বলেছেন ? তাঁরা সিঁড়ি ভেঙে উঠতে পারবেন না কেন

উঃ আশাপূর্ণা দেবী রচিত “কী করে বুঝব’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটি বুকুদের বাড়িতে উত্তরপাড়া থেকে বেড়াতে আসা বুকুর মায়ের পাতানো ছেনুমাসি ও বেণুমাসি বলেছেন।

শারীরিকভাবে খুব মোটাসোটা বা ভারিক্কি ধরনের হওয়ায় সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠা তাঁদের পক্ষে খুব কষ্টসাধ্য। তা ছাড়া তাঁরা অনেক পথ কষ্ট করে এসেছেন। বিশেষ করে দু-তিন বার বাস বদল করে শেষে রিকশা করে তাঁরা এখানে এসে পৌঁছেছেন। ফলে তাঁরা খুবই পরিশ্রান্ত। এ কারণে তারা সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠতে পারবেন না।

. কী! কী কাণ্ড করেছ তুমি’-কে, কী কাণ্ড করেছে ?

উঃ আশাপূর্ণা দেবীর রচিত ‘কী করে বুঝব’ গল্প থেকে গৃহীত উধৃতাংশটিতে বুকুদের বাড়িতে বেড়াতে আসা তারই বয়সি ছেলে ডাম্বল কাণ্ডটি করেছে। বুকুদের বাড়ির একটি ঘরের দেয়ালে সাঁটিয়ে রাখা বইয়ের আলমারিটার একটি পাল্লা ধরে ডাম্বল এমন জোরে হ্যাচকা টান মেরেছে যে, চাবি বন্ধ কলটি বন্ধ অবস্থাতেই পাল্লার সঙ্গে খুলে বেরিয়ে এসেছে। তারপর, সেখানে সাজানো বইগুলি থেকে একসঙ্গে তিন-চারটি বই নামিয়ে-তাতে ছবি নেই বলে ঘৃণাভরে সেগুলিকে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। তাই বুকু তার এই দুষ্টুমিকে ভয়ানক কান্ড বলেছে।

. বুকু অবাক হয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল কেন ?

উঃ উত্তরপাড়া থেকে ছেনুমাসিদের আসার খবরটি বুকু যখন তার মাকে দেয়, তখন তার মা শুনে খুব বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, অসময়ে লোকজনের বাড়িতে আসাকে তিনি একদম পছন্দ করেন না। কিন্তু আবার তাঁদের সামনে এসে তিনিই আনন্দে হইহই করে আপ্যায়ন শুরু করেন। শুধু তাই নয়, কিছুটা অভিমানের সুরে তাঁদের অনেক দিন না-আসার জন্য অনুযোগ জানান। মায়ের এই দুরকম আচরণের ব্যাপারটি ছোট্ট বুকুর মাথায় ঢোকেনি। একারণেই বুকু অবাক হয়ে ফ্যালফেলিয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল।

.ছেলের কথা শুনেই বুকুর মা মাথায় বজ্রাঘাত” “ছেলের কথা শুনে বুকুর মা মাথায় বজ্রাঘাত হল কেন ?

উঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘কী করে বুঝব’ গল্পে বুকুর মুখে উত্তরপাড়া থেকে ছেনু মাসিরা এসেছেন শুনে বুকুর মা বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, অসময়ে বাড়িতে লোকের বেড়াতে আসা তিনি একদম পছন্দ করেন না। কিন্তু অতিথিদের সামনে এসে তিনি ভীষণ আনন্দের সঙ্গে তাঁদের অভ্যর্থনা জানান এবং এতদিন আসেননি। কেন তা নিয়ে অভিমান প্রকাশ করতে থাকেন। মায়ের এই পরিবর্তন দেখে বুকু হঠাৎ সবার সামনে সত্য প্রকাশ করে মায়ের কাছে জানতে চায় যে মা কেনো তখন তাদের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। এইভাবে অপ্রিয় সত্য প্রকাশ হয়ে যাওয়ার অতিথিদের সামনে লজ্জায়, অপমানে তার মায়ের মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়।

. ডাম্বলকে ইস্কুলে ভরতি করা হয়নি কেন ?

উঃ  ডাম্বলকে ইস্কুলে ভরতি না-করানোর কারণস্বরূপ ডাম্বল জানায় তার বাবা অতিশয় কৃপণ ব্যক্তি। ডাম্বলের বয়স সাত বছর। সুতরাং, সাত বছরের ছেলের স্কুলের বেতন সাত টাকা। এই সাত টাকা তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি বলেছেন, ডাম্বলের পড়াশোনার প্রয়োজন নেই। সে বরং চাষবাস করে খাবে।

. কে জানে পাগলাটাগলা হয়ে যাবে নাকি’ –কার সম্পর্কে এই মন্তব্য করা হয়েছে ? এমন সন্দেহের কারণ কী ?

উঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা “কী করে বুঝব’ গল্পের প্রধান চরিত্র বুকুর সম্পর্কে এই মন্তব্য করা হয়েছে।

বুকুর বাড়িতে বেড়াতে আসা বেণুমাসি, ছেনুমাসির আগমনে বুকুর মা খুশি হননি। বুকুর মা অখুশি হয়ে অতিথিদের আড়ালে যে কথাগুলো বলেছিলেন বুকু সেই কথাগুলোই নির্বিকারে অতিথিদের সামনে বলে ফেলে। যা অপদস্থ করে বুকুর মাকে। পাশাপাশি ডাম্বলকে বুকু তার শরীর ও বুদ্ধি নিয়ে যে কথাগুলো বলেছিলো তা বেণুমাসি সুযোগ বুঝে বুকুর মাকে বলায়, সবার সামনে নিজের সম্মান ধুলোয় মিশে যাচ্ছে দেখে বুকুর মা ব্যাপারটি সামলানোর চেষ্টা করেন। সংশয় ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বুকুর মাথা ঠিক আছে কিনা এসব প্রসঙ্গ তুলেও তিনি লোকলজ্জার হাত থেকে বাঁচতে বুকুকে ‘পাগলা’ বলে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করেন।

.দুজনে মিলে চেঁচান, বল, বল কেন ওসব বললি ? — বুকু কেন ওসব বলেছিল ?

উঃ  আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘কী করে বুঝব’ গল্পের শেষে দেখা যায়, প্রবল অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে চরম অপমানিত হয়ে বেনুমাসি, ছেনুমাসি ও ডাম্বল চলে যায়। এর জন্য স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা না করে বুকুর অকপট সত্যি কথা বলাই ছিল প্রধান কারণ। অথচ, বুকুর মা দুপুরবেলাতে বুকুকে পইপই করে বুঝিয়েছিল—সর্বদা সত্য কথা বলতে হবে এবং কোনো অবস্থায় কারও কাছে কিছু লুকোনো যাবে না। তাই, মাথায় মায়ের সদ্য শেখানো কথাগুলি ঘুরপাক খাচ্ছিল। ফলে সে সেই মতো আচরণ করতে শুরু করে। অর্থাৎ সরল, স্বাভাবিক ছয় বছরের শিশু বুকুর পক্ষে স্থানকাল-পাত্র বিবেচনা করে কথা বলার দক্ষতা গড়ে ওঠেনি বলেই সে এমন ব্যবহার করেছিল।

8 নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষার উত্তর দাও :

. গল্পে বুকুর আচরণ তাঁর মাকে অতিথিদের সামনে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। বুকুর এই আচরণ কি তুমি সমর্থন কর ? বুকু কেন অমন আচরণ অতিথিদের সামনে করেছিল ?

উঃ বুকুর এই আচরণকে পুরোপুরি সমর্থন করা যায় না। উপযাজক হয়ে অতিথিদেরকে সে কথাগুলি না শোনাতেই পারত। বিশেষ করে যে কথাগুলি সঙ্গে পিতা-মাতার সম্মান জড়িয়ে আছে, তা প্রকাশ করা সন্তানের পক্ষে উচিত নয়। কিন্তু যেহেতু সে ছ-বছরের ছোট্ট ছেলে তাই তার এই আচরণকে খুব অপরাধ বলে ভাবা যাবে না। তা ছাড়াও তার পিতামাতারও তার সম্মুখে অন্যের ব্যাপারে বিরূপ মুন্তব্য করা উচিত ছিল না।

 বুকুকে দুপুরবেলা তার মা একশোবার ধরে বুঝিয়েছে, সব সময় সত্য কথা বলতে হবে এবং কারও কাছে কোনো কিছু গোপন করা উচিত নয়। কিন্তু পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী কোথায় কেমন আচরণ করা উচিত তিনি তার শিক্ষা দেননি। কিন্তু ঘটনাচক্রে সেদিনই বাড়িতে অতিথি আসে এবং তাঁর মা ঘরে-বাইরে দু-রকম মন্তব্য করে বসেন। ফলে সদ্য শেখা শিক্ষাটিকে একটু প্রয়োগ করে দেখতে গিয়েই বুকু এই সমস্যার সৃষ্টি করে ফেলে।

.২। বাড়িতে অতিথি এলে তাঁদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত সে সম্পর্কে বন্ধুকে একটি চিঠি লেখ।

উঃ নিজের মতো করে লিখবে।

.৩। কী করে বুঝব, আসলে কী করতে হবে’– গল্পে বুকু এই কথা বলেছিল।আসলে কী করা উচিত বলে তোমার মনে হয়

উঃ  বুকু মা-বাবার কাছে প্রচণ্ড মারধর খেয়ে শেষে বলতে বাধ্য হয়েছিল—“কী করে বুঝব, আসলে কী করতে হবে?” আসলে সে বুঝতেই পারেনি, তার সদ্য শেখা শিক্ষার প্রয়োগের ফলে এই পরিণাম হবে। বুকুর উচিত ছিল, মায়ের বকুনি খেয়ে বিষয়টিকে চেপে যাওয়া। অতিথিদের সামনে অপ্রিয় সত্য কথাগুলি তার বলা উচিত হয়নি। অতিথিরা চলে যাওয়ার পর সে মাকে জিজ্ঞাসা করতে পারত কেন তিনি ঘরে এবং বাইরে দু-রকম কথা ও আচরণ করলেন। তার উচিত ছিল, বড়োদের কথার মধ্যে কথা না-বলা।

. গল্পে দুটি ছোটো ছেলের কথা পড়লে বুকু আর ডাম্বল। দুজনের প্রকৃতিগত মিল বা অমিল নিজের ভাষায় লেখ। 

উঃ  বুকু আর ডাম্বলের মধ্যে মিল হল—(১) দুজনেই স্পষ্টবাদী।

(২) দুজনেই ঘরের গোপন কথাকে বাইরে প্রকাশ করেছে।

তবে দুজনের মধ্যে অমিলও লক্ষ করা যায় (১) বুকু ডাম্বলের মতো দুরন্ত নয়। বুকু আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভরতি হয়েছে। সেখানে সে পড়াশোনা করে। অন্যদিকে, ডাম্বল দুরন্ত প্রকৃতির এবং সে কোনো স্কুলে ভরতি হয়নি। ফলে সে পড়াশোনা করে না।(২) ডাম্বল জানে, বই মানে তাতে ছবি থাকতে হবে। কিন্তু বুকু জানে, কোন বইতে ছবি থাকে এবং কোন বইতে ছবি থাকে না। (৩) বুকুর মুখে তাদের সম্পর্কে কী কী নিন্দে হতে পারে, সেসব কথা শুনে ডাম্বল বুকুকে ঘুসি মারতে এগিয়ে যায় অর্থাৎ তার এই আচরণে রাগ-ক্রোধ ও প্রতিহিংসাপরায়ণতার বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে। এই ধরনের আচরণ বুকুর মধ্যে একেবারেই অনুপস্থিত।(৪) বুকু তার সেজো কাকার বইয়ের সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন এবং সে ডাম্বলের মতো জিনিসপত্র ভেঙ্গে ছড়িয়ে নষ্ট করে না।

. গল্পটি পড়ে বুকুর প্রতি তােমার সহানুভূতির কথা ব্যক্ত করে একটি অনুচ্ছেদ রচনা কর। 

উঃ অন্নপূর্ণা দেবীর লেখা কী করে বুঝব’ পাঠ্যাংশটি পড়ে বুকুর প্রতি আমাদের মায়া হয়। ছোট্ট ছেলেটি অতিরিক্ত স্পষ্টবাদী বা সত্যবাদী হতে গিয়েই বাবা-মায়ের কাছে প্রচণ্ড মার খায়। বয়সে ছোটো হওয়ায় তার মনের মধ্যে বাস্তবের জটিল মারপ্যাচ এখনও তৈরি হয়নি। সে জানত না কোথায়, কখন, কোন কথা বলতে হবে। তার মা তাকে শিখিয়েছিলেন—সর্বদা সত্য কথা বলতে হবে এবং কোথাও কিছু গোপন করা যাবে না। কিন্তু তারপরই তিনি বুকুর সামনে অপরের নামে নিন্দা করেন সুতরাং, যখনই সে দেখল তার মা ঘরে এক রকম বলছেন, অথচ বাইরে অতিথিদের সামনে আর-এক রকম কথা বলছেন তখনই তার মনে হল সত্য কথা বলা উচিত এবং কোনো কিছু গোপন করা উচিত নয়। ফলে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে যায় তার আচরণে। গল্পের শেষে বুকুর পরিণতির কথা পড়ে তার প্রতি আমাদের মনে সমবেদনা জাগে।

একই অর্থযুক্ত শব্দ গল্প থেকে খুঁজে নিয়ে লেখ : সংবাদ, পুস্তক, সন্তুষ্ট, কোমল, আপ্যায়ন।

 সংবাদ = খবর

পুস্তক = বই

সন্তুষ্ট =খুশি

কোমল = মোলায়েম

আপ্যায়ন = অভ্যর্থনা

নীচের শব্দগুলির সন্ধি বিচ্ছেদ কর : ইত্যবসরে, বজ্রাঘাত, ব্যাকুল, নিশ্চয়, রান্না, দুরন্ত, সন্দেশ। 

ইত্যবসরে = ইতি + অবসরে।

বজ্রাঘাত = বজ্র + আঘাত।

ব্যাকুল = বি + আকুল।

নিশ্চয় = নিঃ + চয়।

রান্না =রাঁধ + না।

দুরন্ত = দুঃ + অন্ত

সন্দেশ = সম্ + দেশ।

নীচের শব্দগুলির কোনটি বিশেষ্য এবং কোনটি বিশেষণ খুঁজে নিয়ে লেখ। এরপর বিশেষ্যগুলির বিশেষণের রূপ এবং বিশেষণগুলির বিশেষ্যের রূপ লেখ : মন, শিক্ষা, অবস্থা, গম্ভীর, শাসন, শয়তান, লাল, সর্বনেশে, ঘর, সুন্দর, দুরন্ত, মুখ, কথা, হ্যাংলা।

মন (বিশেষ্য )    ⟶  মানসিক (বিশেষণ)

শিক্ষা (বিশেষ্য)   ⟶  শিক্ষিত (বিশেষণ)

অবস্থা (বিশেষ্য)   ⟶  অবস্থিত ( বিশেষণ)

গম্ভীর (বিশেষণ)    ⟶  গাম্ভীর্য (বিশেষ্য)

শাসন (বিশেষ্য)    ⟶  শাসিত (বিশেষণ)

শয়তান(বিশেষ্য)   ⟶  শয়তানি(বিশেষণ)

লাল (বিশেষ্য)   ⟶  লালচে(বিশেষণ)

সর্বনেশে (বিশেষণ)  ⟶  সর্বনাশ(বিশেষ্য)

ঘর (বিশেষ্য)     ⟶    ঘরোয়া(বিশেষণ)

সুন্দর (বিশেষণ) ⟶    সৌন্দর্য(বিশেষ্য)

দুরন্ত(বিশেষণ)   ⟶  দুরন্তপনা(বিশেষ্য)

মুখ (বিশেষ্য)   ⟶  মৌখিক( বিশেষণ)

কথা (বিশেষ্য)  ⟶  কথিত(বিশেষণ)

হ্যাংলা (বিশেষণ) ⟶  হ্যাংলামি(বিশেষ্য)

নীচের প্রতিটি উপসর্গ দিয়ে পাঁচটি করে নতুন শব্দ তৈরি করে লেখ : , বি, বে, , প্র, অব।

 = অজয়, অচল, অলক, অমর, অবেলা।

বি = বিহার, বিজয়, বিচার, বিবেক, বিমাতা।

বে = বেরসিক, বেচাল, বেইমান, বেবাক, বেসামাল।

 = আবাদ, আগমন, আজীবন, আলুনি, আজন্ম।

প্র = প্রশান্ত, প্রতাপ, প্রভাত; প্রচুর; প্রদীপ।

অব = অবদান, অবকাশ, অবধান, অবতার, অবশ।

সমোচ্চারিত/প্রায় সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ লিখে আলাদা আলাদা বাক্য রচনা কর : আসা, আশা সোনা ,শোনা হাড় , হার মার, মাড় মাস , মাষ জ্বালা , জালা

আসা = (আগমন)—আপনার আসার খবর আমরা আগেই পেয়েছি।
আশা = (আকাঙ্ক্ষা)—মানুষের মনের আশার শেষ নেই।

সোনা = (সুবর্ণ)— মেয়েরা সোনার গহনা পরতে খুব ভালোবাসে।

শোনা = (শ্রবণ করা)— অবসর সময়ে গান শোনা আমার একটি পছন্দের কাজ।
হাড় = (অস্থি)—আজ ফুটবল খেলার সময় রমেনের পায়ের হাড় ভেঙেছে।
হার = (পরাজিত হওয়া)- আজকের ক্রিকেট খেলায় আমাদের বিদ্যালয়ের হার হয়েছে।
মার = (প্রহার)—চোরটিকে মারতেই সে সত্য স্বীকার করল।

মাড়  = (ভাতের ফ্যান) — মাড় গোরুদের একটি প্রিয় পানীয়।
মাস = (ত্রিশ দিন)—আশ্বিন মাসের মেঘ দেখলেই বোঝা যায় পুজো এসে গেছে।
মাষ = (ডাল শস্য বিশেষ)—মাষ-কলাই খুবই পুষ্টিকর খাদ্য।
জ্বালা =(যন্ত্রণা অর্থে)—আগুনে হাতটা পুড়ে গিয়ে খুব জ্বালা করছে।
জালা = (মাটির বডো পাত্র)—গরমের দিনে জালায় জল রাখলে তা খুব ঠান্ডা থাকে।

১০ (এই গল্পে অজস্র শব্দদ্বৈত ব্যবহৃত হয়েছে। শব্দগুলি গল্প থেকে খুঁজে নিয়ে লেখ : (দুটি শব্দ খুঁজে দেওয়া হল) খুকখুক, তোড়জোড়।

উঃ হাসতে হাসতে; হাঁপাতে, হাঁপাতে , , ড্যাব ড্যাব, গমগম, মুছতে মুছতে; হই হই, ছেণু-বেণু, চালতা চালতা, গাদা গাদা, রুটি-টুটি, পড়তে উড়তে, পাকা পাকা, চাষ বাস, কাঁদো কাঁদো, ভাজা ভাজা, পাগলা টাগলা, পিছন পিছন, ঝন ঝন, হা হা, বেছে বেছে, হায় হায়, শুধু শুধু। হালকা হালকা

১১ নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক/পূরণবাচক শব্দ খুঁজে বার কর :
১১.১ মা তো সেই তিনতলার ছাতে।
উঃতিন-সংখ্যাবাচক শব্দ।
১১. দুই বোনের দুইদুগুণে চারটি চোখ কপালে উঠে গেছে। 

ঊঃদুই, চার-সংখ্যাবাচক শব্দ
১১. সাত বছরের ছেলের স্কুলের মাইনে সাত টাকা। 

উঃসাত-সংখ্যাবাচক শব্দ।
১১. নিজেই তো দুপুরবেলা একশো বার করে বললে সবসময় সত্যি কথা বলবি।
ঊঃএকশো—সংখ্যাবাচক শব্দ।
১২ নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন কর :

১২. বুকু ছুটে ওপরে চলে যায়। (জটিল বাক্যে)

উঃ বুকু নামের যে ছেলে সে ছুটে উপরে চলে যায় ।

১২. ছেনুমাসি আর অন্যটির নাম বেণুমাসি। (সরল বাক্যে)

উঃ  ছেনুমাসির মতো অন্যটির নাম বেণুমাসি ।

১২. যত বড়ো হচ্ছে তত যেন যাতা হয়ে যাচ্ছে। (যৌগিক বাক্যে)

উঃ  বড়ো হচ্ছে এবং যা-তা হয়ে যাচ্ছে।

১২. ছেলের কথা শুনেই বুকুর মার মাথায় বজ্রাঘাত। (জটিল বাক্যে)

উঃ  ছেলের যা কথা তা শুনেই বুকুর মা-র মাথায় বজ্রাঘাত।

১৩ পাকা, মাথাএই শব্দগুলির প্রত্যেকটিকে দুটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে বাক্য লেখ:

পাকা = (পক্ক)-গাছের আমগুলো সব পেকে লাল হয়ে উঠেছে

পাকা = (পিচ, সিমেন্ট বা ইট বাঁধানো রাস্তা)-রহিম পাকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।

মাথা = (বুদ্ধি)— অঙ্কে তার মাথা ভালো নয়।

মাথা = (মগ ডালে) — কমল আম পাড়তে গাছের মাথায় উঠেছে।

Click Here To Download The PDF

হওয়ার গান| অষ্টম শ্রেণী |প্রশ্ন-উত্তর সমাধান | Howar Gan| Class 8| Question-Answer Solved|

0

হওয়ার গান

বুদ্ধদেব বসু

বিষয়সংক্ষেপ

হাওয়ারা চিরদিনই যেমন অপ্রতিরোধ্য, তেমনই গৃহহীন। হাওয়ারা অবাধ গতিতে সর্বত্রই যেমন ঘুরে বেড়ায়, তেমন ভাবেই ঘুরে বেড়ানোর মধ্য দিয়ে তাদের মনের হাহাকার, বেদনাই বার বার মূর্ত হয়ে ওঠে। হাওয়াদের কোনো বাড়ি নেই, তাই তারা শুধু বাইরে কেঁদে মরে। তারা পৃথিবীর সমস্ত জল-স্থল, পাহাড়, বনজঙ্গলে তাদের বাড়ি খুঁজে বেড়িয়েছে। কিন্তু কোথাও তাদের বাড়ির খোঁজ তারা পায়নি। কখনও পার্কের বেঞ্চিতে ঝরা পাতাকে, বা জানলায় কেঁপে ওঠা দেয়ালের পাঁজরাকে, কখনও আবার চিমনির ধ্বনিকে বা কাননের কান্নাকে তারা জিজ্ঞাসা করেছে তাদের বাড়ির কথা। কিন্তু কোনো উত্তর তারা পায়নি। তাদের কোনো বাড়ি নেই, দেশ নেই। তাই তাদের এই প্রবাহ বা চলারও শেষ নেই। ঘরের মধ্যে শান্ত ছেলেকে দোলনাতে ঘুমাতে তারা দেখেছে, কার্পেটের ওপর কুকুরকে শুয়ে থাকতে তারা দেখেছে, কিন্তু তারা কখনও এক জায়গায় স্থির হয়ে বসতে পারেনি। তারা চিরকাল উত্তাল-উদ্দাম। তাদের চলার যেন কোনো শেষ নেই। 

হাতে কলমে

. বুদ্ধদেব বসু রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

উঃ  বুদ্ধদেব বসু রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘বন্দীর বন্দনা’ ও ‘কঙ্কাবতী। 

. তিনি কোন পত্রিকা সম্পাদনা করতেন ?

উঃ বুদ্ধদেব বসু কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।

নীচের প্রশ্নগুলির একটি/দুটি বাক্যে উত্তর দাও

. দুর্বার ইচ্ছায় হাওয়া কী কী ছুঁয়ে গেছে

উঃ দুর্বার ইচ্ছায় হাওয়া পৃথিবীর সমস্ত জল ও তীরকে ছুঁয়ে গিয়েছে। 

. তার কথা হাওয়া কোথায় শুধায় ?

উঃ তার কথা হাওয়া জলে, স্থলে, পাহাড়ে, নগরে-বন্দরে, অরণ্যে, প্রান্তরে, পার্কের বেঞ্চে, ঝরাপাতায়, দেয়ালে, শার্সিতে, চিমনির নিস্বনে এবং কাননের ক্রন্দনে শুধায়। 

. মাস্তুলে দীপ জ্বলে কেন

উঃ জাহাজ যেহেতু অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে চলাচল করে, তাই অন্যদের কাছে তার উপস্থিতির কথা জানাতে মাস্তুলে দীপ জ্বালিয়ে রাখা হয়। 

. পার্কের বেঞ্চিতে আর শার্সিতে কাদের উপস্থিতির চিহ্ন রয়েছে ?

উঃ পার্কের বেঞ্চিতে ঝরা পাতার এবং শার্সিতে দেয়ালের পঞ্জরের উপস্থিতির চিহ্ন রয়েছে। আসলে এর মধ্যে বাতাসের উপস্থিতি আছে। 

. নিশ্বাস কেমন করে বয়ে গেছে

উঃ নিশ্বাস বুক-চাপা কান্নায় উত্তাল ও অস্থিরভাবে বয়ে গিয়েছে।

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখো

. হাওয়ার চোখে ঘরের যে ছবি পাওয়া যায়, কবিতা অনুসরণে লেখো।

উঃ বুদ্ধদেব বসুর ‘হাওয়ার গান কবিতায় হাওয়ার চোখে ঘরের একটি সুন্দর মনোরম ছবি পাওয়া যায়। সেখানে দোলনায় একটি সুন্দর শিশু ঘুমিয়ে আছে। তার কোনো ভাবনা নেই। নিস্তব্ধ ঘরে স্বপ্নের মতো মায়াবি আলো জ্বলছে। আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে কার্পেটের ওপর একটি কুকুর তন্দ্রাচ্ছন্ন। এ যেন স্বপ্নের এক সুখী গৃহকোণ। কিন্তু হাওয়ার শান্তি নেই। নিজে দু-দন্ড বিশ্রাম নিতে পারে এমন কোনো ঘর নিজের জন্য সে খুঁজে পায়নি। 

. সমুদ্রের জাহাজের চলার বর্ণনা দাও।

উঃ সমুদ্রের জাহাজ চলে নির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে। তাদের প্রত্যেকের জন্য চলাচলের নির্দিষ্ট পথ আছে। সেগুলিকে অবলম্বন করেই তাদের এগোতে হয়। জাহাজে দিকনির্ণায়ক যন্ত্রও থাকে, যার দ্বারা নাবিকেরা বুঝতে পারেন কোন্ দিকে এগিয়ে চলেছেন। রাত্রিতে জাহাজের মাস্তুলে আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়। অন্যরা যাতে বুঝতে পারে যে, জাহাজ চলাচল করছে। এভাবেই সমুদ্রে জাহাজ চলে। 

. পৃথিবীর কোন্ কোন্ অংশে হাওয়া ঘুরে বেড়ায় লেখো।

উঃ পৃথিবীর সমস্ত জলাশয়, সমুদ্র তীর, পাহাড়, গম্ভীর বন্দর, শহরের জনবহুল অঞল, বনজঙ্গল, খোলা মাঠ বা তেপান্তর সর্বত্রই হাওয়ারা ঘুড়ে বেড়ায়। কারণ, তাদের থাকবার নির্দিষ্ট কোনো ঘর নেই। তারা সর্বত্র বিরাজমান। তারা পার্কের বেঞ্চিতে কখনো বা চিমনির শব্দে অথবা বাগানের ক্রন্দনে সব জায়গাতে ঘুরে বেড়ায়।

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর বিশদে লেখো

. হাওয়াদের কী নেই ? হাওয়ারা কোথায়, কীভাবে তার খোঁজ করে

উঃ বুদ্ধদেব বসুর লেখা ‘হাওয়ার গান কবিতায় হাওয়াদের বাড়ি নেই অর্থাৎ, আশ্রয় নেই।

 হাওয়াদের বাড়ি না-থাকায় তারা পৃথিবীর সর্বত্র জলে-স্থলে, পাহাড়ে, বনজঙ্গলে বাড়ির খোঁজ করে বেড়ায়। কখনও শহরের ঘন ভিড়ে, কখনও বা জনহীন প্রান্তরে সর্বত্রই তারা বাড়ির খোঁজ করে। পার্কের বেঞ্চিতে পড়ে থাকা ঝরা পাতা, জানলায় কেঁপে ওঠা দেয়ালের পাঁজরা, চিমনির শব্দে বা কাননের কান্নায় সর্বত্রই হাওয়ারা তাদের বাড়ি কোথায় তা জিজ্ঞাস করেছে, কিন্তু কোনো উত্তর তারা পায়নি। কোথায় গেলে তারা তাদের বাড়ির সন্ধান পাবে তাও তারা জানে না। তাই তারা চিরকাল বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ায় আর বাড়ির খোঁজ করে। 

.. “চিরকাল উত্তাল তাই রে”-কে চিরকাল উত্তাল ? কেন সে চিরকাল উত্তাল হয়ে রইল

উঃ বুদ্ধদেব বসুর ‘হাওয়ার গান কবিতায় প্রশ্নোক্ত উক্তি অনুসারে হাওয়ারা চিরকাল উত্তাল। 

 হাওয়াদের কোনো বাড়ি নেই। ফলে তাদের কোনোখানে স্থিতি নেই। তারা সর্বত্র ঘুরে বেড়ায়। তারা পৃথিবীর জল-স্থল, পাহাড়, বনজঙ্গল, নগরের কোলাহলময় পরিবেশ, শূন্য মাঠ সব জায়গাতে তাদের বাড়ির খোঁজ করেছে। কিন্তু, কোথাও তারা তাদের বাড়ির সন্ধান পায়নি। তাদের বিশ্রাম নেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। তারা চিমনির নিস্বনে এবং কাননের ক্রন্দনে তাদের বাড়ির খোঁজ করেছে, কিন্তু সন্ধান তারা পায়নি। তাই তারা অবিরাম উন্মাদের মতো উত্তাল হয়ে ছুটে বেড়ায়। তাদের জীবনে কোনো স্থিতি, বিশ্রাম না-থাকায় তারা চিরকাল উত্তাল। 

. কবিতাটির নামহাওয়ার গানদেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী যুক্তি কবির মনে এসেছিল বলে তোমার মনে হয়

উঃ  কবি বুদ্ধদেব বসু কবিতাটির নাম রেখেছেন ‘হাওয়ার গান’। এই নামকরণ করার পিছনে যে-সমস্ত যুক্তিকে তিনি মনে স্থান দিয়েছিলেন সেগুলি হল— 

প্রথমত : কবিতাটিতে হাওয়ারা তাদের নিজেদের কথা নিজের মুখেই বলেছে। 

দ্বিতীয়ত : সমস্ত কবিতাটিতে হাওয়াদের কথাই বলা আছে। তাদের বাড়ি নেই। তারা তাদের বাড়ির খোঁজ করতে বিভিন্ন জায়গাতে বৃথাই ঘুরে বেড়িয়েছে। কোথায় কোথায় গেছে বা কী দৃশ্য তাদের চোখে পড়েছে সমস্তটাই তারা নিজেরাই বলে গিয়েছে। 

তৃতীয়ত : হাওয়াদের যে বাড়ি নেই, সেই কথাটিকে তারা কবিতার মধ্যে দু-বার বলেছে, ঠিক যেন গানের মতো করে। গানে যেমন কলির পুনরাবৃত্তি করা হয়, তেমনিভাবে এখানেও ‘বাড়ি নেই’ শব্দদ্বয়ের পুনরাবৃত্তি। করা হয়েছে। তাই কবি কবিতাটির নাম ‘হাওয়ার গান রেখেছেন বলে আমার মনে হয়। 

৫নীচের পঙক্তিগুলির মধ্যে ক্রিয়াকে চিহ্নিত করো এবং অন্যান্য শব্দগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক দেখাও

. ঘরে ঘরে জ্বলে যায় স্বপ্নের মৃদু মোম। 

জ্বলে যায় = ক্রিয়াপদ। ‘ঘরে ঘরে’ শব্দদ্বয়ের সঙ্গে তার ‘অধিকরণ কারকগত’ সম্পর্ক এবং মৃদু মোম’ শব্দদ্বয়ের সঙ্গে তার ‘কর্মকারকগত সম্পর্ক। 

. আঁধারে জাহাজ চলে।

চলে = ক্রিয়াপদ। ‘আঁধারে’ শব্দটির সঙ্গে ‘অধিকরণ কারকগত সম্পর্ক এবং ‘জাহাজ’ শব্দটির সঙ্গে ‘কর্তৃকারকগত সম্পর্ক।

. শার্সিতে কেঁপেওঠা দেয়ালের পঞ্জর। 

কেঁপে ওঠা = ক্রিয়াপদ। ‘শার্সিতে’ শব্দটির সঙ্গে ‘অধিকরণ কারকগত’ সম্পর্ক। ‘পঞ্জর’ শব্দটির সঙ্গে কর্তৃকারকগত সম্পর্ক। 

. অকূল অন্ধকারে ফেটে পড়ে গর্জন।  

ফেটে পড়ে = ক্রিয়াপদ। ‘অকূল অন্ধকারে’ শব্দদ্বয়ের সঙ্গে ক্রিয়ার ‘অধিকরণ কারকগত সম্পর্ক। ‘গর্জন’ শব্দটির সঙ্গে ক্রিয়ার ‘কর্তৃকারকগত সম্পর্ক। 

বন্দর, বন্দর নগরের ঘন ভিড়‘—পঙক্তিটির প্রথমে একই শব্দ দুবার ব্যবহার করা হয়েছে। এই রকম আরও চারটি পঙক্তি উদ্ধৃত করো। কবিতার ক্ষেত্রে এই ধরনের শব্দ ব্যবহারের কৌশল অবলম্বনের কারণ কী

উঃ  কবিতার মধ্যে একই শব্দ দুবার ব্যবহৃত হয়েছে এমন চারটি পঙক্তি হল—–

 ১. ছুঁয়ে গেছি বার-বার দুর্বার ইচ্ছায়। 

২. ঘরে ঘরে জ্বলে যায় স্বপ্নের মৃদু মোম।

৩. কেঁদে কেঁদে মরি শুধু ভাইরে। 

৪. খুঁজে খুঁজে ঘুরে ফিরি বাইরে।

কবিতার ক্ষেত্রে এই ধরনের শব্দ ব্যবহারের কৌশল অবলম্বনের কারণ হল—একই শব্দ পর পর দু-বার ব্যবহার করে অর্থগত বৈচিত্র্য সম্পাদন করা যায়। এ ছাড়া কবিতার পঙক্তিকে শ্রুতিমধুর করা যায়। অনেক সময় একই শব্দ দুবার বসিয়ে অলংকার সৃষ্টির মাধ্যমে কবিতায় গতি-সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং শুতিমধুর ধ্বনির ঝংকার সৃষ্টি করা হয়। 

ধ্বনি পরিবর্তনের দিক থেকে শূন্য অংশগুলি পূর্ণ করো :

চন্দ্র   > চন্ন > চাঁদ 

রাত্রি > রাত্তির

পঞ্জর > পাঁজর

হাওয়ার গান কবিতায় ব্যবহৃত পাঁচটি ইংরেজি শব্দ লেখো। এই শব্দগুলির বদলে দেশি/বাংলা শব্দ ব্যবহার করে পঙক্তিগুলি আবার লেখো। 

উঃ ‘হাওয়ার গান কবিতায় ব্যবহৃত পাঁচটি ইংরেজি শব্দ হল পার্ক; চিমনি; কার্পেট; সিনেমা; ডেক। 

পার্ক = (উদ্যান)—উদ্যানের বেঞ্চিতে ঝরা পাতা ঝঝর। 

চিমনি = (ধু নালি)—ধূম্র নালির নিস্বনে, কাননের ক্রন্দনে। 

কার্পেট = (গালিচা)-আবছায়া গালিচা কুকুরের তন্দ্রায়।

সিনেমা = (চলচ্চিত্র)—যাত্রীরা চলচ্চিত্রে কেউ নাচে, গান গায়। 

ডেক = (জাহাজের পাটাতন)—অবশেষে থামে সব, জাহাজের পাটাতন হয় নির্জন।

গাছের কথা |অষ্টম শ্রেণী |প্রশ্ন-উত্তর সমাধান| Gacher Kotha| Class 8| Question-Answer Solved

0

গাছের কথা

জগদীশচন্দ্র বসু

বিষয়সংক্ষেপ

লেখক জগদীশচন্দ্র বসু যখন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদেরকে নিবিড়ভাবে ভালোবেসেছেন, তখন থেকে তাঁর জীবনের একাকিত্ব দূরীভূত হয়েছে এবং তাদের জীবনের অনেক কথাই তিনি বুঝতে পেরেছেন। আমাদের মতো তারাও যে আহার করে বেড়ে ওঠে, পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে, কষ্টে পড়ে কখনোকখনো এদের মধ্যে কেউ কেউ চুরি ডাকাতি করে তা তিনি উপলদ্ধি করতে পারেন। তিনি লক্ষ করেছেন “গাছের জীবন মানুষের জীবনের ছায়ামাত্র।” এই প্রসঙ্গে তিনি জীবন বলতে বোঝাতে চেয়েছেন, গতিশীলতাকে। তবে কখনো-কখনো জীবন সুপ্ত অবস্থায় থাকে। মাটি, জল ও উত্তাপের সংস্পর্শে তা অঙ্কুরে পরিণত হয়। ডিমের মধ্যে জীবন যেমন সুপ্ত অবস্থায় থাকে, তেমনই গাছের বীজও একপ্রকার কঠিন ঢাকনারূপী আবরণ যার মধ্যে প্রাণ সুপ্ত অবস্থায় থাকে এবং উপযুক্ত পরিবেশে তা অঙ্কুরিত হয়। নানা উপায়ে বীজ ছড়িয়ে পড়ে মাটিতে। কখনো পাখিদের দ্বারা, কখনো বা বাতাসের দ্বারা। প্রত্যেকটি বীজ থেকেই যে গাছ জন্মায়, তা বলা যায় না। মূলত অঙ্কুর বের হতে গেলে জল, মাটিও উত্তাপের প্রয়োজন। এক-এক বীজ এক-এক সময়ে পাকে এবং মাটিতে ঝরে পড়ে। মাটিও যেন তাদের কোলে তুলে নেয় এবং মায়ের মতোই পরম আদরে বাইরের ঝড়ঝঞ্চা থেকে মায়ের মতোই রক্ষা করে, লালনপালন করে। 

হাতে কলমে

. জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।

উঃ জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা একটি বইয়ের নাম ‘অব্যক্ত। 

. জগদীশচন্দ্র বসু কী আবিষ্কার করেছিলেন

উঃ জগদীশচন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছিলেন গাছেদেরও প্রাণ আছে। এ ছাড়াও তিনি ক্রেসকোগ্রাফ’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন।

নীচের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটি বাক্যে লেখো

. লেখক কবে থেকে গাছেদের অনেক কথা বুঝতে পারেন

উঃ লেখক যেদিন থেকে গাছেদেরকে ভালোবাসতে শিখেছেন, সেদিন থেকেই গাছেদের অনেক কথা বুঝতে পারেন। 

.ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।কী দেখা যায়

উঃ মানুষের মধ্যে যেসব সদগুণ আছে, গাছেদের মধ্যেও তার কিছু কিছু দেখা যায়। 

. জীবিতের লক্ষণ কী তা লেখকের অনুসরণে উল্লেখ করো। 

উঃ জীবিতের লক্ষণ হল— যা জীবিত তা ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং যার গতি আছে। অর্থাৎ, জীবিতের লক্ষণ। হল— বৃদ্ধি ও গতি। 

.৪। বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।বৃক্ষশিশু কোথায় নিদ্রা যায়

উঃ বীজের উপরে থাকা কঠিন ঢাকনার মধ্যে বৃক্ষ শিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়। 

. অঙ্কুর বের হওয়ার জন্য কী কী প্রয়োজন ?

উঃ অঙ্কুর বের হওয়ার জন্য উপযুক্ত উত্তাপ, জল ও মাটি প্রয়োজন।

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো

.আগে এসব কিছুই জানিতাম না।কোন্ বিষয়টি লেখকের কাছে অজানা ছিল

উঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু যেদিন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদের ভালোবাসতে শিখেছেন, সেদিন থেকেই তিনি গাছেদের অনেক কথাই বুঝতে পারেন। তিনি বুঝেছিলেন, গাছেরা কথা না বললেও এদেরও একটা জীবন আছে। আমাদের মতো এরাও যে আহার করে এবং দিন দিন বেড়ে ওঠে, তাও তিনি বুঝতে পারেন। আগে তিনি এসব কিছুই জানতে পারতেন না। 

.ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।‘ —কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের মধ্যে কী লক্ষ করা যায় ?  

উঃ আলোচ্য অংশে উদ্ভিতের কথা বলা হয়েছে।

আমাদের জীবনে যেমন মাঝে মাঝে অভাব, দুঃখ ও কষ্ট দেখা যায়, তেমনই এদের মধ্যেও সেগুলি দেখা যায়। কষ্টে পড়ে এরাও আমাদের মতো কেউ কেউ চুরি-ডাকাতি করে। মানুষের মধ্যে যেমন সচরাচর কিছু কিছু সদগুণ লক্ষ করা যায়, তেমনই এদের মধ্যেও সেই সমস্ত সদগুণের প্রকাশ লক্ষ করা যায়। 

.গাছের জীবন মানুষের ছায়ামাত্র।লেখকের এমন উক্তি অবতারণার কারণ বিশ্লেষণ কর।

উঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু গাছকে নিবিড়ভাবে ভালোবেসে তাদের জীবনের বিভিন্ন দিকগুলিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর থেকে তাঁর মনে হয়েছে, গাছের বৈশিষ্ট্যগুলি মানুষের মধ্যেকার নানান স্বভাব বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। মানুষের মতো এদের জীবনেও অভাব-অনটন এবং দুঃখকষ্ট আছে। অভাবে পড়ে এরাও মানুষের মতো চুরি-ডাকাতি করে। মানুষের মধ্যে যেমন সদগুণ আছে, এদের মধ্যেও সেই সগুণের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যায়। এরাও একে অন্যকে সাহায্য করে। এদের মধ্যেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেখা যায়। মানুষের প্রধান গুণ। হল— স্বার্থত্যাগ। এই গুণটি গাছেদের মধ্যেও লক্ষ করা যায়। মনুষ্য সমাজে মা তার নিজের জীবন দিয়ে সন্তানের জীবন রক্ষা করে। উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও এই মানবিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় মেলে। এই সমস্ত লক্ষণের প্রতি দৃষ্টিপাত করে জগদীশচন্দ্র বসু বলেছেন, “গাছের জীবন মানুষের জীবনের ছায়ামাত্র”। 

. জীবনের ধর্ম কীভাবে রচনাংশটিতে আলোচিত ব্যাখ্যাত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।

উঃ ‘গাছের কথা’ নামক রচনায় বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বসু গাছের জীবনধর্মের আলোচনা প্রসঙ্গে জীবনের স্বাভাবিক ও সাধারণ ধর্ম সম্পর্কে সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। শুকনো ডাল আর জীবিত গাছের তুলনা করে তিনি বলেছেন— বিকাশ, বৃদ্ধি ও গতি হল জীবনের ধর্ম। শুকনও ডালের এই বৈশিষ্ট্য নেই।‘গতি’ বোঝাতে লেখক লতানো গাছের উদাহরণ দিয়েছেন। বিকাশ ও পরিণতি যে প্রাণের ধর্ম— তা বোঝাতে তিনি বীজ ও ডিমের কথা বলেছেন। উত্তাপ, জল ও মাটির সংস্পর্শে বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম হয় এবং তা থেকে যথাসময়ে চারাগাছ বৃদ্ধি পেয়ে পরিণতো হয়ে ওঠে। অনুরূপভাবে, মানব জীবনেও উপযুক্ত পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। 

., নানা উপায়ে গাছের বীজ ছড়াইয়া যায়। উপায়গুলি পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলোচনা করো। 

উঃ বীজ ছড়ানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে লেখক জানিয়েছেন প্রথমত, পাখিরা ফল খেয়ে দূর দূর দেশে বীজ নিয়ে যায়। ফলে অনেক জনমানবহীন দ্বীপেও গাছ জন্মে থাকে। এ ছাড়া অনেক সময় বীজ প্রবল বাতাসে উড়ে গিয়ে দূর দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত, শিমুল গাছের ফল রৌদ্রে ফেটে যাওয়ার পর তার বীজ তুলোর সঙ্গে উড়ে বেড়াতে থাকে। এইভাবে দিনরাত দেশদেশান্তরে বীজ ছড়িয়ে পড়ছে। 

. লেখক তার ছেলেবেলার কথা পাঠ্যাংশে কীভাবে স্মরণ করেছেন, তা আলোচনা করো। 

উঃ বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর গাছের কথা নামক প্রবন্ধের শুরুতেই তিনি বলেছেন— ছেলেবেলায় একা মাঠে বা পাহাড়ে বেড়াতে গেলে সবকিছুই যেন খালি খালি লাগত। গাছ, পাখি, কীটপতঙ্গকে লেখক তখনও সেভাবে ভালোবাসতে শেখেননি। পরে যখন ভালোবাসতে শিখলেন, তখন তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বুঝতে পারলেন যে, গাছ কথা না-বললেও এদের জীবন আছে। এরপর শিমুল ফল ফেটে তুলোর সঙ্গে হাওয়ায় উড়তে থাকার ঘটনার উল্লেখ করে তিনি ছোটোবেলার কথা মনে করেছেন। বাতাসে ভাসতে থাকা তুলোর পিছনে তিনি যখন ছুটোছুটি করতেন, সেগুলি বাতাসের গতিতে এদিক-ওদিক চলে যেত। হাত বাড়িয়ে ধরা সম্ভব হত না। কিন্তু লেখক এর মধ্যে খেলার আনন্দ খুঁজে পেতেন। এভাবেই লেখক পাঠ্যাংশে তাঁর ছেলেবেলার কথা স্মরণ করেছেন। 

. ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বীজ পাকিয়া থাকে। উদ্ধৃতিটির সাপেক্ষে নীচের ছকটি পূরণ করো।

১. আম, কাঁঠাল — গ্রীষ্ম ঋতু

২. লিচু, জাম — গ্রীষ্ম ঋতু

৩. তাল — বর্ষা ঋতু 

৪. ধান — শরৎ ও হেমন্ত ঋতু

৫. কূল — বসন্ত ঋতু 

. পৃথিবী মাতার ন্যায় তাহাকে কোলে লইলেন।বিশ্বপ্রকৃতি সম্পর্কে লেখকের গভীর উপলব্ধি উদ্ধৃতিটিতে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা করো।

উঃ  জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানী হলেও তাঁর মধ্যে ভারতীয় দর্শন চেতনা ছিল প্রবল। ভারতীয় দর্শনে প্রকৃতির মধ্যে মাতৃত্বসত্তার প্রকাশ লক্ষ করা যায় । তাই গাছের কথা’ প্রবন্ধে প্রাকৃতিক ঘটনার মধ্যে মাতৃসত্তার বিকাশকে লক্ষ করেছেন লেখক। বিশ্ব প্রকৃতিকে লেখক মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। মা যেমন সন্তানকে পরম স্নেহে কোলে তুলে নেয় এবং সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে সন্তানকে আড়াল করে তাকে লালিত পালিত করে, বিশ্ব প্রকৃতিও তেমনই গাছের বীজকে সন্তান স্নেহে কোলে তুলে নেয়। তার ধুলো ও মাটি দ্বারা তাকে আবৃত করে রাখে এবং শীত ও ঝড়ের হাত থেকে তাকে রক্ষা করে। মায়ের মতো বিশ্বপ্রকৃতিও বীজরূপী সন্তানকে ধীরে ধীরে জল-আলো-বাতাস ও মাটি দ্বারা ছোট্ট চারা গাছ থেকে বৃহৎ বৃক্ষে পরিণত করে। এভাবে বিশ্বপ্রকৃতি যথার্থ মায়ের ভূমিকা পালন করে। 

. প্রত্যেক বীজ হইতে গাছ জন্মে কিনা, কেহ বলিতে পারে না। বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি আলোচনা করো। 

উঃ বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি হল—উত্তাপ, জল ও মাটি। প্রতিটি বীজ থেকে গাছ জন্মায় কিনা তা কেউ বলতে পারে না। কারণ, কোনো বীজ হয়তো পাথরের ওপর পড়ল, ফলে সেখানে সেই বীজ থেকে অঙ্কুর বের হওয়া সম্ভব হল না। যতক্ষণ মাটির সংস্পর্শে উপযুক্ত স্থানে বীজ পড়ে—ততক্ষণ পর্যন্ত তা থেকে অঙ্কুর জন্মাতে পারে না। জল ছাড়া বীজের অঙ্কুরোদগম সম্ভব হয় না। জল শোষণ করেই বীজ থেকে গাছ জন্মায়।

.১০তখন সব খালি খালি লাগিত।‘—কখনকার অনুভূতির কথা বলা হল ? কেন তখন সব খালিখালি লাগত ? ক্রমশ তা কীভাবে অন্য চেহারা পেল তা পাঠ্যাংশ অনুসরণে বুঝিয়ে দাও। 

উঃ লেখক জগদীশচন্দ্র বসু যখন একা একাই মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াতে যেতেন, তখনকার অনুভূতির কথা বলা হয়েছে।  

তখন সব খালি খালি লাগত কারণ তখন তিনি গাছ পাখি বা কীটপতঙ্গদেরকে নিবিড়ভাবে ভালোবাসতে পারেননি। ফলে তাদের সঙ্গে তাঁর হার্দিক সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি। তাই সব খালি খালি লাগত।  

লেখক যখন থেকে গাছ, পাখি ও কীটপতঙ্গদের গভীরভাবে ভালোবেসেছেন, তখন থেকেই তাদের জীবনের অনেক কথা তিনি বুঝতে পারেন। তারাও যে আমাদের মতো আহার করে, দিন দিন বেড়ে ওঠে, মানুষের মতো তাদেরও যে আলাদা আলাদা চরিত্র-বৈশিষ্ট্য আছে, তা তিনি বুঝতে পারলেন। ফলে, তার একাকিত্ব আর হয় না।

নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন কর  

. আগে যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে যাইতাম, তখন সব খালি খালি লাগিত।(সরল বাক্যে

উঃ আগে একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াইতে গেলে সব খালি খালি লাগত। 

. তাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি, আগে যাহা পারিতাম না। (হাসূচক বাক্যে

উঃ তাহাদের অনেক কথা বুঝিতে পারি, আগে যাহা বুঝিতে অপারগ ছিলাম। 

. ইহাদের মধ্যেও আমাদের মতো অভাব, দুঃখকষ্ট দেখিতে পাই। (জটিল বাক্যে)

উঃ আমাদের মধ্যে যে অভাব, দুঃখকষ্ট আছে ইহাদের মধ্যেও তাহা দেখিতে পাই। 

. তোমরা শুষ্ক গাছের ডাল সকলেই দেখিয়াছ। (নাসূচক বাক্যে)  

উঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেহ নাই যারা শুষ্ক গাছের ডাল দ্যাখো নাই। 

.৫। প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায়, কে বলিতে পারে ? (প্রশ্ন পরিহার কর

উঃ প্রবল বাতাসের বেগে কোথায় উড়িয়া যায়, কেহ বলিতে পারে না।

নীচের শব্দগুলির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো : কীটপতঙ্গ, স্বার্থত্যাগ, বৃক্ষশিশু, বনজঙ্গল, জনমানবশূন্য, দিনরাত্রি, দেশান্তরে, নিরাপদ।

 কীটপতঙ্গ = কীট ও পতঙ্গ – দ্বন্দ্ব সমাস। 

 স্বার্থত্যাগ = স্বার্থকে ত্যাগ —কর্ম তৎপুরুষ সমাস

 বৃক্ষশিশু = বৃক্ষের শিশু — সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস। 

 বনজঙ্গল = বন ও জঙ্গল— সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস।

 জনমানবশূন্য = জনমানব শূন্য যে স্থান — কর্মধারয় সমাস। 

 দিনরাত্রি = দিন ও রাত্রি — বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব সমাস।

 দেশান্তরে = অন্য দেশে – নিত্য সমাস। 

 নিরাপদ = নয় আপদ — নঞ-তৎপুরুষ সমাস।

নিম্নেরেখাঙ্কিত অংশের কারকবিভক্তি নির্দেশ করো :

. ইহাদের মধ্যে একের সহিত অপরের বন্ধুত্ব হয়।

বন্ধুত্ব = কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি। 

. আর কিছুকাল পরে ইহার চিহ্নও থাকিবে না। 

 ইহার = সম্বন্ধপদে ‘র’ বিভক্তি। 

. বীজ দেখিয়া গাছ কত বড়ো হইবে বলা যায় না।

বীজ = কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি। 

. মানুষের সর্বোচ্চ গুণ যে স্বার্থত্যাগ, গাছে তাহাও দেখা যায়।  

গাছে = অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

সন্ধিবদ্ধ পদগুলি খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো

. তাহার মধ্যে বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়। 

 নিরাপদে = নিঃ + আপদে। 

. অতি প্রকাণ্ড বটগাছ সরিষা অপেক্ষা ছোটো বীজ হইতে জন্মে। 

 অপেক্ষা = অপ + ইক্ষা।

. এই প্রকারে দিনরাত্রি দেশদেশান্তরে বীজ ছড়াইয়া পড়িতেছে। 

 দেশান্তরে =দেশ + অন্তরে।

দাঁড়াও|অষ্টম শ্রেণী|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান | Darao| Class 8| Question-Answer Solved

0

দাঁড়াও

শক্তি চট্টোপাধ্যায়

 বিষয়সংক্ষেপ

‘মানুষ’ শব্দটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে ‘মান’ ও ‘হুশ’ এর অর্থ। কিন্তু যত মানুষ আধুনিকতার শিখরে উত্তীর্ণ হয়েছে, ততই মানুষ হয়ে উঠেছে আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, সুযোগসন্ধানী ও ক্ষমতালোভী। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ‘দাঁড়াও’ কবিতাটির মধ্যে মানুষের মানবিকতার অবক্ষয়ের দিকটিকে তুলে ধরেছেন। মনুষ্যত্ব, বিবেকবোধ ইত্যাদি যেগুলি মানুষের সদগুণ বলে বিবেচিত, সেইসমস্ত গুণসম্পন্ন মানুষকে তিনি অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সমস্ত মানুষের কথা কবি সর্বদা মনে করেন এবং যেভাবেই হোক, প্রতিটি মানুষ প্রতিটি মানুষের পাশে এসে যেন দাঁড়ায় এটাই কবির একমাত্র প্রার্থনীয় বিষয়।
আসলে কবি বিশ্বাস করেছেন, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে হোক কিংবা নিঃসঙ্গতা, অসহায়তায় মানুষ যেন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, নিঃসঙ্গতার সঙ্গী হয়, ব্যথিত মানুষের সমব্যথী হয়ে ওঠে।

হাতেকলমে

. শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন

উঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। 

. তাঁর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখো।  

উঃ তাঁর লেখা একটি উপন্যাসের নাম হল- ‘অবনী বাড়ি আছো?”

নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও

.মতোশব্দ ব্যবহার করা হয় কখন ? তোমার যুক্তির পক্ষে দুটি উদাহরণ দাও।

উঃ দুটি বিষম বস্তুর সঙ্গে তুলনা বোঝাতে বা সাদৃশ্য কিংবা বৈসাদৃশ্য কল্পনা করতে ‘মতো’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। যেমন – তার গাঁয়ের রঙ্গ দুধের মতো সাদা অর্থাৎ তার অঙ্গের রঙ্গ ও দুধের রঙ্গের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

আমাদের পাঠ্য কবি জীবনানন্দ দাশের ‘পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ কবিতা থেকে উদাহরণ দিয়ে বলা যায়—“নকশাপেড়ে শাড়িখানা মেয়েটির রৌদ্রের ভিতর/হলুদ পাতার মত সরে যায়” কবি এখানে রৌদ্রের ভিতর মেয়েটির শাড়ির সঙ্গে জীর্ণ, হলুদ পাতার তুলনা করে ‘মতো’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। 

. কবি পাখির মতো পাশে দাঁড়াতে বলছেন কেন

উঃ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়  জীবনকে কঠিন বাস্তবের মাটি থেকে দেখেছেন। তিনি বলেছেন, মানুষ আসলে অসহায় ও বড়ো একা। ফলে তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতাকে পরিত্যাগ করে মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে পাখির আছে স্বাধীনতা, গতিবেগ ও চঞ্চলতা। পাখিদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা বা বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব নেই। নেই সামাজিক জটিলতার স্পর্শ। তাই কবি পাখির মতো মানুষকে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে বলেছেন। 

.মানুষই ফাঁদ পাতছে‘—কবি কথা কেন বলেছেন ? ‘মানুষশব্দের সঙ্গেধ্বনি যোগ করেছেন কেন তোমার কী মনে হয় ?

উঃ সমাজসচেতন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় সমাজের বিকৃতি ও ব্যভিচার দেখে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। এই সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষের মধ্যে থেকে মনুষ্যত্ববোধ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। একে অপরকে আক্রমণ করার জন্য, ঠকাবার জন্য মানুষ যেন জাল পেতে আছে। তাই কবি এখানে বলেছেন—“মানুষই ফাঁদ পাতছে”।

‘মানুষ’ শব্দের সঙ্গে ‘ই’ ধ্বনি যোগ করে মানুষকেই দায়ী করতে চেয়েছেন কবি। এই পৃথিবীতে মানুষ হল শ্রেষ্ঠ জীব। মানুষের মধ্যে দয়া-মায়া, ভদ্রতানম্রতা, পারস্পরিক সাহায্য-সহানুভূতি ইত্যাদির প্রকাশ লক্ষ করা যায়। আবার এই মানুষই মানুষকে ঠকায়, শোষণ করে, খুন করে। মানুষের প্রতি মানুষের বর্বরতার কথা জোর দিয়ে বোঝাতেই কবি ‘ই’ ধ্বনিটি যোগ করেছেন। 

. তোমার মতো মনে পড়ছে’ –এই পঙক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ কী

উঃ আলোচ্য পঙক্তিটির মাধ্যমে কবি মানুষের অসহায়তার কথাটিকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। অবক্ষয়ী সমাজে মানুষ বড় একলা হয়ে পড়েছে। মানুষের ওপর শোষণ-পীড়ন চালাচ্ছে আরেক দল মানুষ। সামাজিক বিকৃতি ও ব্যভিচার যেন মানুষকে গ্রাস করে ফেলেছে। মানুষ ক্রমশ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। অথচ, এই মানুষেরই মধ্যেই আছে বহু সদগুণের সমাবেশ। মানুষের মধ্যে যে-সমস্ত সদগুণগুলি আছে—সেই গুণগুলিরই বহিঃপ্রকাশ কামনা করছেন কবি, সেই মানবিক মানুষের কথাই কবির মনে পড়ছে। 

.এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও”– এই পঙক্তিটির বিশেষত্ব কোথায় ? এই ধরনের দুটি বাক্য তুমি তৈরি কর। 

উঃ আলোচ্য পৃঙক্তিটির বিশেষত্ব নানাভাবে লক্ষণীয়।প্রথমত, ‘এসে,ভেসে’, ‘বেসে’—তিনটিই অসমাপিকা ক্রিয়াপদ সম্পূর্ণ বাক্যটি তিনটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদ দ্বারা গঠিত। দ্বিতীয়ত, শব্দগুলির মধ্যে একটি ছন্দগত মিল লক্ষ করা যায়।

এমন ধরনের দুটি বাক্য হল— (ক) দিয়ে থুয়ে তুমি খেয়ে নাও।(খ) হেঁটে যাও ছুটে যাও তারপর জু যাও। 

মানুষ বড়ো কাঁদছে”—কী কারণে কবি এই কথা বলেছেন?

উঃ সমগ্র পৃথিবী জুড়েই চলছে বিশ্বযুদ্ধ, ঠান্ডা লড়াই, বিচ্ছিন্নতাবাদ, উগ্রপন্থী মানসিকতা ও ধর্মের লড়াই। সমাজমনস্ক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় জীবনকে দেখেছেন কঠিন বাস্তবের মাটি থেকে। সেহেতু সমাজের বিকৃতি ও ব্যভিচার দেখে কবি মর্মাহত। সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে স্বার্থান্বেষী মানুষরা মেতে উঠেছে অত্যাচার ও উৎপীড়নের খেলায় । তারা বিচ্ছিন্ন ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে জীবন যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ছে। এই সমস্ত মানুষদের জন্য কবি খুবই মর্মাহত হয়েছেন। তাই তিনি বলেছেন সমগ্র মানবজাতি অসহায়ের মতো কাঁদছে।

মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও এই পঙক্তিটিকে তিনবার ব্যবহার করার কারণ কী হতে পারে বলে তোমার মনে হয়

উঃ আলোচ্য পঙক্তিটিকে সমগ্র কবিতায় তিনবার ব্যবহার করে কবি দুটি বিষয়কে তীব্রতর করে তোলার চেষ্টা করেছেন। একটি হল ‘মানুষ বড়ো একলা অর্থাৎ মানুষের অসহায়তা, একাকিত্ব বার বার ফুটিয়ে তোলার জন্য এই বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছে।দ্বিতীয়টি হল ‘তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও  অর্থাৎ, মানুষের দ্বারাই তার এই অসহায় অবস্থা নিরাময় করার প্রচেষ্টা করা উচিত। তাই আলোচ্য বাক্যটিকে তিনটি অনুচ্ছেদে তিনবার ব্যবহার করে কবি তাঁর বক্তব্যকে খুব জোরালো, স্পষ্টতর ও প্রবলতর করার চেষ্টা করেছেন। 

কবিতাটির নামদাঁড়াওকতটা সার্থক ? কবিতাটির নামমানুষ বড়ো কাঁদছেহতে পারে কি তোমার উত্তরের ক্ষেত্রে যুক্তি দাও।  

উঃ নামকরণ যখন বিষয়কেন্দ্রিক হয়ে ওঠে, তখন সাহিত্যের নামকরণ-এর মধ্য দিয়ে বিষয়বস্তুর গভীরে সরাসরি প্রবেশ করা সম্ভব হয়। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় আলোচ্য কবিতাটির নাম রেখেছেন ‘দাঁড়াও। নামকরণ করার ক্ষেত্রে যে-বিষয়গুলি বিবেচ্য, কাহিনির ব্যঞ্জনাধর্মিতা তাদের মধ্যে একটি, যেটি প্রদত্ত কবিতার ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়েছে। কবিতাটির কাহিনির দিকে নজর দিলে দেখা যায়, অবক্ষয়ী সমাজে জীবন-যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। সুতরাং, মানুষ হয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার-উৎপীড়ন না-চালিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে কবির ধারণা কবিতাটির মূল বিষয় হল—মানুষ অসহায় হয়ে কাঁদছে। ফলে মনুষ্যত্ব ও বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষ সেই অসহায় ক্রন্দনরত মানুষের পাশে এসে দাঁড়াক। সমগ্র কবিতাটির বক্তব্য-বিষয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টিতে কবি বেশি জোর দিয়েছেন। কারণ, যেভাবেই হোক এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও”—মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এটি একটি আকুল আবেদন। তাই কবিতাটির নামকরণ ‘দাঁড়াও’ অত্যন্ত সুপ্রযুক্ত ও সার্থক হয়েছে।

কবি কাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করছেন বলে তোমার মনে হয় ?

উঃ  প্রদত্ত কবিতাটিতে কবি মানুষকেই মনুষ্যত্ববোধ, শুভ চেতনা ইত্যাদি সদগুণগুলির জাগরণের মধ্য দিয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছেন। এই বোধই পারে মানুষকে অমানুষিক তথা বর্বর আচরণ থেকে মুক্ত করতে। বর্তমান সময়ে কিছু মানুষ হিংসায় মত্ত হয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার করতে কুণ্ঠিত হয় না। তাই কবি বিবেকবান মানুষকে সেই সমস্ত উৎপীড়িত অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। 

কবিতাটি চলিত বাংলায় লেখা, শুধু একটা শব্দ সাধু ভাষার। শব্দটি খুঁজে বার করো এবং শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করেছেন কেন কবি

উঃ আলোচ্য কবিতাটি চলিত ভাষায় লেখা। শুধু একটিমাত্র শব্দ সাধুভাষায় লেখা, সেটি হল ‘তাহার।  

শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করে কবি সম্ভবত অসহায় মানুষদের বিশেষভাবে চিহ্নিত করতে চেয়েছেন। নিত্য ব্যবহার্য শব্দের বদলে বা তার পাশাপাশি সাধু শব্দ ‘তাহার’ ব্যবহার করে বক্তব্যকে আরও গভীর করে তুলতে চেয়েছেন কবি। সম্ভবত, এ কারণেই তিনি কবিতার মধ্যে ওই জাতীয় শব্দ ব্যবহার করেছেন। আসলে ‘তার’ শব্দের পরিবর্তে ‘তাহার’ শব্দের বিস্তৃতি অনেক বেশি। তাই, চলিত ভাষার মধ্যে সাধু শব্দের ব্যবহার সেই ব্যপ্তিকেই ব্যঞ্জিত করে তোলে। 

প্রথম স্তবকের তিনটি পঙক্তির প্রত্যেকটির দলসংখ্যা কত ? প্রতিটি পঙক্তি টি রুদ্ধদল মুকদল নিয়ে তৈরি

প্রথম চরণ = মানুষ বড়ো কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও-মানুষ (মানুষ), বড়ো (বডো), কাঁদছে (কাঁদ-ছে), তুমি (তুমি), মানুষ (মানুষ), হয়ে (হ-য়ে), পাশে (পা-শে), দাঁড়াও (দাঁড়াও), দলসংখ্যা—১৬টি। 

দ্বিতীয় চরণ = মানুষই ফাঁদ পাতছে, তুমি পাখির মতো পাশে দাঁড়াও—মানুষই (মা-নুষ-ই), ফাঁদ (ফাঁদ), পাতছে (পাত-ছে), তুমি (তুমি), পাখির (পাখির), মতো (ম-তো), পাশে (পা-শে), দাঁড়াও (দা-ড়াও), = দলসংখ্যা ১৬টি। ) 

তৃতীয় চরণ = মানুষ বড়ো একলা তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও—মানুষ (মা – নুষ), বড়ো (ব – ড়ো), একলা (এক – লা), তুমি (তু – মি), তাহার (তা – হার), পাশে (পা – শে), এসে (এ – সে), দাঁড়াও (দাঁ – ডাও), = দলসংখ্যা—১৬টি।  

প্রথম স্তবকের তিনটি পঙক্তির প্রত্যেকটির দল সংখ্যা ১৬ (যোলো)। প্রথম পঙক্তি—১২ টি মুক্তদল এবং ৪টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।

দ্বিতীয় পঙক্তি—১১টি মুক্তদল এবং ৫টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।

তৃতীয় পঙক্তি—১২ টি মুক্তদল এবং ৪টি রুদ্ধদল নিয়ে গঠিত।

কী ঘটেছে লেখো : সন্ধ্যা < সন্ধে। ফাদ < ফাঁদ।  

সন্ধ্যা < সন্ধে (স্বরসংগতি)। 

ফাদ > ফাঁদ (নাসিক্যীভবন)।

Click Here To Download  The PDF

কার দৌড় কদ্দুর। সপ্তম শ্রেনী। প্রশ্ন-উত্তর সমাধান| Kar Dour Koddur| Class 7| Question-Answer Solved|

9

কার দৌড় কদ্দুর

শিবতোষ মুখোপাধ্যায়

ঠিক উত্তরটি নির্বাচন কর

১.১ উপনিষদে উক্তচরৈবেতিশব্দের অর্থ ( যাত্রা থামাও/ এগিয়ে যাও/ দাঁড়িও না)

উঃ এগিয়ে যাও

১.২ পৃথিবী যে নিজের কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে ঘোরে তা প্রথম বলেন ( গ্যালিলিও/ কোপারনিকাস/ সক্রেটিস)

উঃ কোপারনিকাস

১.৩ ভাস্কোডা গামা ছিলেন ( মার্কিন/ পোর্তুগিজ/ গ্রিক)

উঃ পোর্তুগিজ

১.৪ যে বৈজ্ঞানিক কারনেআপেল দৌড়ায় মাটির দিকেসেটি হল ( মাধ্যাকর্ষন/ প্লবতা/ সন্তরননিয়ম)

উঃ মাধ্যাকর্ষন

১.৫ আইনস্টাইন ছিলেন ( সপ্তদশ/ অষ্টাদশ/ উনবিংশ) শতাব্দীর মানুষ।

উঃ উনবিংশ

শুন্যস্থান পূরণ কর

২.১ এফিড ওড়ার সময় প্রতি সেকেন্ডে চারশো বার ডানা নাড়ায়।

২.২ গমন শক্তিকে বিচার করতে হয় সবসময় দৈহিক ওজনের মা হিসাব করে।

২.৩ গোবি মরুভুমিতে গ্যাজেলি নামে এক হরিণ আছে।

২.৪ মেরু প্রদেশে টারনস প্রতি বুছরে এগারো হাজার মাইল একবার উড়ে আসে আবার পরে ফিরে যায়।

২.৫ ATP  এঁর পুরো কথাটি হল এডিনোসিন ট্রাইফসফেট।

অতি সংক্ষিপ্ত আকারে নীচের প্রশ্ন গুলির উত্তর দাও

৩.১ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় এমন দুটি প্রাণীর নাম লেখো

উঃ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় এমন দুটি প্রানী হল – অ্যামিবা ও প্যারামিসিয়াম।

৩.২শামুক চলে যাবার সময় রেখে যায় জলীয় চিহ্ন’- সেটি আসলে কি?

উঃ শামুক মাংসল পায়ের সাহায্যে চলাফেরা করে, আর চলার গতিকে সহজ করার জন্য তার দেহ থেকে এক বিশেষ তরল নির্গত হয়। এই তরলের জন্যই শামুকের গতিপথে জলীয় চিহ্ন থাকে।

৩.৩আমাদের নিজেদের শরীরের মধ্যে একরকমের ভবঘুরে সেল আছে’ – সেলটিকে ভবঘুরে বলা হয়েছে কেন?

উঃ ভবঘুরে কথার অর্থ হল যারা নানা স্থানে ঘুরে বেড়ায়। তেমনি আমাদের শরীরের একটি সেল শরীরের নানা স্থানে ঘুরে বেড়ায় দেহে প্রবেশ করা জীবানুকে ধ্বংস করার জন্য। তাই সেলটিকে ভবঘুরে বলা হয়েছে।

৩.৪নানা জাতের খরগোশের মধ্যে গতির তারতম্য দেখা যায়’ – কয়েকটি খরগোশের জাতির নাম লেখো।

উঃ কয়েকটি খরগোশের জাতির নাম হল – বেলজিয়ান হেয়ার, আমেরিকান চিনচিলা, সিল্ভার ফক্স , জ্যাক র‍্যাবিট ইত্যাদি।

৩.৫কোনো কোনো পতঙ্গ উরবার সময় তাদের ডানা প্রচণ্ড জোরে নাড়ে’ – তোমার চেনা কয়েকটি পতঙ্গের নাম লেখ।

উঃ আমার চেনা কয়েকটি পতঙ্গ হল- প্রজাপতি, ফরিং, আরশোলা, মশা, মাছি ইত্যাদি।

৩.৬কত সামুদ্রিক জীব গা ভাসিয়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দেয় তার হিসাব আমরা রাখি না’ – কয়েকটি সামুদ্রিক জীবের নাম লেখ।

উঃ কয়েকটি সামুদ্রিক জীব হল – তিমি, হাঙ্গর, ডলফিন, জেলিফিস, অক্টোপাস ইত্যাদি।

৩.৭রক্ষে এই যে …’ লেখক কোন বিষয়টিকে সৌভাগ্য বলে মনে করেছেন এবং কেনো?

উঃ লেখক জীবনে চলার গতিকে সৌভাগ্য বলে মনে করেছেন। পৃথিবীর কোন প্রানীই তার সেই উৎপত্তি কাল থেকে তার চলা থামায় নি। তাই পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ত্ব বজায় আছে, কারণ চলমানতাই জীবন, আর থেমে যাওয়াই মৃত্যুর সমান।

৩.৮ প্যারামিসিয়াম কীভাবে চলাফেরা করে?

উঃ প্যারামেসিয়াম নামক এককোশী প্রাণীর দেহে অসংখ্য চুলের মতো সরু সরু সিলিয়া আছে। হাজার দাড়ের সাহায্যে নৌকা যেমন গতি পায়, তেমনি প্যারামিসিয়াম ও তার অসংখ্য সিলিয়ার সাহায্যে এগোতে ও পিছোতে পারে।

৩.৯ প্যারামিসিয়াম ছাড়া দুটি এককোষী জীবের নাম বল।

উঃ প্যারামিসিয়াম ছাড়া দুটি এককোষী জীব হল- অ্যা মিবা ও ইউগ্লিনা।

৩.১০তার চলাফেরার ভঙ্গিটি ভারী মজারকার চলার ভঙ্গিতর কথা বলা হয়েছে?  তামজারকীভাবে?

উঃ  অ্যামিবার চলার ভঙ্গির কথা বলা হয়েছে।

             এককোষী অ্যামিবা তার দেহের খানিক প্রোটোপ্লাজম সামনে গড়িয়ে দেয়, ফলে সৃষ্টি হয় ক্ষনপদ। আর এই ক্ষনপদের সাহাজ্যেই সে প্রোটোপ্লাজমকে এগিয়ে দেয়। এই ভাবে তার কয়েক মিনিটে মাত্র কয়েক মিলিমিটার চলার মন্থর গতিকে লেখকের মজার বলে মনে হয়েছে।

৩.১১ গমনে সক্ষম মাছ গমনে অক্ষম প্রাণীর নাম লেখ

উঃ গমনে সক্ষম একটি গাছ হল- ক্ল্যামাইডোমোনাস, গমনে অক্ষম একটি প্রানী হল – স্পঞ্জ।

৩.১২ কয়েকটি হক জাতীয় পাখির নাম লেখো।

উঃ কয়েকটি হক জাতীয় পাখি হল চিল, ঈগল, শিকারী বাজ, প্যাঁচা।

৩.১৩ আফ্রিকার কি জাতীয় পাখি ওড়া ছেড়ে হাটায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে?

উঃআফ্রিকার ইন জাতীয় পাখি কোন এক সময় উড়তে সক্ষম ছিল, কিন্তু এখন তারা ওরা ছেড়ে হাটায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে।

৩.১৪ ক্রমবিকাশের পথ পরিক্রমায় ঘোড়ার আঙ্গুলের কোন পরিবর্তন ঘটেছে?

উঃ ক্রমবিকাশের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে ঘোড়ার পূর্ব পুরুষদের এখনকার মতো পায়ে খুর ছিল না, পাঁচটি করে আঙ্গুল ছিল। কিন্তু বিকাশের পথে আঙ্গুলগুলি অবলুপ্ত হয়ে কেবল মাঝের আঙ্গুলটি খুরে পরিণত হয়েছে।

৩.১৫ পাঠ্যাংশে রয়েছে এমন একটি নিশাচর প্রানীর নাম লেখো।

উঃ পাঠ্যাংশে রয়েছে এমন একটি নিশাচর প্রাণী হল শেয়াল।

টীকা লেখঃ

হিউয়েন সাংঃ হিউয়েন সাং একজন চিনা পর্যটক যিনি বৌদ্ধধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারতবর্ষে আসেন। ভারতে নালন্দা বৌদ্ধবিহারে তিনি পড়াশুনা করেন এবং ভারত থেকে স্বদেশে ফিরে তিনি ভারত ভ্রমণ বিষয়ক একটি গ্রন্থ লেখেন। তার এই গ্রন্থ থেকে তৎকালীন ভারতের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায়।

শ্রীঞ্জান দীপঙ্করঃ আদিনাথ চন্দ্রগর্ভ ৯৮০ খ্রিস্টাব্দে  বাংলাদেশের বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন।মাত্র উনিশ বছর বয়সেই নানা শাস্ত্র পাঠ করে ওদন্তপুরী মহাবিহার থেকে শ্রীঞ্জান উপাধি লাভ করেন।তার জ্ঞানের জন্য তিনি অতীশ উপাধি লাভ করেন। পালরাজা মহীপালের আমলে তিনি বিক্রমশীলা মহাবিহারের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন। পরে তিব্বতে গিয়ে বহু ‘সংস্কৃত’ ও ‘পালি’ ভাষায় লেখা বৌদ্ধগন্থ ‘ভোট’ ভাষায় অনুবাদ করেন।

ভাস্কোডাগামাঃ ভাস্কো- ডা- গামা একজন পোর্তুগিজ পর্যটক। ইনি সমুদ্রপথে সুদুর ইউরোপ থেকে ভারত তথা প্রাচ্য দেশের পথ আবিষ্কার করে ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কালিকট বন্দরে পৌছান।প্রাচি ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য  তার এই ভারতে আগমণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা।

শঙ্করাচার্যঃ কেরল রাজ্যের কালাদি গ্রামে ৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে শঙ্করাচার্যের জন্ম হয়। তিনি অদ্বৈত বেদান্তের চর্চা করেন । মূল উপনিষদের ভাষ্য সহ বহু স্তোত্র তিনি রচনা করেছিলেন। পায়ে হেটে তিনি সমস্ত ভারতের উত্তর-দক্ষিণ- পূর্ব- পশ্চিম পরিভ্রমণ করেন ও চার প্রান্তে চারটি মঠ স্থাপন করেন।

নীচের প্রশ্ন গুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখোঃ

৫.১ প্রানী মাত্রকেই খাবার সংগ্রহ করতে হয়গাছ কীভাবে না দৌড়ে তার খাবার সংগ্রহ করতে পারে?

উঃ সবুজ ক্লোরোফিলযুক্ত গাছ সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে নিজেদের জন্য খাদ্য তৈরী করে। মূলের সাহায্যে গাছ মাটির নীচ থেকে খনিজ লবণ মিশ্রিত জল সংগ্রহ করে গাছের সবুজ পাতায় পাঠিয়ে দেয়।পরিবেশ থেকে সংগৃহিত কার্বন- ডাই- অক্সাইড, পাতার সবুজ ক্লোরোফিল ও সুর্যের আলোর উপস্থিতিতে পাতায় শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি হয়। তাই গাছকে খাদ্য সংগ্রহ করার জন্য আর চলা ফেরা করে বেড়াতে হয় না।

৫.২ প্রবন্ধে লেখক জানিয়েছেন যে খাবার সংগ্রহের কারণেইপ্রানীরা এক জায়গায় স্থানূ না হয়ে দিকে দিকে পরিভ্রমণ করে’ – তুমি কি এই মতটিকে সমর্থন কর? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

উঃ খাবার সংগ্রহের জন্যই প্রানীরা এক জায়গায় স্থাণু না হয়ে নানা স্থানে পরিভ্রমণ করে শিবতোষ মুখোপাধ্যায়ের এই মতটিকে আমি সমর্থন করি।

            কিন্তু শুধুমাত্র খাদ্য সংগ্রহের জন্যই প্রাণীরা ভ্রমণ করে না। আরো কয়েকটি কারণ যেমন- বাসস্থান খোজার জন্য,আত্মরক্ষার জন্য, বংশবিস্তারের জন্য এক কথায় অভিযোজনের জন্য প্রানীদের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করতে হয়। তবে যেহেতু প্রানীরা নিজেদের খাদ্য নিজেরা তৈরি করতে পারে না তাই খাদ্যের সন্ধানও তার পরিভ্রমণ করার একটি কারণ এই বিষয়ে আমি লেখকের সঙ্গে একমত।

৫.৩গমনাগমনের প্রকৃত মাধুর্যতা আমাদের চোখে পড়ে সাধারণত উচ্চতর প্রানীর মধ্যে’- পাঠ্যাংশে উচ্চতর প্রানীদের গমনাগমনের মাধুর্য্য কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা কর।

উঃ লেখক পাঠ্যাংশে নানা উচ্চতর প্রানী যেমন চিতা, নেকড়ে, গ্যাজেলি হরিণ , কুকুর এদের গমন পদ্ধতির বর্ননা করেছেন। এই সব প্রানীদের দ্রুততার সঙ্গে তাদের গমন ভঙ্গিও বিচিত্র। ৩০ পাউন্ড ওজনের চিতা দৌড়ায় ঘন্টায় ৭০ মাইল, অথচ নেকড়ে চিতার সমওজনের হওয়া সত্ত্বেও ঘন্টায় মাত্র ৩৬ মাইল দৌড়ায়। হিপো ১৮০০ পাউন্ড ওজন নিয়ে ঘন্টায় ২০-৩০মাইল যেতে পারে। আবার গ্যাজেলি হরিণ ৮০ পাউন্ড ওজন নিয়ে ঘন্টায়  ৬০ মাইল দৌড়াতে পারে। কেউ পায়ের সাহায্যে , কেউ ডানায় ভর করে ও কেউ পাখনা ব্যবহার করে মাইলের পর ছুটে চলে, ওড়ে বা ভেসে বেড়ায়। এসব প্রানীদের গমনের কৌশল , শারীরিক গঠন, গতিবেগ বৈচিত্রে পূর্ণ।

৫.৪ পথে আমি যে গেছি’ – রবীন্দ্রসংগীতের অনুষঙ্গটি পাঠ্যাংশের কোন প্রসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে?

উঃ ‘ কার দৌড় কদ্দুর’ বিজ্ঞানমূলক প্রবন্ধে  শিবতোষ মুখোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রানীর বিচিত্র গমনের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বাগান শামুকের প্রসঙ্গ এনেছেন। শামুক তাদের প্রসারিত মাংসল পা দিয়ে চলে। চলার সময় পথে রেখে যায় একটা জলীয় পদচিহ্ন। এমন পদচিহ্ন দেখে কি মনে হতে পারে তা কৌতুকের সুরে জানাতে গিয়ে তিনি যুতসই তিনি রবীন্দ্রসঙ্গগীতের প্রসঙ্গ এনেছেন।

৫.৫এরকম মনে করলে ভুল হবে’ – কোন দুটি বিশয়ের ভুল সাপেক্ষে এমন মন্তব্য করা হয়েছে?

উঃ হালকা কোনো পাখির হাওয়ায় তীরের মতো ছুটে চলে যাওয়া, অপরদিকে অত্যধিক ওজন নিয়ে একটি হিপোর কাদা ভেঙ্গে থপথপ করে যাওয়া- এই দুইয়ের গমন প্রসঙ্গে আলোচয় মন্তব্যটি করা হয়েছে। আসলে গমনশক্তির বিচার করতে হয় সর্বদা দৈহিক ওজনের পরিমাণ হিসাব করে।

৫.৬ উচ্চতর জীবেদের পেশি কাজ করার ক্ষেতের কীভাবে শক্তি উৎপাদিত হয়?

উঃ উচ্চতর জীবকুল পেশিসঞ্চালনে তার গমন অঙ্গ নাড়াতে পারে। আর এই পেশি যখন কাজ করে তখন এডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) নামক রাসায়নিক পদার্থের ক্রিয়ায় শক্তি উৎপন্ন হয়।

৫.৭ক্রমবিকাশের ইতিহাসে জানা যায়’- প্রসঙ্গে লেখক কোন তথ্যের অবতারণা করেছেন?

উঃ ক্রমবিকাশের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে ঘোড়ার পূর্ব পুরুষদের এখনকার মতো পায়ে খুর ছিল না, পাঁচটি করে আঙ্গুল ছিল। কিন্তু বিকাশের পথে আঙ্গুলগুলি অবলুপ্ত হয়ে কেবল মাঝের আঙ্গুলটি খুরে পরিণত হয়েছে। লেখক উদ্ধৃত অংশে এই প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন।

৫.৮মনের দৌড়ে মানুষ চ্যাম্পিয়ান’- এমন কয়েকজন মানুষের কথা লেখো যাদের শারীরিক অসুবিধা থাকলেও মনের দৌড়ে সত্যিই তারা প্রকৃত চ্যাম্পিয়ান হয়ে উথেছেন।

উঃ মনের দৌড়ে চ্যাম্পিয়ান এমন কয়েকজন মানুষ হলেন- স্টিফেন হকিং যিনি সম্পুর্ণ অথর্ব হওয়া সত্ত্বেও একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, হেলেন কেলার যিনি অন্ধ ও বধির হওয়া সত্ত্বেও সমাজসেবামূলক কাজে বিশ্বখ্যাতা। গ্রিক কবি হোমার ছিলেন অন্ধ, অথচ তার রচিত দুই মহাকাব্য ‘ ইলিয়াড’ ও ‘ওডিসি’ তাকে এনে দিয়েছিল বিশ্বখ্যাতি। একইভাবে বিথোফেন, ভ্যান গখ, সুধাচন্দ্রন, মাসুদুর রহমানের নাম করা যেতে পারে।

৫.৯মানুষ এখন শুধু নিজে চলেই ক্ষান্ত নয়।‘- নিজের চলা ছাড়া বর্তমানে মানুষ কী কী জিনিস চালাতে সক্ষম?

উঃ মানুষ শুধু নিজেই চলে না সে চালকও। সে জলে চালায় ডুবোজাহাজ, জাহাজ, ট্রলার, স্টীমার আরো নানা জলযান। স্থলপথে চলছে বাস, লরি, গাড়ি, সেই সঙ্গে রেলপথে রেলগাড়ি ছুটিয়ে মানুষ নিমেষে দূর দুরান্তে পৌছাচ্ছে। মানুষ আকাশ ও জয় করেছে, চলছে প্লেন, জেট প্লেন। মহাকাশেও মানুষের পদচিহ্ন অঙ্কিত হয়েছে, রকেটে করে সে ভিন গ্রহে পাড়ি দিচ্ছে।

৫.১১ যাত্রা তোমার থামাও’ – লেখক কাকে একথা বলেছেন? এঁর কোন উত্তর তিনি কীভাবে পেয়েছেন?

উঃ লেখক শিবতোষ মুখোপাধ্যায় আলোচ্য মন্তব্যটি  পৃথিবীর উদ্দেশ্যে করেছেন।

            প্রবন্ধকার পৃথিবীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে তার এত চলার কী প্রয়োজন, সে কেনই বা এতো তাড়াহুড়ো করে ছুটে চলেছে? তার সেই প্রশ্নের উত্তরে পৃথিবী জানিয়েছিল যে থেমে যাওয়া মানে হল জীবনের শেষ। কারণ গতি হল বেঁচে থাকার প্রতীক।

Click here To Download The Pdf

ছন্দে শুধু কান রাখো। সপ্তম শ্রেনী। প্রশ্ন-উত্তর সমাধান। Chonde Shudhu Kan Rakho| Class 7| Question- Answer Solved

0

ছন্দে শুধু কান রাখো

অজিত দত্ত

বিষয়বস্তুঃ কবিতায় কবি বোঝাতে চেয়েছেন প্রকৃতির পরতে পরতে রয়েছে ছন্দময়তার আদর্শ উদাহরণ। ছন্দের উপর ভর দিয়ে কবিতা যেমন এগিয়ে চলে, তেমনি এই মহাবিশ্বের সব কিছু ছন্দময়তার বন্ধনে বাধা। বিশ্বময় ছড়ানো এই ছন্দকে সঠিক ভাবে অনুভব করতে গেলে , মন্দ কোথায় কান দেওয়া চলবে না। ঝগড়া- বিবাদ ভুলে গিয়ে মনকে সজাগ করে না তুললে ছন্দকে যথার্থ শোনা যায় না। ঝরবাদল, জ্যোৎস্না পাখির কুজন, ঝিঁঝিঁর ডাক ও নদীর স্রোতেই নয়, ছন্দ রয়েছে গাড়ির চাকা, রেলের চলাচল ও নৌকা জাহাজের পারাপারেও।ছন্দে চলার আর একটি উদাহরণ হল ঘড়ির কাটার চলাচল ও দিন রাত হওয়া। এই সব ছন্দ যারা কান পেতে শুনবে তারা জগতকে ছন্দ সুরের সংকেতে চিনতে পারবে। তখন জীবন হয়ে উঠবে পদ্যময়।

অনধিক দুটি বাক্যে নিন্মলিখিত প্রশগুলির উত্তর দাওঃ

১১মন্দ কথায় কান দিয়ো না”- মন্দ কথার প্রতি কবির কীরূপ মনোভাব কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে?

উঃমন্দকথা যদি মনে দ্বন্দ্ব বা বিবাদ তৈরি হয় তাহলে ছন্দ শোনা যায় না। কবি মনে করেন মন্দ কথা প্রকৃত ছন্দের সুর শুনতে বাধা দেয়। তাই, মন্দ কথার প্রতি কবি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। 

.কেউ লেখেনি আর কোথাও”—কোন্ লেখার কথা এখানে বলা হয়েছে?

উঃনদীর স্রোতের চলাচলে যে ছন্দ লুকিয়ে আছে সেই ছন্দ অন্য কারো নেই। প্রকৃতির এই অতুলনীয় ছন্দ মন দিয়ে শুনলে বোঝা যাবে যে ইতিপূর্বে এই ছন্দময় ছড়া আর কেউ কোথাও লেখে নি।

.চিনবে তারা ভুবনটাকে”- কারা কীভাবে ভুবনটাকে চিনবে?

উঃ এই পৃথিবীর চারিদিকে ছন্দ ছড়িয়ে আছে, সেই ছন্দ মন ও কান পেতে শুনলে ভুবনকে যথার্থ চেনা সম্ভব হয়। যারা এই ছন্দ শুনতে ও অনুভব করতে পারে তারা ভুবনকে ছন্দ সুরের সংকেতে চিনতে পারবে।

.পদ্য লেখা সহজ নয়”— পদ্য লেখা কখন সহজ হবে বলে কবি মনে করেন?

উঃ জীবন ছন্দময়, জীবনের সেই ছন্দে কান দিতে হবে, মন দিতে হবে, তাহলে  জীবন পদ্যময় হয়ে উথবে।আর তখনি পদ্য লেখা সহজ হবে বলে কবি মনে করেন।

.ছন্দ শোনা যায় নাকো”—কখন কবির ভাবনায় আর ছন্দ শোনা যায় না?

উঃ সকল প্রকার দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে মন না দিলে ছন্দ শোনা যায় না বলে কবি মনে করতেন। অর্থাৎ ছন্দ শুনতে গেলে ঝগড়া ভুলে একাগ্রচিত্ত হতে হয়।

. বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে এবং বিশেষণগুলিকে বিশেষ্য পরিবর্তন করা এবং বাক্যরচনা কর :

ঝড়, মন, ছন্দ, দিন, সুর, সংকেত, দ্বন্দ্ব, মন্দ, ছদহীন, পদ্যময়, সহজ।

বিশেষ্য বিশেষণ বাক্য
ঝড় ঝোড়ো  আজ সমস্ত দিনই ঝোড়ো হাওয়া বইছে।
মন মানসিক  বিপদে সে মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ছন্দ ছন্দবদ্ধ তারা ছন্দবদ্ধ তালে গান গাচ্ছে।
দিন  দৈনিক আমি দৈনিক চার ঘণ্টা পড়াশোনা করি।
 সুর  সুরেলা সকাল থেকে কোকিলটি সুরেলা গলায় ডেকে চলেছে।
সংকেত সাংকেতিক গোয়েন্দা সাংকেতিক চিহ্নের সাহায্যে চিঠি লিখেছেন।
দ্বন্দ্ব দ্বান্দ্বিক দুই দলের মধ্যে দ্বান্দ্বিক আলোচনা চলছে।
মন্দতা  মন্দ মানুষের মন্দতা দূর হলে সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।
ছন্দহীনতা ছন্দহীন ছন্দহীনতার কারণে কবিটি আর কিছু নতুন লিখতে পারছেন না।
পদ্য পদ্যময় পদ্য আমাদের মনের আনন্দের খোরাক।
সহজতা  সহজ তাঁর আচরনের সহজতা আমাদের মুগ্ধ করে।

. নীচের শব্দগুলিকে আলাদা আলাদা অর্থে ব্যবহার করে দুটি করে বাক্য লেখো :

মন্দ, দ্বন্দ্ব, তাল, ডাক, বাজে, ছড়া, মজা, নয়।

মন্দ (খারাপ)—– সর্বদা মন্দ সঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

মন্দ (হালকা)—— গরমকালের বিকালে মৃদুমন্দ বাতাস বয়ে চলেছে।

দ্বন্দ্ব (সংশয়)—– মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব করে কোনো লাভ নেই।

দ্বন্দ্ব  (কলহ)——- মনে দ্বন্দ্ব থাকলে উন্নতি করা সম্ভব নয়।

তাল (ফলবিশেষ)—- ভাদ্র মাসে তাল পাকে।

তাল (লয়)——– সুর-তাল-লয় সঠিক রাখলেই গান শুনতে ভালো লাগে।

ডাক(আহ্বান)—– শিশুর মুখে মা ডাক শুনতে মিষ্টি লাগে।

ডাক (চিঠির মাধ্যম) —-সকালের ডাকে তার চিঠি পেয়েছি।

বাজে (মন্দ)—— কারোর সম্বন্ধে বাজে কথা বলা উচিত না।

বাজে (আওয়াজ) —-সন্ধ্যা আরতিতে শাঁখ বাজে।

ছড়া (গুচ্ছ)——– একছড়া কলা কিনে আনতে হবে।

ছড়া (ছন্দবদ্ধ পদ্য)—- ছড়া পড়তে বেশ মজা লাগে।

মজা (আনন্দ)——– নতুন জামা পেয়ে শিশুটি খুব মজা পেয়েছে।

মজা (নষ্ট)———– সমস্ত কাঁঠালটি মজে গিয়ে খাওয়ার অযোগ্য হয়ে উঠেছে ।

নয় ( সংখ্যাবিশেষ)এই মাসের নয় তারিখে আমাদের পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশ হবে।

নয় ( না সূচক অব্যয়)- গরীব দুঃখীকে অবমাননা করা উচিত নয়।

. নীচের শব্দগুলি কোন্ মূল শব্দ থেকে এসেছে লেখ :

জ্যোৎস্না > জোছনা, 

চক্র > চাকা, 

কর্ণ > কান, 

দ্বিপ্রহব > দুপুর, 

ঝিল্লি > ঝিঝি

. কবিতার ভাষা থেকে মৌখিক ভাষায় রূপান্তরিত করা

. ছন্দ আছে ঝড়বাদলে।

. ছন্দে বাঁধা রাত্রিদিন।

. কিচ্ছুটি নয় ছন্দহীন।

. চিনবে তারা ভুবনটাকে/ ছন্দসুরের সংকেতে।

. কান না দিলে ছন্দে যেনো/পদ্য লেখা সহজ নয়। বাঁধা। 

উত্তরঃ

৫.১ ঝড়-বৃষ্টিতে ছন্দ আছে।

৫,২ দিন-রাত্রি ছন্দে বাঁধা

৫.৩ কোন কিছুই ছন্দহীন নয়।

৫.৪ ছন্দ সুরের সংকেতে তারা ভুবনকে চিনবে।

৫.৫ ছন্দে কান না দিলে পদ্য লেখা সহজ হবে না।

  1. কানশব্দটিকে পাঁচটি বিশেষ অর্থে ব্যবহার করে বাক্য লেখো :

কান– ( ইন্দ্রিয়বিশেষ)আমরা কানের সাহায্যে শ্রবণ করি।

কানমলা– (শাস্তি পদ্ধতি)- পড়া না পারায় শিক্ষক ছাত্রটির কান মুলে দিলেন।

কানপাতলা– ( কথা গোপন রাখতে অসমর্থ)সে খুব কানপাতলা, তাঁর কাছে কোন গোপন কথা বলা যাবে না।

কান খাড়া– ( আগ্রহ সহকারে)রাম দরজার পাশে দাঁড়িয়ে সব কথা কান খাড়া করে শুনতে লাগল।

কানে লাগা– (শ্রুতি কটু)মিতার বেসুরো গান খুব কানে লাগে।

. ঝড়বাদল’—এমনই সমার্থক বা প্রায়সমার্থক পাঁচটি শব্দ লেখো।

উত্তরঃ চিঠি-পত্র, খাতা-পত্তর, বন-জঙ্গল, নদী-নালা, খাল-বিল।

. তোমার পরিচিত আর কোন্ কোন্ যানবাহনের চলার মধ্যে নির্দিষ্ট ছন্দ রয়েছে?

উত্তর: – সাইকেল, রিকশা, গোরুরগাড়ি, ভ্যান ইত্যাদির চলার মধ্যে ছন্দ রয়েছে।

. নানা প্রাকৃতিক ঘটনায় কীভাবে প্রকৃতির ছন্দ ধরা পড়ে?

উঃ নানা প্রাকৃতিক ঘটনার ছন্দ কান পেতে বা মন পেতে শুনলে তাতে প্রকৃতির ছন্দ ধরা পড়বে।

কান পেতে শোনা যাবে এমন মন পেতে শোনা যাবে এমন
পাখির ডাক, ঝিঁঝিঁর ডাক, নদীর কলতান, বৃষ্টির শব্দ,মেঘের গর্জন, বায়ু প্রবাহ দুঃখীর হাহাকার, হৃদয়ের শব্দ,রাতের নীরবতা,দিন রাতের চলাচল।

সত্যেন্দ্রনাথ দত্তেরপালকির গানকবিতাটি শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে সংগ্রহ কর। নিজে করা।

১০. সমার্থক শব্দ লেখ :

জল, দিন, রাত্রি, নদী, ভুবন।

জলসলিল, নীর, বারি, পানি, অম্বু।

দিন : দিবস, দিবা, অহ্ন, অহ

রাত্রিনিশি, রাত,রজনি, শর্বরী, নিশীথ।

নদী : তটিনী, নর্দু, সরিৎ, প্ৰবাহিণী, স্রোতস্বিনী।

ভুবন : পৃথিবী, জগৎ, বিশ্ব, অবনী, মেদিনী।

১১. শব্দযুগলের অর্থ পার্থক্য দেখাও ;

দিনদিবস      

দীনদরিদ্র

 শূরবীর,

সুরদেবতা 

মনহৃদয়    

মণপরিমাপের একক

সকলসব       

শকলমাছের আঁশ

১২. যারাতারার মত তিনটি সাপেক্ষ শব্দজোড় তৈরি কর।

উত্তর:-  যেমন-তেমন, যিনি-তিনি, যদি-তবে।

১৩. কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে তিনটি সর্বনাম লেখ।

উত্তর:- সকল, যারা, তারা।

১৪. কবিতায় রয়েছে এমন চারটি সম্বন্ধ পদউল্লেখ কর।

উত্তর:- পাখির ডাকে, ঝিঝির ডাকে, জলের ছন্দে, ঘড়ির কাঁটা।

১৫. নীচের বাক্য/বাক্যাংশের উদ্দেশ্য বিধেয় অংশ আলাদাভাবে দেখাওঃ।

১৫.১ ছন্দ আছে ঝড়-বাদলে।

১৫.২ দেখবে তখন তেমন ছড়া/কেউ লেখেনি আর কোথাও।

১৫.৩ জলের ছন্দে তাল মিলিয়ে/নৌকো জাহাজ দেয় পাড়ি।

১৫.৪ চিনবে তারা ভুবনটাকে/ছন্দ সুরের সংকেতে।

উত্তরঃ

উদ্দেশ্য বিধেয়
ছন্দ  আছে ঝড় বাদলে
তেমন ছড়া আর কেউ কোথাও লেখেনি তখন দেখবে। 
নৌকো জাহাজ জলের ছন্দে তাল মিলিয়ে দেয় পাড়ি।
তারা ভুবনটাকে ছন্দ সুরের সংকেতে  চিনবে 

১৬. কারকবিভক্তি নির্ণয় কর।

১৬. ছন্দে শুধু কান রাখো।

উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

১৬. ছন্দ আছে ঝড় বাদলে।

উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

১৬. দিনদুপুরে পাখির ডাকে।

উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

১৬. ছন্দে চলে রেলগাড়ি।

উত্তরঃ কর্তৃকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

১৬. চিনবে তারা ভুবনটাকে। 

উত্তরঃ কর্তৃকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

Click Here To Download The Pdf

এতোয়া মুন্ডার কাহিনী| পঞ্চম শ্রেণী। প্রশ্ন-উত্তর সমাধান| Etoya Mundar Kahini| Class 5| Question-Answer solved

4

এতোয়া মুন্ডার কাহিনী

মহাশ্বেতা দেবী

১ ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে লেখো

১.১ গ্রামটির আদি নাম ছিল ( শালগড়/ হাতিঘর/ হাতি বাড়ি/ শালগেড়িয়া)

উঃ গ্রামটির আদি নাম ছিলূ শালগেড়িয়া ।

১.২ মোতি বাবু ছিলেন গ্রামের ( আদি পুরুষ/ ভগবান/ জমিদার/ মাস্টার)

উঃ মোতি বাবু ছিলেন গ্রামের জমিদার ।

১.৩ ‘এতোয়া’ শব্দের অর্থ ( রবিবার/ সোমবার/ বুধ বার/ ছুটির দিন)

উঃ ‘এতোয়া’ শব্দের অর্থ  রবিবার ।

১.৪ শূরবীর ছিলেন একজন (সর্দার/ আদিবাসী রাজা/ বনজীবী/ যাত্রাশিল্পী)

উঃ শূরবীর ছিলেন একজন আদিবাসী রাজা ।

১.৫ ডুলং , সুবর্ণরেখা নামগুলি (পাহাড়ের/ ঝর্ণা / নদীর/ গাছের)

উঃ ডুলং , সুবর্ণরেখা নামগুলিূ নদীর ।

২ উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে বাক্যটি সম্পূর্ণ কর

২.১ আর হাতিশালাটা ছিল পাথরের

২.২ এতোয়ার দাদু বলে এক সময় এটা ছিল আদিবাসী গ্রাম।

২.৩ গাঁয়ের বুড়ো সর্দার মঙ্গল নাতিটার দিকে তাকায়।

২.৪ তবে জঙ্গল তো মা

২.৫ প্রাইমারী স্কুলের চালাঘরের কোল দিয়ে পথ।

৩ অর্থ লেখো

গর্জন গম্ভীর চিৎকার বা আওয়াজ
বাগাল রাখাল
গুঞ্জন গুন গুন শব্দ
দুলন্ত  দুলছে এমন
গোড়া শুরুর অংশ , মুলদেশ

৪ বিপরীতার্থক শব্দগুলি লেখো

পূর্বপুরুষ- উত্তরপুরুষ

আদি – অন্ত

কচি- বুড়ো

শুকনো – ভেজা

বিশ্বাস – অবিশ্বাস

৫ সমার্থক শব্দ লেখো

জল- পানি , বারি , নীর , জীবন।

নদী- তটিনী, তরঙ্গিনী, স্রোতস্বিনী

সমুদ্দুর- সাগর, সমুদ্র, অর্ণব, জলধি

জঙ্গল- অরণ্য, বন , কানন

উলগুলান- বিদ্রোহ, বিপ্লব, বিক্ষোভ

৬ ক্রিয়াগুলির নীচে দাগ দাও

৬.১ সাবু আর শাল গাছের পাচিল যেন পাহারা দিত গ্রামকে।

৬.২ এখন কেউ চাঁদ দিয়ে বছর হিসাব করে?

৬.৩ ছোটনাগপুর ছাড়লাম

৬.৪ জঙ্গল নষ্ট করি নাই।

৬.৫ যে বাঁচায় তাকে কেউ মারে?

৭ দুটি বাক্যে ভেঙ্গে লেখো

৭.১ গাঁয়ের বুড়ো সর্দার মঙ্গল নাতিটার দিকে তাকায়।

উঃ গাঁয়ের বুড়ো সর্দার মঙ্গল। সে নাতিটার দিকে তাকায়।

৭.২ হাতিশালাটায় দেয়াল তুলে ওটা এখন ধান রাখবার গোলা।

উঃ হাতিশালাটায় দেয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে। ওটা এখন ধান রাখবার গোলা।

৭.৩ আমাদের কালে সেই জঙ্গল দিয়ে চার মাইল যাও, তবে পাঠশালা।

উঃ আমাদের কালে সেই জঙ্গল দিয়ে চার মাইল যেতে হত। তবে পাঠশালায় পৌছানো যেত।

৭.৪ এখন ও লাফায় আর নদীর জল, কাশবন, বুনোফুল,আকাশ সকলকে ডেকে বলে, সে কি ভীষণ যুদ্ধ।

উঃ এখন ও লাফায় আর নদীর জল, কাশবন, বুনোফুল,আকাশ সকলকে ডাকে। তারপর বলে সে কি ভীষণ যুদ্ধ।

৭.৫ ডুলং ও সুবর্ণরেখাও হেসে চলে যায়, বয়ে যায়।

উঃ ডুলং ও সুবর্ণরেখাও হেসে চলে যায়। তারা বয়ে যায়।

৮ বাক্য রচনা কর।

পাঁচিলদুটি কাক পাঁচিলের উপর বসে কা কা রবে ঝগড়া করছে।

চাঁদপূর্ণিমা রাতে চাঁদকে গোল রুপার থালার মতো লাগে।

দেশবাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ।

মানুষমানুষ একে অপরের সাহায্য ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে না।

জঙ্গলগভীর জঙ্গলে নানা জীব জন্তু বাস করে।

৯ কোনটি কোন ধরণের বাক্য লেখ

৯.১ স্রোত কি জোরালো !

উঃ বিস্ময়বোধক বাক্য।

৯.২ কচি ছেলে, কিছুই জানে না।

উঃ বর্ণনামূলক বাক্য।

৯.৩ সে যেন গেরুয়া জলের সমুদ্দুর ।

উঃ বর্ণনামূলক বাক্য।

৯.৪ নামটা বদলে গেল কেন গো?

উঃ প্রশ্ন বোধক বাক্য।

৯.৫ কী যুদ্ধ! কী যুদ্ধ!

উঃ উঃ বিস্ময়বোধক বাক্য।

১০ কোনটি কোন শব্দ বেছে নিয়ে আলাদা করে লেখো

বিশেষ্য বিশেষণ সর্বনাম অব্যয়  ক্রিয়া
শিকার, লড়াই মস্ত, বুড়ো , ভীষণ,ছোট্ট , ঝাঁকড়া , ধারালো, সরু আমাদের, তুই , সে চরায়, রাখে, ওঠে

১১ নিম্নলিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রে দুটি বাক্যকে জুড়ে একটি বাক্য লেখ

১১.১ কী গল্পই বললে আজ দাদু। সবাই শুনছিল গো।

উঃ দাদু আজ এমন গল্প বললে যে সবাই শুনছিল গো।

১১.২ এতোয়া রে ! ছেলে তুই বড্ড ভালো ।

উঃ এতোয়া তুই বড্ড ভালো ছেলে রে!

১১.৩ তুই বড্ড বকিস এতোয়া। তোর বাপেরও এতো কথা শুধাবার সাহস হত না।

উঃ এতোয়া তুই বড্ড বকিস ,তোর বাপেরও এতো কথা শুধাবার সাহস হত না।

১১.৪ বাবুরা এল । আমাদের সব নিয়ে নিল।

উঃ বাবুরা এসে আমাদের সব নিয়ে নিল।

১১.৫ আদিবাসী আসছে। মানুষ বাড়ছে।

উঃ আদিবাসী আসছে তাই মানুষ বাড়ছে।

১২ এলোমেলো  বর্ণ সাজিয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি কর

দি সী আ বা – আদিবাসী

ব খা রে র্ণ সু – সুবর্ণরেখা

গা ং ড়া র দ- দরংগাড়া

টি ড়া পো মা- পোড়ামাটি

ষ পু দি রু আ – আদিপুরুষ

১৩ এলোমেলো শব্দ সাজিয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য তৈরি কর

১৩.১ ছাগল কাজ গোরু ওর চরানো ।

উঃ ওর কাজ ছাগল গোরু চরানো।

১৩.২ তির শন শন তারা তখন ছোড়ে।

উঃতখন তারা তির ছোড়ে শনশন।

১৩.৩ আগে হাজার চাঁদ হাজার।

উঃ হাজার হাজার চাঁদ আগে।

১৩.৪ ছিল পাথরের হাতিশালাটা আর।

উঃ আর হাতিশালাটা ছিল পাথরের।

১৩.৫ সপ্তাহে হাট প্রতি বসে তো গ্রামে।

উঃ গ্রামে তো প্রতি সপ্তাহে হাট বসে।

১৪.১ লেখালেখি ছাড়াও আর কী কী কাজ মহাশ্বেতা দেবী করেছেন?

উঃ লেখালেখি ছাড়াও মহাশ্বেতা দেবী অধ্যাপনা করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন, বাংলা- বিহার- উড়িষ্যার আদিবাসী মানুষের সঙ্গে থেকেছেন ও সমাজসেবা করেছেন।

১৪.২ আদিবাসী জীবন নিয়ে লেখা তাঁর একটি বইয়ের নাম লেখ

উঃ আদিবাসী জীবন নিয়ে লেখা তাঁর একটি বইয়ের নাম ‘এতোয়া মুন্ডার যুদ্ধজয়’

১৪.৩ ছোটদের জন্য লেখা তাঁর একটি বিখ্যাত বইয়ের নাম লেখো।

উঃ ছোটদের জন্য লেখা তাঁর একটি বিখ্যাত বইয়ের নাম হল ‘বাঘাশিকারী’

১৫ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখ

১৫.১” সেও এক ভীষণ যুদ্ধ” কোন যুদ্ধের কথা এখানে বলা হয়েছে?

উঃ এখানে বিরসা মুন্ডা ও ইংরেজেদের যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। বৃদ্ধ মঙ্গল সর্দার তাঁর নাতি এতোয়ার সঙ্গে আদিবাসিদের বিষয়ে আলোচনা করার সময় এই যুদ্ধের কথা বলেছেন।

১৫.২ গাঁয়ের নাম হাতিঘর হল কেন?

উঃ সাঁওতালদের সরলতার সুযোগ নিয়ে অনেক মহাজন ও জমিদার তাদের কাছ থেকে সব কেড়ে নিয়েছিল। এই ভাবেই শালগেরিয়া নামে আদিবাসী গ্রামে জমিদার মোতিবাবুর পূর্ব পুরুষরা বসতি গড়ে তোলে। তাদের পাথরের তৈরী ত্রিশটা ঘর ওলা হাতিশালা ছিল। তাই গ্রামের নাম হয়েছিল হাতিঘর।

১৫.৩ ভজন ভুক্তা এতোয়াকে কী বলত?

উঃ ভজন ভুক্তা একজন অন্ধ ভিখারি যে হাটে গল্প শুনিয়ে অর্থ উপার্জন করে। সে এতোয়াকে এক আদিবাসী শূরবীর রাজার কথা বলে। তাকে মনের মতো ডাকতে পারলে নাকি সে ডুলং নদী থেকে উঠে আসবে ও অরনয়কে রক্ষা করবে। এছাড়াও সে এতোয়াকে স্কুলে যাওয়ার কথাও বলে।

১৫.৪ হাতিঘরে কেমন ভাবে যাবে সংক্ষেপে লেখ।

উঃ হাতিঘরে যেতে হলে হাওড়া থেকে খড়গপুর যেতে হবে। তারপর বাসে চেপে গুপ্তমনির মন্দিরের সামনে নামতে হবে। সেখান থেকে সাত আট মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে হাঁটলে ছোট নদী ও ছোট ছোট আদিবাসী গ্রাম পড়বে। সেগুলি পেরিয়ে মস্ত গ্রাম রোহিনী ও সেই গ্রাম পেরোলে দক্ষিণ দিকে ডুলং নদী। তারপর যেখানে আকাশ ছোঁয়া শাল ও অর্জুন গাছ রয়েছে সেখানে রয়েছে হাতিঘর গ্রাম।

১৫.৫ এতোয়াটি নামটি কেনো হয়েছিল?

উঃ আদিবাসীরা অনেকেই জন্মবারের সঙ্গে মিলিয়ে সন্তানদের নাম রাখে। এতোয়া রবিবারে জন্ম গ্রহণ করেছিল। তাই তাঁর ঠাকুর্দা মঙ্গল মুন্ডা জন্মবারের সঙ্গে তার নাম মিলিয়ে রেখেছিল এতোয়া মুন্ডা।

১৫.৬ এতোয়ার রোজকার কাজের বর্নণা দাও।

উঃ এতোয়া মোতিবাবুর বাড়িতে রাখালের কাজ করত, তাই সে রোজ গোরু, মোষ ও ছাগল চড়াত। পুরোনো আমবাগানে গোরু চরাতে চরাতে সে টোকো আম ও শুকনো কাঠ কুড়াতো। মাটি খুড়ে মেটে আলু বের করত ও মজা পুকুরের পাড় থেকে শাক তুলে তার বস্তায় রাখতো। সুবর্ণরেখা নদীর মাঝে চরে গিয়ে বাঁশে বোনা জাল দিয়ে মাছ ধরত।

১৫.৭’এখন গ্রামে ইস্কুল, তবু’ বক্তা কে? আগে কি ছিল?

উঃ ঊদ্ধৃতাংশের বক্তা গ্রামের অন্ধ ভিখারি ভজন ভুক্তা।

            তাঁর আমলে গ্রামে কোনো পাঠশালা ছিল না। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চার মাইল হেটে পাঠশালায় যেতে হত।

১৬ বাঁদিকের শব্দের সঙ্গে মিল আছে এমন ডান দিকের শব্দ খোজঃ

হাতি শুঁড়
চাল  ধান্
গ্রাম পল্লী
চাঁদ জ্যোৎস্না
পাতা গাছ

Click here  To Download  The Pdf

Darogababu Ebong Habu| Class 5| Question-Answer| দারোগাবাবু এবং হাবু| পঞ্চম শ্রেনী| প্রশ্ন-উত্তর সমাধান

3

দারোগাবাবু এবং হাবু

ভবানীপ্রসাদ মজুমদার

 . ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখ :

.১ হাবু থানায় গিয়েছিল  ( বেড়াতে/ অভিযোগ জানাতে/ চিকিৎসা করাতে/ হারানো পাখি খুঁজতে)

উত্তর :- হাবু থানায় গিয়েছিল  অভিযোগ জানাতে।

.. বাড়িতে পোষা হয় এমন পাখির মধ্যে পড়ে না ( টিয়া/পায়রা/ময়না/ কোকিল)

উত্তর– বাড়িতে পোষা হয় এমন পাখির মধ্যে পড়ে না কোকিল।

.. হাবু ও তাঁর দাদাদের পোষা মোট পশু- পাখির সংখ্যা  ( ১৭৫/১৫০/১৭০/ ২৫)

উত্তরঃ হাবু ও তাঁর দাদাদের পোষা মোট পশু- পাখির সংখ্যা  ১৭৫।

২ ‘ক’ এর সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো।

ক স্তম্ভ খ স্তম্ভ

নালিশ

অভিযোগ

বারন

নিষেধ

পাগল

উন্মাদ

সদাই

সবসময়

কাবু

কাহিল

আরো পড়ুন- গল্পবুড়ো কবিতার প্রশ্ন – উত্তর সমাধান

৩ শব্দ ঝুড়ি থেকে নিয়ে বিশেষ্য বিশেষণ আলাদা করে লেখো।

উত্তর- বিশেষ্য – পায়রা, থানা, বড়বাবু

বিশেষণ- কাবু, খুব, নালিশ, করুন,পোষা, দুঃখ, চারজন

৪ ‘ কেঁদে- কেঁদে’ এরকম একই শব্দকে পাশাপাশি দুবার ব্যবহার করে পাচটি নতুন শব্দ তৈরী কর।

উঃ রোজ রোজ, নেচে নেচে, হেসে হেসে, দিন দিন, মনে মনে।

৫ ক্রিয়ার নীচে দাগ দাও

৫.১ বললে কেঁদেই হাবু।

৫.২ সাতটা বেড়াল পোষেন ছোটো বড়ো।

৫.৩ বললে করুণ সুরে।

৫.৪ যাবেই যে সব উড়ে

৫.৫ ভগবানকেই ডাকি

বাক্য রচনা কর

নালিশঅকারণে কারো নামে নালিশ করা উচিত নয়।

ভগবানবিপদে- আপদে ভগবানের নাম স্মরণ করলে মনে জোর বাড়ে।

বারণমা দুপুরের রোদে বাইরে খেলতে বারণ করেছেন।

করুণআহত কুকুরছানাটি করুণ সুরে কাঁদছে।

ভোরভোর বেলা ঘুম থেকে ওঠা শরীরের পক্ষে ভালো।

আরো পড়ুন- বুনো হাঁস কবিতার প্রশ্ন- উত্তর সমাধান

ঘটনাক্রম সাজিয়ে লেখো

৭.১ হাবু থানার বড়বাবুর কাছে কান্নাকাটি করে নালিশ জানালো।

৭.২ জীবজন্তুর গন্ধে হাবুর প্রাণ যায় যায়।

৭.৩ হাবুরা চার ভাই একটা ঘরেই থাকে।

৭.৪ বড়দা সাতটা বেড়াল, মেজদা আটটা কুকুর, সেজদা দশটা কুকুর ও হাবু নিজে দেড়শোঁ পায়রা পোষে।

৭.৫ দারোগা বাবুর উত্তর শুনে হাবু বেজায় কাতর হয়ে পড়ল।
সমাধানঃ

১ হাবু থানার বড়বাবুর কাছে কান্নাকাটি করে নালিশ জানালো।

২ হাবুরা চার ভাই একটা ঘরেই থাকে।

৩ বড়দা সাতটা বেড়াল, মেজদা আটটা কুকুর, সেজদা দশটা কুকুর ও হাবু নিজে দেড়শোঁ পায়রা পোষে।

৪ জীবজন্তুর গন্ধে হাবুর প্রাণ যায় যায়।

৫ দারোগা বাবুর উত্তর শুনে হাবু বেজায় কাতর হয়ে পড়ল।

৮  কবিতাতে অন্তমিল আছে এমন পাঁচ জোড়া শব্দ লেখো

উঃ হাবু-বড় বাবু, থাকি-ডাকি, বড়ো- করো, ভুলো- গুলো, বেঁধে – কেঁদে।

বাক্য বাড়াওঃ

৯.১ হাবু গিয়েছিল ( কোথায়? কখন?)

উঃ হাবু ভোরে থানায় গিয়েছিল।

৯.২ বড়দা পোষেন বেড়াল। ( কয়টি? কেমন?)

উঃ বড়দা পোষেন ছোট- বড় আটটি বেড়াল।

৯.৩ হাবু ভগবানকে ডাকে।( কেন? কখন?)

উঃ হাবু দুঃখে সারা-দিন রাত ভগবানকে ডাকে।

৯.৪ দারোগাবাবু বলেন ঘরের জানলা – দরজা খুলে রাখতে। ( কাকে?)

উঃ দারোগাবাবু  হাবুকে বলেন ঘরের জানলা – দরজা খুলে রাখতে

৯.৫ হাবুর পায়রা উড়ে যাবে। ( কয়টি)

উঃ হাবুর দেড়শো পায়রা উড়ে যাবে।

১০.১ ছোটোদের জন্য ছড়া কবিতা লিখেছেন এমন দুজন কবির নাম বল।

উঃ সুকুমার রায়, ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।

১০.২ তোমার পাঠ্য কবিতাটির কবি কে?

উঃ, ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।

১০.৩ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো

উঃ মজার ছড়া, নাম তার সুকুমার।

১১ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো

১১.১ হাবু কোথায় গিয়ে কার কাছে নালিশ জানিয়েছিল?

উঃ কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের লেখা ‘দারোগাবাবু এবং হাবু’ কবিতার প্রধান চরিত্র হাবু থানায় গিয়ে দারোগাবাবুর কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন।

১১.২ হাবুর বড়দা, মেজদা ও সেজদা ঘরে কি কি পোষেন?

উঃ কবি , ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের লেখা ‘‘দারোগাবাবু এবং হাবু’‘ কবিতার হাবুর বড়দা ছোট -বড় সাতটি বিড়াল পোষেন, তাঁর মেজদা সেই ঘরেই আটটি কুকুর পোষেন ও তাঁর সেজদা দশটা ছাগল পোষেন।

১১.৩ হাবুর করুণ অবস্থার জন্য সে নিজেও কীভাবে দায়ি ছিল বলে তোমার মনে হয়?

উঃ একটি ঘরের মধ্যেই হাবুর দাদারা বিড়াল, কুকুর ও ছাগল পুষত। কিন্তু হাবু নিজেও আলাদা নয় , সে ঘরের মধ্যে দেড়শো পায়রা পুষত। আর সেই পায়রা যাতে উড়ে না যায় তাই সে জানলা দরজা বন্ধ করে রাখত। তাই সারা ঘর দুর্গন্ধে ভরে থাকত। অর্থাৎ হাবুর করুণ অবস্থার জন্য সে নিজেও কিছুটা দায়ী।

১১.৪ দারোগা বাবু হাবুকে যে পরামর্শ দিল তা হাবুর পছন্দ হল না কেন?

উঃ হাবুর তিন জন দাদা একই ঘরে অনেক বিড়াল, কুকুর ও ছাগল পুষত ও তাই দুর্গন্ধে হাবুর প্রাণ যায় যায়। তাই দারোগা বাবু তাকে পরামর্শ দিয়েছিল যে ঘরের জানলা, দরজা খুলে রাখতে। কিন্তু দারোগা বাবুর এই উপদেশ হাবুর পছন্দ হয় নি কারণ তাহলে হাবুর পোষা দেড়শো পায়রা উড়ে যাবে।

১১.৫ দারোগাবাবুর কাছে হাবু তাঁর যে দুঃখের বর্ণনা দিয়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখো।

উঃভোরবেলায় থানায় গিয়ে দারোগাবাবুর কাছে তাঁর দুঃখের কথা বলে। তারা চার ভাই একই ঘরে থাকে এবং সেই ঘরেই বড়দা সাতটি বিড়াল, মেজদা আটটি কুকুর ও সেজদা দশটি ছাগল পোষেন। এ্রর ফলে দুর্গন্ধে হাবুর প্রাণ বেরিয়ে যায়। মনের দুঃখে সে সারাদিন রাত ভগবানকে ডাকে।

Click here To Download The PDF

Buno has| Class 5| Question- Answer|বুনো হাঁস|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান

4

বুনো হাঁস

লীলা মজুমদার

 

. ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখ :

১.১. আকাশের দিকে তাকালে তুমি দেখো_______ ( ঘর-বাড়ি/ গাছপালা/ পোকা-মাকড়/ মেঘ-রোদ্দুর)

উত্তর :- মেঘ-রোদ্দুর

১.২. হিমালয় ছাড়া ভারতের আরো একটি পর্বতের নাম হল ______ ( কিলিমাঞ্জারো/আরাবল্লী/আন্দিজ/ রকি)

উত্তর– আরাবল্লী

১.৩. এক রকমের হাঁসের নাম হল ______ ( সোনা/কুনো/কালি/ বালি) হাঁস।

উত্তরঃ বালি হাঁস।

১.৪. পাখির ডানার _____ ( বোঁ বোঁ/ শন শন / শোঁ শোঁ/ গাক গাক) শব্দ শোনা যায়

উত্তর– শোঁ শোঁ

২ ‘ক’ এর সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো।

ক স্তম্ভ খ স্তম্ভ
বরফ হিমানি
বুনো বন্য
কুঁড়ি কলি
চঞ্চল অধীর
আরম্ভ শুরু

 

) সঙ্গী এর মতো( ঙ+ গ= ঙ্গ ) রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ তৈরি করো।

উত্তরঃ রঙ্গ,দঙ্গল, গঙ্গা, পতঙ্গ ,মঙ্গল

৪ ঘটনাক্রম সাজিয়ে লেখো

৪.১ দেশে ফিরে ওরা বাসা বাধবে, বাচ্চা তুলবে।

৪.২ হাঁসের ডানা জখম হল।

৪.৩ সারা শীত কেটে গেল।

৪.৪ বুনো হাঁস দক্ষিণ দিকে উড়ে যেত।

৪.৫ আরেকটা বুনো হাঁস নেমে এসে এটার চারিদিকে উড়তে থাকল।

সমাধানঃ

১) ৪.৪ বুনো হাঁস দক্ষিণ দিকে উড়ে যেত।

২) ৪.২ হাঁসের ডানা জখম হল।

৩) ৪.৫ আরেকটা বুনো হাঁস নেমে এসে এটার চারিদিকে উড়তে থাকল।

৪) ৪.৩ সারা শীত কেটে গেল।

৫) ৪.১ দেশে ফিরে ওরা বাসা বাধবে, বাচ্চা তুলবে।

আরো পড়ুন- দারোগাবাবু এবং হাবু কবিতার প্রশ্ন-উত্তর সমাধান

৫ শূণ্যস্থান পূরণ কর।

৫.১ লাডাকের একটা বরফে ঢাকা নিত্তজন জায়গাতে আমাদের জোয়ানদের একটা ঘাটি ছিল।

৫.২ জোয়ানদের মুরগী রাখার খালি জায়গা ছিল।

৫.৩ আস্তে আস্তে হাঁসের ডানা সারল।

৫.৪ দলে দলে বুনো হাঁস তীরের ফলার আকারে কেবলই উত্তর দিকে উড়ে চলেছে।

৫.৫ ন্যাড়া গাছে পাতা আর ফুলের  কুঁড়ি ধরল।

শব্দ ঝুড়ি থেকে নিয়ে বিশেষ্য বিশেষণ আলাদা করে লেখো।

উত্তর- বিশেষ্য – লাডাক, শীতকাল, বরফ, তাঁবু , সঙ্গী

বিশেষণ- বুনো, জখম, গরম, ন্যাড়া, নির্জন, বেচারী, চঞ্চল

ক্রিয়ার নিচে দাগ দাও।

৭.১ বাড়ির জন্য ওদের মন কেমন করত

৭.২ পাখিরা আবার আসতে আরম্ভ করল

৭.৩ দেশে ফিরে ওরা বাসা বাঁধবে

৭.৪ সেখানে বুনো হাসেরা রইল

৭.৫ নিরাপদে তাদের শীত কাটে

বাক্য বাড়াওঃ

৮.১ একদিন একটা বুনো হাঁস দল ছেড়ে নেমে পড়ল।( কোথায় নেমে পড়ল)

উঃ একদিন একটা বুনো হাঁস দল ছেড়ে নীচে একটা ঝোপের উপর নেমে পড়ল।

৮.২ ওরা গরম দেশে শীত কাটিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। ( কোথায় এবং কখন ফিরে যাচ্ছে)

উঃ ওরা গরম দেশে শীত কাটিয়ে  শীতের শেষে আবার নিজেদের দেশে ফিরে যাচ্ছে।

৮.৩ পাহাড়ের বরফ গলতে শুরু করল।( কোথাকার পাহাড়)

উঃ লাডাক অঞ্চলের নীচের দিকের পাহাড়ের বরফ গলতে শুরু করল।

৮.৪ আবার ঝোপঝাপ দেখা গেল। ( কেমন ঝোপঝাপ)

উঃ আবার সবুজ ঝোপঝাপ দেখা গেল।

৮.৫ গাছে পাতার আর ফুলের কুঁড়ি ধরল। ( কেমন গাছে)

উঃ ন্যাড়া গাছে পাতার আর ফুলের কুঁড়ি ধরল।

আরো পড়ুন- গল্পবুড়ো কবিতার প্রশ্ন-উত্তর সমাধান

৯ বাক্য রচনা কর

রেডিয়ো- আমি আর দাদু রেডিয়োতে মহালয়া শুনি।

চিঠিপত্র- পোস্টমাস্টার দীপুবাবু চিঠিপত্র নিয়ে সাইকেলে করে বিলি করতে বেরিয়েছেন।

থরথর- কুকুর ছানাটি ঠাণ্ডায় থরথর করে কাঁপছিল।

জোয়ান- জোয়ানরা সমস্ত বিপদ তুচ্ছ করে আমাদের দেশের সীমানা পাহারা দেয়।

তাঁবু- রঙিন তাঁবুতে সার্কাস বসেছে।

১১ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো

১১.১ জোয়ানদের ঘাঁটি কোথায় ছিল?

উঃ লাডাকের একটা বরফে ঢাকা নির্জন জায়গাতে জোয়ানদের ঘাঁটি ছিল।

১১.২ জোয়ানরা কী কাজ করে?

উঃ জোয়ানরা সমস্ত বিপদ তুচ্ছ করে আমাদের দেশের সীমান্ত পাহারা দেয় ও বাইরের শত্রুর আক্রমনের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে।

১১.৩ দুটো বুনো হাঁস দলছুট হয়েছিল কেন?

উঃ শীতকালে গরম দেশে উড়ে যাওয়ার সময় একটা বুনো হাঁসের ডানা জখম হয়ে যাওয়ায় সে নিচে একটা ঝোপের ধারে নেমে পড়েছিল। তখন তার সঙ্গী আর একটি বুনো হাঁস ও তার পিছনে পিছনে নেমে পড়ে। এইভাবে দুটো বুনো হাঁস দলছুট হয়ে যায়।

১১.৪ বুনো হাঁসেরা জোয়ানদের তাঁবুতে কি খেত?

উঃ বুনো হাঁসেরা জোয়ানদের তাঁবুতে টিনের কৌটোর মাছ, তরকারি, ভুট্টা, ভাত, ফলের কুচি এইসব খেত।

১১.৫হাঁসেরা আবার কোথায় কখন ফিরে গেল?

উঃ হাঁসেরা শীতের শেষে আবার নিজেদের দেশে ফিরে গেল।

১১.৬ ‘এমনি করে সারা শীত দেখতে দেখতে কেটে গেল’- কেমন করে সারা শীত কেটে গেল? এরপর কি ঘটনা ঘটল?

উঃ একটি ডানা জখম হওয়া বুনো হাঁস ও তার সঙ্গীকে জোয়ানরা তাদের তাবুতে আশ্রয় দিয়েছিল, তাদের টিনের কৌটোর মাছ, তরকারী , ফলের কুচি ইত্যাদি খেতে দিত। মুরগী রাখার খাচায় তারা আশ্রয় পেয়েছিল। তাদের দেখভাল করতে করতে জোয়ানদের সারা শীতকাল কেটে গেল।

শীত কাটার পর নীচের পাহাড়ের বরফ গলে গে্ল।বরফ সরে যাওয়ায় সবুজ ঝোপঝাড় বেরিয়ে পড়লো। ন্যাড়া গাছে আবার পাতা ও ফুলের কুঁড়ি গজিয়ে উঠল। আর একদিন জোয়ানরা তাঁবুতে ফিরে দেখল হাঁস দুটি তাদের দেশের দিকে উড়ে চলে গেছে।

১৩.১ লীলা মজুমদারের জন্ম কোন শহরে?

উঃ লীলা মজুমদারের জন্ম কলকাতা শহরে।

১৩.২ তাঁর শৈশব কোথায় কেটেছে?

উঃ তাঁর শৈশব শিলং পাহাড়ে কেটেছে।

১৩.৩ ছোটোদের জন্য লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম লেখ?

উঃছোটোদের জন্য লেখা তাঁর দুটি বই হল ‘গল্পসল্প’ ও ‘বদ্যিনাথের বড়ি’ ।

Click here বুনো হাঁস  The Pdf

error: Content is protected !!