Sunday, June 15, 2025
Home Blog

পাগলা গণেশ| সপ্তম শ্রেণী। প্রশ্ন-ঊত্তর সমাধান। Pagla Gonesh| Class 7| Question Answer Solved

0

“পাগলা গণেশ”

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

গল্পের বিষয়বস্তু:

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা “পাগলা গণেশ” একটি কল্পবিজ্ঞান ভিত্তিক রম্যগল্প, যেখানে ভবিষ্যতের এক অসম্ভব পৃথিবী ও তার সামাজিক বাস্তবতা নিয়ে ব্যঙ্গ-রসের মাধ্যমে লেখক একটি গভীর বার্তা দিয়েছেন।

গল্পটির মূল চরিত্র গণেশ — যিনি একসময় সভ্য সমাজের অংশ ছিলেন, কিন্তু পরে হিমালয়ের গিরিগুহায় চলে গিয়ে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বিভিন্ন রকম রহস্যময় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ভবিষ্যতের পৃথিবীতে যখন মানুষের মৃত্যু বন্ধ হয়ে গেছে ‘মৃত্যুঞ্জয় টনিক’-এর আবিষ্কারের ফলে, তখন মানুষ হয়ে পড়েছে আবেগহীন, যান্ত্রিক ও নির্বিকার।

এই পরিস্থিতিতে গণেশ পাগলের মতো আচরণ করলেও, তাঁর কথাবার্তা, ভাবনা ও আচরণে এমন এক বুদ্ধিদীপ্ত পাগলামি রয়েছে, যা সমাজকে প্রশ্ন করতে শেখায়— সভ্যতা কি আদৌ সভ্য? মানুষ কি তার আবেগ হারিয়ে ফেলে কেবলই যন্ত্র হয়ে উঠছে না?

এই গল্পে লেখক পাগলামির আড়ালে সমাজের অন্তঃসারহীনতা, মানুষের অতিরিক্ত বৈজ্ঞানিক নির্ভরতা এবং আবেগহীন ভবিষ্যতের ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন। একইসাথে, গণেশের চরিত্রের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী চিন্তা ও মানবিক মূল্যবোধের গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে।

 

. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো :

.পাগলা গণেশএকটি (বিজ্ঞান/ কল্পবিজ্ঞান/ রূপকথা ) – বিষয়ক গল্প।
উত্তরঃ ‘পাগলা গণেশ’ একটি কল্পবিজ্ঞান – বিষয়ক গল্প।

.অবজার্ভেটরি’– বাংলা প্রতিশব্দ (পরীক্ষাগার / গবেষণাগার/ নিরীক্ষণাগার)
উত্তরঃ ‘অবজার্ভেটরি’– র বাংলা প্রতিশব্দ নিরীক্ষণাগার

. সভ্যসমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ (হিমালয়ের গিরিগুহায় / গভীর জঙ্গলে / মহাকাশে ) আশ্রয় নিয়েছিলেন।
উত্তরঃ সভ্যসমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ হিমালয়ের গিরিগুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।

. গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কার হয়েছিল (৩৫৮৯ / ৩৪৩৯/ ৩৫০০) সালে।
উত্তরঃ গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কার হয়েছিল ৩৪৩৯ সালে।

. সংক্ষেপে উত্তর দাও :

.সালটা ৩৫৮৯”– এই সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে কোন্ কোন্ নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের কথা গল্পে বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় রচিত ‘পাগলা গনেশ’ গল্পে ৩৫৮৯ সালের মধ্যে পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণ প্রতিরোধকারী মলম, ডান্ডাওয়ালা ঝাটার মত ডাইনিদের বাহন, নারদের ঢেঁকির মতো, কার্পেটের মতো বিভিন্ন ধরনের উড়ান যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছে। পাখাওয়ালা মানুষদের আকাশে উড়তে দেখা যাচ্ছে। চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে মানুষ ল্যাবরেটরি বানিয়েছে।এমনকী সূর্যের আরও দুটি গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। 

.ওসব অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না” – “অনাবশ্যক ভাবাবেগবলতে কী বোঝানো হয়েছে ? তাকে সত্যিই তোমারঅনাবশ্যকবলে মনে হয় কি?
উত্তরঃ অনাবশ্যক ভাবাবেগ বলতে কবিতা, গান, ছবি আঁকা, কথাসাহিত্য, নাটক, সিনেমা প্রভৃতিকে বোঝানো হয়েছে। গল্প অনুযায়ী বিজ্ঞানের যুগে বিজ্ঞান ছাড়া আর কোন চর্চাই অনাবশ্যক। তাই এগুলিকে অনাবশ্যক ভাবাবেগ বলা হয়েছে।

এখন, আমি মনে করি যে “অনাবশ্যক” ভাবাবেগ সবসময়ই একেবারে অপ্রয়োজনীয় নয়। অনেক সময় আমাদের জীবনযাত্রা বা মানসিক অবস্থা বুঝতে, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে বা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে কিছু ভাবাবেগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়। বিশেষ করে প্রেম, সহানুভূতি, স্নেহ, দুঃখ, এবং এমনকি উত্তেজনাও মানুষের মানসিক এবং সামাজিক বিকাশে প্রয়োজনীয়।

.চর্চার অভাবে মানুষের মনে আর ওসবের উদ্রেক হয় না”- মানুষের মন থেকে কোন কোন অনুভূতিগুলো হারিয়ে গেছে?
উত্তরঃ কেবলমাত্র বিজ্ঞান নিয়ে মেতে থাকা মানুষের মন থেকে চর্চার অভাবে দয়া, মায়া, করুণা, ভালোবাসা প্রভৃতি অনুভূতি গুলো হারিয়ে গেছে। মানুষের মনে আর এসবের উদ্রেক হয় না।

.ব্যতিক্রম অবশ্য এক আধজন আছে” – ব্যতিক্রমী মানুষটি কে? কীভাবে তিনিব্যতিক্রমহয়ে উঠেছিলেন?
উত্তরঃ গল্পে ব্যতিক্রমী মানুষটি হলেন পাগলা গণেশ।

৩৫৮৯ সালে যেখানে ঘরে ঘরে কেবলমাত্র বিজ্ঞানের চর্চা চারিদিকে নানান ধরনের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ধুম। অথচ এরই মাঝে একমাত্র পাগলা গণেশ বিজ্ঞান চর্চায় হস্তক্ষেপ না করে আশ্রয় নিয়েছেন হিমালয়ের গিরিগুহায়। কবিতা লিখেছেন, গানের চর্চা করেছেন, পাহাড়ের গায়ে বাটালি দিয়ে পাথর কেটে ছবি এঁকেছেন এই সমস্ত কর্মকাণ্ডই এখনকার মানুষদের কাছে নিতান্ত অপ্রয়োজনীয়। তবু গণেশ তার চেষ্টা থামায়নি। এভাবেই তিনি হয়ে উঠেছেন ব্যতিক্রমী।

. মশাই, এমন বিকট শব্দ করছেন কেন?” – কার উদ্দেশ্যে কারা একথা বলেছিল? কোন কাজকে তারাবিকট শব্দমনে করেছিল?
উত্তরঃ লাসা থেকে ইসলামাবাদ যাওয়ার পথে দুটো পাখাওয়ালা লোক গণেশের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছিল।

গণেশের গান গাওয়াকে তারা বিকট শব্দ মনে করেছিল।

.গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে” — গণেশ কাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে? তাঁর এই ভুলে যাওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?
উত্তরঃ গণেশ তার তিন ছেলে এক মেয়ের মুখশ্রী ভুলে গেছে।

ভুলে যাওয়ার কারণ মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কারের ফলে তার তিন ছেলের বয়স যথাক্রমে একশো চুয়াত্তর, একশো একাত্তর, একশো আটষট্টি ও মেয়ের বয়স একশো ছেষট্টি। তারা কেও গত একশো বছরে বাবার কাছে আসেনি। তাই গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে।

.গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন করে বলল” – কে, কী বলেছিল? তার এভাবে তাঁকে সম্মান জানানোর কারণটি কী?
উত্তরঃ একজন পুলিশম্যান গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন জানিয়ে বলেছিল, এককালে গণেশ যখন কলকাতার সায়েন্স কলেজে মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স পড়াতেন তখন পুলিশম্যান লোকটি গণেশের ছাত্র ছিল।

শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা বসতই তিনি সম্মান জানিয়েছিলেন।

.আমি পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি”– বক্তা কীভাবে পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল? তার প্রয়াস শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছিল কি?
উত্তরঃ গণেশ কবিতা লিখে, গান গেয়ে, ছবি এঁকে পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল।

শেষ পর্যন্ত গণেশ সফল হয়েছিল কারণ, গণেশের প্রচেষ্টায় অবশেষে বিজ্ঞান নিয়ে মেতে থাকা মানুষ গান গাইতে শুরু করে, কবিতা মকসো করে, হিজিবিজি ছবি আঁকে।

.লোকটা অসহায়ভাবে মাথা নেড়ে বলল”- এখানে কার কথা বলা হয়েছে? সে কী বলল? তার অসহায়ভাবে মাথা নাড়ার কারণ কী?
উত্তরঃ এখানে পুলিশম্যানের কথা বলা হয়েছে।

সে বলল “কিছু বুঝতে পারছি না স্যার”।

তার অসহায়ভাবে মাথা নাড়ার কারণ সে পায়ের কাছে পড়ে থাকা গণেশের কবিতা লেখা একটি কাগজের টুকরো নিয়ে পড়ে কিন্তু কিছু বুঝতে পারে না।

.১০তিনজন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে রইল”— এই তিনজন কারা? তাদের মুগ্ধতার কারণ কী? ‘পাগলা গণেশগল্পের মুখ্য চরিত্র গণেশকে তোমার কেমন লাগল?
উত্তরঃ এই তিনজন ছিল পুলিশম্যান, তার স্ত্রী ও মা।

তারা তিনজন গণেশের কবিতা ও গান শুনে এবং গণেশের আঁকা ছবি দেখে মন্ত্রমুগ্ধের মতো বসে রইল।

. ‘পাগলা গণেশগল্পের মুখ্য চরিত্র গণেশেকে তোমার কেমন লাগল?

উত্তরঃ

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় রচিত পাগলা গণেশ গল্পে মুখ্য চরিত্র গণেশ এক অভিনব ব্যক্তিত্ব।সকলে বিজ্ঞান নিয়ে মেতে থাকলেও গণেশ সে পথে হাঁটেনি। কবিতা, গান, ছবি আঁকা চর্চার মাধ্যমে সে হয়ে উঠেছে ব্যতিক্রমী।অন্য সকলে গণেশের বিজ্ঞানের বিপরীতমুখী কর্মকান্ড নিয়ে তাকে ঠাট্টা তামাশা করলেও সে লক্ষ্যে স্থির থেকে সাহিত্য, গান, ছবি আঁকার চর্চা করে গেছে।গণেশ চরিত্র তীব্র প্রতিকূলতার সত্বেও লক্ষ্যে অবিচল থেকে কবিতা, গান, ছবি আঁকার চর্চা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে পৃথিবীকে বাঁচিয়েছিল।গণেশ চরিত্রের মাধ্যমে লেখক বুঝিয়েছেন দয়া, মায়া, করুণা, ভালবাসাহীন শুধুমাত্র বিজ্ঞানের উপর ভর করে সমাজ চলে না। সৃষ্টিশীল, অনুভূতিপরায়ণ মানুষের ও পৃথিবীতে প্রয়োজন আছে। এ কারণেই গণেশ চরিত্রটি ব্যতিক্রম হয়েও হয়ে উঠেছে অসাধারণ।

. অর্থ অপরিবর্তিত রেখে নিম্নরেখাঙ্কিত শব্দগুলির পরিবর্তে নতুন শব্দ বসাও :

. ওসব অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।
উত্তরঃ ওসব অপ্রয়োজনীয় ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।

. কেউ ঠাট্টা বিদ্রুপ করল না।
উত্তরঃ কেউ ইয়ার্কি তামাশা করল না।

. দুনিয়াটা বেঁচে যাবে।
উত্তরঃ পৃথিবীটা বেঁচে যাবে।

. মহাসচিব তাঁর বিমান থেকে নামলেন গণেশের ডেরায়
উত্তরঃ মহাসচিব তাঁর আকাশযান থেকে নামলেন গণেশের বাসস্থানে

. গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন জানিয়ে বলল।
উত্তরঃ গণেশকে সসম্মানে অভিবাদন জানিয়ে বলল।

. লোকে গান গাইতে লেগেছে, কবিতা মকসো করছে।
উত্তরঃ লোকে গান গাইতে লেগেছে, কবিতা অভ্যাস করছে।

. হিমালয় যে খুব নির্জন জায়গা, তা নয়।
উত্তরঃ হিমালয় যে খুব জনহীন জায়গা, তা নয়।

. ধুর মশাই, যে বিটকেল শব্দ।
উত্তরঃ ধুর মশাই, এ যে বিকট শব্দ।

. এককথায় লেখো :

মহান যে সচিব, প্রতিরোধ করে যে, গতিবেগ আছে যার, মৃত্যুকে জয় করেছে যে, অন্ত নেই যার।

উত্তরঃ

মহান যে সচিব – মহাসচিব
প্রতিরোধ করে যে – প্রতিরোধকারী
গতিবেগ আছে যার – গতিশীল
মৃত্যুকে জয় করেছে যে – মৃত্যুঞ্জয়
অন্ত নেই যার – অনন্ত

. ন্ধি বিচ্ছেদ করো :

মাধ্যাকর্ষণ, আবিষ্কার, মৃত্যুঞ্জয়, অনাবশ্যক, গবেষণা, অন্তরীক্ষ, গণেশ, হিমালয়, নির্জন গবেষণাগার, পরীক্ষা।

উত্তরঃ

মাধ্যাকর্ষণ = মাধ্য + আকর্ষণ
আবিষ্কার = আবিঃ + কার
মৃত্যুঞ্জয় = মৃত্যুম্‌ + জয়
অনাবশ্যক = অন + আবশ্যক
গবেষণা = গো + এষণা
অন্তরীক্ষ = অন্তঃ + ইক্ষ
গণেশ = গণ + ঈশ
হিমালয় = হিম + আলয়
নির্জন = নিঃ + জন
গবেষণাগার = গো + এষণা + আগার
পরীক্ষা = পরি + ঈক্ষা

. সমার্থক শব্দ লেখো :

কৃত্রিম, পৃথিবী, আন্দোলন।

উত্তরঃ কৃত্রিম = নকল
পৃথিবী = জগৎ
আন্দোলন = বিদ্রোহ

. নিম্নলিখিত বিশেষণগুলির পর উপযুক্ত বিশেষ্য বসাও এবং বাক্যরচনা করো :

কৃত্রিম, মেদুর, সুকুমার, যান্ত্রিক, ফিরোজা, মন্ত্রমুগ্ধ।

উত্তরঃ ১. কৃত্রিম
🔹 বিশেষ্য: হাসি
🔹 বাক্য: ওর মুখের কৃত্রিম হাসি দেখে বোঝা যাচ্ছিল, সে আদৌ খুশি নয়।

২. মেদুর
🔹 বিশেষ্য: সন্ধ্যা
🔹 বাক্য: নদীর ধারে বসে আমরা এক মেদুর সন্ধ্যা উপভোগ করছিলাম।

৩. সুকুমার
🔹 বিশেষ্য: প্রকৃতি
🔹 বাক্য: শিশুটির মধ্যে এক সুকুমার প্রকৃতি দেখা যায়, যা সবাইকে আকৃষ্ট করে।

৪. যান্ত্রিক
🔹 বিশেষ্য: জীবন
🔹 বাক্য: আজকের এই যান্ত্রিক জীবন মানুষকে একাকিত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

৫. ফিরোজা
🔹 বিশেষ্য: আকাশ
🔹 বাক্য: পাহাড়ের ওপার থেকে দেখা ফিরোজা আকাশ মনটা হালকা করে দিল।

  1. মন্ত্রমুগ্ধ
    🔹 বিশেষ্য: দৃষ্টিতে
    🔹 বাক্য: গায়কের কণ্ঠে এমন জাদু ছিল যে শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।

Click Here To Download The PDF

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি| বাংলা প্রশ্ন উত্তর সমাধান। Ay Aro Bedhe Bedhe Thaki| Question-Answer Solved

0

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি

শঙ্খ ঘোষ

১ সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন দাও( ১ নাম্বারের জন্য)

ক)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কবির কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত –

i) ‘ নিহিত পাতাল ছায়া ‘

ii) ‘ পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ

iii) ‘ দিনগুলি রাতগুলি ‘

iv) ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে

খ)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটির কবি হলেন – 

i) জীবনানন্দ দাশ

ii) শঙ্খ ঘোষ

iii) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

IV) বিষ্ণু দে

গ) কবি শঙ্খ ঘোষের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটি হল – 

i) দিনগুলি রাতগুলি

ii) নিহিত পাতাল ছায়া

iii) মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে

Iv) বাবরের প্রার্থনা

ঘ)‘ কুত্তক ‘ ছদ্মনামে লেখা শঙ্খ ঘোষের রচনাগুলির নাম হল – 

I) শব্দ নিয়ে খেলা কথা নিয়ে খেলা

ii) দিনগুলি রাতগুলি , বাবরের প্রার্থনা

iii) ছন্দময় জীবন , ভিন্ন রুচির অধিকার

iv) এই শহরের রাখাল , ছন্দের বারান্দা

 ঙ)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কথাটি কবিতায় ব্যবহৃত হয় – 

i) এক বার

ii) দু – বার

iii) তিন বার

iv) চার বার

চ)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ বাক্যটির অর্থ – 

i) দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা

ii) ছাড়া ছাড়া থাকা

iii) বন্ধন মুক্ত থাকা

iv) ঢিলেঢালা থাকা

ছ)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটির দ্বিতীয় পঙ্ক্তি – 

i) আমাদের ডানপাশে ধ্বস

ii) আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ

iii)  আমাদের মাথায় বোমারু

iv) আমাদের ঘর গেছে উড়ে

জ)‘ আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ ‘ ‘ গিরিখাদ ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ –

i) স্থানচ্যুতি

ii) অদৃশ্য হওয়া

iii) চূড়া

iv) পর্বত গহ্বর

ঝ)আমাদের মাথায় ______

i) বোমারু

ii) গিরিখাদ

iii) চূড়া

iv) পর্বত গহ্বর

ঞ)কবিতায় উল্লিখিত হিমানীর বাঁধ রয়েছে – 

i) হাতে হাতে

ii) পায়ে পায়ে

iii) মাথায় মাথায়

iv) শিরায় শিরায়

ট)পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ ।’ — ‘ হিমানী ‘ শব্দের আক্ষরিক অর্থ – 

i) কাজল

ii) আগুন

iii) তুষার 

iv) পর্বত

ঠ)কবিতায় কবি কাদের শবদেহের উল্লেখ করেছেন ? 

i) বুড়োদের

ii) শিশুদের

iii) যুবকদের

iv) বৃদ্ধাদের সময়ের

ড)‘ আমাদের পথ নেই আর ।’— ‘ পথ ‘ শব্দটি কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে – 

i) দু – বার

ii) একবার

iii) চারবার

iv) তিনবার

ঢ)আমাদের কী নেই বলে কবির মত প্রকাশ ?

i) ভূগোল

ii) ইতিহাস

iii) বাংলা

iv) জীবন

ণ)“ আমাদের চোখমুখ ঢাকা ।’— ‘ চোখমুখ ‘ অর্থে কবি বলেছেন 

i) মুখোশাবৃত

ii) সময়াবৃত

iii) অলংকারাবৃত

iv) সমাজাবৃত

ত)আমরা ভিখারি কত মাসে বলে কবির মত

i) পাঁচ মাস

ii) ছ – মাস

iii) আট মাস ।

iv ) বারো মাস

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | (১ নাম্বারের জন্য)

ক)‘ আমাদের ’ বলতে কবি কাদের বুঝিয়েছেন ?

উঃ কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর কবিতায় ‘ আমাদের ’ বলতে দেশকালের সীমা অতিক্রম করে সাম্রাজ্যবাদী ও হানাদারি শত্রুর হাতে আক্রান্ত সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন । 

খ)আমাদের ডান পাশে , বাঁয়ে , মাথায় পায়ে যা আছে তা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে লেখো

উঃ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে আমাদের ডান পাশে ধস এবং বাঁয়ে গিরিখাদ , আর মাথার উপরে বোমারু ও পায়ে হিমানীর বাঁধ ।

গ)‘ ডান পাশে ধ্বস ’ ও ‘ বাঁয়ে গিরিখাদ ’ বলতে আসলে কবি কী বুঝিয়েছেন ? 

উঃআয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ ডান পাশে ধ্বস ’ ও ‘ বাঁয়ে গিরিখাদ ‘ বলতে কবি আসলে মানুষের পদে পদে বিপদ এবং পতনের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন । 

ঘ)‘ আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ ’ – ‘ গিরিখাদ ‘বলতে আসলে কবি কী বুঝিয়েছেন ? । 

উঃ‘ গিরিখাদ ’ হল দুই পর্বতের মাঝে সৃষ্ট গভীর খাদ । পাহাড়ি পথের বিপদসংকুলতার মতোই বর্তমান বিশ্বে মানুষের জীবনে ছড়িয়ে থাকা প্রতিকূলতাকে বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

ঙ)‘ আমাদের মাথায় বোমারু ‘ বলতে কী বলা হয়েছে ? 

উঃ যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যেমন বোমারু বিমান থেকে অতর্কিতে আক্রমণ চালায় , তেমনই আচমকা আক্রমণে মানুষের জীবন আজ বিপন্ন ।

চ)‘ পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ’— ‘ পায়ে পায়ে ‘ বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে ?

উঃ পাঠ্য কবিতায় ‘ পায়ে পায়ে ‘ বলতে মানুষের প্রতি পদক্ষেপকে বোঝানো হয়েছে ।

ছ)‘ আমাদের পথ নেই কোনো ” বলার কারণ কী ?

উঃ ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ বড়ো অসহায় ও নিরুপায় । প্রতিনিয়ত তার চলার পথের প্রতিকূলতা এবং দিশাহীনতাকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি এমন মন্তব্য করেছেন 

জ)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় আমাদের ঘর উড়ে গেছে , কথাটি কেন বলা হয়েছে ?

উঃ বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে । সে – কথা বোঝাতেই কৰি মন্তব্যটি করেছেন ।

ঝ)‘ আমাদের শিশুদের শব ‘ কোথায় ছড়ানো রয়েছে ?

উঃ ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে আমাদের শিশুদের শব কাছে ও দুরে ছড়ানো রয়েছে । অর্থাৎ আজকের সমগ্র পৃথিবী জুড়েই শিশুরা হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধ আর সন্ত্রাসের বলি । 

ঞ)আমাদের শিশুদের শব পড়ে থাকার মধ্যে দিয়ে কোন্ বিষয়টি ধরা পড়েছে ? 

উঃ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার বলি হচ্ছে আগামী প্রজন্মও । তাই কবির আশঙ্কা— তবে কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে মানবসমাজ !

ট)‘ আমরাও তবে এইভাবে / এ – মুহূর্তে মরে যাব না কি ? ‘ — কথা বলার অর্থ কী ?

উঃ চারদিকের প্রতিকূলতা , হানাদারি শত্রুর আক্রমণে গৃহহারা মানুষ চোখের সামনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মৃত্যু দেখে নিজের বেঁচে থাকাতেও সংশয় প্রকাশ করে ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ।

ঠ)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি বলার কারণ কী ? 

উঃ বিশ্বব্যাপী প্রতিকূলতার মাঝে চারদিকে হতাশার ছবি স্পষ্ট হলেও কবির বিশ্বাস পারস্পরিক সাহচর্য ও ঐক্যের জোরেই সমস্ত কিছু জয় করা সম্ভব । তাই কবি একতা আর সংঘবদ্ধতার কথা বলেছেন । 

ড)‘ আমাদের ইতিহাস নেই’— কথা বলা হয়েছে কেন ? 

উঃ এ কবিতায় কবি সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি । আর সাধারণ মানুষ কোনোদিনই ইতিহাসে স্থান পায় না । তাই এমন উক্তি । 

ঢ)‘ আমরা ভিখারি বারোমাস বলার কারণ কী ?

উঃ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শোষণে নিপীড়িত , বর্ণিত ও হতভাগ্য জনগণ আজ আশ্রয় ও জীবিকা হারিয়ে চিরভিখারিতে পরিণত হয়েছে ।

ণ)‘ পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে / পৃথিবী হয়তো গেছে মরে বলার অন্তর্নিহিত কারণ কী ? 

উঃ পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতার মাঝে পীড়িত , ঘরহারা ও ইতিহাসে ঠাই না – পাওয়া মানুষগুলির কাছে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে ।

ত)‘ আমাদের কথা কে বা জানে ‘ বলার কারণ কী ?

উঃ এই ব্যক্তিসর্বস্ব বিচ্ছিন্নতার যুগে , সাধারণ মানুষের সামান্য প্রয়োজনীয়তার কথায় যেন কেউ দৃপাত করে না । সেজন্যই কবি এ কথা বলেছেন ।

থ)‘ তবু তো কজন আছি বাকি বলার কারণ কী ?

উঃ ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতা অনুসারে এই রাজনৈতিক , সামাজিক অবক্ষয়ের যুগেও কিছু মানুষ এখনও মানবতায় বিশ্বাস হারায়নি । সেই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষগুলোকে নিয়েই কবি জোটবাঁধার কথা বলেছেন ।

দ)‘ আমাদের পথ নেই আর আমাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?

উঃ ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর । তাই ‘ আমাদের ’ বলতে তিনি এ পৃথিবীর সমস্ত নিরন্ন , খেটে খাওয়া ও নিরাপত্তাহীন অসহায় মানুষকেই বুঝিয়েছেন । 

ধ)‘ পৃথিবী হয়তো গেছে মরে — এমন বলার কারণ কী ?

উঃ শাসনের ষড়যন্ত্রে , সমাজ – রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবক্ষয়ে হতভাগ্য সাধারণ মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে ।

ন)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কোন মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

উঃ ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর |  ( ৩ নাম্বারের জন্য)

ক)‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় বর্তমান পারিপার্শ্বিক অবস্থা প্রসঙ্গে কবির মতামত তোমার নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো

উঃ শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় প্রায় ক্ষয়ে যাওয়া সমাজে এখনও যাদের মধ্যে মনুষ্যত্বের অবশেষটুকু আছে তাদের সংঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন । সাম্রাজ্যবাদী , শক্তিধর দেশগুলি কবির মতামত নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে পৃথিবীকে করে তুলেছে অস্থির । মানুষের চলার পথে ডাইনে – বাঁয়ে বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে । মাথার উপর বোমারু বিমানের মতোই হানা দিচ্ছে মৃত্যু , পদে পদে রয়েছে প্রতিকূলতা । তবু কবি আশাবাদী স্বপ্ন দেখান । তাই কবি পথহারা অসহায় মানুষগুলোকে এক হতে বলেছেন । 

খ)‘ আমাদের ঘর গেছে উড়ে’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

উঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতায় উদ্ধৃত প্রসঙ্গটি পাই । আজকের এই অবক্ষয়ের যুগে সাধারণ মানুষকে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে । চারদিকে দাঙ্গা , যুদ্ধ আর ধ্বংসের তাণ্ডব মানুষকে গৃহহীন করেছে । হিংসায় উন্মত্ত , যুদ্ধবিধ্বস্ত এই পৃথিবীতে মানুষকে আশ্রয় নিতে হচ্ছে উদ্বাস্তু শিবিরে । মানুষের এই নিরাশ্রয় , নিরাপত্তাহীনতার দিকটিতেই কবি ইঙ্গিত করেছেন । 

গ)‘ আমাদের পথ নেই কোনো’— ‘ পথ ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ? কবির এমন আশঙ্কার কারণ ব্যাখ্যা করো

উঃ উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার ‘ পথ ‘ – মূল অর্থ অংশ । এখানে ‘ পথ ’ বলতে এই অবক্ষয়ের যুগে আদর্শহীনতা ও অনিশ্চয়তার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে নতুনভাবে বাঁচার উপায় বা দিশাকে বোঝানো হয়েছে । আশঙ্কার কারণ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ , দাঙ্গা , রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা মানুষকে দিশেহারা করে তুলেছে । মানুষ আজ সন্ত্রাস আর বঞ্চনার শিকার । জীবনধারণের প্রতি পদে প্রতিবন্ধকতা তার অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে । তাই কবির আশঙ্কা এই অন্ধকারের আবর্ত থেকে বেরিয়ে এসে , মানুষের সুষ্ঠু জীবনযাপনের আর বুঝি কোনো উপায় নেই । 

ঘ)‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে উদ্ধতাংশটির তাৎপর্য লেখো । 

উঃ উদ্ধৃতিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার অংশ বিশেষ । যুদ্ধবিধ্বস্ত বর্তমান বিশ্বে আমাদের চারপাশ আজ উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিপৎসংকুল । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ; শাসকের মদতপুষ্ট স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী হানাহানি থেকে শিশুরাও বাদ যায়নি । ‘ কাছে দুরে ‘ গোটা পৃথিবীজুড়েই এখন সদ্যোজাতরাও হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের বলি । কবির আক্ষেপ আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি যেখানে শিশুদেরও কোনো নিরাপত্তা নেই । আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষা দিতে অক্ষম । এই অক্ষমতা মানবতার পক্ষেও গভীর অবমাননার , তাই অত্যন্ত বেদনার । 

ঘ)আমরাও তবে এইভাবে / এ – মুহূর্তে মরে যাব না কি – শঙ্কার হেতু কী ? 

উঃ কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা থেকে প্রশ্নোবৃত অংশটি গৃহীত । এখানে কবির এমন শঙ্কার কারণটি অত্যন্ত মর্মগ্রাহী । যেখানে আমরা আমাদের শিশুদের অস্তিত্ব রক্ষায় অপারগ , যেখানে প্রাণঘাতী হানাহানির অনায়াস শিকার হচ্ছে আমাদের শিশুরা ; সেখানে নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নটিও অবান্তর ও অর্থহীন হয়ে ওঠে । কারণ কবি কেবল বেঁচে থাকার জন্যই বেঁচে থাকাকে ঘৃণা করেন । তাই এহেন নারকীয় প্রবলের কাছে নতিস্বীকার এক সংবেদনশীল মানুষের কাছে অত্যন্ত যন্ত্রণা ও অপমানের বিষয় । পাঠ্য উদ্ধৃতাংশে সেই হতাশা ও অনুশোচনারই প্রকাশ ঘটেছে ।

ঙ)আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ।’— আমন্ত্রণ কেন ?

উঃ ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় এ আমন্ত্রণ বর্তমান যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর গৃহহীন , অসহায় , নিরন্ন সাধারণ মানুষদের প্রতি । আশাবাদী কবি তাদের নিয়ে ঐক্যের স্বপ্ন দেখেন , আর দেখেন নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন । মানুষের চলার পথে ডাইনে , বাঁয়ে , উপর , নীচে প্রতিটি দিকেই প্রতিকূলতা । হানাদারি শত্রুর আক্রমণে মানুষ আজ গৃহহীন , বাদ যায়নি শিশুরাও । আমাদের নিজেদের অস্তিত্বও বিপন্ন । সমগ্র পৃথিবীটার যেন জীবস্মৃত অবস্থা । আর এইখানেই কবির দায়বদ্ধতা । তাই এরকম এক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কবি মানুষকে সংঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন । 

চ)‘ আমাদের ইতিহাস নেই — কে , কেন কথা বলেছেন ? অথবা , ‘ এমনই ইতিহাস’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো । Madhyamik 2018

উঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার অন্তর্গত । দেশকালনির্বিশেষে কে বলেছেন সমগ্র পৃথিবীর আপামর জনসাধারণের প্রসঙ্গে কবি উদ্ধৃত অংশটি লিখেছেন । 

 বর্তমানে এক ভয়ংকর প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি । কেন বলেছেন আমরা গৃহহারা , এমনকি ধ্বংসের হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করতেও অপারগ । আমাদের বাঁচার আর পথ নেই । যুগে যুগে আমরা সাধারণ মানুষরা বঞ্চিত হয়েই চলেছি । 

আমাদের এই উপেক্ষা ও বঞ্চনার ইতিহাস কোথাও লেখা নেই । কারণ ইতিহাস নিয়ন্ত্রিত হয় ক্ষমতাবানদের দ্বারা । আসলে জীবন্মুত মানুষের অস্তিত্বটাই যেখানে তুচ্ছ , সেখানে চিরকাল অবজ্ঞা আর উপেক্ষাই তার প্রাপ্য । তাই সাধারণ মানুষ হয় ইতিহাসহীন , নয় অস্পষ্ট ইতিহাসের আড়ালে থাকা বিস্মৃত তাচ্ছিল্যের সামগ্রী । 

ছ)আমরা ভিখারি বারোমাস ‘ বলতে কবি কী ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস – অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝিয়েছেন ?

উঃ উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার অংশ বিশেষ । আমরা ভিখারি বারোমাস বলতে কবি মানুষের মানসিক দৈন্যের কথা বলেছেন । কবির মতে নানান প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণার ক্ষত নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে । সে পথহারা , তার মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে পড়েছে । তার প্রকৃত ইতিহাসের সঠিক প্রতিফলন হয়নি জেনেও সে নিশ্চুপ ও বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন । এভাবে আপাতদুর্বল ও ভীরু সাধারণ মানুষের অবহেলিত মানসিক দৈন্যের কথা বলতে গিয়ে কবি এমন মন্তব্য করেছেন ।

জ)পৃথিবী হয়তো গেছে মরে- এমন সংশয়ের কারণ কী ? Madhyamik 2024

উঃ কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় এমন সংশয়পূর্ণ উক্তিটি করেছেন । উপনিষদের কথার রেশ টেনে বলা যায় মানুষ তার মানবতার পক্ষে চলমান , তাই জীবনে থেমে থাকা মৃত্যুরই সমান । আজকের যুদ্ধ ও দাঙ্গাবিধ্বস্ত পৃথিবীতে মানুষ দিশেহারা , তার হাত – পা বাঁধা । গৃহহীন , ইতিহাস – বিস্মৃত এই নিরন্ন মানুষগুলি নিজের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ব্যর্থ । জীবনের অর্থহীনতায় বেঁচে থাকার আশা সে হারিয়েছে । তাই সমস্ত পৃথিবীটা তার কাছে জীবস্মৃত বলে মনে হয়েছে । 

ঝ)‘ তবু তো কজন আছি বাকি – কবি এই উক্তিটির সাহায্যে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

উঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় উদ্ধৃত উক্তিটি যেন ‘ বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বাণী ‘ । কবির মতে , সাম্রাজ্যবাদী ও স্বার্থান্বেষী একদল মানুষ নানান প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের চলার পথ রুদ্ধ করে দিতে চাইছে । সামাজিক , উদ্ভিটির মূল অর্থ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে তারা নানানভাবে বিপন্ন । তাদের অতীত অস্পষ্ট , অসম্পূর্ণতায় অন্ধকার । আর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎও সাম্রাজ্যবাদী শাসকের চক্রান্তে দুর্বিষহ । এরকম প্রতিকূল অবস্থার মাঝে বিবেকবান যে কয়েকজনের অস্তিত্ব আছে , কবি তাদের নিয়ে প্রতিরোধের আশায় এমন উক্তি করেছেন । 

ঞ)‘ আমরা ফিরেছি দোরে দোরে’- ‘ আমরা কারা ? কেন এই অবস্থা ?

উঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ আমরা ‘ বলতে অসহায় ও বিপন্ন সাধারণ মানুষকে বোঝানো হয়েছে । আজ সমগ্র পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে এক গভীর আঁধার । হিংসা যুদ্ধ – রক্তক্ষয় – বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতার আঘাতে মানুষ এখন ক্ষতবিক্ষত । তার চলার পথে ডাইনে – বাঁয়ে – উপরে কিংবা নীচে সর্বত্রই কেন এই অবস্থা প্রতিকূলতা আর অতর্কিতে প্রাণহানির আশঙ্কা । শাসকের চক্রান্তে , স্বার্থান্বেষী ক্ষমতাবানের মদতে সমাজ – রাজনৈতিক অবক্ষয় এক চরম রূপ নিয়েছে । ফলে নরঘাতী হানাহানির শিকার হচ্ছে শিশুরাও । হতভাগ্য , নিরাপত্তাহীন ও দিশাহীন মানুষের এই নিরুপায় দুর্দশার ছবিটি ফুটে উঠেছে প্রশ্নোত পঙক্তিটিতে ।

 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | (৫ নাম্বারের জন্য)

  ক)‘ আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় যুগযন্ত্রণার যে – নির্মম ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে , বর্ণনা করো । 

আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা কর। Madhyamik 2020

উঃ বর্তমান সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা কবিকে পীড়িত করেছে । তাই মানুষের চলার পথের প্রতিকূলতা , অসহায়তা , সংশয় ও সম্ভাবনার ছবি কবি এই কবিতায় তুলে ধরেছেন । বর্তমান সময়ে মানুষের চলার পথ বিপৎসংকুল । তাদের চারপাশে মৃত্যুর হাতছানি , প্রতিপাদে বাধা আর প্রতিকূলতা । অবক্ষয়ের কার্য রূপ তার চলার সব পথ রুদ্ধ । তবু মানুষ এগিয়ে চলেছে । হানাদারি শত্রুর আঘাতে মানুষ নিরাশ্রয় হয়েছে । সে তার ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে গিয়ে হয়েছে ব্যর্থ । এখন সে নিজেও মৃত্যুভয়ে শঙ্কিত ও পথহারা । এমন পরিস্থিতিতে কবি ‘ বেঁধে বেঁধে ‘ অর্থাৎ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের সংঘবদ্ধ হয়ে চলার কথা বলেছেন । 

  কবির মতে , সাম্রাজ্যবাদী আর সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা কোণঠাসা । আমাদের এই দুঃখযন্ত্রণার ইতিহাস হয়তো অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । অথবা যদি লেখা হয় তবে তা হবে অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণতায় ভরা । 

সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদের চিরকাল এভাবেই আশাবাদী কবির আহ্বান ক্ষমতাবানের প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুঝে বেঁচে থাকতে হয় । পৃথিবীর এই জীবন্মুত পরিস্থিতিতে অন্যের দোরে দোরে পরমুখাপেক্ষী হয়ে না – ঘুরে , নৈরাশ্য ত্যাগ করে তাই আমাদেরই একত্রিত হতে হবে । কবির আহ্বান বিবেকবান মানুষের একতা ও সাহচর্যই হবে । তাদের প্রতিরোধের ভাষ্য ।

খ)আমরাও তবে এইভাবে / এ – মুহূর্তে মরে যাব না কি – শঙ্কার হেতু কী ?  Madhyamik 2018

উঃ প্রশ্নে উদ্ভূত পঙ্ক্তিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা থেকে গৃহীত । এই কবিতাটি তাঁর ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত । । হিংসাশ্রয়ী সময়ের বিপন্নতায় আজ মানুষের চারপাশ বিপৎসংকুল । তাই রাষ্ট্রীয় বর্বরতার নগ্ন ভয়াবহতা থেকে শিশুরাও এখন আর বাদ যায় না ।এখানে কবির এমন শঙ্কার কারণটি অত্যন্ত মর্মগ্রাহী । ক্ষমতার দখলদার তথা শক্তিশালী প্রবল একদিকে নির্বিবাদে শিশুহত্যার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেমন ধ্বংস করে , অন্যদিকে তেমনি আপামর জনসাধারণের মনে এক ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করতে সক্ষম হয় । যেখানে আমরা আমাদের শিশুদের অস্তিত্ব রক্ষায় অপারগ , যেখানে প্রাণঘাতী হানাহানির অনায়াস শিকার হচ্ছে আমাদের শিশুরা ; সেখানে নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নটিও অবান্তর ও অর্থহীন হয়ে ওঠে । কারণ কবি কেবল বেঁচে থাকার জন্যই বেঁচে থাকাকে ঘৃণা করেন । তাই এহেন নারকীয় প্রবলের কাছে নতিস্বীকার এক সংবেদনশীল মানুষের কাছে অত্যন্ত যন্ত্রণা ও অপমানের বিষয় । পাঠ্য উদ্ধৃতাংশে সেই হতাশা ও অনুশোচনারই প্রকাশ ঘটেছে ।

গ)‘ আমাদের পথ নেই কোনো ’ –‘আমরা ’ কারা এবং তাদের ‘ পথ ’ নেই কেন ? পথহারা মানুষগুলিকে কবি কোন্ পথের সন্ধান দিয়েছেন ?

উঃ স্বাধীনতা – পরবর্তী যুগের অন্যতম সমাজসচেতন কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ আমরা ‘ কোনো সীমাবদ্ধ এলাকার জনসমষ্টি নয় । তিনি ‘ আমরা ‘ বলতে ‘ আমরা কারা আজকের যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত , নিপীড়িত , শ্রমজীবী ও শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন । ‘ পথ ’ বলতে এখানে কবি সাধারণ মানুষের জীবনের চলার পথের কথা বলেছেন । সুস্থ সমাজ ও সুন্দর পৃথিবীই পারে মানুষের চলার পথকে মসৃণ করতে । কিন্তু আজকের পৃথিবী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ভীত – সন্ত্রস্ত । সাধারণ শান্তিকামী মানুষ বিপন্ন ও অসহায় । গৃহহারা এইসব মানুষ তাদের ভাবী প্রজন্মকে বাঁচাতে ব্যর্থ । তাদের নিজেদের অস্তিত্বও আজ সংকটের মুখে । তাই তাদের মনে হয়েছে তারা পথহারা । কবির দেওয়া পথের সন্ধান কবি – সাহিত্যিকরা মানুষকে কোনোদিন নিরাশার অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দেন না । কবি শঙ্খ ঘোষও এর ব্যতিক্রম নন । আঘাতে আঘাতে জর্জরিত মানুষ একদিন না একদিন প্রত্যাঘাতের পথ বেছে নেয় । এটাই চিরকালের নিয়ম । কবিও পথহারা মানুষগুলিকে প্রত্যাঘাত হানার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন । তিনি তাদের ‘ আরো বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থাৎ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । কবির মতে , যে কজন আছি , তারা সকলে সংঘবদ বিশ্বাসে একজোট হলে আমাদের সামনে অবশ্যই নতুন পথ খুলে যাবে ।

 ঘ)‘ তবু তো কজন আছি বাকি / আয় আরো হাতে হাত রেখে / আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি- কবিতাটির মধ্যে কবি যে – মূল বক্তব্য তুলে ধরতে চেয়েছেন , তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও উদ্ধৃতাংশটির প্রেক্ষিতে কবি – মানসিকতার পরিচয় দাও

উঃ ” বেঁধে বেঁধে থাকা -কবির দৃষ্টিভঙ্গি উত্তর শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতায় ‘ বেঁধে বেঁধে ’ থাকি বলতে কবি সংঘবদ্ধভাবে বেঁচে থাকাকে বোঝাতে চেয়েছেন । বর্তমান বিশ্ব ক্ষমতাবান শাসক , সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও মৌলবাদীদের যৌথ ষড়যন্ত্রে বিধ্বস্ত । মানুষ আজ বিপন্ন । প্রতি পদে পদে তার বিপদ । তার মাথার উপর ছাদ নেই । তারা তাদের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে অক্ষম । এমনকি তারা নিজেরাই প্রতি মুহূর্তে প্রাণসংশয়ের ভয়ে ভীত । তাই এভাবে ক্রমাগত শোষিত মানুষগুলিকে কবি প্রত্যাঘাতের পথে এগোতে বলেছেন । এই প্রত্যাঘাতের পথ হল সংঘবদ্ধতা । কবি পৃথিবীর অংসখ্য শ্রমজীবী , শান্তিকামী সাধারণ মানুষদের ‘ বেঁধে বেঁধে ’ অর্থাৎ একত্রিত হয়ে এ সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলেছেন । বেঁধে বেঁধে থাকার প্রয়োজনীয়তা → বন্য জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেদের রক্ষার্থে আদিম অরণ্যচারী মানুষের মনেও একদিন সংঘবদ্ধভাবে বাস করার ভাবনা জেগেছিল । এইভাবেই গড়ে উঠেছিল পরিবার , পাড়া , গ্রাম , প্রদেশ ও রাষ্ট্র । সৃষ্টি হয়েছিল নতুন নতুন সভ্যতা । আজ বন্য জন্তুর ভয়ে নয় ; সাম্রাজ্যবাদী , ক্ষমতাবান ও মৌলবাদী শক্তি তাদের নৃশংসতায় সাধারণ মানুষের সামনে অস্তিত্বের সংকট সৃষ্টি করেছে । এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে , ভাবী প্রজন্মের কাছে এক সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে হলে প্রয়োজন মানুষের সংঘবন্ধতা । সুস্থ – শান্তিকামী ও বিবেকমান মানুষের ঐক্যবদ্ধ অঙ্গীকারেই একমাত্র এ সভ্যতার সংকটমোচন সম্ভব । কবি এ কথাই বলেছেন । 

ঙ)আমাদের ইতিহাস নেই বলে ‘ কবি সংশয় প্রকাশ প্রশ্ন করেছেন কেন ?

অথবা , ‘ এমনই ইতিহাস বলার কারণ কী ? 

অথবা , “ আমাদের ডানপাশে ধ্বস / আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ সমগ্র কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে এই মন্তব্যের তাৎপর্য লেখো । 

উঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে সংশয়ার্কীর্ণ ইতিহাসের রূপ থাকি ‘ কবিতার অংশবিশেষ । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আজকের পৃথিবী বিষাক্ত হয়ে উঠেছে । মানুষের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন । এই সময়ে আমরা বিশেষ করে সাধারণ মানুষ এক ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি । আমরা ডাইনে – বাঁয়ে বিপদকে রেখে , মাথার ওপর হানাদারি শত্রুকে উপেক্ষা করে , সামনের প্রতিকূল পথ ধরে এগিয়ে চলেছি । এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই । ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে আমরা ব্যর্থ । প্রতিক্ষণে হানাদারি মৃত্যুর ভয়ে আমরা ভীত । সাম্রাজ্যবাদী ও সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা পর্যুদস্ত । কিন্তু আমাদের এই দুঃখের ইতিহাস অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । রানারের বেদনার মতো কালোরাত্রির খামে চিরকাল তা আবদ্ধ থেকে যাবে , এটাই কবির আক্ষেপ । 

 বিশ্বাসের ভিত যেখানে আলগা হয়ে যায় , সেখানেই সংশয়ের সৃষ্টি হয় । কবি মনে করেন , সারাপৃথিবীর ইতিহাসে সাধারণ মানুষের কথা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি । কারণ ইতিহাসকে কবির দৃষ্টিতে আমাদের ইতিহাস নিয়ন্ত্রণ করে শাসক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি । আর সাধারণ মানুষের যদিও বা কোনো ইতিহাস থাকে তবে তা অস্পষ্ট , অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণ । ক্ষমতাবান শাসকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ইতিহাসে মানুষের অবস্থার যথার্থ প্রতিফলন ঘটে না । তাদের অসহায় বিপন্নতা কিংবা জীবন্মুত পরিস্থিতির খোঁজ , শাসকের ইতিহাসে অনুপস্থিত বলেই তথাকথিত বিকৃত ইতিহাস সম্পর্কে কবির এই সংশয় । 

চ)‘ আমরা ভিখারি বারোমাস’— ‘ আমরা ’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? তারা নিজেদের সর্বদা ভিখারি বলে মনে করেছেন কেন ? Madhyamik 2024

উঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত । এখানে ‘ আমরা ‘ বলতে বর্তমান বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ও মৌলবাদী শক্তির অত্যাচারে জর্জরিত সাধারণ , শান্তিকামী ও শ্রমজীবী মানুষদের বোঝানো হয়েছে ।

  এক্ষেত্রে ‘ আমরা ’ একটি বিশেষ শ্রেণিচরিত্র , দেশকালভেদে যারা সর্বদাই এক । সাধারণ , শ্রমজীবী এই মানুষগুলি সমাজের নীচের তলার মানুষ হিসেবে পরিচিত । এরা সভ্যতার ধারক ও বাহক । কিন্তু এরাই থাকে । সবচেয়ে অন্ধকারে । সমাজের তথাকথিত উচ্চবিত্তের দয়াদাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভর করে এদের মরা বাঁচা । শাসকের ক্ষমতার বদল হলেও এদের দীনতার কোনো বদল হয় না । সাধারণ এই মানুষগুলি সর্বদাই বঞ্চিত থাকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে । আবার সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তি যখন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিশ্বময় উন্মাদনা সৃষ্টি করে , তখন সবার আগে এরাই আশ্রয়চ্যুত হয়ে পড়ে , টান পড়ে এদের রুটি – রুজিতে । এদের জীবনের ইতিহাস কোথাও লেখা হয় না । আর যদিও – বা হয় তবে তা ক্ষমতাবান ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে বিকৃত হয়ে পরিবেশিত হয় । অথচ এই সমস্ত মানুষরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিচারে ভিখারি নয় , এরা সামাজিক দিক দিয়েও দীন , শাসকের অবজ্ঞা , উপেক্ষা ও অবহেলার পাত্র । তাই কবি এই সাধারণ মানুষদের জবানিতে বলেছেন , ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস । 

ছ)‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে ! — কার , কোন্ কবিতার অংশ ? মূলগ্রন্থের নাম কী ? পাঠ্য কবিতা অনুসারে পড়ুক্তি দুটির তাৎপর্য আলোচনা করো

উঃ প্রশ্নে উদ্ভূত পঙ্ক্তিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা থেকে গৃহীত । এই কবিতাটি তাঁর ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত । । হিংসাশ্রয়ী সময়ের বিপন্নতায় আজ মানুষের চারপাশ বিপৎসংকুল । তাই রাষ্ট্রীয় বর্বরতার নগ্ন ভয়াবহতা থেকে শিশুরাও এখন আর বাদ যায় না । এইজন্য ‘ কাছে – দূরে ‘ অর্থাৎ যত্রতত্র নারকীয় হানাহানি কিংবা প্রাণঘাতী হিংসার বলি হিসেবে ছড়িয়ে থাকে শিশুর মৃতদেহ । এভাবেই ক্ষমতার দখলদার তথা শক্তিশালী প্রবল একদিকে নির্বিবাদে শিশুহত্যার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেমন ধ্বংস করে , অন্যদিকে তেমনি আপামর জনসাধারণের মনে এক ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করতে সক্ষম হয় । শিশু তো দেশের ভবিষ্যৎ , তাই তার হত্যা হলে , ভবিষ্যৎশূন্য হয় দেশ । নতুন ভাবনার ধারক ও বাহকের পথ নিশ্চিহ্ন হয় চিরতরে । সুতরাং , যে – সমাজ ও রাষ্ট্র শিশুহত্যার চক্রান্ত করে , সে সম্পূর্ণ মনুষ্যত্ব – বিরোধী । অন্যদিকে , নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারা যেন আমাদেরই অক্ষমতা ও কলঙ্কের চিহ্ন । তাই কবি এই শিশুঘাতী মারণযজ্ঞের হাত থেকে মানবতায় উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন ।

জ)‘ আমাদের ইতিহাস নেই— কাদের , কেন ইতিহাস নেই ? এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে সভ্যতার কোন্ কলঙ্কিত ইতিহাসকে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে ?

উঃ কাদের কেন ইতিহাস নেই উত্তর / আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি সারাপৃথিবীর খেটে – খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের ইতিহাসহীনতার প্রতি দিক্‌নির্দেশ করেছেন । আসলে এ বিশ্বের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয় । শাসক কিংবা সাম্রাজ্যবাদীর ইচ্ছা আর পরিকল্পনায় । তাই সেখানে উপেক্ষিত দুর্বলের বাস্তব অবস্থার যথার্থ প্রতিচ্ছবি কখনোই ফুটে ওঠে না । ক্ষমতাবানের দত্ত আর আস্ফালনে শিকড়হারা মানুষের সম্পূর্ণ বিস্মৃত দৈন্যদশাটি আমাদের ইতিহাস নেই এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে । 

  কলঙ্কিত ইতিহাসের পরিচয় বর্তমান সময়ে হিংসা ও রণরক্তে পর্যুদস্ত সাধারণ মানুষের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে কবি ইতিহাসের প্রসঙ্গকে টেনে এনেছেন । কোনো দেশ কিংবা জাতির সমাজ , সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিবর্তনের ধারাবাহিক ভাষ্য আর বিশ্লেষণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মানুষের ইতিহাস । কিন্তু প্রথাগত ইতিহাস বা ক্ষমতাবানের পরিকল্পিত ইতিহাসে প্রাধান্য পায় শাসকের স্বার্থ । সেখানে বিকৃতি – বিভ্রান্তি ও মিথ্যা প্রচারে প্রকৃত ইতিহাস তার নিজস্বতা হারায় । সাধারণ মানুষ ক্রমশ ভুলে যেতে থাকে নিজের ঐতিহ্য – শিকড় – স্বপ্ন ও সংঘর্ষের ইতিবৃত্তকে । তারা দিশাহীন বিচ্ছিন্নতার স্রোতে ক্রমশ পথ হারায় । তাই কবি আমজনতার ইতিহাস থাকা না – থাকার সঙ্গে যখন ‘ এমনই ইতিহাস ‘ লেখেন তখন মানুষের বিভ্রান্তির দিকটিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে । শাসকের উদ্দেশ্যপূরণ করে এমন চাপিয়ে দেওয়া মিথ্যা ইতিহাসের কলঙ্কিত রূপটিকেই তাই কবি এভাবে কটাক্ষ করেছেন ।

 Click Here TO DOWNLOAD The PDF

সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস (দ্বিতীয় অধ্যায়)| Class 7 |History| 2nd Chapter| Question-Answer Solved

5

সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস

(দ্বিতীয় অধ্যায়)

ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা

ক) শূন্যস্থান পূরণ করো

১ বঙ্গ নামটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ঋকবেদের ঐতেরেয় আরণ্যক-

২ মহাভারতে বঙ্গ, পুণ্ড্র, শুঙ্গ ও তাম্রলিপ্তকে আলাদা রাজ্য বলা হয়েছে।

৩ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে বঙ্গের উল্লেখ রয়েছে।

৪ কালিদাসের রঘুবংশম কাব্যে বঙ্গ ও শুঙ্গ নাম দুটি পাওয়া যায়।

৫ ঐতিহাসিক মিনহাজ-ই-সিরাজের লেখাতে বঙ্গ রাজ্যের কথা আছে।

৬ ঐতিহাসিক আবুল ফজল তার আইন-ই-আকবরি গ্রন্থে বঙ্গ অঞ্চলকে সুবা বাংলা বলেছেন।

৭ ইউরোপীয় ভ্রমনকারীরা বাংলার নাম দিয়েছিল বেঙ্গালা

৮প্রাচীন ভারতের সীমানা তৈরী হয়েছিল প্রধানত তিনটি নদী দিয়ে।

পুন্ড্রবর্ধন ছিল প্রাচীন বাংলা অঞ্চলগুলির মধ্যে বৃহত্তম।

১০ ভাগীরথী ও করতোয়া নদীর মধ্যের এলাকা বরেন্দ্র নামে পরিচিত।

১১ শশাঙ্কের রাজধানী ছিল গৌড়

১২প্রাচীন সমতট ছিল মেঘনা নদীর পূর্ব দিকের এলাকা।

১৩ শশাঙ্ক ছিলেন এক গুপ্ত সম্রাটের মহাসামন্ত।

১৪ শশাঙ্ক ৬০৬’০৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৩৭’৩৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গৌড়ের স্বাধীন শাসক ছিলেন।

১৫ রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারের কাছেই ছিল গৌড়ের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ

১৬ চিনা ভাষায় রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারের নাম লো-টো-মো- চিহ

১৭ কর্ণসুবর্ণ স্থানীয় ভাবে রাজা কর্ণের প্রাসাদ নামে পরিচিত।

১৮ কর্ণসুবর্ণে বৌদ্ধশৈব  উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করত।

১৯ শশাঙ্কের মৃত্যুর পর ভাস্করবর্মা রাজা হয়েছিল।

২০ কবি বাকপতিরাজ গৌড়বধ কাব্যটি লিখেছেন।

২১ বাকপতি রাজ ছিলেন কনৌজের শাসক যশোবর্মনের রাজকবি।

২২ শশাঙ্ক ছিলেন শিবের উপাসক।

২৩ শশাঙ্কের শাসন ব্যবস্থাকে বলা হত গৌড়তন্ত্র

২৪ শশাঙ্কের আমলে সোনার মুদ্রা প্রচলিত ছিল।

২৫ পাল রাজাদের আদি নিবাস ছিল বরেন্দ্র অঞ্চলে।

২৬ পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল

২৭ পালশাসনে কৈবর্ত বিদ্রোহ হয়েছিল।

২৮ কৈবর্ত বিদ্রোহের তিনজন নেতা হলেন দিব্য রুদোক ও ভীম।

২৯ দিব্য ছিলে পালরাষ্ট্রের কর্মচারী।

৩০ কৈবর্ত বিদ্রোহের কথা জানা যায় রামচরিত কাব্য থেকে।

৩১ সেন রাজাদের আদি বাসস্থান ছিল ভারতের কর্ণাট অঞ্চলে।

৩২ বল্লাল সেন পাল রাজা গোবিন্দ পালকে পরাস্ত্র করেছিলেন।

৩৩ রাজা লক্ষণ সেনের রাজধানী ছিল পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুরে।

৩৪ গুর্জর-প্রতিহার রাজস্থানগুজরাটের বৃহৎ অঞ্চলে শাসণ করে।

৩৫ রাজা ভোজ ছিলেন গুর্জর-প্রতিহারের শক্তিশালী রাজা।

৩৬ কাবেরী ও তার শাখা নদীকে ঘিরে চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল।

৩৭ বিজয়ালয় চোল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

৩৮ থাঞ্জাভুর বা তাঞ্জোর ছিল চোল রাজ্যের রাজধানী।

৩৯ চোল রাজ প্রথম রাজেন্দ্র গঙ্গাইকোন্ডচোল উপাধি নেন।

৪০ মক্কা ও মদিনা ছিল আরব উপদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ শহর।

৪১ আরবের যাযাবর মানুষদের বলা হয় বেদুইন।

৪২ খেজুর ও উটের দুধ ছিল আরবদের অন্যতম খাদ্য।

৪৩ হজরত মহম্মদ মুসলিম ধর্ম প্রচলন করেছিলেন।

৪৪ খলিফা শব্দের অর্থ হল উত্তরাধিকারী বা প্রতিনিধি।

৪৫ খলিফার অধীনে থাকা অঞ্চলের নাম খিলাফত।

৪৬ ইসলামের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ হল কোরান।

৪৭ অল বিরুণী ছিলেন দর্শণ ও গ্ণিতে পণ্ডিত।

৪৮ অল বিরুণীর লেখা কিতাব-অল-হিন্দ থেকে সেকালের ভারতের অনেক কথা যানা যায়।

৪৯ কবি ফিরদৌসী শাহনামা কাব্য লিখেছিলেন।

৫০ বখতিয়ার খিলজি লক্ষণাবতী অধিকার করায় তার নাম হয় লখণৌতী।

৫১ সুলতানী যুগের একজন ঐতিহাসিক ছিলেন মিনহাজ-ই-সিরাজ

৫২ সেন্ রাজা লক্ষণ সেনের আমলে বাংলায় তুর্কি আক্রমণ ঘটে।

৫৩ সকলোত্তরপথনাথ উপাধি ছিল হর্ষবর্ধণের।

৫৪ তুর্কিরা নদীয়া দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেছিল।

৫৫ বরেন্দ্র অঞ্চলে রামাবতী নগরে রামপালের রাজধানী স্থাপিত হয়।

খ) উত্তর দাও

১ বাংলাদেশের পূর্ব নাম কি?

উঃ পূর্ব পাকিস্তান।

২ কবে বাংলা ভাগ হয়েছিল?

উঃ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে

৩ প্রাচীন বাংলা কি কি অঞ্চল দিয়ে তৈরি?

উঃ পুন্ড্রবর্ধণ, বরেন্দ্র, বঙ্গ, বঙ্গাল, রাঢ়, সুন্ম, গৌড়, সমতট ও হরিকেল।

৪ পুন্ড্রবর্ধন কোন অঞ্চল জুড়ে ছিল?

উঃ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহি,পাবনা এবং সিলেতবা শ্রীহট্ট জুড়ে।

৫ বরেন্দ্র কোন অঞ্চল জুড়ে ছিল?

উঃ ভাগীরথী ও করতোয়া নদীর মধ্যের এলাকা নিয়ে।

৬ কোন এলাকাকে বঙ্গ বলা হত?

উঃ প্রাচীনকালে পদ্মা ও ভাগীরথী নদীর মাঝে ত্রিভুজের মতো দেখতে ব-দ্বীপ এলাকাকে বলা হয় বঙ্গ।

৭ বঙ্গাল কোন অঞ্চলে ছিল?

উঃ বঙ্গাল অঞ্চল বলতে বঙ্গের দক্ষিণ সীমানাবর্তী বঙ্গোপ্সাগরের উপকূল্ বোঝাত।

৮ বজ্রভূমি ও সুন্মভূমি কাকে বলে?

উঃজৈন্দের প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে উত্তর রাঢ়কে বলা হত বজ্রভূমি এবং দক্ষিণ রাঢ়কে বলা হত সুন্মভূমি।

৯ উত্তর রাঢ় কোন অঞ্চল জুড়ে ছিল?

উঃ আজকের মুর্শিদাবাদ জেলার পশ্চিম ভাগ,বীরভুম জেলা, সাঁওতাল পরগণার একাংশ,এবং বর্ধমান জেলায় ছিল উত্তর রাঢ় অঞ্চল।

১০ দক্ষিণ রাঢ় কোন অঞ্চল জুড়ে ছিল?

উঃ আজকের হাওড়া, হুগলী ও বর্ধমান জেলার বাকি অংশ ও অজয় নদীর মাঝের বাকি এলাকাকে বলা হত।

১১ গৌড় কোন অঞ্চল জুড়ে ছিল?

উঃ মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার ্পশ্চিম অংশ নিয়ে তৈরী হয়েছিল সেকালের গৌড়।

১২কোন অঞ্চলকে সমতট বলা হত?

উঃ মেঘনা নদীর পূর্ব দিকের এলাকা অর্থাৎ বর্তমান বাংলা দেশের কুমিল্লা, নোয়াখালি অঞ্চলকে সমতট বলে।

১৩ কোন অঞ্চলে হরিকেল অবস্থিত ছিল?

উঃ সমতটের দক্ষিন-পূর্ব দিকে আজকের বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূল অঞ্চল প্রাচীন যুগে হরিকেল নামে পরিচিত ছিল।

১৪ বাংলার উল্লেখযোগ্য প্রথম রাজা কে ছিলেন?

উঃশশাঙ্ক

১৫ শশাঙ্ক কতদূর পর্যন্ত তার রাজ্য বিস্তার করেছিল?

উঃ শশাঙ্ক উত্তর-পশ্চিম বারাণসী পর্যন্ত এবং সমগ্র গৌড় দেশ, মগধ, বুদ্ধগয়া এবং ওড়িশার এক অংশ তার নিজের অধিকারে এনেছিলেন।

১৬ গৌড়ের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ কোথায় ছিল?

উঃ পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার চিরূটি রেলস্টশনের কাছে রাজবাড়ি ডাঙ্গায় প্রাচীন রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এর কাছেই ছিল সেকালের কর্ণসুবর্ণ।

১৭ কোন পর্যটক কর্ণসুবর্ণে এসেছিলেন?

উঃ চিনা পর্যটক সুয়ান জাং তাম্রলিপ্ত বা তমলুক থেকে কর্ণসুবর্ণে এসেছিলেন।

১৮ কর্ণসুবর্ণর সামাজিক ও আর্থিক অবস্থা কেমন ছিল?

উঃ কর্ণসুবর্ণ ছিল জনবহুল এবং এখানকার মানুষ ছিল সমৃদ্ধ।কৃষিকাজ ছিল প্রধান জীবীকা তবে বাণিজ্যও করত।

১৯ শশাঙ্কের মৃত্যুর পর কারা কর্ণসুবর্ণে রাজত্ব করেছিলেন?

উঃ শশাঙ্কের মৃত্যুর পর কর্ণসুবর্ণ অল্প সময়ের জন্য ভাস্করবর্মার হাতে চলে যায়। তারপর কিছুকাল এটি জয়নাগের রাজধানী ছিল।

২০ গৌড়বধ বা গৌড়বহো কাব্য কে কবে কী উদ্দেশ্যে লেখেন?

উঃ কনৌজের শাসক যশোবর্মা বা যশোবর্মণের রাজকবি বাকপতিরাজ ৭২৫-৭৩০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ গৌড়বহ কাব্য রচনা করেছিলেন।

            যশোবর্ধন মগধের রাজাকে পরাজিত করার পর কবি এই কাব্য রচনা করেছিলেন।

২১ শশাঙ্ক কাকে পরাজিত করেছিলেন?

উঃ স্থানীশ্বরের পূষ্যভূতি বংশের শাসক হর্ষবর্ধনকে পরাজিত করেছিলেন।

২২ কোন কোন বইয়ে শশাঙ্ককে বৌদ্ধ-বিদ্বেষী বলা হয়েছে?

উঃ আর্যমঞ্জ শ্রীমূলকল্প নামক বৌদ্ধ গ্রন্থে এবং সুয়ান জাং এর ভ্রমণ বিবরণীতে  এবং হর্ষবর্ধনের সভাকবি বানভট্টের রচনা হর্ষচরিতে শশাঙ্ককে নিন্দা করা হয়েছে।

২৩ গৌড়তন্ত্র কী? বর্ণনা কর।

উঃ শশাঙ্কের শাসণকালে গৌড়ে যে শাসণ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল তাকে গৌড় তন্ত্র বলে।

            কর্মচারী ও আমলারা কেন্দ্রীয়ভাবে সরকার পরিচালনা করত।

২৪  শশাঙ্কের আমলের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে লেখ।

উঃ শশাঙ্কের আমলে যে সোনার মুদ্রা প্রচলিত ছিল তার মান পড়ে গিয়েছিল এবং নকল সোনার মুদ্রা দেখা যেত। অর্থাৎ ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই যুগে মন্দা দেখা দিয়েছিল। তবে অর্থনীতি কৃষি নির্ভর হয়ে পড়ে। সমাজ গ্রামকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে, মহত্তর ও স্থানীয় প্রধান্দের গুরুত্ব বাড়তে থাকে।

২৫ শশাঙ্কের আমলে বঙ্গে কী ধর্ম প্রচলিত ছিল?

উঃ শশাঙ্কের আমলে বঙ্গ ও সমতটের শাসকরা প্রায় সকলেই ছিল ব্রাক্ষ্মন্য ধর্মের অনুরাগী। বিষ্ণু, কৃষ্ণ ও শিব পূজার প্রথা প্রচলিত ছিল।

২৬ মাৎস্যন্যায় কাকে বলে? বাংলায় মাৎস্যন্যায়ের যুগ কবে ছিল?

উঃ মাৎস্যন্যায় বলতে দেশে অরাজকতা বা স্থায়ী রাজার অভাবকে বোঝানো হয়। পুকুরের বড় মাছ যেমন ছোটো মাছকে খেয়ে ফেলে, অরাজকতার সময়ে তেমনি শক্তিশালী লোক দুর্বল লোকের উপর অত্যাচার করে।

            শশাঙ্কের মৃত্যুর পড়ে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের মধ্যভাগ থেকে অষ্টম শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত একশো বছর বাংলার বিশৃঙ্খল সময়কে মাৎস্যন্যায়ের যুগ বলে।

২৭ কোথায় পালযুগের বৌদ্ধবিহার আবিস্কৃত হয়েছে?

উঃমালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকে জগজ্জীবনপুরে।

২৮ পাল রাজাদের আদি নিবাস কোথায় ছিল? কে পাল বংশ প্রতিষ্ঠা করেন?

উঃ পাল রাজাদের আদি নিবাস ছিল বরেন্দ্র অঞ্চলে।

            ৭৫০-৭৪ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ গোপাল পাল বংশের প্রতিষ্ঠা করেন।

২৯ কোন পাল রাজা ত্রিশক্তি সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করেন?

উঃ গোপালের উত্তরাধীকারী ধর্মপাল উত্তর ভারতে কনৌজকে কেন্দ্র করে যে ত্রিশক্তি সংগ্রাম চলছিল তাতে অংশগ্রহণ করেন।

৩০ দেব পালের আমলে পাল রাজত্ব কতদূর ছড়িয়ে পড়েছিল?

উঃ দেব পালের আমলে পাল রাজত্ব হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে বিন্ধ্যপর্বত পর্যন্ত ও উত্তরপশ্চিমে কম্বোজ দেশ থেকে পুর্বে প্রাগজ্যোতিষপুর পর্যন্ত পাল সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল।

৩১ কে পাল শাসনে পুর্ব গৌরব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল?

উঃ প্রথম মহীপাল।

৩২ কোন পাল রাজার আমলে কৈবর্ত বিদ্রোহ হয়েছিল?

উঃ দ্বিতীয় মহীপাল।

৩৩ কে বরেন্দ্র অঞ্চল পুনরুদ্বার করেছিলেন?

উঃ রামপাল।

৩৪ কবে কৈবর্ত বিদ্রোহ ঘটেছিল? এই বিদ্রোহের কথা কোন বই থেকে জানা যায়?

উঃ পাল শাসনে একাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে বাংলায় কৈবর্ত বিদ্রোহ ঘটেছিল।

            সন্ধ্যাকর নন্দীর রচিত রামচরিত কাব্য থেকে কৈবর্ত বিদ্রোহের কথা জানা যায়।

৩৫ কৈবর্ত কারা ছিল? কৈবর্ত বিদ্রোহের তিন জন নেতার নাম লেখ।

উঃ কৈবর্তরা ছিল সম্ভবত নৌকার মাঝি বা জেলে।

            এই বিদ্রোহের তিনজন নেতা হল দিব্য, রুদোক ও ভীম।

৩৬ কার মৃত্যুর পরে পাল রাজত্ব শেষ হয়ে যায়?

উঃ রামপাল।

৩৭ সেন রাজাদের আদি নিবাস কোথায় ছিল? কীভাবে তারা বাংলায় শাসন কায়েম করেছিল?

উঃ সেন রাজাদের আদি নিবাস ছিল দক্ষিণ ভারতের কর্ণাট অঞ্চলে অর্থাৎ মহীশূর ও তার আসেপাশের এলাকা।

            পাল রাজত্বের শেষ দিকে কৈবর্ত বিদ্রোহের ফলে পাল রাজারা দূর্বল হয়ে পড়ে, সেই সুযোগে সামন্ত সেন ও তার ছেলে হেমন্ত সেন রাঢ় অঞ্চলে নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

৩৮ বল্লাল সেন কেমন আচার আচরণের প্রচলন করেছিলেন?

উঃ বল্লাল সেন সমাজ সংস্কার করে রক্ষণশীল, গোঁড়া, ব্রাক্ষণ আচার আচরণের প্রচলন করেন।

৩৯ সেন শাসণের অবসান ঘটেছিল কেন?

উঃ ১২০৪ বা ১২০৫ খ্রিস্টাব্দে তুর্কি আক্রমণ ঘটলে বাংলায় সেন শাসণের অবসান ঘটে।

৪০ খ্রিস্টীয় সপ্তম ও অষ্টম শতকের  আঞ্চলিক রাজ্যগুলি কেমন ভাবে গড়ে উঠেছিল?

উঃ  খ্রিস্টীয় সপ্তম ও অষ্টম শতকের  আঞ্চলিক রাজ্যগুলি গড়ে তোলার পিছনে সামন্ত, মহাসামন্ত ও জমিদার এবং শক্তিশালী যোদ্বা নেতারা ছিলেন। রাজাদের দুর্বলতায় কখনো তারা স্বাধীনতা ঘোষণা করত। তাছাড়া শক্তিশালী নেতারা নিজেদের স্বাধীণ রাজ্যও গঠন করেছিল।

৪১ গুর্জর প্রতিহাররা কোন অঞ্চল শাসণ করতেন? তাদের শ্রেষ্ঠ রাজা কে?

উঃ গুর্জর প্রতিহাররা রাজস্থান ও গুজরাটের বড় অঞ্চল শাসণ করতেন,।

            এদের মধ্যে রাজা ভোজ খুব ক্ষমতাবান ছিলেন। তিনি কনৌজ দখল করে তার রাজধানী বানিয়েছিলেন।

৪২ ত্রিশক্তি সংগ্রাম কী? এর ফলাফল কি?

উঃ কণৌজ  নদীভিত্তিক বাণীজ্য ও খণিজ সম্পদের কারণে আরথিক দিক দিয়ে লোভনীয় ছিল।কণৌজ শেষ পর্যন্ত কে দখলে রাখতে পারবে এই নিয়ে পাল, গুর্জর প্রতিহার ও রাষ্ট্রকূট বংশের মধ্যে টানা লড়াই চলেছিল। একেই ত্রিশক্তি সংগ্রাম বলে।

            প্রায় দুশো বছর ধরে চলা যুদ্ব কলহে তিনটি বংশেরই শক্তি শেষ হয়ে যায়।

৪৩ রাষ্ট্রকূট কারা ছিল? তারা কীভাবে খমতায় আসে?

উঃ রাষ্ট্রকূট যোদ্বারা কর্ণাটকের চালুক্য শক্তির অধীন ছিল।

            অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি এক রাষ্ট্রকূট নেতা দন্ডিদূর্গ চালুক্য শাসককে পরাজিত করে স্বাধীণ রাজা হয়ে বসেন।

৪৪ রাজপুত কাদের বলে? তারা নিজেদের কি মনে করত?

উঃ মনে করা হয় খ্রিষ্টীয় পঞ্চম শতকে হুন্দের আক্রমণের পড়ে বেশ কিছু মধ্য এশীয় উপজাতির মানুষ উত্তরপশ্চিম ভারতে এসে বসবাস করতে থাকে। স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের বিয়ে হয়। এদের বংশধরদের রাজপুত বলা হয়।

            তবে রাজপুতরা নিজেদের স্থানীয় ক্ষত্রীয় মনে করত। তারা নিজেদের চন্দ্র, সূর্য বা অগ্নিদেবতার সন্তান বলে মনে করত।

৪৫ কোথায় চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল?

উঃ কাবেরী ও তার শাখা নদীর ব-দ্বীপকে ঘিরে চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল।

৪৬  কে চোল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে?

উঃ বিজয়ালয় ( ৮৪৬-৮৭১ খ্রি) রাজা মুট্টাবাইয়াকে সরিয়ে চোল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

৪৭ চোলদের রাজধানী কথায় ছিল?

উঃ থাঞ্জাভুর বা তাঞ্জোর নামে এক নতুন নগরী তৈরী হয় যা চলদের রাজধানী ছিল।

৪৮  কে কেন গঙ্গাইকোন্ডচোল উপাধি গ্রহণ করেন?

উঃ প্রথম রাজেন্দ্র বাংলার পাল বংশের বিরুদ্বে এক অভিযানে গঙ্গার তীরে পাল রাজাকে হারিয়ে গঙ্গাইকোন্ডচোল উপাধি নেন।

৪৯ চোলদের সঙ্গে দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বানিজ্যিক সম্পর্ক রাখা সম্ভব হয়েছিল কেন?

উঃ প্রথম রাজরাজ ও রাজেন্দ্র চোল দুজনে দক্ষ নৌবাহিনী তৈরী করেছিলেন। তার ফলে দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বানিজ্যিক সম্পর্ক রাখা সম্ভব হয়েছিল।

৫০ আরব উপদ্বীপ কোথায় অবস্থিত?

উঃভারতের পশ্চিমে আরব সাগর পেরিয়ে এশিয়া মহাদেশের পশ্চিম্ ভাগে আরব উপদ্বীপ যার অধিকাংশি মরূভূমি বা শুকনো ঘাস জমি অঞ্চল। এর প্সহচিমে লোহিত সাগর, দক্ষিণে আরব সাগর এবং পূর্ব দিকে পারস্য উপসাগর।

৫১ আরব উপদ্বীপের স্থানীয় শহর দুটির নাম কি? এখানকার স্থানীয় মানুষ সম্পর্কে যা জান লেখ।

উঃ মক্কা ও মদিনা আরব উপদ্বীপের দুটি শহর।

            এখানকার যাযাবর মানুষদের বেদুইন বলা হত। তারা উট পালন করত। খেজুর এবং উটের দুধ ছিল এদের অন্যতম খাদ্য। এরা নিজেদের আরব বলে পরিচয় দিত।

৫২ আরব উপজাতির প্রধান জিবিকা কি ছিল?

উঃ ব্যবসা।

৫৩ কে, কবে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন?

উঃ খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী অর্থাৎ ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে হজরত মহম্মদ ঘোষনা করেন যে আল্লাহ তাকে দূত হিসাবে মনোনীত করেছেন এবং তার বাণী ইসলাম ধর্ম নামে পরিচিত।

৫৪ হিজরত কাকে বলে? কবে থেকে হিজরী সাল গণনা শুরু হয়?

উঃ ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ও তার অনুগামীরা মদিনা শহরে চলে আসেন। মক্কা থেকে মদিনায় এই চলে যাওয়াকে আরবী ভাষায় হিজরত বলা হয়।

            ঐ সময় থেকেই হিজরি নামেই ইসলামীয় সাল গণনা শুরু হয়।

৫৫ ইসলামের ধর্মগ্রন্থ ও তীর্থস্থানের নাম লেখ।

উঃ ইসলামের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থের নাম হল কোরাণ

            কাবা শরীফ ইসলামের পবিত্র তীর্থস্থান।

৫৬ খলিফা কাদের বলে? প্রথম খলিফার নাম কি?

উঃ ‘খলিফা’ আরবি শব্দের অর্থ হল প্রতিনিধি। মহম্মদের পরে তার প্রধান চার সঙ্গীরা একে একে মুসলমানদের নেতা নির্বাচিত হন। এদের খলিফা বলা হত।

            প্রথম খলিফা ছিলেন আবু বকর।

৫৭ খিলাফৎ কাকে বলে?

উঃ যে সব অঞ্চলে ইসলাম ধর্মের ক্ষমতা ছড়িয়ে পড়েছে সেগুলি হল দার- উল- ইসলাম। খলিফা পুরো দার-উল- ইসলামের নেতা। তার অধিকারের অঞ্চলের নাম খিলাফৎ।

৫৮ আরবি মুসলমানেরা কবে  কার নেতৃত্বে সিন্ধু প্রদেশ অভিযান করেন?

উঃ আরবি মুসলমানেরা ৭১২ খ্রিষ্টাব্দে মহম্মদ বিন কাশেমের  নেতৃত্বে সিন্ধু প্রদেশ অভিযান করেন।

৫৯ গজনির সুলতান কতবার ভারত আক্রমণ করেন? তার প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল?

উঃ আনুমানিক ১০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১০২৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গজনির সুলতান মাহমুদ প্রায় সতেরোবার উত্তর ভারত আক্রমণ করে।

            তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় মন্দিরগুলি থেকে ধনসম্পদ লুঠ করে খোরশান ও মধ্য এশিয়ায় তার সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে তা ব্যয় করা।

৬০ সুলতান মাহমুদ ভারত লুঠ করা সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করেছিলেন?

উঃ সুলতান মাহমুদ ভারত লুঠ করা সম্পদ নিজের রাজ্যের ভালো কাজে ব্যয় করেছিলেন। তার রাজধানী গজনী ও অন্যান্য শহরকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। মাহমুদ সেখানে প্রাসাদ, মসজিদ, গ্রন্থাগার, বাগিচা, জলাধার, খাল এবং আমু নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করেন যেখানে শিক্ষকদের বেতন ও ছাত্রদের বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল।

৬১। মাহমুদের আমলের দুজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ও তাদের অবদানের কথা লেখ।

উঃ মাহমুদের আমলের দুজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন অল বিরুণী ও কবি ফিরদৌসী।

            অল বিরুণী ছিলেন দর্শণে পন্ডিত, ভারতে তিনি পর্যটক হিসাবে আসেন। তার লেখা কিতাব-অল- হিন্দ থেকে সে সময়ের ভারতের ইতিহাস জানা যায়।কবি ফিরদৌসী শাহানামা কাব্য লিখেছিলেন।

৬২ মহম্মদ ঘুরী কবে ভারতে আসেন? তার উদ্দেশ্য কী ছিল?

উঃ ১১৯২ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্বে মহম্মদ ঘুরি রাজপুত রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহানকে হারিয়ে ভারতে আসেন।

            তিনি ভারতকে শাসন করেতে চেয়েছিলেন।

৬২ কে কবে বাংলায় তুর্কি শাসন শুরু করেছিল?

উঃ আনুমানিক ১২০৪ খ্রিস্টাব্দের শেষ বা ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ারউদ্দিন মহম্মদ বখতিয়ার খিলজি বাংলার নদীয়া দখল করেছিলেন এবং বাংলায় তুর্কি শাসন শুরু করেছিলেন।

৬৩ তবকাত- ই- নাসিরি বইটি কার লেখা? এটি থেকে কি জানা যায়?

উঃ তবকাত ই হিন্দ ঐতিহাসিক মিনহাজ-ই- সিরাজের লেখা।

            বইটি থেকে জানা যায় যে বখতিয়ার খিলজি ও তার তুর্কি বাহিনী ঘোড়া ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে বাংলায় ঢুকেছিলেন।

৬৪ লখনৌতি সম্পর্কে যা জান লেখ।

উঃবখতিয়ার খিলজি লক্ষণাবতী অধিকার করে নিজের রাজধানী স্থাপন করেন। তাই এই শহরকে লখনৌতি বলা হত।

৬৫ শশাঙ্কের সঙ্গে বৌদ্বদের সম্পর্ক কেমন ছিল?

উঃ শশাঙ্ককে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে ও সুয়ান জাং- এর ভ্রমণ বিবরণীতে বৌদ্ববিদ্বেষী বলা হয়েছে। বলা হয় তিনি বৌদ্ব ভিক্ষুদের হত্যা করেছিলেন এবং বৌদ্বদের পবিত্র স্মারক ধ্বংস করেছিলেন। কিন্তু শশাঙ্কের মৃত্যুর কয়েক বছর পড়ে সুয়ান জাং কর্ণসুবর্ণের রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ববিহারের সমৃদ্বি দেখেছিলেন। শশাঙ্ক নির্বিচারে বৌদ্ববিদ্বেষী হলে তা সম্ভব ছিলও না।

Click Here To Download  The PDF

বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ| Class 10 | History| 5th Chapter| Question Answer Solved|

0

বিকল্প চিন্তা উদ্যোগ( উনিশ শতকের মধ্যভাগ

বিশ শতকের প্রথম ভাগ) : বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা

কোন ছাপাখানায় কলকাতার প্রথম ক্যালেন্ডার মুদ্রিত হয়?

উঃ জেমস অগাস্টাস হিকির ছাপাখানায়

প্রথম কোন বাঙ্গালী ছাপাখানার জন্য অক্ষরে ছাঁচ বা টাইপ তৈরী করেন?

উঃ পঞ্চানন কর্মকার

৩বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোন সাহেবের নাম জড়িত?

উঃ অ্যান্ডরুজ সাহেব

কোন বছর শ্রীরা্মপুর মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়?

ঊঃ ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে

শ্রীরা্মপুর মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা কোনটি?

উঃ সমাচার দর্পণ( ১৮১৮ খ্রীঃ)

ঢাকা প্রেস কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উঃ ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে

চীনে কবে মুদ্রণ শিল্পের আবিষ্কার হয়?

উঃ ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে

বোম্বাইয়ে কবে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়?

উঃ১৬৭০ খ্রিস্টাব্দে

কে কবে চুঁচুড়ায় প্রথম মূদ্রণ যন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে?

উঃচার্লস উইলকিনস ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে

১০ বাংলার প্রথম সংবাদপত্র কোনটি?

উঃ দিগদর্শন (১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে)

১১ বাংলার ক্যাসটন কাকে বলা হয়?

উঃ চার্লস উইল্কিনসন

১২ আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ভারতের প্রাচীন প্রতিষ্ঠান কোনটি?

উঃ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কালটিভেশন অফ সায়েন্স

১৩ আই সি এস এঁর নিজস্ব পত্রিকার নাম কী ছিল?

উঃ ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ফিজিক্স

১৪ কে বেঙ্গল কেমিকেলস প্রতিষ্ঠা করেন?

উঃ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

১৫ বর্তমানে কলেজ অফ ইঞ্জিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলোজি কোথায় অবস্থিত?

উঃযাদবপুরে

১৬ কে কবে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন?

উঃস্যার উইলিয়াম জোনস ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায়

১৭ কে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নিযুক্ত হন?

উঃ রাসবিহারী ঘোষ

১৮ কে বিশ্বভারতী বিস্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন?

উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সঠিক উত্তরটি বেছে লেখো

১ মুদ্রণ যন্ত্রে সর্বপ্রথম বাংলা ছাপা হয়রোমান হরফে

বাংলা ভাষায় প্রথম ছাপা বই হলঅন্নদামঙ্গল (মাধ্যমিক- ১৮)

কলকাতায় প্রথম মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেনজেমস অগাস্টাস হিকি

উইলিয়াম কেরি ছিলেনবাংলার শিক্ষক

৫বটতলা প্রকাশণী সংস্থা থেকে প্রকাশিত হলনববাবু বিলাস

সিটি বুক সোসাইটিপ্রতষ্ঠা করেনযোগীন্দ্রনাথ সরকার

দিগদর্শণসমাচার দর্পণপত্রিকার সম্পাদক ছিলেনমার্শ্মম্যান

৮এশিয়ার প্রথম ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়শ্রীরামপুরে

ছাপাখানার প্রথম বাঙালি ব্যবসায়ী হলেনগঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য

১০ প্রথম সচিত্র বাংলা বইয়ের নামঅন্নদামঙ্গল

১১ বাঙ্গালীর লেখা প্রথম বাংলা ছাপা বই হলপ্রতাপাদিত্য চরিত্র

১২বর্ণমালাগ্রন্থটি প্রকাশ করেস্কুল বুক সোসাইটি

১৩শিশুশিক্ষাগ্রন্থটি রচনা করেনমদনমোহন তর্কালঙ্কার

১৪ বর্ণ পরিচয় প্রকাশিত হয়েছিল১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে

১৫ ভারতে হাফটোন প্রিন্টিং পদ্ধতি প্রবর্তন করেনউপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (মাধ্যমিক- ১৭)

১৬ বাংলাদেশে প্রথম কালার প্রিন্টিং প্রবর্তন করেনউপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

১৭ A Grammar of the Bengal Language’ গ্রন্থটি রচনা করেননাথানিয়েল ব্রাসি হালয়েড

১৮ A Grammar of the Bengal Language’ গ্রন্থটি রচিত হয়১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে

১৯ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা প্রথম গ্রন্থ হলছেলেদের রামায়ণ

২০লাইনো টাইপতৈরি করিয়েছিলেনসুরেশ্চন্দ্র মজুমদার

২১ ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স গড়ে ওঠে১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে

২২ IACS প্রতিষ্ঠা করেনডঃ মহেন্দ্রলাল সরকার

২৩ IACS এঁর প্রথম অধিকর্তা হলেনপ্যারীমোহন মুখোপাধ্যায়

২৪ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কালটিভেশন অফ সায়েন্সএর যে বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেনসি ভি রমন (মাধ্যমিক- ১৮)

২৫ বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন যে বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার তিনি হলেনগোলক চন্দ্র নন্দী

২৬ কলকাতার বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট ছিলস্বদেশি আন্দোলন

২৭ বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেনজগদীশ চন্দ্র বসু

২৮ কে প্রথম জাতীয় শিক্ষা কথাটি ব্যবহার করেন?-প্রসন্নকুমার ঠাকুর

২৯ জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সভাপতি ছিলেনসত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩০ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে

৩১ প্রথম ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার বলা হয়গোলক চন্দ্রকে

৩২বেঙ্গল টেকনিকাল ইন্সটিটিউটএঁর প্রথম অধ্যক্ষ হলেনঅরবিন্দ ঘোষ

৩৩ বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে

৩৪বেঙ্গল টেকনিকাল ইন্সটিটিউটপ্রতিষ্ঠিত হয়১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে (মাধ্যমিক- ১৯)

৩৫অব্যক্তগ্রন্থটি রচনা করেনজগদীশ চন্দ্র বসু

৩৬ বিশ্বভারতী বিস্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেনরথীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর ( নম্বর)

কবে কীভাবে বাংলার ছাপার অক্ষর ব্যবহৃত হয়

অথবা , বাংলা ছাপাখানার ইতিহাসে ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দ গুরুত্বপূর্ণ কেন

উঃ  ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রাসি হ্যালহেড ইংরেজ কোম্পানির কর্মচারী বা ইংরেজদের বাংলা শিক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষায় ‘ A Grammar of the Bengal Language ‘ নামক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন । এই গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠার চারভাগের একভাগ অংশে তিনি উদাহরণরূপে কৃত্তিবাস , কাশী দাস ও ভারতচন্দ্রের রচনা থেকে উদ্ধৃত্তি তুলে ধরতে বাংলা হরফ ব্যবহার করেন । এইভাবে প্রথম বাংলা মুদ্রণ বা ছাপার কাজ শুরু হয় ।

বাংলায় ছাপাখানা উদ্ভবের সহায়ক উপাদানগুলি কী ছিল ?

 অথবা , বাংলাদেশে ছাপাখানা প্রসারের কারণ কী

উঃ বাংলায় ছাপাখানা উদ্ভবের সহায়ক উপাদানগুলি হল ইংরেজ কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠা ও রেগুলেটিং অ্যাক্ট ( ১৭৭৩ খ্রি . ) প্রবর্তনের ফলে বাংলায় বাংলা ভাষায় সরকারি কাজকর্ম ও সরকারি নির্দেশের প্রয়োজন দেখা দেয় । তৎকালীন গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলা ভাষায় মুদ্রণ বা ছাপার জন্য সরকারি ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেন । চার্লস উইলকিনস্ বাংলা মুদ্রণের জন্য বাংলা হরফ নির্মাণ করেন ।

চার্লস উইলকিনস বিখ্যাত কেন

উঃ প্রাচ্যবাদী পণ্ডিত চার্লস উইলকিনস্ বিখ্যাত , কারণ  তিনি পঞ্চানন কর্মকারের সহযোগিতায় বাংলা মুদ্রাক্ষর খোদাই এবং অক্ষর ঢালাই – এর কাজ করেন । তাঁর তৈরি বাংলা মুদ্রাক্ষরের সাহায্যেই হ্যালহেড তাঁর বাংলা গ্রামার বইটিতে উদাহরণরূপে বাংলা মুদ্রণের ব্যবস্থা করেন । তাই তিনি ‘ বাংলার গুটেনবার্গ ‘ নামে পরিচিত ।

বাংলার ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকারের ভূমিকা কী ছিল

উঃ পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত ছিলেন , কারণ—   বাংলা মুদ্রাক্ষর তৈরির ক্ষেত্রে উইলকিনসের সহযোগী ছিলেন হুগলি নিবাসী মুদ্রাক্ষর শিল্পী পঞ্চানন কর্মকার । তাঁর তৈরি মুদ্রাক্ষর হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণে এবং পরবর্তীকালে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে ‘ কর্নওয়ালিশ কোড ‘ – এর বাংলা সংস্করণেও ব্যবহৃত হয় ।তাঁর প্রচেষ্টাতেই বাংলা হরফ নির্মাণ একটি স্থায়ী শিল্পে পরিণত হয় ।

শ্রীরামপুর ত্রয়ীবিখ্যাত কেনঅথবা , শ্রীরামপুর ত্রয়ী কারা

উঃ শ্রীরামপুর মিশনের উইলিয়াম কেরি , জে . মার্শম্যান এবং উইলিয়াম ওয়ার্ড একত্রে ‘ শ্রীরামপুর এয়ী ’ নামে পরিচিত । এঁরা ছিলেন খুব বিখ্যাত , কারণ এঁদের উদ্যোগে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে । এঁরা ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠা করলে বাংলায় মুদ্রণ শিল্পেরও বিকাশ ঘটে ।

ছাপা বই শিক্ষার প্রসারে কী ভূমিকা নিয়েছিলঅথবা , ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষা বিস্তারের দুটি সম্বন্ধ লেখো  

উঃ ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষা বিস্তারের দুটি সম্বন্ধ হল  বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভবের আগে জ্ঞান বা শিক্ষাজগৎ ছিল হাতে লেখা পুথি বা মুখস্থবিদ্যার উপর নির্ভরশীল, কিন্তু ছাপা বইয়ের ফলে মুষ্টিমেয় ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ জ্ঞান অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এবং স্কুল – কলেজ শিক্ষাসহ গণ শিক্ষার প্রসার ঘটে ।ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ , শ্রীরামপুর মিশন , স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে বাংলায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও পরিবেশনার কাজও শুরু হয় ।

ছাপাখানা কীভাবে গণশিক্ষার প্রসারে সাহায্য করে ?

উঃ ছাপাখানার ফলে গণশিক্ষারও প্রসার ঘটে কৃত্তিবাসী রামায়ণ , কাশীদাসী মহাভারত প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থ, বিচিত্র ধর্মী বিষয়ের ওপর রচিত গ্রন্থ ,‘ সমাচারদর্পণ ‘ ও ‘ সংবাদ প্রভাকর ‘ – এর মতো বাংলাভাষায় প্রকাশিত পত্রপত্রিকা মানুষের মধ্যে জ্ঞানের ও শিক্ষার প্রসার ঘটায় ।

হিকি বেঙ্গল গেজেটকী

উঃ ছাপাখানার উদ্ভব বাংলায় সংবাদপত্রের যুগের সূচনা করেছিল এবং এরই পরিণতি ছিল জেমস অগাস্টাস হিকি কর্তৃক ‘ হিকি’জ বেঙ্গল গেজেট প্রকাশ । এটি ছিল চার পাতার সাপ্তাহিক পত্রিকা যার প্রথম দশটি সংখ্যা কোম্পানির প্রেস থেকে ছাপা হয়েছিল । এটি ছিল জেমস অগাস্টাস হিকির দ্বারা সম্পাদিত সাপ্তাহিক সংবাদপত্র ।

হিকির ছাপাখানা বিখ্যাত কেন

উঃ কলকাতা ব্যক্তিগত মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত জেমস অগাস্টাস হিকির ছাপাখানা ( ১৭৮০ খ্রি . ) ছিল বিখ্যাত , কারণ—   হিকির কথায় তিনি ছিলেন সম্মানীয় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সামরিক প্রাক্তন ( late ) মুদ্রাকর , কারণ তাঁর ছাপাখানায় কোম্পানির সামরিক বিল ও বাণিজ্যিক বাট্টা সংক্রান্ত কাগজপত্র ছাপানো হত । ভারতের প্রথম সংবাদপত্র ‘ হিকিজ গেজেট ‘ ( চার পাতার সাপ্তাহিক পত্রিকা ) এর প্রথম দশটি সংখ্যা ‘ কোম্পানীর প্রেস ’ – এ ছাপানো হলেও পরে তিনি নিজের এই ছাপাখানা থেকেই এই পত্রিকা প্রকাশ করেন ।  এই ছাপাখানাকে কেন্দ্র করেই ব্যবসায়ী – মুদ্রণকারী হিকি ‘ সাংবাদিক – হিকি’তে পরিণত ( trader printer turned journalist ) হয় ।

১০ ছাপাখানার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটি বিখ্যাত কেনো

উঃ ছাপাখানার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটি বিখ্যাত , কারণ—  ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ( ১৮১৭ খ্রি . ) স্কুল বুক সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল অল্প খরচে শিশু ও শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা । ডেভিড হেয়ার আমৃত্যু স্কুল বুক সোসাইটির মাধ্যমে বাংলা পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজে ব্রতী ছিলেন ।এই সোসাইটি নিজের ছাপাখানার পাশাপাশি শ্রীরামপুর মিশন প্রেস সহ অন্যান্য প্রেসেও বই ছাপানোর ব্যবস্থা করেছিল ।

১১ ছাপাখানার ইতিহাসে বিদ্যাসাগরের নাম স্মরণীয় কেন ?

উঃ ছাপাখানার ইতিহাসে বিদ্যাসাগরের ( ১৮২০-১৮৯০ খ্রি . ) নাম স্মরণীয় , কারণ   সংস্কৃত পন্ডিত ও সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষাদরদি ও মানবতাবাদী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন ১৮৫০ – এর দশকে বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ।বন্ধু মদনমোহন তর্কালংকারের সঙ্গে তিনি যৌথভাবে ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটে ‘ সংস্কৃত যন্ত্র ‘ নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন । পরবর্তীকালে তিনি সংস্কৃত যন্ত্রের একক মালিক হন । এবং এখান থেকে ‘ বর্ণপরিচয় ‘ প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ প্রকাশ করে শিশুশিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।

১২ প্রকাশনা জগতেবর্ণপরিচয় ‘ – এর গুরুত্ব কী

উঃ প্রকাশনা জগতে ‘ বর্ণপরিচয় ‘ – এর গুরুত্বগুলি হল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘ বর্ণপরিচয় ছিল একটি শিশুপাঠ্যপুস্তক যা আজও জনপ্রিয় । এখানে বাংলা স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ নির্দিষ্ট করা হয় । এই বইয়ে ব্যবহৃত বাংলা হরফ প্রকাশনা জগতে একটি আদর্শ হরফ ব্যবস্থার প্রবর্তন করে ।

১৩ বাংলার মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব কী ?

উঃ উনিশ শতকে ছাপাখানা জগতে ১৮৪০-১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে কলকাতার চোরবাগান , শোভাবাজার , দর্জিপাড়া , জোড়াসাঁকো প্রভৃতি স্থান জুড়ে যেসব প্রকাশনা চলত তা বটতলার প্রকাশনা নামে পরিচিত । এর দিকগুলি হল -সস্তায় বিচিত্র বিষয় ও বিচিত্র রকমের ধর্মকথা ও অশ্লীল কথাযুক্ত বাংলা বই ছাপা ছিল এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য । এই প্রকাশনার ক্ষেত্রে বিখ্যাত প্রকাশক ছিলেন । বিশ্বম্ভর দেব ও ভবাণীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এঁদের প্রকাশিত পৌরাণিক ঐতিহাসিক গ্রন্থ সমকালীন বাবুসমাজ সহ শিক্ষিত মানুষের জ্ঞান পিপাসা মেটাতে সাহায্য করেছিল ।

১৪ ছাপাখানা প্রবর্তনের গুরুত্ব কী

উঃ বাংলায় ছাপাখানা প্রবর্তনের ফলে  বাংলা ভাষায় জ্ঞানের এবং শিক্ষার বিস্তার ঘটে ।ছাপাখানা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে কলকাতা কেন্দ্রিক নতুন নতুন পেশার উদ্ভব ঘটে ।বাংলার সমাজ ও ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে বিভিন্নধর্মী পত্রপত্রিকা ও সাহিত্যের বিকাশ হয় ।

১৫ ছাপাখানা জগতে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিখ্যাত কেন

উঃ বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক ও চিত্রকর উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ( ১৮৬৩-১৯১৫ খ্রি . ) ছাপাখানা জগতে বিখ্যাত ছিলেন , কারণ তাঁর রচিত ‘ ছেলেদের রামায়ণ ‘ গ্রন্থটির মুদ্রণ তাঁর পছন্দ না হওয়ায় তিনি ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে একটি ছাপাখানা ও প্রকাশনা সংস্থা খুলেছিলেন যা পরবর্তীকালে ইউ এন রায় অ্যান্ড সন্স ‘ নামে পরিচিত হয় ( ১৮৯৫ খ্রি . ) । তিনি ছাপাখানার জন্য বিভিন্ন নতুন ও উন্নত পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন । যেমন- হাফটোন ব্লক প্রিন্টিং , রে – টিন্ট সিস্টেম ।

১৬ ইউ এন রায় অ্যান্ড সন্স সম্পর্কে কী জান?

উঃ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীকালে ‘ ইউ এন রায় অ্যান্ড সন্স ‘ নামে পরিচিত হয় ( ১৮৯৫ খ্রি . ) । বিদেশি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এখানে হাফটোন ব্লকে ছাপা হত ; তিন – চার রকম রং ব্যবহার করে ছোটোদের জন্য মজার বই প্রকাশ করা ছিল এই প্রকাশনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।এই প্রকাশনা থেকেই ছোটোদের পত্রিকা ‘ সন্দেশ ‘ প্রকাশিত ( ১৯১৩ খ্রি . ) হয়েছিল ।

১৭ ব্রিটিশ শাসনপর্বে সার্ভে বা জরিপ ব্যবস্থার গুরুত্ব কী ?

উঃ ব্রিটিশ শাসনপর্বে সার্ভে বা জরিপ ব্যবস্থার গুরুত্বগুলি হল -ব্রিটিশ শাসনপর্বে ফ্রাঙ্কল্যান্ড ও হগ্‌ ক্যামেরন ২৪ পরগনার জমি জরিপ করেন এবং ১৭৭০ – র দশকে জেমস রেনেল বাংলার নদীপথগুলি জরিপ করে মোট ১৬ টি মানচিত্র তৈরি করেন । জরিপ ও মানচিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে এদেশের প্রাকৃতিক , বনজ ও জলজ সম্পদ চিহ্নিত করে এদেশকে শোষণের ব্যবস্থা করা হয় ।

১৮ রাধানাথ শিকদার কোন বিষয়ে খ্যাতিলাভ করেন ?

উঃ রাধানাথ শিকাদর যে বিষয়ে খ্যাতিলাভ করেন , তা হল  তিনি ছিলেন নব্যবঙ্গগোষ্ঠীর একজন সদস্য ও নিজ উদ্যোগে বিজ্ঞানচর্চার পথিকৃত ।  তিনি ট্রিগোনোমেট্রিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কাজে নিযুক্ত হন ও হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের সর্বোচ্চতা পরিমাপ করেন , কিন্তু তাঁর পরিবর্তে জরিপ বিভাগের প্রধান জর্জ এভারেস্ট – এর কৃতিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় । রাধানাথ শিকদার পরবর্তীকালে জরিপ ও আবহাওয়া বিভাগের প্রধান কম্পিউটার বা গণক ও সুপারিন্টেন্ডেন্ট হন ।

১৯ শিবচন্দ্র নন্দী কেন বিখ্যাত ছিলেন

উঃ শিবচন্দ্র নন্দী বিখ্যাত ছিলেন , কারণ—  প্রথাগত শিক্ষালাভ না করলেও শিবচন্দ্র নন্দী নিজের চেষ্টায় পাশ্চাত্য শিক্ষা অর্জন করেন এবং ইংরেজদের অধীনে আলিপুর টাঁকশালে কেরানির চাকরি গ্রহণ করেন ।  ভারতে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা প্রবর্তিত হওয়ার সময় শিবচন্দ্র ইংরেজদের এ ব্যাপারে সাহায্য করেন ও একাজে দক্ষতা অর্জন করেন । পরে ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজেই কলকাতা থেকে ডায়মন্ডহারবার পর্যন্ত অঞ্চলে টেলিগ্রাফ সংযোগ করেন ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ( ৮ নম্বর)

শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কীভাবে ছাপাখানার বিস্তারে সাহায্য করেছিল তা ব্যাখ্যা করো

উঃ প্রথম অংশ ছাপাখানার বিস্তার শ্রীরামপুর মিশন : বাংলায় ছাপাখানা ব্যবস্থার বিকাশের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস ।

মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠা : খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম কেরি বাংলা ভাষায় বাইবেল ছাপানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও (১৭৯৮ খ্রি ) তা প্রচুর ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় নিজেই ছাপাখানা প্রবর্তন করে ছাপানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেন । ইতিমধ্যে শ্রীরামপুর মিশন প্রতিষ্ঠিত হলে ( ১৮০০ খ্রি . ) কেরি এখানেই শ্রীরামপুর মিশন প্রেস স্থাপন করেন । ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই এই ছাপাখানা স্বয়ংসম্পূর্ণ ছাপাখানায় পরিণত হয় ।

মিশন প্রেসের উৎপাদন : শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের ছাপা বইগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –

ক)‘ ধৰ্ম্ম পুস্তক ‘ : প্রাথমিক পর্বে কেরির সহযোগী অভিজ্ঞ ও দক্ষ মুদ্রাকর ওয়ার্ড এবং পঞ্চানন কর্মকার কলকাতা থেকে সংগৃহীত হরফ এবং কিছু পাটনাই ও বিদেশি কাগজ সহযোগে ছাপার কাজ শুরু করেন ।

নিউ টেস্টামেন্টের প্রথম অধ্যায়টির বাংলা অনুবাদ করে কেরি ১০৭ পৃষ্ঠা বিশিষ্ট ‘ মঙ্গল সমাচার মাতিউর রচিত নামে প্রকাশ করেন । ১৮০১ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে আটশোরও বেশি পৃষ্ঠাযুক্ত ‘ ধৰ্ম্মপুস্তক ‘ বা বাংলা বাইবেল প্রকাশ করেন ।

অন্যান্য বই : শ্রীরামপুর মিশন প্রেসে রামরাম বসুর রচিত হরকরা ‘ ও ‘ জ্ঞনোদয় ‘ নামক দুটি গ্রন্থ ( আগস্ট সেপ্টেম্বরে , ১৮০০ খ্রি . ) মুদ্রিত হয় । ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই প্রেসে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের ‘ বত্রিশ সিংহাসন ‘ ( ১৮০২ খ্রি . ) , 8 খণ্ডে কাশীরাম দাসের ‘ মহাভারত ‘ ( ১৮০১-০৩ ) ও পাঁচ খণ্ডে কীর্তিবাসের ‘ রামায়ণ ‘ ( ১৮০২-০৩ ) প্রভৃতি সহ ৪০ টি বিভিন্ন ভাষায় ২,১২,০০০ কপি বই মুদ্রিত হয় ।

) পাঠ্যপুস্তক : শ্রীরামপুর মিশন প্রেসে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকও মুদ্রিত হয়েছিল । এই সব পুস্তকের রচয়িতা ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার , রামরাম বসু , চণ্ডীচরণ মুন্সী , হরপ্রসাদ রায় প্রমুখ । উপরের আলোচনা থেকে দেখা যায় যে , ধর্মীয় উদ্দেশ্যে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস স্থাপিত হলেও তার উৎপাদনে ধর্মনিরপেক্ষ বিষয়ও ছিল ।

স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে শিক্ষার বিস্তারকে তুমি কীভাবে ব্যাখ্যা করবে

উঃ উনিশ শতকে খ্রিস্টান মিশনারি ও ব্যক্তিগত এবং সরকারি উদ্যোগে শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি ছাপাখানা থেকে উৎপাদিত গ্রন্থসমূহের মাধ্যমেও শিক্ষার বিস্তার ঘটে । ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘ স্কুল বুক সোসাইটি’র ( ১৮১৭ খ্রি . ) উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভাষায় স্কুল পাঠ্য পুস্তক ছাপানো এবং শিক্ষার্থীদের কাছে তা সরবরাহ করা । এর বিভিন্ন দিকগুলি হল –

নিজস্ব ছাপাখানা : স্কুল বুক সোসাইটি শিক্ষার বিস্তারের উদ্দেশ্যে কলকাতার সার্কুলার রোডে নিজস্ব ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা ছাড়া ও শ্রীরামপুর মিশন প্রেস সহ অন্যান্য প্রেসেও বই ছাপানোর ব্যবস্থা করেছিল ।

বাংলা ভাষার প্রাধান্য : এই সোসাইটি অন্যান্য ভাষার পুস্তকের পাশাপাশি বাংলা ভাষাতে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করে । এই সোসাইটি প্রথম চার বছরে ( ১৮১৭-২১ খ্রি . ) বাংলা ভাষাতে ১৯ টি বইয়ের ৭৯,৭৫০ টি কপি মুদ্রণ ও বিপননের ব্যবস্থা করে ।

মুদ্রণের মানোন্নয়ন : বাংলা ভাষার উন্নতিসাধন এবং বাংলা মুদ্রণের মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে এই সোসাইটির উদ্যোগ ছিল প্রশ্নাতীত । বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে ইংরেজি প্রথানুযায়ী যতিচিহ্নের ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলা গ্রন্থের মুদ্রণে ছবি , মানচিত্র , নকশার ব্যবহার শুরু করে ।

জ্ঞানচর্চার প্রসার : বাংলার ছাপাখানার ইতিহাসে স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে বাংলায় ইতিহাস , ভূগোল , জ্যোতির্বিদ্যা পদার্থবিদ্যা , অভিধান , ব্যাকরণ প্রভৃতি বিষয়ে বিশুদ্ধ জ্ঞানের চর্চা শুরু হয় । বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকের প্রবর্তনের ফলে শিক্ষক ও ছাত্রসমাজের কাছে পাশ্চাত্যের জ্ঞানজগতের দরজা উন্মোচিত হয় ।

উনিশ শতকের প্রথম তিন দশকে বাংলার মিশনারি প্রেসগুলির মুদ্রণ ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করো এই পর্বের অন্যান্য ছাপাখানাগুলির বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করো

উঃ উনিশ শতকের শুরুতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি খ্রিস্টান মিশনারিদের উদ্যোগেও বাংলায় ছাপাখানার বিস্তার ঘটেছিল ; যেমন –

কলকাতার ব্যাপটিস্ট মিশন : শ্রীরামপুর মিশনের নবীন গোষ্ঠী এই মিশন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইউ কেরি , উইলিয়াম পিয়ার্স । প্রমুখ কলকাতার সার্কুলার রোডে ব্যাপটিস্ট মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন ( ১৮১৮ খ্রি . ) । এই প্রেস স্কুল বুক সোসাইটির বরাত মতো যেমন বই ছেপেছিল , তেমনি তারা বাংলা মুদ্রণের উন্নতির জন্যও চেষ্টা করেছিল ।

চার্চ মিশন প্রেস : আমহার্স্ট স্ট্রিটের চার্চ মিশন প্রেসে ছাপা উল্লেখযোগ্য বই হল ইংল্যান্ডে ও ঐর্লন্ডে সংস্থাপিত মণ্ডলীর সাধারণ প্রার্থনা ‘ ( ১৮২২ খ্রি . ) । এই বইয়ে ফুলস্টপ সহ বিভিন্ন ইংরেজি যতি – চিহ্নও ব্যবহৃত হয়েছিল ।

বিশপস্ কলেজ প্রেস : শিবপুরের বিশপস্ কলেজ প্রেস ছিল আর – একটি উল্লেখযোগ্য প্রেস । ধর্মীয় পুস্তকের পাশাপাশি এখানে ছাপা বিভিন্ন ধরনের বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বই হল মর্টনের বাংলা ইংরেজি অভিধান ( ১৮২৮ খ্রি . ) ।

উনিশ শতকের শুরুতে ছাপাখানার জগতে খ্রিস্টান মিশনারিদের পাশাপাশি বেশ কিছু ব্যক্তিগত উদ্যোগও চোখে পড়ে ।

ছাপাখানা : ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের আগে প্রতিষ্ঠিত বিখ্যাত ছাপাখানাগুলি হল— পটলডাঙার সংস্কৃত যন্ত্র , আড়পুলি লেনে হরেন্দ্র রায়ের ছাপাখানা , শোভাবাজারের বিশ্বনাথ দেবের ছাপাখানা , বাঙালি প্রেস প্রভৃতি । এ ছাড়া বউবাজারের লেবেল্ডর সাহেবের ছাপাখানা , শ্রীরামপুরের নীলমণি হালদারের ছাপাখানা ছিল বিখ্যাত ।

প্রকাশনা : এই সমস্ত ছাপাখানা থেকে বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল । হিন্দুস্থানি প্রেস থেকে ‘ ঔষধসার সংগ্রহ ‘ ( ১৮১৯ খ্রি . ) , বাঙ্গালি প্রেস থেকে রামমোহন রায়ের ‘ কঠোপনিষৎ ‘ ( ১৮১৭ খ্রি . ) , হরচন্দ্র রায়ের আড়পুলি লেনের প্রেস থেকে বিভিন্নরকম ধর্মীয় বিশ্বনাথ দেবের প্রেস থেকে রাধাকান্ত দেবের ‘ বাঙ্গালা শিক্ষাগ্রন্থ ‘ ( ১৮২১ খ্রি . ) প্রকাশিত হয় । লিথোগ্রাফের প্রবর্তন ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছাপাখানার বিস্তারের একটি দিক ছিল ‘ লিথোগ্রাফিক ছাপা’র প্রবর্তন । এই ধরনের ছাপা ব্যবস্থায় ছবি , নকশা , মানচিত্র আঁকা সম্ভব হয় ।

জগদীশচন্দ্র বসুর বিজ্ঞান গবেষণা উল্লেখ করেবসু বিজ্ঞান মন্দিরপ্রতিষ্ঠা ব্যাখ্যা করো  

উঃ ভূমিকা : উনিশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালির বিজ্ঞান সাধনা ও বিজ্ঞান গবেষণার সূচনা হয় এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য গবেষক ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু ( ১৮৫৮-১৯৩৭ খ্রি . ) ।ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকরূপে যোগদান করেন ( ১৮৮৫ খ্রি . ) । এই কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি কলেজের মাত্র ২৪ বর্গফুট ঘরেই বিজ্ঞান গবেষণাও করতে থাকেন । তাঁর গবেষণার তিনটি পর্যায় ছিল — প্রথম পর্যায়ে ‘ তড়িৎ – চুম্বকীয় তরঙ্গ ‘ সম্পর্কে গবেষণা করেন ও ‘ বেতার যন্ত্র আবিষ্কার করেন । দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনি জীবনের উৎপত্তি সংক্রান্ত গবেষণা করেন এবং তৃতীয় পর্যায়ে উদ্ভিদ ও প্রাণী সংক্রান্ত গবেষণা করেন । তিনি উদ্ভিদের স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপ ও বৃদ্ধি মাপার জন্য ‘ ক্রেস্কোগ্রাফ ‘ নামক একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন ।

বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা : জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর তড়িৎ – চুম্বকীয় তরঙ্গ সংক্রান্ত গবেষণায় উদ্ভূত নতুন তত্ত্ব ও তথ্যের কথা ইংল্যান্ডের রয়্যাল ইন্সটিটিউশনে বক্তৃতার মাধ্যমে প্রকাশ করেন । এরপর তিনি ইংল্যান্ড , ফ্রান্স , জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন । এই সময়েই রয়্যাল সোসাইটির বিখ্যাত বিজ্ঞানীরা ভারত সরকারের কাছে জগদীশচন্দ্র বসুর গবেষণার জন্য একটি উন্নতমানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার অনুরোধ জানান । কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি । প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অবসর গ্রহণের পর জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর বাড়িতেই ছোটো গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করে গবেষণার কাজ শুরু করেন । এর পাশাপাশি তিনি তাঁর নিজের ও দেশের স্বার্থে একটি বৃহৎ গবেষণাগার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হন । শেষপর্যন্ত তাঁর নিজস্ব অর্থ ও সংগৃহীত ১১ লাখ টাকা অনুদানের অর্থে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘ বসু বিজ্ঞান মন্দির ‘ ( ২৩ নভেম্বর , ১৯১৭ ) ।

মূল্যায়ন : জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একজন সফল বাঙালি বৈজ্ঞানিক এবং উদ্যোগপতি । তাঁর প্রতিষ্ঠিত বসু বিজ্ঞান মন্দির হয়ে ওঠে আধুনিক ভারতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার ।

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন অব সায়েন্স বা ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞানসভা সম্বন্ধে আলোচনা করো।

উঃ ভারতে বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স-এর প্রতিষ্ঠা (২৯ জুলাই, ১৮৭৬ খ্রি.)।

প্ৰতিষ্ঠা : বিখ্যাত চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার অধ্যাপক ফাদার ইউজিন লাফের সহযোগিতায় কলকাতার বউবাজার স্ট্রিটে এই মৌলিক গবেষণাকেন্দ্রটি স্থাপন করেন। পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার নিয়মিত গবেষণা, বিজ্ঞানবিষয়ক বক্তৃতার আয়োজন প্রভৃতির জন্য এই ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞানসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব পত্রিকা ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ফিজিক্সসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় এখানকার বিজ্ঞানীদের গবেষণার কাজ প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞানীগণ : এখানে যাঁরা গবেষণার কাজ করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জগদীশচন্দ্র বসু, মেঘনাদ সাহা প্রমুখ। বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী সি ভি রমন এখানেই তাঁর বিখ্যাত রমন এফেক্ট আবিষ্কার করেন। এই গবেষণার জন্য তিনি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ডা. নীলরতন সরকার, সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রমুখ ভারতীয় বিজ্ঞানসভার অধিকর্তারূপে কাজ করে গেছেন।

 গবেষণা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা : বিখ্যাত ভারতীয় বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা এখানে একটি সক্রিয় গবেষণা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এক্স রশ্মি, আলোকবিজ্ঞান, চৌম্বকত্ব ইত্যাদি নানা বিষয়ে মৌলিক গবেষণার কাজকে উৎসাহ দিয়েছিলেন।

উপসংহার: পরবর্তীকালে যাদবপুরে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্সের

নতুন ক্যাম্পাস খোলার ব্যবস্থা করেন তদানীন্তন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধানচন্দ্র রায়। ভারতে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স-এর বৈজ্ঞানিকরা।

কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের অবদান কী ছিল?

উঃ বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প রূপে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট।

উদ্দেশ্য : বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গভঙ্গ-বিরোধীস্বদেশি আন্দো এর কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করতে জাতীয় উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে বিকল্প শিক্ষার ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে, বাংলা তথা ভারতে কারিগরি শিক্ষার বিকাশের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটিকে গড়ে তোলা হয়।

প্রতিষ্ঠা : ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত আইনজীবী তারকনাথ পালিতের উদ্যোগে কলকাতায় স্থাপিত হয় বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠানটি বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজের সঙ্গে একত্রিত হয়ে এর নতুন নাম হয় বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ অ্যান্ড টেকনিক্যাল স্কুল। এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনে ডা. নীলরতন সরকার, রাসবিহারী ঘোষ, মহারাজা মনীন্দ্রচন্দ্র নন্দী, উপেন্দ্রনাথ ঘোষ প্রমুখ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন |

পঠনপাঠন : প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানটিতে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, প্রযুক্তিবিদ্যা, শিল্পপ্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয় পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।

জার্নাল প্রকাশ: বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা কারিগরি শিক্ষা ও প্রযুক্তির নতুন নতুন ভাবনাগুলিকে প্রচার করার জন্য টেকনামে একটি জার্নাল প্রকাশ করে। এই জার্নালের প্রথম সংখ্যা স্বদেশি যুগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে নিয়োজিত আত্মত্যাগী মহান ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়।

 বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর : বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ অ্যান্ড টেকনিক্যাল স্কুল ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দেকলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলেজি নামে পরিচিতি লাভ করে। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে এটির নামকরণ হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ।

সার্চ প্রভাব: বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের হাত ধরে বাংলায় কারিগরি ও প্রযুক্তিশিক্ষার অভূতপূর্ব প্রসার ঘটে। বহু শিক্ষিত যুবক এখান থেকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে স্বনির্ভর ও সাবলম্বী হয়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ বহু বাঙালি যুবকের উদ্যোগে বাংলায় গড়ে ওঠে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে আলোচনা করো।

উঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাভাবনার চূড়ান্ত পরিণতি হল ১৯২১ খ্রিস্টাব্দেশান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েরপ্রতিষ্ঠা।

উদ্দেশ্য : রবীন্দ্রনাথের মতে যে-কোনো দেশেরশিক্ষার সাথে সেখানকার জীবনযাত্রার সংযোগ থাকে।কিন্তু তৎকালীন ভারতে পাশ্চাত্য ধাঁচে গড়ে ওঠাশিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করত শুধু কেরানি, দারোগাপ্রভৃতি, যদিও ভারতে চাষি, কুমোর প্রভৃতি পেশায়লিপ্ত অনেক মানুষই বসবাস করতেন। তাই রবীন্দ্রনাথ এমন এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বপ্ন দেখেছিলেন যা ভারতের স্বতন্ত্র চরিত্রকে স্বীকৃতি জানাবে। এ ছাড়াও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানুষে মানুষে ভেদাভেদ মিটিয়ে তাদের এক মুক্ত পরিবেশে শিক্ষাচর্চার সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের আবদ্ধ পরিবেশের বাইরে প্রকৃতির কোলে শিক্ষাপ্রদান ছিল তাঁর লক্ষ্য। এই উন্মুক্ত বাতাবরণের সূত্র ধরে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর মাধ্যমেপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্বয়সাধন করতে চেয়েছিলেন।

প্রতিষ্ঠা : আশ্রমগুরু রবীন্দ্রনাথ গঠনের কথা প্রথম ব্যক্ত করেছিলেন কয়েকজন গুজরাটি ব্যবসায়ীর কাছে এবং এই বিদ্যালয় গঠনে দীনবন্ধু সি এফ অ্যান্ড্রুজ রবীন্দ্রনাথকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে ঘুরে এসে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সভার আয়োজন করেন। এরপর ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে মাত্র ১০ জন ছাত্র নিয়ে পণ্ডিত ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের সাহায্যে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হয়। এর প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন বিধুশেখর ভট্টাচার্য |

দেশিবিদেশি পণ্ডিত : রবীন্দ্রনাথের আহবানে সাড়া দিয়ে বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনার জন্য ছুটে এসেছিলেন বহু দেশি-বিদেশি পণ্ডিত | ব্রজেন্দ্রনাথ শীল তাই বলেছেন, “বিশ্ব ভারতের কাছে এসে পৌঁছোবে সেই বিশ্বকে ভারতীয় করে নিয়ে আমাদের রক্তরাগে

রঞ্জিত করে ভারতের মহাপ্রাণে অনুপ্রাণিত করে আবার সেই প্রাণকে বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠা করবে।”

শিক্ষাচর্চা : বিশ্বভারতীতে বিজ্ঞান ও কলা উভয়ই বিষয়ই সমান সমাদর লাভ করে। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগগুলি ছিল—পাঠভবন, শিক্ষাভবন, বিদ্যাভবন, রবীন্দ্রভবন, চিনাভবন, কলাভবন, সংগীত ভবন, হিন্দি ভবন। বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদান ছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। বিশ্বভারতী | [

কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি : ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে। এর প্রথম আচার্য হন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ও প্রথম উপাচার্য হন রবীন্দ্র নন্দন, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বর্তমানেও শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য স্বাক্ষর রেখে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় ।

জাতীয় শিক্ষার প্রসারে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের ভূমিকা কী ছিল?

উঃ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কর্মসূচি রূপে গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন | এর পরিণতিতে স্থাপিত হয় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ।

প্রতিষ্ঠা :৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ মার্চ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ৯১ জন সদস্য নিয়ে জাতীয়

শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়। রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক, ব্রজেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী, সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী প্রমুখ যথাক্রমে জাতীয় শিক্ষার প্রসারের জন্য ১ লক্ষ, ৫ লক্ষ ও ২.৫ লক্ষ টাকা দান করেন।

উদ্দেশ্য : জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—[i] জাতীয় আদর্শের ভিত্তিতে ভাষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। [ii] শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশসেবার মনোভাব গড়ে তোলা। [iii] নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো। [iv] মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন : জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্যোগে গড়ে ওঠে একাধিক জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয় বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এর প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়, বিনয়কুমার সরকার, ডি ডি কোসাম্বি প্রমুখ পণ্ডিতগণ অধ্যাপনা করেন। এ ছাড়া জাতীয় শিক্ষা পরিষদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারউদ্যোগও গ্রহণ করে। বিখ্যাত কংগ্রেস নেতা তথা শিক্ষাবিদ রাসবিহারী ঘোষ এই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি পদে নিযুক্ত হন|

ব্যর্থতা : জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্বদেশি আদর্শের ধাঁচে জাতীয় শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও শেষপর্যন্ত নানান কারণে এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। এর কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে—

[i] জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের নেতিবাচক মনোভাব | [ii] জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত ডিগ্রি লাভের পরও শিক্ষার্থী সরকারি চাকরি পেত না। [iii] প্রবল অর্থসংকটের মুখোমুখি হয়ে জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির কাজকর্ম অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে যায়। [iv] অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের একাংশ জাতীয় শিক্ষা অপেক্ষা ব্রিটিশ সরকারের শিক্ষাব্যবস্থাকে বেশি কার্যকরী মনে

করত।

উপসংহার: তবে ব্যর্থতা সত্ত্বেও জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বহু

মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্ম দেয়। সর্বোপরি, বিকল্প শিক্ষাভাবনার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও জাতীয় শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

Click Here To Download  The PDF

সংঘব্ধতার গোড়ার কথা (চতুর্থ অধ্যায়)|দশম শ্রেণী| প্রশ্ন-উত্তর সমাধান| Class 10| History 4th Chapter Solved

0

সংঘব্ধতার গোড়ার কথা (চতুর্থ অধ্যায়)

দশম শ্রেণী

সঠিক উত্তরটি বেছে লেখো

১ সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম ঘটনাস্থল ছিল— ব্যারাকপুর

২ সিপাহি বিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন— লর্ড ক্যানিং

৩ ১৮৫৭ – র মহাবিদ্রোহের সময় দিল্লির মোগল সম্রাট ছিলেন— দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

৪ সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ নামে পরিচিত— মঙ্গল পান্ডে

৫ ‘ পেশোয়া ‘ পদ লুপ্ত করেন গভর্নর জেনারেল – লর্ড ডালহৌসি

৬ দিল্লির শেষ মোগল সম্রাট ছিলেন – দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ

৭ তাঁতিয়া টোপি ছিলেন— মারাঠা ব্রাহ্মণ

৮ ঝাঁসির রানির বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন— স্যার হিউরোজ

৯ মহাবিদ্রোহের পর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন – মহারানি ভিক্টোরিয়া

১০‘ ভাইসরয় ‘ শব্দের অর্থ কী ? – রাজপ্রতিনিধি

১১ কোম্পানির আমলে শেষ গভর্নর জেনারেল কে ? – লর্ড ক্যানিং

১২ মহাবিদ্রোহের পরে যে নীতিটি লোপ পায়— স্বত্ববিলোপ নীতি

১৩ ভারতে কোম্পানির শাসন কায়েম ছিল — ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ

১৪ কংগ্রেস – পূর্ব যুগকে ‘ সভাসমিতির যুগ ‘ বলেছেন – অনিল শীল

১৫ ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হল— বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

১৬‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ‘ স্থাপিত হয়— ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে

১৭‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ‘ ছিল একটি – রাজনৈতিক সভা

১৮ ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে

১৯‘ আত্মীয়সভা ‘ প্রতিষ্ঠা করেন— রামমোহন রায়

২০‘ ব্রাহ্মসভা ‘ ছিল একটি – ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান

২১ অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করে— ইয়ং বেঙ্গল

২২ ভারতে প্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটি হল – ভারতসভা

২৩ ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সম্পাদিত সংবাদপত্রটির নাম ছিল— সংবাদ প্রভাকর

২৪‘ জমিদার সভা’র অন্যতম প্রতিষ্ঠিতা ছিলেন— প্রসন্ন কুমার ঠাকুর

২৫ জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের— ১৯ মার্চ

২৬ জমিদার সভা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন – রাধাকান্ত দেব

২৭‘ ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে

২৮ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে

২৯ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের মুখপত্র ছিল – হিন্দু প্যাট্রিয়ট

৩০ ইন্ডিয়ান লিগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন – শিশিরকুমার ঘোষ

৩১ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন যে বিদ্রোহের পক্ষে ছিল – নীল বিদ্রোহের

৩২‘ দি বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি গড়ে ওঠে— ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে

৩৩‘ হিন্দুমেলা ‘ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যাঁর নাম জড়িত তিনি হলেন— নবগোপাল মিত্র

৩৪‘ জাতীয় মেলা ‘ বা ‘ হিন্দুমেলা ‘ প্রতিষ্ঠিত হয়— ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে

৩৫‘ হিন্দুমেলা’র অপর নাম – চৈত্রমেলা

৩৬‘ হিন্দুমেলার উপহার ‘ কবিতাটি রচনা করেন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

৩৭‘ হিন্দুমেলা ‘ প্রবর্তন করেন— নবগোপাল মিত্র

৩৮ হিন্দুমেলার উত্তরসূরী ছিল— জাতীয় গৌরব সঞ্চারিণী সভা

৩৯ হিন্দুমেলা কতদিন চলেছিল ? – চোদ্দো বছর

৪০ ইস্ট ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা কে ? – দাদাভাই নওরোজি

৪১ ভারতসভা প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের— ২৬ জুলাই

৪২‘ ভারতসভা ‘ – র প্রথম সভাপতি ছিলেন— সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়

৪৩ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন শিল্পকর্মের জন্য বিখ্যাত ? – ব্যঙ্গচিত্র

৪৪‘ বর্তমান ভারত ’ প্রথম প্রকাশিত হয়— উদ্বোধন পত্রিকায়

৪৫ দেশীয় সংবাদপত্র আইন প্রবর্তিত হয়— ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে

৪৬ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতমাতা চিত্রটি এঁকেছেন— অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৪৭ ছিয়াত্তরের মন্বস্তরের পটভূমিকায় রচিত উপন্যাসটি হলো- আনন্দমঠ

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

সিপাহি বিদ্রোহ কথাটি প্রথম কে ব্যবহার করেন ? 

উঃ ‘ সিপাহি বিদ্রোহ ‘ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন ভারত সচিব আর্ল স্ট্যানলি ।

২ কাকে বিদ্রোহীরা হিন্দুস্থানের সম্রাট বলে ঘোষণা করে ?  

উঃ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে বিদ্রোহীরা ‘ হিন্দুস্থানের সম্রাট ‘ বলে ঘোষণা করে ।

৩ ভারতের শেষ মোগল সম্রাট কে ছিলেন ? 

উঃ ভারতের শেষ মোগল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ।

৪ কী করার অপরাধে সিপাহি বিদ্রোহে অংশগ্রহণ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে কোথায় নির্বাসন দেওয়া হয় ? 

উঃ সিপাহি বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করার অপরাধে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে রেঙ্গুনে নির্বাসন দেওয়া হয় ।

৫ নির্বাসনকালে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের বয়স কত ছিল ? 

উঃ নির্বাসনকালে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের বয়স ছিল বছর ।

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে কে ভারতের স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ বলে অভিহিত করেন ? 

উঃ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে বিনায়ক দামোদর সাভারকার ভারতের স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ বলে অভিহিত করেন ।

৭ কার্ল মার্কস ১৮৫৭ বিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে কী বলেছিলেন ? 

উঃ কার্ল মার্কস ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে বলেছিলেন এটি ছিল জাতীয় বিদ্রোহ ।

৮ মহাবিদ্রোহের একজন নেতার নাম লেখো  

উঃ মহাবিদ্রোহের একজন নেতার নাম তাঁতিয়া টোপি ।

৯বিদ্রোহে বাঙালি গ্রন্থটি কার লেখা ?

উঃ‘ বিদ্রোহে বাঙালি ‘ গ্রন্থটি দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ।

১০মহারানির ঘোষণাপত্র করে প্রকাশিত হয় ? 

উঃ মহারানির ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হয় ১ নভেম্বর ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ।

১১মহারানির ঘোষণাপত্রটি ভারতের কোথায় ঘোষিত হয় ? 

উঃ মহারানির ঘোষণাপত্রটি ভারতের এলাহাবাদে ঘোষিত হয় ।

১২মহারানির ঘোষণাপত্রটি এলাহাবাদে কে পাঠ করেন  

উঃ মহারানির ঘোষণাপত্র’টি এলাহাবাদে পাঠ লর্ড ক্যানিং ।

১৩মহারানির ঘোষণাপত্রকে কী নামে অভিহিত করা হয় ? 

উঃ মহারানির ঘোষণাপত্রকে ভারতীয় জনগণের ‘ ম্যাগনা কার্টা হিসেবে অভিহিত করা হয় ।

১৪ হিন্দুমেলার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ? 

উঃ হিন্দুমেলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

১৫ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কে প্রতিষ্ঠা করেন ? 

উঃঅ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন ।

১৬জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন ? 

উঃজাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি ছিলেন উমেশচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় ।

১৭আনন্দমঠ উপন্যাসটি কার লেখা ? 

উঃ ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা

১৮‘ আনন্দমঠ উপন্যাস করে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ? 

উঃ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় ।

১৯বন্দে মাতরম্ সংগীতটি কোন্ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে ? 

উঃ ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সংগীতটি ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে ।

২০বন্দে মাতরম্ সঙ্গীতটি প্রথম কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ? 

উঃ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ সঙ্গীতটি প্রথম বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ।

২১ কে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের গুরু বলেছেন

উঃ অরবিন্দ ঘোষ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের গুরু ’ বলেছেন ।

২২পরাধীন ভারতের জাতীয় সংগীত কোনটি ? 

উঃ পরাধীন ভারতের ‘ জাতীয় সংগীত ‘ ছিল ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ ।

২৩বর্তমান ভারত কার লেখা ? 

উঃ‘ বর্তমান ভারত ’ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা ।

২৪প্রাচ্য পাশ্চাত্য কার লেখা ? 

উঃ ‘ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ‘ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা ।

২৫বর্তমান ভারত প্রথম কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ? 

উঃ ‘ বর্ত্তমান ভারত ‘ পত্রিকায় প্রথম উদ্‌বোধন প্রকাশিত হয় ।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (4 Marks)

সিপাহি বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল ? 

উঃ এনফিল্ড রাইফেলের প্রবর্তন ছিল সিপাহি বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ । নতুন ধরনের এই বন্দুকের টোটায় মধ্যে গোরু ও শুকরের চর্বি মিশ্রিত থাকার গুজব রটালে ধর্মনাশের ভয়ে হিন্দু ও মুসলিম সিপাহিরা এই রাইফেল ব্যবহার করতে অস্বীকার করে । কিন্তু ইংরেজরা ভারতীয় সিপাহিদের দাবি না মানলে ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে তারা প্রকাশ্যে বিদ্রোহ শুরু করে ( ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ) ।

২ ১৮৫৭ – বিদ্রোহকে কি সিপাহি বিদ্রোহ বলা সংগত ? 

উঃ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে শুধুমাত্র সিপাহি বিদ্রোহ বলা যায় না , কারণ প্রথমত , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ ইংরেজ কোম্পানির ভারতীয় সিপাহিরা শুরু করলেও পরবর্তীকালে উত্তর ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকার জনগণ ব্যাপকভাবে এই বিদ্রোহে শামিল হয় । দ্বিতীয়ত , কয়েকটি স্থানে সিপাহিরা বিদ্রোহ না করলেও জনগণ বিদ্রোহ করেছিল এবং সামস্ত প্রভুরা যোগদান করেছিল ।

১৮৫৭ – বিদ্রোহকে সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া বলা হয় কেন ? 

উঃ১৮৫৭ – র বিদ্রোহে কিছু রাজ্যচ্যুত সামন্তরাজা ও ভূমিচ্যুত জমিদার ও তালুকদার নেতৃত্ব দিয়েছিল । এদের লক্ষ্য ছিল হৃত রাজ্য ও জমিদারি পুনরুদ্ধার । সামস্তশ্রেণির এই প্রয়াসকে বামপন্থী চিন্তাবিদ রজনীপাম দত্ত রক্ষণশীল ও সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলির অভ্যুত্থান বলে উল্লেখ করেছেন ।

৪ ১৮৫৭ – বিদ্রোহকে ভারতে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলা হয় কেন ? 

উঃ প্রখ্যাত বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকার ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে ভারতের ‘ প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ ‘ বলে আখ্যায়িত করেছেন , কারণ প্রথমত , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী বিদ্রোহীরা মনেপ্রাণে ইংরেজ বিতাড়ন করতে চেয়েছিল । দ্বিতীয়ত , বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক একসঙ্গে লড়েছিল এবং দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ভারতের সম্রাট বলে মেনে নিয়েছিল । তৃতীয়ত , ইংরেজ – বিরোধী এত ব্যাপক আন্দোলন ইতিপূর্বে ভারতে আর হয়নি । 

১৮৫৭ – মহাবিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলা যায় না কেন ? 

উঃ  প্রখ্যাত বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকার ১৮৫৭ – র মহাবিদ্রোহকে ‘ ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম ‘ বলে অভিহিত করেছেন । কিন্তু ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার ও সুরেন্দ্রনাথ সেন এই মতকে অস্বীকার করে বলেছেন যে , ( ১ ) জনগণের অংশগ্রহণ সর্বত্র সমানভাবে ঘটেনি ; ( ২ ) মারাঠা , রাজপুত , শিখ , গোরখা প্রভৃতি জাতি বিদ্রোহ থেকে দূরে ছিল ; ( ৩ ) সে সময় জাতীয় চেতনার উন্মেষ হয়নি ; ( ৪ ) বিদ্রোহীরা নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থে বিদ্রোহ করেছিল — জাতীয় স্বার্থে নয় । তাই এই বিদ্রোহকে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলা যায় না । 

৬ মহাবিদ্রোহ দমনে সাহায্য করেছিল এমন কয়েকটি দেশীয় শক্তির নাম লেখো  

উঃমহাবিদ্রোহ দমনে বেশ কিছু দেশীয় শক্তি ইংরেজদের সাহায্য করেছিল । এমন কয়েকটি দেশীয় শক্তি হল— গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া , কাশ্মীরের মহারাজা , হায়দ্রাবাদের নিজাম , যোধপুরের রাজা , গোরখা নেতা জং বাহাদুর প্রমুখ । 

৭ উনিশ শতককে সভাসমিতির যুগ ( Age of Association ) বলে অভিহিত করা হয় কেন ? 

অথবা , সভাসমিতির যুগ কাকে বলে ? 

উঃ জাতীয় চেতনা উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে ভারতবাসীর মনে দেশাত্মবোধের ধারণা জাগ্রত হয় এবং ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য ভারতীয়রা সংঘবন্ধ আন্দোলনের তাগিদ অনুভব করে । এই উপলব্ধি থেকেই উনিশ শতকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু রাজনৈতিক সভাসমিতি গড়ে ওঠে । এই কারণে অধ্যাপক অনিল শীল উক্ত সময়কালকে সভাসমিতির যুগ ‘ বলে অভিহিত করেছেন । 

৮ সভাসমিতির যুগে রাজনৈতিক সভাগুলির বৈশিষ্ট্যগুলি কী ছিল ? 

উঃ উনিশ শতকে বাংলা তথা ভারতে সভাসমিতির বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল প্রথমত , বাংলাতেই প্রথম সভাসমিতি গড়ে ওঠে এবং পরে বাংলার অনুকরণে ভারতের অন্যান্য স্থানে তা গড়ে ওঠে । দ্বিতীয়ত , এগুলি শুরুতে উচ্চবিত্ত ও অভিজাতকেন্দ্রিক হলেও ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর মধ্যবিত্ত শ্রেণির দ্বারা পরিচালিত হত । তবে এগুলিতে একারণেই সাধারণ মানুষের স্বার্থ ছিল উপেক্ষিত । তৃতীয়ত , এগুলি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল গোষ্ঠী স্বার্থ ও আঞ্চলিক স্বার্থ বজায় রাখা এবং আঞ্চলিক ভিত্তিতে ভারতীয়দের দাবিদাওয়া পুরণের চেষ্টা করা ।

৯ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার লক্ষ্য কী ছিল ?

উঃ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার লক্ষ্য ছিল প্রথমত , বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা করাই ছিল । এই সভার প্রাথমিক লক্ষ্য । দ্বিতীয়ত , পরবর্তীকালে এই সভা রাজনৈতিক সংস্থায় পরিণত হয় । এই সময় বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভার মূল লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশদের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বা কার্যাবলি ভারতবাসীর কতটা হিতসাধন বা ক্ষতি করতে পারে তা পর্যালোচনা করা । 

১০ জমিদার সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ? 

উঃ জমিদার সভা প্রতিষ্ঠার ( ১৮৩৮ খ্রি . ) উদ্দেশ্যগুলি হল— প্রথমত , বাংলা – বিহার – উড়িষ্যার জমিদার স্বার্থ রক্ষা করা ও জমিদারদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা । দ্বিতীয়ত , জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় এবং সরকার কর্তৃক নিষ্কর জমির বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা । তৃতীয়ত , ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার সাধন করা । বাস্তবেও দেখা যায় যে , ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ‘ নিষ্কর জমির বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিল , ‘ জমিদার সভা ‘ সেই বিষয়েই নতুন করে জনমত গড়ে তোলে । 

১১ ইলবার্ট বিল বিতর্ক কী ? / ইলবার্ট বিল কী ? 

Ans: ভারতীয় কোনো বিচারকের ব্রিটিশদের শাসন করার অধিকার ছিল না । লর্ড রিপনের শাসনকালে আইনসচিব ইলবার্ট একটি বিল দ্বারা ভারতীয় বিচারকদের এই অধিকার প্রদান করেন । একে ইলবার্ট বিল বলে । 

১২ উনিশ শতকে জাতীয়তাবাদের উন্মেষে ‘ভারতমাতা’ চিত্রটির কীরূপ ভূমিকা ছিল?

উঃ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সময় শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ‘ভারতমাতা’ নামক চিত্রটি শিক্ষিত ও প্রগতিশীল ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তা বোধের প্রসারে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা নেয়। অবনীন্দ্রনাথ হিন্দুদের ধনসম্পদের দেবী লক্ষীর অনুকরণে চতুর্ভুজা বৈষ্ণব সন্ন্যাসিনীর পোশাক পরিহিতা ভারতমাতার চারহাতে বেদ, ধানের শিষ,জপের মালা ও শ্বেত বস্ত্র দান করেছেন। এইভাবে অবনীন্দ্রনাথ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের যুগে ভারতীয়দের মধ্যে স্বদেশিয়ানা ও জাতীয়তাবাদী অনুভূতি জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন।

১৩ ব্যঙ্গ চিত্র কেন আঁকা হয়? গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা কয়েকটি ব্যঙ্গ চিত্রের উদাহরণ দাও।

উঃ পরাধীণ ভারতে নানা কারণে ব্যঙ্গ চিত্র আঁকা হত, যেমন- প্রচলিত সামাজিক কুপ্রথা সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করা, তৎকালীন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক ত্রুটিগুলি জনসমক্ষে তুলে ধরা।

            গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা বিভিন্ন চিত্রে ব্যঙ্গ করা হয়েছে এমন কয়েকটি বিষয় হল- পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুরাগী বাঙ্গালী বাবু, বাঙ্গালী নারীর বাংলার শাড়ী এবং ইউরোপের জুতো পরে ইউরোপীয় পুরুষের সঙ্গে নৃত্য, স্বামীর মত্ততা এবং তার স্ত্রীর আচরণ,জনৈক ব্রাক্ষণ ধর্মের প্রতি অনুরাগের পরিবর্তে মাংস, মদ ও মহিলায় অনুরোক্ত হওয়া প্রভৃতি।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর (8 Marks)

১ সংক্ষেপে মহাবিদ্রোহের ( ১৮৫৭ খ্রি . ) চরিত্র বিশ্লেষণ করো

 অথবা , মহাবিদ্রোহের চরিত্র প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো

উঃ ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের সময়কাল থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ঐতিহাসিকরা এই বিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র বিশ্লেষণ করেছেন । ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের প্রকৃতির বিভিন্ন দিকগুলি হল –

 শুধুমাত্র সিপাহি বিদ্রোহ : ম্যালেসন , জন কে , স্যার জন লরেন্স , পি ই রবার্টস প্রমুখ ইংরেজ এই বিদ্রোহকে নিছক সিপাহি বিদ্রোহ ছাড়া আর কিছু মনে করেন না । সমসাময়িক ভারতীয় লেখক স্যার সৈয়দ আহমদ খান , দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় , কিশোরচাঁদ মিত্র , হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখও মনে করেছেন , সিপাহি ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের দ্বারা সংগঠিত এই বিদ্রোহে জনগণের সংযোগ ছিল গৌণ ; সিপাহিরা নিজেদের সুযোগসুবিধা আদায়ের জন্য বিদ্রোহ করেছিল । 

 জাতীয় বিদ্রোহ : জে বি নর্টন , জনকে এবং ইংরেজ ঐতিহাসিক আলেকজান্ডার ডাফ প্রমুখ ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে ‘ জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন । কারণ , উত্তর ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিদ্রোহে শামিল হয়েছিল এবং তারা মনেপ্রাণে ব্রিটিশ বিতাড়ন চেয়েছিল । সিপাহিদের দ্বারা মনোনীত শেষ মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ হয়ে ওঠেন ভারতের জাতীয় সম্রাট , জাতীয়তার প্রতীক , হিন্দু – মুসলিম ঐক্যের প্রতীক ।

 সামন্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া : বামপন্থী চিন্তাবিদ রজনী পাম দত্ত , এম এন রায় প্রমুখ এই বিদ্রোহকে রক্ষণশীল ও সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলির অভ্যুত্থান বলে উল্লেখ করেছেন । অধ্যাপক সুশোভন সরকার ও এই বিদ্রোহের সামন্ততান্ত্রিক চরিত্র স্বীকার করে নিয়েছেন । 

সাম্প্রদায়িক আন্দোলন : সামাজিক ও ধর্মীয় কারণে এর সূচনা ঘটেছিল বলে আলফ্রেড লায়াল প্রমুখ তৎকালীন অনেক ইংরেজ কর্মচারী ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে সাম্প্রদায়িক আন্দোলন বলে ব্যাখ্যা করেছেন ।

 রমেশচন্দ্র মজুমদারের মত : ড . মজুমদারের মতে , এই বিদ্রোহ ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েনি । সকল শ্রেণির জনগণও এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেনি । তাই ১৮৫৭ – র তথাকথিত প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ না  ছিল প্রথম , না ছিল জাতীয় , না ছিল স্বাধীনতার যুদ্ধ

  . সেনের মতামত : ড . সুরেন্দ্রনাথ সেন – এর মতে , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহ সিপাহি বিদ্রোহ হিসেবে শুরু হলেও শেষপর্যন্ত তা গণবিদ্রোহে পরিণত হয় । দিল্লি , অযোধ্যা , বিহার প্রভৃতি অঞ্চলে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল সর্বাধিক এবং যেসকল অঞ্চলে জনগণের সমর্থন ছিল সেসব অঞ্চলের বিদ্রোহী নেতাদের লক্ষ্য ছিল প্রতিবিপ্লব ঘটানো ।

উপসংহার : কেমব্রিজ ঐতিহাসিক সি এ বেইলির মতে , ১৮৫৭ – র ভারতীয় বিদ্রোহ কেবল একটি আন্দোলন নয় , এর মধ্যে কৃষক অভ্যুত্থান বা জাতীয় বিদ্রোহের মতো আরও অনেক কিছুই ছিল ।

২ ১৮৫৭ বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যায় কি

উঃ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলার কারণগুলি হল –

 ব্যাপকতা : পূর্ববর্তী বিদ্রোহগুলির তুলনায় ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের ব্যাপকতা ও স্বতঃস্ফূর্ত গণসমর্থন ছিল ব্যাপক । 

 সাম্প্রদায়িক ঐক্য : দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ছিলেন হিন্দু – মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্যের প্রতীক । এই ধর্মীয় ভাবাবেগ পরবর্তীকালে তা স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয় ।

 পরিকল্পিত বিদ্রোহ : এই বিদ্রোহ আচমকা হঠাৎ ছিল না , এর পেছনে স্পষ্ট পরিকল্পনা ছিল । সাহায্যের আশায় দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ পারস্যের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন । 

 গণ অভ্যুত্থান : জাতীয়তাবাদ বলতে আমরা যাই বুঝি না কেন বিদেশি শাসন থেকে মুক্তিলাভের জন্য গড়ে ওঠা গণ অভ্যুত্থানকে জাতীয় সংগ্রাম বলা যেতেই পারে । 

 জাতীয় সংগ্রাম : ঐতিহাসিক কে পানিক্কর – এর মতে , ১৮৫৭ – র বিদ্রোহের নেতারা যদি নিজ নিজ অঞ্চলের স্বাধীনতার কথাও চিন্তা করে থাকেন , তবু তাঁরা যে জাতীয় সংগ্রামই করেছিলেন তা অস্বীকার করা যায় না ।

 বিপক্ষে যুক্তি : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যায় না , 

কারণ— ( ১ ) বিদ্রোহীদের কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য , পরিকল্পনা বা সংগঠন ছিল না । ( ২ ) ঐক্য বা বোঝাপড়া কেবলমাত্র সিপাহিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল । ( ৩ ) সিপাহিদের সঙ্গে বিদ্রোহী নেতাদের তেমন যোগাযোগ ছিল না । ( ৪ ) বিদ্রোহের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও নেতাদের মধ্যে লক্ষ্য ও আদর্শের ফারাক ছিল এবং এটি জাতীয় স্বার্থে পরিচালিত হয়নি । উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় , একটি দেশের মুক্তিযুদ্ধে দেশের সমস্ত মানুষ অংশ নেবে এ কথা আশা করা যায় । না । এই বিদ্রোহে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ যোগদান করেছিল , তাই একে জাতীয় বিদ্রোহ বলা হয়ে থাকে । তা ছাড়া বিদ্রোহীদের মধ্যে জাতীয় রাষ্ট্রের ধারণা হয়তো ছিল না , কিন্তু ব্রিটিশ – বিরোধী মানসিকতার প্রভাব ছিল । 

 উপসংহার : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ নিছক একটি কোনো বিদ্রোহ ছিল না । ভারতবাসীর মনে জাতীয়তা বোধ গড়ে তুলতে এই বিদ্রোহের যথেষ্ট ভুমিকা ছিল।

৩ ব্রিটিশবিরোধী জনমত গঠনে বাংলার সভা সমিতিগুলির বিবরণ দাও  

উঃ দেশের স্বার্থরক্ষা ও সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য সংঘবদ্ধ আন্দোলন প্রয়োজন— ভারতীয়দের এই উপলব্ধি থেকেই উনিশ শতকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে , যেগুলি ব্রিটিশ – বিরোধী জনমত গঠনে বিশেষ সহায়ক হয়েছিল, যেগুলি ব্রিটিশ – বিরোধী জনমত গঠনে বিশেষ সহায়ক হয়েছিল । এইরূপ নানা সভাসমিতির মধ্যে বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা , জমিদার সভা , হিন্দুমেলা ও ভারতসভা ছিল উল্লেখযোগ্য । 

বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা : ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে টাকির মুনশি কালীনাথ রায়চৌধুরি , প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর এবং প্রসন্নকুমার ঠাকুরের যৌথ উদ্যোগে ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ’ গড়ে ওঠে । এর বিভিন্ন সভায় ব্রিটিশদের ভালোমন্দ কাজের পর্যালোচনা করা হত । যোগেশচন্দ্র বাগলের মতে , এটি বাঙালি তথা ভারতবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ।

 জমিদার সভা : ১২ নভেম্বর ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর , রাধাকান্তদেব ও প্রসন্নকুমার ঠাকুরের যৌথ প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে জমিদার সভা ( Land Holders Society ) । রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতে , এটি ছিল ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের অগ্রদূত । এই প্রতিষ্ঠান থেকেই জনসাধারণ সর্বপ্রথম নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে দাবি আদায়ের শিক্ষা লাভ করে । 

হিন্দুমেলা : ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে নবগোপাল মিত্রের উদ্যোগে ‘ জাতীয় মেলা ’ গড়ে ওঠে , যা ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে হিন্দুমেলায় পরিণত হয় । দেশীয় সাহিত্য , শিল্প ও সংস্কৃতির যথার্থ বিকাশের মাধ্যমেই ভারত ও ভারতবাসীর প্রকৃত মঙ্গল সম্ভব — এই চিন্তা থেকেই জন্ম নেয় এই প্রতিষ্ঠানটি । জাতীয় সংস্কৃতি , জাতীয় শিল্প ও জাতীয় গৌরব বৃদ্ধি করা এবং এ বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করাই ছিল হিন্দুমেলার প্রধান কর্মসূচি ।

ভারতসভা : মধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্যদের নিয়ে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জুলাই সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় , আনন্দমোহন বসু ও শিবনাথ শাস্ত্রীর সহায়তায় কলকাতার অ্যালবার্ট হলে ভারতসভা প্রতিষ্ঠা করেন । এই সংগঠনে কোনো ইউরোপীয় বা জমিদার শ্রেণির সদস্য না থাকায় ভারতসভা সাধারণ ভারতবাসীর রাজনৈতিক সংগঠনের চরিত্রলাভ করে । এই সভাই সর্বপ্রথম ‘ হিন্দু – মুসলিম সম্প্রীতির ওপর জোর দেয় এবং নিম্নবর্গীয় মানুষদের গণ – আন্দোলনে শামিল করে । ভারতসভার নেতৃত্বে ব্রিটিশ প্রবর্তিত সিভিল সার্ভিস আইনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের বিরুদ্ধে , ইলবার্ট বিলের পক্ষে ব্যাপক আন্দোলন ও জনমত গড়ে ওঠে ।

উপরিলিখিত সংগঠনগুলি ছাড়াও ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ( ১৪৩৯ ) , বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি ( ১৮৪৩ ) , ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ( ১৮৫১ ) , ইন্ডিয়ান লিগ ( ১৮৭৫ ) প্রভৃতি সভাসভাসমিতিগুলিও ব্রিটিশ – বিরোধী জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিল । সঙ্গত কারণেই ঐতিহাসিক ড . অনীল শীল উনিশ শতককে সভাসমিতির যুগ ( Age of Associations ) বলে উল্লেখ করেছেন । 

ভারতসভার প্রতিষ্ঠা ভূমিকা আলোচনা করো  

অথবা , ভারতসভার লক্ষ্য কী ছিল ? জাতীয় আন্দোলনের উন্মেষে এই সভা কীভাবে সাহায্য করেছিল

উঃ ভারতসভা প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে প্রথমত , সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বুদ্ধিজীবী শ্রেণির নেতা উপলব্ধি করেছিলেন যে , দেশের বৃহত্তর জনগণের সংযোগে গণতান্ত্রিকভাবে সমিতি গঠন না করলে সরকার সেই সমিতির দাবিকে মূল্য দেবে না । দ্বিতীয়ত , ভারতে ইতিপূর্বে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক সমিতিগুলি ছিল রক্ষণশীল ও তাদের আচরণ ছিল অভিজাতসুলভ । তৃতীয়ত , সর্বভারতীয় স্তরে সমিতি গঠন ও আন্দোলন পরিচালনার মাধ্যমে ভারতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করা । 

ভারতসভার উদ্দেশ্য : ‘ ভারতসভা ‘ – র চারটি ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল , যেমন – ( ১ ) জনমত গঠন , ( ২ ) ভারতের সকল জাতি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য স্থাপন , ( ৩ ) হিন্দু – মুসলিম ঐক্য স্থাপন এবং ( ৪ ) রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে ভারতের জনসংযোগ ঘটানো । যাতে সাধারণ ভারতীয়রা বিপুল সংখ্যায় এই সংগঠনে যোগ দিতে পারে তার জন্য এর সদস্য চাঁদা দরিদ্রতম শ্রেণির জন্য এক টাকা হিসেবে ধার্য করা হয় । দ্বিতীয় অংশ , ‘ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতসভার ১২৪ টি শাখা গড়ে ওঠে এবং এগুলির মাধ্যমে ভারতসভা জাতীয় আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয় । 

ভারতসভার উল্লেখযোগ্য কার্যাবলি হল > সিভিল সার্ভিস সংক্রান্ত আন্দোলন ভারতসভা সর্বপ্রথম আন্দোলন গড়ে তোলে ভারতীয় সিভিল সার্ভিস আইনের সংস্কারকে কেন্দ্র করে । এই আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের বয়স ২১ থেকে কমিয়ে ১৯ করলে ভারতসভা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় । সিভিল সার্ভিস সংক্রান্ত একটি সর্বভারতীয় প্রতিবাদপত্র লালমোহন ঘোষ মারফৎ ব্রিটিশ সংসদে পেশ করা হয় । 

লিটনের প্রতিক্রিয়াশীল আইনের বিরোধিতা : ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে লর্ড লিটন দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন জারি করে দেশীয় ভাষার সংবাদপত্রগুলির স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নেন এবং ওই বছরেই অস্ত্র আইন জারি করে ভারতবাসীকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করেন । কলকাতার টাউন হলে ‘ ভারতসভা ‘ — এই দুটি আইনের বিরুদ্ধে বিরাট বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে । 

ইলবার্ট বিলের পক্ষে আন্দোলন : লর্ড রিপন – এর আমলে ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় বর্ণবৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্য তাঁর আইন সচিব সি পি ইলবার্ট একটি বিল বা আইনের খসড়া রচনা করলে ভারতসভা এই বিলের পক্ষে আন্দোলন শুরু করে । 

মূল্যায়ন : ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার প্রথম জাতীয় সম্মেলন ‘ আহ্বান করেন । এর দু – বছর পর তিনি দ্বিতীয় ‘ জাতীয় সম্মেলন ‘ আহ্বান করেন , যা ছিল ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পূর্বাভাস । সুতরাং দেখা যায় , যে ভারতসভাই ছিল আধুনিক ভারতের প্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং এই সভার মধ্য দিয়েই সর্বভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বিকাশ ঘটে । 

আনন্দমঠউপন্যাসের জাতীয়তাবাদী মূল্য বিচার করো  

উঃআনন্দমঠ ‘ ( ১৮৮২ খ্রি . ) উপন্যাসে লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘ বন্দে মাতরম্ ‘ গানটির মধ্য দিয়ে বাঙালি সমাজকে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে তোলেন । 

বিষয়বস্তু : ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে ঐতিহাসিক ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ও সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহের ক্ষীণ সূত্র ধরে অতীতের পটভূমিতে বঙ্কিম এক উজ্জ্বল ও জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেন । স্বাদেশিকতা , আধ্যাত্মিকতা দেশোদ্ধারকারী সন্তান দলের প্রতিষ্ঠানের নামটিই আনন্দমঠ । এঁদের জীবনের মূলমন্ত্র ছিল , জননী ও জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও গরিমাময় । 

মাতৃমূর্তি : সন্তানদলের প্রধান স্বামী সত্যানন্দ মহেন্দ্রকে যে মাতৃমূর্তি দেখান , তার তিনটি রূপ , যেমন— ” মা যা ছিলেন ’ , ‘ মা যা হইয়াছেন ‘ এবং ‘ মা যা হইবেন ‘ । দ্বিতীয় মূর্তিটি মায়ের নগ্নিকা মুর্তি , ঔপনিবেশিক শাসনকালে যা রিক্ত ও নিঃস্ব , চারিদিকে শ্মশানের পরিবেশ ও মৃত্যুর হাহাকার ; তৃতীয় রূপটি হল ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে মা যে রূপটি ফিরে পাবেন , তা হল দশভূজা দুর্গার রূপ ।– 

জাতীয়তাবাদের উদ্‌বোধন : জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ধর্মবোধকে জুড়ে দিয়েছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র, কারণ বাঙালির জাতীয়তাবাদের এক বড়ো অংশ জুড়েই ছিল ধর্ম । এই গ্রন্থে বঙ্কিম ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে জাতীয় জীবনের , জাতীয় জীবনের সঙ্গে রাষ্ট্র ও ধর্মের সমন্বয় সাধন করেছেন ।

দেশপ্রেমের বাণী : ‘ আনন্দমঠ ‘ – এর মাধ্যমে দেশপ্রেমের বাণী প্রকাশিত হয় । এটি স্বদেশপ্রেম , দেশমাতা আদর্শের ধারণার উদ্ভব ঘটায় , কারণ এই গ্রন্থে বলা হয়েছিল দেশমাতা হলেন মা , দেশপ্রেম হল ধর্ম এবং দেশসেবা হল পূজা । 

অভয়মন্ত্র : এই উপন্যাসে জন্মভূমিকে মাতৃরূপে কল্পনা করে রচিত ‘ বন্দে মাতরম্ ’ সঙ্গীতটি পরাধীন ভারতের বিপ্লবী মন্ত্র ও রণ সঙ্গীতে পরিণত হয় । 

আত্মত্যাগের আদর্শ : এই গ্রন্থটি দেশের যুবসম্প্রদায়কে স্বদেশ ভক্তি , ত্যাগ ও সেবাধর্মে উদ্বুদ্ধ করে স্বদেশ প্রেমের গীতারুপে চিহ্নিত হয়েছিল ।  

            পরিশেষে বলা যায় ভারতে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষে ‘ আনন্দমঠ ‘ ( ১৮৮২ খ্রি . ) ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ এক জাতীয়তাবাদী উপন্যাস , কারণ স্বদেশপ্রেম : বঙ্কিমচন্দ্র রচিত ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীর মনে স্বাদেশিকতা ও সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ধারণা সঞ্চারিত করেছিল । 

৬ উনিশ শতকে লেখায় রেখায় জাতীয়তাবাদ কীভাবে ফুটে উঠেছে এবং ঊনবিংশ শতকে রেখায় লেখায় জাতীয়তাবাদ কী ভাবে ফুটে উঠেছে  

উঃ ঊনিশ শতকের শেষদিকে শিক্ষিত ভারতবাসীর চিন্তায় ও কর্মে এক ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে । ব্রিটিশ শাসকদের আচার আচরণে জাতি বৈরিতা এবং অর্থনৈতিক – রাজনৈতিক অসাম্যের প্রতিবাদে ‘ আনন্দমঠ ‘ , ‘ বর্তমান ভারত ’ , ‘ গোরা ’ গ্রন্দ্বে ভারতমাতা চিত্রে এক জাতীয়তাবাদী ধ্যানধারনার বিষয় ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয় । 

জাতীয়তাবাদী বিকাশে আনন্দমঠের ভূমিকা :  একদিকে ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে ( ১১৭৬ বঙ্গাব্দে ) বাংলার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ( ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ) ও অন্যদিকে সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে এটি রচিত হয়েছে । এই উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে রয়েছে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীদের চরিত্র যেমন — মহেন্দ্র , ভবানন্দ , সত্যানন্দ প্রমুখ । এটি ভারতকে মাতৃরূপে কল্পনা করে তার তিনটি রূপ দেখিয়েছে । যথা — জগদ্ধাত্রী , কালী , ও দশভূজা মূর্তি । এই উপন্যাসে সমকালীন ভারতবাসীর সামনে পরাধীন ভারতমাতার দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে বঙ্কিম স্বৈরাচারী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতবাসীকে আহ্বান জানায় ।

বন্দেমাতরম সংগীত : এখানে বন্দেমাতরম সংগীতটি তুলে ধরা হয়েছে ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে , যা ছিল পরাধীন ভারতের জাতীয় সংগীত তথা বিপ্লবীদের মন্ত্র । পরে ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মাদাম ভিকাজি কামা রূপায়িত জাতীয় পতাকায় এই ধ্বনি স্থান পেয়েছে । 

জাতীয়তাবাদ বিকাশে বর্তমান ভারতের গুরুত্ব : ‘ বর্তমান ভারত ‘ গ্রন্থটি ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রসারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । 

i) স্বামীজি বর্তমান ভারতে বৈদিক যুগ থেকে ব্রিটিশ শাসনকাল পর্যন্ত ভারতের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন ।

ii) গ্রন্থটিতে স্বামীজি পরাধীনতার গ্লানির চিত্রটি তুলে ধরেছেন । ভারতবাসীকে স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করেছেন ।

  iii) তিনি উপলব্ধি করেছিলেন স্বাধীনতা লাভের জন্য ভারতীয়দের মধ্যে ঐক্য খুবই প্রয়োজন । 

iv) তিনি সমাজের দলিত ও নিম্নশ্রেণির মানুষের প্রতি শোষণের তীব্র নিন্দা করেছেন । তার মতে , ভারতে প্রাচীনকাল থেকে শূদ্রদের দমিয়ে রাখা হয়েছে । এবার শূদ্রজাতির জাগরণ ঘটবে । তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে । তিনি দেশপ্রেমের আদর্শে ভারতবাসীকে দীক্ষিত করেছেন ।

জাতীয়তাবাদ বিকাশে গোরা উপন্যাসের ভূমিকা : বিংশ শতকের গোড়ায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ । তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে ক্রমাগত জাতীয়তাবোধের আদর্শকে এক অন্য পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন । তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘ গোরা ‘ ১৯০৭-০৯ খ্রিস্টাব্দ অবধি ‘ প্রবাসী ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল । গোরা উপন্যাসটিকে সমগ্র আধুনিক ভারতীয় সাহিত্যের একটি যুগান্তকারী রচনা হিসেবে গণ্য করা হয় । এখানে ‘ গোরা ‘ চরিত্রটি প্রবল ইংরেজ বিদ্বেষী । তাঁর বিদ্বেষকে আরও বাড়িয়ে তোলে ইংরেজদের ভারতীয় সভ্যতা , সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র ঘৃণা ৷ গোরা প্রথমে উগ্র হিন্দুত্ববাদের প্রতি অনুরক্ত হয় কিন্তু পরবর্তীতে তার দৃষ্টিভঙ্গি পালটে যায় । সে উগ্র হিন্দুত্ব তথা সকল প্রকার ধর্মীয় আচারবিচার বর্জন করে সংকল্প নেয় প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার উৎকর্ষ প্রচারের মাধ্যমে ভারতবাসীর মনে স্বদেশপ্রেমের জোয়ার আনবে । ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি ও আচারবিচারের পরিবর্তে স্বদেশপ্রেমের দ্বারাই যে জাতীয়তাবোধের জাগরণ সম্ভব তা সে উপলব্ধি করে এবং সেই কর্মযজ্ঞে সে নিজেকে উৎসর্গ করে । 

জাতীয়তাবাদ বিকাশে ভারতমাতা ছবির গুরুত্ব : 

সূচনা : ব্রিটিশ ভারতে বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর । ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে আঁকা তার ভারতমাতা চিত্রটি বিশ শতকে ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসার ঘটিয়েছিল । এই চিত্রে তিনি ভারতের প্রতীক হিসেবে ভারতমাতাকে দেখিয়েছিলেন । 

স্বাদেশিকতা : ভারতমাতা চিত্রে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতমাতার হাতে থাকা বেদ , ধানের শিষ , যপের মালা ও শ্বেতবস্ত্রকে ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন । আসলে এই চিত্রের স্বদেশবোধের দ্বারা তিনি জাতীয়তাবাদী ভাবনার প্রসার করতে চেয়েছিলেন । 

জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি : সমকালীন ভারতে বিভিন্ন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মিছিলের সামনে ভারতমাতার চিত্র রাখা হতো , যার দ্বারা ভারতমাতাকে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে দেখিয়ে ভারতে জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয় ।

জেলখানার চিঠি| অষ্টম শ্রেণী |প্রশ্ন উত্তর সমাধান|Jelkhanar Chithi| Class 8| Question Solved|

0

জেলখানার চিঠি

. সুভাষচন্দ্র বসু প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন কেন ?

উঃ ভারতবিদ্বেষী ইংরেজ-অধ্যাপক ওটেনকে প্রহারের অভিযোগে সুভাষচন্দ্র বসু প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন।

. রাসবিহারী বসুর কাছ থেকে তিনি কোন দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন ?

উঃ রাসবিহারী বসুর কাছ থেকে তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন।

অনধিক তিনটি বাক্যে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

. তোমার পাঠ্য পত্রখানি কে, কোথা থেকে, কাকে লিখেছিলেন ?

উঃ পাঠ্য পত্রখানি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বর্তমান মায়ানমারের মান্দালয় জেল থেকে বন্ধু দিলীপকুমার রায়কে লিখেছিলেন।

. কোন ব্যাপারটিকে পত্ৰলেখক আধ্যাত্মিক দৃষ্টিতে দেখার কথা বলেছেন ?

উঃ সুভাষচন্দ্র বসু এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা অকারণে বা সম্পূর্ণ অজ্ঞাত কারণে রাজনৈতিক বন্দি হিসাবে জেলে থেকে যেসব ঘটনাকে মেনে চলতে বাধ্য হচ্ছেন, সেই অকারণে বন্দি থাকার ব্যাপারটাকেই তিনি আধ্যাত্মিক দৃষ্টিতে দেখার কথা বলেছেন।

. বন্দিদশায় মানুষের মনে শক্তি সঞ্চারিত হয় কীভাবে

উঃ বন্দিদশায় মানুষের মনে শক্তির সঞ্চার ঘটার অন্যতম কারণ হল— দার্শনিক ভাব। এই ভাবের কারণেই মানুষের মনে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যাত্ম ধারণা হয়।

. মান্দালয় জেল কোথায় অবস্থিত ?

উঃ মান্দালয় জেল বর্তমান মায়ানমারে অবস্থিত। পরাধীন। ভারতের ব্রিটিশ সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এই জেলে বন্দি রেখে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। বালগঙ্গাধর তিলকও এই জেলে একসময় বন্দি ছিলেন।

. ভারতীয় জেল বিষয়ে একটি পুস্তক সুভাষচন্দ্রের লেখা হয়ে ওঠেনি কেন ?

উঃ ভারতীয় জেল বিষয়ে সুভাষচন্দ্র বসুর একটি পুস্তক লেখা না-হয়ে ওঠার কারণ, বই লেখার জন্য যে উদ্যম বা শক্তির প্রয়োজন, সেই সময় তার কাছে সেই উদ্যম বা শক্তির অভাব ছিল। তা ছাড়া, তাঁর বিভিন্ন সমস্যা ও অস্থিরতার কারণে সে-চেষ্টার উপযুক্ত সামর্থ্যও ছিল না।

. সুভাষচন্দ্র কেন দিলীপ রায় প্রেরিত বইগুলি ফেরত পাঠাতে পারেননি ?

উঃ সুভাষচন্দ্র বসু দিলীপ রায় প্রেরিত বইগুলি ফেরত পাঠাতে পারেননি। কারণ, দিলীপকুমার রায় প্রেরিত বইগুলির তিনি ছাড়া আরও বহু পাঠক আছেন।

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর কয়েকটি বাক্যে লেখ :

. নেতাজি ভবিষ্যতের কর্তব্যের কথা এই চিঠিতে বলেছেন ?কেন এই কর্তব্য স্থির করেছেন ?কারাশাসন প্রণালী বিষয়ে কাদের পরিবর্তে কাদের প্রণালীকে তিনি অনুসরণযোগ্য বলে মনে করেছেন ?

উঃ  নেতাজি ভবিষ্যৎ ভারতের কারাগার সংস্কারসাধনের কথা এই চিঠিতে বলেছেন।

    স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য নেতাজিকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর মনে হয়েছে, কোনো কারণে কাউকে যদি জেলে থাকতে হয়, তবে জেলের পরিবেশের কারণে তার মানসিকতার বিকার ঘটতে বাধ্য। জেলের বিকৃত পরিবেশে অধিকাংশ বন্দিদের সামান্যতম নৈতিক উন্নতি হয় না। বরং তাদের মনে আরও বেশি ক্ষোভ, হিংসা, ঘৃণা ও প্রতিহিংসা জেগে ওঠে।

     কারাশাসন প্রণালী বিষয়ে ভারতীয় কারাশাসন প্রণালী পরিবর্তে আমেরিকার ইউনাইটেড স্টেটস-এর মত উন্নত দেশগুলির কারাশাসন প্রণালী অনুসরণযোগ্য বলে তিনি মনে করেছেন।

. সেজন্য খুবই খুশি হয়েছি।বক্তা কে ? তিনি কীজন্য খুশি হয়েছেন?

উঃ প্রশ্নোধৃত উক্তির বক্তা মান্দালয় জেলে বন্দি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।

     জেলে বন্দি আসামির কাছে বাইরে থেকে কোন চিঠি এলে তা দু-দুবার পরীক্ষা করা হয়। এটিই ব্রিটিশ শাসকের রীতি। এবার সেই রীতি লঙ্ঘিত হয়েছে। বন্ধু দিলীপকুমার রায়ের চিঠি তাঁর কাছে অন্যান্য বারের মত এবার double distillation’-র ভিতর দিয়ে আসেনি বলে তিনি খুশি হয়েছেন।

.আমার পক্ষে এর উত্তর দেওয়া সুকঠিন।কে, কাকে কথা বলেছেন ? কীসের উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ?

উঃ সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর বন্ধু দিলীপকুমার রায়কে এ কথা বলেছেন।

     নেতাজি দিলীপকুমার রায়ের লেখা পড়ে অভিভূত। চিঠিটি সুভাষচন্দ্র বসুর হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁর মনকে সেই চিঠি এতটাই স্পর্শ করেছে যে, তিনি যেন নতুন এক চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাঁর পক্ষে সে চিঠির উত্তর দেওয়া সুকঠিন। এমনকি তিনি এও জানেন, যে তাঁর চিঠি censor হয়ে প্রাপকের কাছে যাবে। তাতে নেতাজির ব্যক্তিমনের গভীর আবেগ ও বেদনা অনেকের সামনে চলে আসবে, যা তিনি কোনোদিন চাননি। তাই এরকম চিঠি তাঁর পক্ষে লেখা সম্ভব নয় বলেই তিনি বলেছেন- “আমার পক্ষে এর উত্তর দেওয়া সুকঠিন।

.পরের বেদনা সেই বুঝে শুধু যে জন ভুক্তভোগী।উদ্ধৃতিটির সমার্থক বাক্য পত্রটি থেকে খুঁজে নিয়ে লেখ। সেই বাক্যটি থেকে লেখকের কোন মানসিকতার পরিচয় পাও ?

উঃ পাঠে উল্লিখিত আলোচ্য উদ্ধৃতিটির সমার্থক বাক্য হল— “আমি যদি স্বয়ং কারাবাস না-করতাম তাহলে একজন কারাবাসী বা অপরাধীকে ঠিক সহানুভূতির চোখে দেখতে পারতাম না।”

    ওপরের বাক্য থেকে সহজেই অনুমান করা যায়, নেতাজি কারাবন্দিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তিনি মনে করেন, জেলখানা কেবল শাস্তিদানের জায়গা নয়, তা সংশোধনের স্থানও হওয়া উচিত। তাই তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের সংশোধনের মধ্যে দিয়ে সমাজজীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে চেয়েছেন। লেখক তার সহানুভূতিশীল মন দিয়ে এগুলি উপলব্ধি করেন। সুতরাং, এর থেকে বোঝা যায়, তিনি দরদি ও অনুভূতিশীল মনের অধিকারী।

.আমার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে, অনেকখানি লাভবান হতে পারব।কোন্ প্রসঙ্গে বক্তার এই উক্তি ? জেলজীবনে তিনি আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে কীভাবে লাভবান হওয়ার কথা বলেছেন ?

উঃ জেলের মধ্যে যে-নির্জনতায় বা দীর্ঘ সময়সীমায় মানুষ বন্দি-জীবনযাপন করতে করতে জীবনের চরম সমস্যাগুলিকে তলিয়ে বোঝার সুযোগ পায়, সেই নির্জনতা প্রসঙ্গে বক্তার এই উক্তি।

 লোকমান্য তিলক কারাবাসকালে গীতার আলোচনা করে আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে লাভবান হয়েছেন। সেই আধ্যাত্মিকতার কথাই লেখক বলেছেন।

.  Martyrdom’ শব্দটির অর্থ কী ? এই শব্দটি উল্লেখ করে বক্তা কী বক্তব্য রেখেছেন ?

উঃ Martyrdom’ শব্দের অর্থ হল ‘আত্মবলিদান। অন্যভাবে বলা যায় রাজনৈতিক বিশ্বাসের জন্য বা মহৎ আদর্শের খাতিরে স্ব-ইচ্ছায় প্রবল কষ্টভোগ করা।

 এই শব্দটির উল্লেখ করে বক্তা বলেছেন, দিলীপকুমার রায় তাঁর কারাবাসকে বলিদানের সঙ্গে তুলনা করলেও, নিজে তিনি সেটিকে সেভাবে মনে করার স্পর্ধাও রাখেন না। এটি তার কাছে বড়োজোর একটা আদর্শ হতে পারে।

. যখন আমাদিগকে জোর করে বন্দি করে রাখা হয় তখনই তাদের মূল্য বুঝতে পারা যায় ?’—কোন প্রসঙ্গে কথা বলা হয়েছে ? তাদের মূল্যবিষয়ে লেখকের বক্তব্য আলোচনা কর।

উঃ জেলের ভিতরে অনুষ্ঠিত পিকনিক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা চর্চার ফলে বন্দি মানুষের জীবনে সরসতা ও সমৃদ্ধিলাভ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে।

তাদের মূল্য বলতে, জেলের ভিতর অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক ও আনুষঙ্গিক নানা অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে লেখক বলেছেন, এর ফলে, বন্দিদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সাধিত হয়। খাদ্যপানীয় বা শরীরচর্চার অভাবে কিংবা সমাজ-বিচ্ছিন্ন অবস্থানের বন্দিজীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু, সুস্থ মানসিক পরিবর্তন হলেই বন্দি মানুষ জেলের বাইরের মানুষের মত স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।

. মানুষের পারিপার্শ্বিক অবস্থা কী কঠোর নিরানন্দময়।যে ঘটনায় লেখকের মনে এই উপলদ্ধি ঘটে তার পরিচয় দাও।

উঃ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ২ মে ১৯২৫ তারিখে বন্ধু দিলীপকুমার রায়কে লেখা পত্রটিতে তার কারারুদ্ধ জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে প্রশ্নোক্ত উদ্ধৃতিটি করেছেন। তিনি মনে করেন, জেলের ভিতরে বন্দিদের দৈহিক অপেক্ষা মানসিক কষ্ট সহ্য করতে হয় বেশি। এই মানসিক আঘাতে আঘাতকারীর প্রতি বন্দির মন বিরূপ হয়। তাতে হয়ত ওপরওয়ালার উদ্দেশ্য সফল হয় না। কিন্তু বন্দিদের মনের মধ্যে কোনো আনন্দধাম গড়ে ওঠে না। এটিই লেখক উপলব্ধি করেছেন।

. এই চিঠিতে কারাবন্দি অবস্থাতেও দুঃখকাতর, হতাশাগ্রস্ত নয়, বরং আত্মবিশ্বাসী আশাবাদী নেতাজির পরিচয়ই ফুটে উঠেছে।পত্রটি অবলম্বনে নিজের ভাষায় মন্তব্যটির যাথার্থ্য পরিস্ফুট কর।

উঃ সুভাষচন্দ্র বসু মান্দালয় জেলে বন্দি জীবনযাপন করলেও চিঠির মধ্যে তাঁর মানসিক অবস্থার অবনতির কথা কোথাও নেই। তিনি এখানে দুঃখে কাতর বা হতাশায় মগ্ন নন। এছাড়া জেলের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বই লিখতে চান। তিনি মনে করেন, দীর্ঘ কারাবাসে বা নির্জনতায় আধ্যাত্মিক উন্নতি হতে পারে। তিনি আশা করেন, জেলের ভিতরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি বন্দিদের জীবনে উৎকর্ষসাধন করতে সুভাষচন্দ্র বসু রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে কারাবাসের সময় প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার দ্বারা কারাশাসনের অব্যবস্থা ও বন্দিদের চরম দুর্ভোগ উপলব্ধি করলেও তিনি দুঃখকাতর বা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েননি। বরং, আত্মবিশ্বাসী হয়ে দুঃখ জয়ের আহ্বান জানিয়েছেন।

.১০ কারাগারে বসে নেতাজির যে ভাবনা, যে অনুভব, তার অনেকখানি কেন অকথিত রাখতে হবে ?

উঃ  নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রাজনৈতিক বন্দি হিসাবে মান্দালয়ের কারাগারে অবস্থানকালে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ২মে বন্ধু দিলীপকুমার রায়-কে চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে তিনি। জানিয়েছেন, কারাগারে অবস্থানকালে তার যে ভাবনা বা উপলব্ধি, তার অনেকখানিই অকথিত রাখতে হবে। কারণ, এটি তাঁর পুরোপুরি অন্তরের গভীরতম প্রবাহ, যা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। এটি দিনের উন্মুক্ত আলোয় প্রকাশিত হলে তার মাধুর্য নষ্ট হতে পারে। এমনকি ‘Censor- এর হাতে সেটির লাঞ্ছিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কিংবা জনগণের বহু আলোচনায় সেটি তাঁর বিপদের কারণও হতে পারে।

নীচের বাক্যগুলির তথ্যগত অশুদ্ধি সংশোধন কর :

. নেতাজি মনে করতেন না যে, আমাদের সমস্ত দুঃখকষ্টের অন্তরে একটা মহত্তর উদ্দেশ্য কাজ করছে।

উঃ নেতাজি মনে করতেন যে, আমাদের সমস্ত দুঃখকষ্টের ভিতর মহত্তর উদ্দেশ্য কাজ করে।

. কারাগারে বন্দি অবস্থায় নেতাজি সুভাষ গীতার আলোচনা লিখেছিলেন।

উঃ কারাগারে বন্দি অবস্থায় লোকমান্য তিলক গীতার আলোচনা লিখেছিলেন।

8. জেল জীবনের কষ্ট মানসিক অপেক্ষা দৈহিক বলে নেতাজি মনে করতেন।

উঃ জেল জীবনের কষ্ট দৈহিক অপেক্ষা মানসিক বলে নেতাজি মনে করতেন।

নীচের বাক্যগুলি থেকে সমাসবদ্ধ পদ বেছে নিয়ে ব্যাববাক্যসহ সমাসের নাম লেখ :

. তোমার চিঠি হৃদয়তন্ত্রীকে কোমলভাবে স্পর্শ করেছে। 

উঃ হৃদয়তন্ত্রী = হৃদয় রূপ তন্ত্রী — রূপক কর্মধারয় সমাস।

. সম্পূর্ণ অজ্ঞাত কারণে জেলে আছি।

উঃ অজ্ঞাত = নয় জ্ঞাত — নঞ তৎপুরুষ সমাস। 

. তখন আমার নিঃসংশয় ধারণা জন্মে।

উঃ নিঃসংশয় = নিঃ (নেই) সংশয় যার/যাতে — বহুব্রীহি সমাস। 

. নূতন দণ্ডবিধির জন্যে পথ ছেড়ে দিতে হবে। 

উঃ দণ্ডবিধি = দণ্ডের নিমিত্ত বিধি — নিমিত্ত তৎপুরুষ সমাস।

. লোকমান্য তিলক কারাবাসকালে গীতার আলোচনা লেখেন।

উঃ লোকমান্য = লোক দ্বারা মান্য — করণ তৎপুরুষ সমাস

শব্দগুলির ব্যুৎপত্তি নির্ণয় কর : পাঠক, দর্শন, দৈহিক, আধ্যাত্মিক, ভণ্ডামি, সমৃদ্ধ, মহত্ত্ব, অভিজ্ঞতা।

পাঠক = √পঠ্+ অক্।

দর্শন = √দৃশ্ + অন্।

দৈহিক = দেহ + ষ্নিক্।

আধ্যাত্মিকঅধ্যাত্ম + ইক্ (য়িক)।

ভণ্ডামি = ভণ্ড + আমি।

সমৃদ্ধ = সম্ + ঋদ্ধ।

মহত্ত্ব = মহৎ + ত্ব। 

অভিজ্ঞতা = অভিজ্ঞ + তা।

নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন কর

. আমার পক্ষে এর উত্তর দেওয়া সুকঠিন। (নাসূচক বাক্যে)

উঃ আমার পক্ষে এর উত্তর দেওয়া মোটেই সহজ নয়। 

. সেই জন্যই সাধারণের কাছে মুখ দেখাতে সে লজ্জা পায়। (প্রশ্নবোধক বাক্যে) 

উঃ সেই জন্যই সাধারণের কাছে মুখ দেখাতে সে লজ্জা পায় না কি?

. লজ্জায় তারা বাড়িতে কোনো সংবাদ দেয়নি। (যৌগিক বাক্যে)

উঃ তারা লজ্জা পেয়েছে এবং বাড়িতে কোনো সংবাদ দেয়নি। 

. কতকগুলি অভাব আছে যা মানুষ ভিতর থেকে পূর্ণ করে তুলতে পারে। (সরল বাক্যে)

উঃ কতকগুলি অভাবকে মানুষ ভিতর থেকে পূর্ণ করে তুলতে পারে।

. বিনা দুঃখ কষ্টে যা লাভ করা যায় তার কোন মূল্য  আছে ? (নির্দেশক বাক্যে)

উঃ দুঃখ কষ্টেই লভ্যবস্তুর মূল্য নিরূপিত হয়।

Click Here To Download  The Pdf

অসুখী একজন|দশম শ্রেণী|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান| Osukhi Ekjon|Class 10| Question Solved

0

অসুখী একজন

দশম শ্রেণী|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান

১ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির কবি হলেন – 

(A) মানেজ

(B) রোকে ডালটন

(C) লেওজেল রুগমা

(D) পাবলো নেরুদা

২ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির তরজমা করেন – 

(A) মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

(B) নবারুণ ভট্টাচার্য 

(C) উৎপলকুমার বসু

(D) শুভাশিষ ঘোষ

৩ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটি অনুবাদকের কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ? 

(A) এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়

(B) পৃথিবীর শেষ কমিউনিস্ট

(C) বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে 

(D) ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক

৪ পাবলো নেরুদা নোবেল পুরস্কার পান—

(A) স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

(B) সোভিয়েত – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

(C) ইংরেজি – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

(D) জার্মান – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

৫ পাবলো নেরুদা ছিলেন –

(A) চিলিয়ান কবি রাজনীতিবিদ

(B) ইউরোপিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ

(C) রাশিয়ান কবি ও ভাস্কর্য শিল্পী

(D) জার্মান কবি ও চিত্রকর

৬ অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল – 

(A) দরজায় 

(B) ছাদে

(C) বারান্দায়

(D) রাস্তায়

৭ পাবলো নেরুদার প্রকৃত নাম হল –

(A) নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো 

(B) রিকার্দো বাসওআলতো

(C) রেয়েন্স রিকার্দো নেকতালি বাসোয়ালতো

(D) পল ভেরলেইন নেরুদা

৮  ‘ সে জানত না ‘ –’সে ‘ হল – 

(A) পরাজিত সৈনিক

(B) কবিতার কথক

(C) কবির ভালোবাসার জন

(D) কবির মা

৯  ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় একটা কী চলে গেল বলতে কবি কোন্ জন্তুর উল্লেখ করেছেন ? 

(A) মানুষ

(B) কুকুর 

(C) হরিণ ।

(D) বিড়াল

১০ ‘ সে জানত না’— সে কী জানত না ? 

(A) কথক ফিরে আসবে

(B) কথক আর কখনও ফিরে আসবে না 

(C) কথক কখন আসবে

(D) কথক শীঘ্রই ফিরে আসবে

১১ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি ক – টি সপ্তাহ কেটে যাওয়ার উল্লেখ করেছেন ? 

(A) একটি

(B) চারটি

(C) দুটি

(D) তিনটি

১২ ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কে হেঁটে চলে গেল ? 

(A) গল্পের কথক

(B) একজন সৈনিক

(C) একটি কুকুর

(D) গির্জার এক নান

১৩ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি পরিত্যক্ত রাস্তায় কী জন্মানোর কথা বলেছেন ?

(A) ঘাস 

(B) তরুলতা

(C) গাছ

(D) শস্য

১৪ ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় একটার – পর – একটা বছর কীভাবে নেমে এল বলে কবি মনে করেছেন ?

(A) পাথরের মতো 

(B) জলের মতো

(C) ফুলের মতো

(D) গানের মতো

১৫ বৃষ্টি কী ধুয়ে দিয়েছিল ?

(A) রাস্তার ধুলো

(B) রক্তের দাগ

(C) কথকের পায়ের দাগ

(D) কাঠকয়লার দাগ

১৬ ‘ তারপর যুদ্ধ এল –

(A) রক্তের সমুদ্রের মতো । ‘

(B) আগ্নেয়পাহাড়ের মতো

(C) পাহাড়ের আগুনের মতো

(D) রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো

১৭ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শিশু আর বাড়িরা –

(A) খুন হল 

(B) হারিয়ে গেল

(C) বেঁচে রইল

(D) জেগে রইল ।

১৮ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় সব ধ্বংস হলেও অপেক্ষমান সেই মেয়েটির কী হল না ?

(A) অসুখ হল না

(B) মৃত্যু হল না

(C) খুন হল না

(D) জ্বলে গেল না

১৯  ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কীসে সমস্ত সমতল ধ্বংস হল ?

(A) ভূমিকম্পে

(B) ধসে

(C) আগুনে

(D) বন্যায়

২০ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় দেবতাদের চেহারা ছিল – 

(A) শান্তহলুদ 

(B) লাল – নীল

(C) অশান্ত – নীল

(D) ধীর – হলুদ

২১ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শান্ত – হলুদ দেবতারা কত বছর ধ্যানে ডুবে ছিল ?

(A) একশো

(B) দু – হাজার

(C) পাঁচশো

(D) হাজার

২২ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শান্ত – হলুদ দেবতারা কীভাবে মন্দির থেকে উলটে পড়ল ?

(A) টুকরো টুকরো হয়ে 

(B) গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে

(C) অর্ধেক হয়ে

(D) ভেঙে ভেঙে

২৩ তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না । কারা স্বপ্ন দেখতে পারল না ?

(A) দেবতারা 

(B) শয়তানরা

(C) মানুষেরা

(D) যক্ষরা

২৪  ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কে মিষ্টি বাড়ির বারান্দার ঝুলন্ত বিছানায় ঘুমিয়েছিল ?

(A) মেয়েটি 

(B) বন্ধুটি

(C) কবি

(D) ভাইটি

২৫ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির ঝুলন্ত বিছানার ধারের গাছটি ছিল – 

(A) গোলাপি 

(B) নীল

(C) হলুদ

(D) সবুজ

২৬ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় ছড়ানো করতলের মতো পাতা ছিল— 

(A) চিমনির

(B) মশারির

(C) বিছানার

(D) বসার ঘরের

২৭ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যে বাদ্যযন্ত্রটির উল্লেখ আছে সেটি হল-

(A) বীণা

(B) জলতরঙ্গ 

(C) সেতার

(D) বাঁশি

২৮ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির সেই মিষ্টি বাড়ির জলতরঙ্গটি কোন্ সময়ের ? 

(A) প্রাচীন কালের

(B) আধুনিক সময়ের

(C) বিংশ শতকের

(D) মধ্যযুগীয় সময়ের

২৯ ‘ সব _____ হয়ে গেল , জ্বলে গেল আগুনে । ‘

(A) চূর্ণ 

(B) বিচূর্ণ

(C) শক্ত

(D) চুরমার

৩০ ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় যেখানে শহর ছিল সেখানে ছড়িয়ে রইল – 

(A) কাঠকয়লা 

(B) সাপ

(C) কয়লা

(D) আগুন

৩১ ‘ দোমড়ানো লোহা , মৃত মূর্তির বীভৎস / মাথা

(A) রুপোর

(B) সোনার

(C) মাটির

(D) পাথরের

৩২ ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শহর ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে রক্তের দাগের রং হয়েছিল— 

(A) কালো 

(B) হলুদ

(C) লাল

(D) সবুজ

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমি তাকে ছেড়ে দিলাম — ‘ আমিকে

উত্তরঃ: নবারুণ ভট্টাচার্য অনূদিত পাবলো নেরুদা রচিত ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় ‘ আমি ‘ বলতে স্বয়ং কবি নিজেকে তথা কবিতার কথককে বুঝিয়েছেন । 

২ কবির অপেক্ষায় কে দাঁড়িয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি যেদিন নিজ বাসভূমি ছেড়ে চলে যান , সেদিন তাঁর প্রিয় নারী দরজায় অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিল । 

৩ অসুখী একজনকবিতায় কথক অপেক্ষারতাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেলেন

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কথক দরজায় অপেক্ষারতা প্রিয়জনকে দাঁড় করিয়ে রেখে বৃহত্তর স্বার্থে দূর থেকে দূরে কোনো স্থানে চলে গেলেন ।

অসুখী একজনকবিতায় কবির / কথকের চলে যাওয়া সত্ত্বেও সমাজজীবনের নিজের গতিতে চলার কী কী অনুষঙ্গ কবিতায় উল্লিখিত আছে ?

উত্তরঃ: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কথকের চলে যাওয়া সত্ত্বেও সমাজজীবনের আপন গতিতে বয়ে চলার অনুষঙ্গগুলি হল — ‘ একটি কুকুর চলে গেল , হেঁটে গেল গির্জার এক নান ‘ ।

অসুখী একজনকবিতায় কবির পায়ের দাগ কীসে ধুয়ে গিয়েছিল ?

উত্তরঃ: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কবির পায়ের দাগ বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল । স্মৃতির মলিনতা অর্থে উপমাটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

 ৬নেমে এল তার মাথার ওপর” কার মাথার ওপর কী নেমে আসার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কথকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা তার প্রিয়তমার মাথার ওপর পাথরের মতো ভারী একটার পর একটা বছর নেমে এল । 

অসুখী একজনকবিতায় কবিপাথরের মতোবলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদা তাঁর ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কথকের জন্য তাঁর প্রেমিকার অন্তহীন অপেক্ষা আর দুঃসহ বেদনাকে পাথরের গুরুভারের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

অসুখী একজনকবিতায় উল্লিখিত যুদ্ধে অপেক্ষাতুরা মেয়েটির কী হল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় উল্লিখিত ভয়াবহ যুদ্ধের বিধ্বংসী মত্ততা  ে অতিক্রম করে শুধু আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে রইল , সেই অপেক্ষাতুরা মেয়েটি ।

অসুখী একজনকবিতায় যুদ্ধে সমতলের কী অবস্থা হয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক ছায়া সমস্ত সমতলে । আগুনের লেলিহান শিখার মতো ছড়িয়ে পড়ে সব কিছুকে জ্বালিয়ে – পুড়িয়ে ছারখার করল । 

১০অসুখী একজন কবিতায় কবি দেবতাদের চেহারার কী বর্ণনা দিয়েছেন ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি ‘ শান্ত – হলুদ ‘ দেবতাদের চেহারার ছবি এঁকেছেন ।

১১অসুখী একজন কবিতায় দেবতারা হাজার বছর ধরে কী করছিল বলে উল্লেখ পাওয়া যায় ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শাস্ত – হলুদ দেবতারা হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে ছিল বলে কবি উল্লেখ করেছেন ।

১২অসুখী একজন কবিতায় দেবতারা কোথা থেকে টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের অভিঘাতে হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে থাকা দেবতারা মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়েছিল ।

১৩তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না।– ‘ তারাবলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ: ‘ তারা ‘ বলতে শান্ত – হলুদ দেবতাদের কথা বলা হয়েছে ।

১৪অসুখী একজনকবিতায় কবির বাড়িটি কেমন ছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির বাড়িটি ছিল মধুর স্মৃতি ও স্বপ্নবিজড়িত । অর্থাৎ বাড়িটি সম্পর্কে এখানে শৈশব – কৈশোরের আকর্ষণজনিত আবেগ ও আবেশ প্রকাশিত হয়েছে ।

১৫অসুখী একজনকবিতায় কবির ঝুলন্ত বিছানাটি কোথায় অবস্থিত ছিল

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির মধুর স্মৃতিবিজড়িত মিষ্টি বাড়িতে ঝুলন্ত বিছানাটি বারান্দায় অবস্থিত ছিল ।

 ১৬অসুখী একজন কবিতায় যুদ্ধে কবির বাড়ির অবস্থা কী হয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় , যুদ্ধে কবির স্বপ্ন ও স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে , গুঁড়িয়ে , আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল ।

 ১৭অসুখী একজনকবিতায় যেখানে শহর ছিল সেখানে যুদ্ধের ফলে কী কী ছড়িয়ে রইল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যেখানে শহর ছিল , সেখানে যুদ্ধের পর ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর পোড়া শুকনো রক্তের কালো দাগ ।

১৮আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় / – ‘ আরশব্দটি ব্যবহারের কারণ কী ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধ – দাঙ্গা – হিংসার আগুন পেরিয়ে কথকের প্রিয়তমার ভালোবাসা ও চিরন্তন অপেক্ষাকে বোঝাতেই শেষ পঙ্ক্তিতে ‘ আর ‘ শব্দটির ব্যবহার হয়েছে । 

১৯রক্তের একটা কালো দাগ কোথায় রক্তের একটা কালো দাগ দেখা গিয়েছিল

উত্তরঃ: যুদ্ধের ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথার সঙ্গে রক্তের কালো দাগ দেখা গিয়েছিল । 

২০সমস্ত সমতলে ধরে গেল আগুনকেন এমন হয়েছিল ?

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা অনুসারে আগ্নেয়পাহাড়ের মতো ভয়াবহ যুদ্ধ আসার ফলে সমস্ত সমতলে আগুন ধরে গিয়েছিল ।

 ২১অসুখী একজনকবিতাটির অনুবাদক কে

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির অনুবাদক নবারুণ ভট্টাচার্য ।

২২অসুখী একজনকবিতায় যুদ্ধের ছবিটি কীভাবে ফুটে উঠেছে

উত্তরঃ: কবি পাবলো নেরুদা ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের ভয়াবহতাকে রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

আমি তাকে ছেড়ে দিলাম’- কবি কাকে ছেড়ে দিলেন তাকে তিনি কীভাবে রেখে এসেছিলেন ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কথক তাঁর প্রিয় নারীকে অপেক্ষায় রেখে নিজ বাসভূমি ছেড়ে দূরে চলে গিয়েছিলেন । 

  স্বদেশ ছেড়ে দূর থেকে দূরতর কোনো স্থানে চলে যাওয়ার সময় তিনি দরজায় তাঁর অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে যান কোনো এক প্রিয়জনকে । যদিও সে জানত না যে , কবি আর কখনও ফিরে আসবে না । এইভাবেই কবি এক চিরকালীন বিদায় মুহূর্তের ছবি এঁকেছেন ।

বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ / ঘাস জন্মালো রাস্তায়’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো

উত্তরঃ: উদ্ধৃতিটি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতা থেকে গৃহীত । কথক তাঁর প্রিয়তমাকে অপেক্ষমান রেখে জীবন ও জীবিকার তাগিদে বহুদুরে পাড়ি দেন । থমকে যায় মেয়েটির জীবন কিন্তু সময় থেমে থাকে না । তাই কথকের চলে যাওয়াতে জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় না । সপ্তাহ – বছর কেটে যায় । প্রাকৃতিক নিয়মেই কথকের চলার পথের পদচিহ্ন মুছে যায় । তাতে ঘাস জন্মায় । কিন্তু কবির চলে যাওয়ার মুহূর্তটি তার প্রিয়তমার হৃদয়ে অন্তহীন অপেক্ষার মুহূর্ত হয়ে রয়ে যায় । 

৩“পাথরের মতো পর পর”, বছরগুলো বছরগুলোকে পাথরের মতো বলা হয়েছে কেন ?

উত্তরঃ: জীবন ও জীবিকার জন্য বাসভূমি ছেড়ে দূরে চলে যাওয়া তাঁর মানুষটি যে ফিরে আসবেন না এ কথা তার প্রেমিকার অজানা ছিল । কিন্তু জীবন এতে থেমে থাকেনি । বৃষ্টিতে কবির পায়ের দাগ মুছে তাতে ঘাস জন্মায় । নিরন্তর অপেক্ষা চলতেই থাকে । দীর্ঘ প্রতীক্ষারতা নারীর জীবনে তার প্রিয়তমের অনুপস্থিতির বছরগুলো যেন পাথরের বোঝা হয়ে তার মাথার ওপর নেমে আসে । এখানে ‘ পর পর ‘ বলতে বিচ্ছেদ বেদনার গভীরতা বোঝানো হয়েছে ।

৪ যুদ্ধকেরক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়বলা হয়েছে কেনো

উত্তরঃ: উদ্ধৃত প্রসঙ্গটি কবি পাবলো নেরুদা রচিত ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে গৃহীত । 

 কবিতায় যুদ্ধকে কবি আগ্নেয়পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করেছে । আগ্নেয়পাহাড় চারপাশে ছড়িয়ে দেয় জ্বলন্ত লাভা । আর সেই আগুনে ছাই হয় জীবনের যাবতীয় চিহ্ন । ঠিক তেমনই যুদ্ধের ফলে মানুষের মনে জমে থাকা হিংসা – দ্বেষ আর ঘৃণা লাভার মতো ছিটকে ওঠে । অপমৃত্যু ঘটে মানবতার । এই মৃত্যুময় ধ্বংসলীলার নারকীয় রূপটিকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি যুদ্ধকে , রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড় ‘ বলেছেন ।

সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না ।“ কোন মেয়েটির কেন মৃত্যু হল না ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতার কথকের জন্য অপেক্ষারতা যে মেয়েটির উল্লেখ পাওয়া যায় , তার কথা বলা হয়েছে । মেয়েটি জানত না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । জীবন আপন ছন্দে চলল , ক্রমে সপ্তাহ – বছর অতিক্রান্ত হল । কবির পদচিহ্ন বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল , তবু অপেক্ষা চলল । এরপর যুদ্ধের গ্রাসে নগর , দেবালয় চূর্ণবিচূর্ণ হল এবং মৃত্যু হল শিশুসহ অজস্র মানুষের । শুধু অপেক্ষমান মেয়েটির মৃত্যু হল না কারণ ভালোবাসা অমর , চিরন্তন ও শাশ্বত ।

শান্ত হলুদ দেবতারা’- দেবতাদেরশান্ত হলুদ বলা হয়েছে কেন ? তাদের কী পরিণতি হয়েছিল

উত্তরঃ: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি চলে যাওয়ার পর একসময় যুদ্ধ বাধল । সেই যুদ্ধের বীভৎসতায় নগরসভ্যতা , কবির স্বপ্নের বাড়ি – ঘর সব চূর্ণ হয়ে গেল , এমনকি ধ্বংস হল দেবতাদের মন্দিরও । হাজার হাজার বছরের যে – দেবতারা মানুষের মনে বিশ্বাস জাগিয়ে এসেছেন , যুদ্ধ তাদেরও আসনচ্যুত করল । প্রাচীন দেবতাদের নিষ্ক্রিয়তা ও জীর্ণতাকে বোঝাতে হলুদ ও শান্ত বলা হয়েছে । যুদ্ধের আগুনে নগর পুড়লে দেবালয়ও বাদ যায় না । মানুষের মনে দেবতারা যে – বিশ্বাস বোধের জন্ম দিয়েছিল , তা ধ্বংস হল । 

৭তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না ’- উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো  

উত্তরঃ: উদ্ধৃত অংশটি পাবলো নেরুদার কবিতা ‘ অসুখী একজন ‘ থেকে গৃহীত । 

 এখানে কবি বিনাশ ও ধ্বংসের কলরোলে দেবতাদের অসারতার উল্লেখ করেছেন । মানবতার অপচয় প্রাণহানি কিংবা চূড়ান্ত বীভৎসতার সময় কোনো দৈব – মাহাত্ম্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না । উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য মানুষের মতোই একইরকমভাবে যুদ্ধ -তাণ্ডবের ভয়াবহতায় তারাও নিরাশ্রয় , অস্তিত্বহীন এবং চূর্ণবিচূর্ণ হয় । তাই এককথায় দৈব ক্ষমতার ফানুস চুরমার হয়ে যাওয়ায় তাদের যেন মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর ক্ষমতা লোপ পায় । আলোচ্য অংশে কবির এই ভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে ।

৮ প্রাচীন জলতরঙ্গ / সব চূর্ণ হয়ে গেল , ‘ — উদ্ধৃতাংশে কবি কী বুঝিয়েছেন

উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশে কবি বুঝিয়েছেন আগ্নেয়পাহাড়ের মতো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের লেলিহান আগুন সমতলকেও গ্রাস করেছিল । কবির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত মিষ্টি বাড়িটিও যুদ্ধের নির্মম আঘাতে ধ্বংস হয়েছিল । তার বারান্দার ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , ছড়ানো করতলের মতো পাতা , চিমনি ও প্রিয় প্রাচীন জলতরঙ্গ এইসব চূর্ণ হল , সম্পূর্ণ ভস্ম হল আগুনে । অর্থাৎ কবির আশ্রয় ও অস্তিত্বের একমাত্র প্রতীকচিহ্নটিও যুদ্ধের নিষ্ঠুর ধ্বংসলীলায় নিশ্চিহ্ন হয়েছিল । 

.‘ সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা’— বলতে কবি প্রশ্নোদৃত অংশে কৰি বুঝিয়েছেন কী বুঝিয়েছেন ?

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতাটিতে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে কবি প্রিয়তমা , ঘরবাড়ি , এমনকি তাঁর প্রিয় শহরও ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন । এরপরে একদিন আসে বীভৎস যুদ্ধ । যার করাল গ্রাসে কবির ঘরবাড়ি , দেবালয় সমস্ত কিছু চূর্ণ হয়ে আগুনে জ্বলে যায় । শহরটিও বাদ যায় না । এক সময়ের সুন্দর শহরে ছড়িয়ে থাকে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের দাগ । আসলে শহরের বিধ্বংসী রূপটি তুলে ধরতেই উদ্ধৃতিটি ব্যবহৃত হয়েছে

১০আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় মেয়েটি কে ? সে অপেক্ষা করে কেন

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় ‘ সেই মেয়েটি ’ হল কথকের প্রিয়তমা , যাকে রেখে কবি বহুদূরে চলে গিয়েছিলেন । কবি যে আর ফিরে আসবেন না এ কথা তার প্রিয়তমা জানত না । তার অপেক্ষার বোঝা গভীর থেকে গভীরতর হলেও সে ভেঙে পড়েনি । এই মেয়েটিকে ধ্বংস যেন স্পর্শ করতে পারে না ; মৃত্যু – যুদ্ধ – হিংসা , দাঙ্গার স্পর্শ পেরিয়েও তাই সে অমলিন থাকে । কারণ ভালোবাসার কখনও মৃত্যু হয় না । সেসময় থেকে সময়ান্তরে অপেক্ষা করে বয়ে চলে নিজস্ব ধারায় ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

. ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়।অপেক্ষমান এই নারার মধ্যে দিয়ে কবি মানবীয় ভালোবাসার যেঅনির্বাণ রূপটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন , তা পাঠ্য কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো  

অথবা , যুদ্ধের নেতিবাচক ভাবের পাশাপাশি যেমানবিক আবেদনঅসুখী একজনকবিতায় প্রকাশিত হয়েছে আলোচনা করো  

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদা তাঁর ‘ অসুখী একজন ’ কবিতার অপেক্ষমান নারীর মধ্যে ভালোবাসার অনির্বাণ রূপটি ফুটিয়ে তুলেছেন । কথক তার প্রিয় নারীকে রেখে চলে যান বহুদূরে । সে জানত না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । সময় চলমান , জীবনও তার সঙ্গে চলমান । সপ্তাহ – বছর কেটে যায় । কথকের পদচিহ্ন ধুয়ে গিয়ে তার ওপর ঘাস জন্মায় । তবুও সে নারীর অপেক্ষা থামে না । এইভাবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে মুহূর্তগুলো একটার – পর – একটা পাথরের মতো ভারী হয়ে নেমে আসে মেয়েটির মাথার ওপর । 

 এরপর যুদ্ধ ও যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়ল শহরে । সে  আগুনের করাল গ্রাসের হাত থেকে বাদ গেল না শিশু কিংবা দেবতারাও । শান্ত হলুদ দেবতারা তাদের মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে । কবির স্বপ্নের বাড়ি – ঘর সব চূর্ণ হয়ে যায় , পুড়ে যায় আগুনে । যেখানে শহর ছিল সেখানে চারদিকে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । কিন্তু এতসবের মধ্যেও কবির প্রিয়তমা বেঁচে রইল কারণ প্রেম শাশ্বত , তার মৃত্যু নেই । এই প্রেম মানুষকে মরতে মরতে বাঁচতে শেখায় । এই ধ্বংসের মধ্যেও বেঁচে থাকে মেয়েটির অনির্বাণ ভালোবাসা , বেঁচে থাকে ভালোবাসার মানুষের জন্য তার প্রতীক্ষা ।

  1. তারপর যুদ্ধ এল ‘ — পাঠ্য কবিতায় কবি যুদ্ধের যেআশ্চর্য করুণ মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন , তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো

অথবা , শিশু আর বাড়িরা খুন হলো ’— এই আশ্চর্যসংহত ছবিটির মধ্যে যুদ্ধের পৈশাচিক বর্বরতা কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা কবিতা অবলম্বনে লেখো  

উত্তরঃ: চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা জীবনযুদ্ধের একজন লড়াকু সৈনিক । চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুই বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি । তাই পাঠ্য কবিতায় তিনি যুদ্ধের যে – করুণ ও মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন তা অত্যন্ত বাস্তবোচিত । ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটি আসলে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এক শাশ্বত ভালোবাসার গল্প । কবি যুদ্ধের বীভৎসতার মাঝে প্রেম যে অনির্বাণ তা দেখাতে গিয়ে খণ্ড খণ্ড যুদ্ধের চিত্র তুলে ধরেছেন । কবি তাঁর প্রিয়তমাকে অপেক্ষায় রেখে দূরে চলে যাওয়ার পর একদিন ভয়াবহ বীভৎসতা নিয়ে যুদ্ধ নেমে এল । মানুষ আশ্রয়হীন হল । নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পেল না শিশুরাও । দাবানলের মতো যুদ্ধের আগুন সমতলে ছড়িয়ে পড়ল । ধ্বংস হল দেবালয় আর তার ভেতরের দেবতারা । তাদের দেবত্ব নষ্ট হল । মানুষকে তারা স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হল । কবির সেই মিষ্টি বাড়ির ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , প্রাচীন জলতরঙ্গ সব চূর্ণ ও ভস্ম হল যুদ্ধের আগুনে । ঠিক একইভাবে শহরটাও পুড়ে গেল । বীভৎসতার চিহ্ন নিয়ে ছড়িয়ে – ছিটিয়ে পড়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । শুধু সেই ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকল মেয়েটির অপেক্ষা ও অবিচল ভালোবাসা ।

. পাঠ্য কবিতাটি অতৃপ্ত মানবহৃদয়ের একান্ত আতিরঅসুখী একজন কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো  

অথবা , ‘ অসুখী একজন কবিতায় বিশ্বশান্তির বার্তা নিহিত —– আলোচনা করো  

অথবা , ‘ অসুখী একজনকবিতাটিকে যুদ্ধবিরোধী কবিতা বলা যায় কিনাবিশ্লেষণ করো  

উত্তরঃ: পাবলো নেরুদার কবিতা ‘ অসুখী একজন’— এই বাঞ্ছনাময় নামকরণ থেকেই বোঝা যায় যে , কবিতাটি অতৃপ্ত কোনো বাসনার প্রতিচ্ছবি । অনেক সময় কবি – সাহিত্যিকের ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিচ্ছবি যা সর্বজনের ভাবনার সঙ্গে মিলে যায় তা সাহিত্যে প্রতিফলিত হয় । আমাদের পাঠ্য কবিতাটিতেও তা ঘটেছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । 

 কবি চরম অতৃপ্তি নিয়ে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন । কিন্তু তাঁর প্রিয় নারী তাঁর অপেক্ষায় থাকে , কেন – না সে জানে না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । কবিতার শেষ পর্যন্ত এই অপেক্ষাকেই আমরা দেখেছি । সময় অতিক্রান্ত হয় , আবছা হয় স্মৃতি , অপেক্ষার বছরগুলো ভারী হয় । প্রাণঘাতী যুদ্ধের বীভৎসতা তাকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে । দেবালয় , শহর সব কিছু ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও অতৃপ্ত হৃদয়ে সেই মেয়েটি অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে । অন্যদিকে কবিও অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে ফিরে আসতে চান তাঁর প্রতীক্ষমান ভালোবাসার কাছে । সব কিছু ধ্বংসের মাঝেও কবির হৃদয়ে অপেক্ষারতা নারীটির মৃত্যু নেই । চিরায়ত অতৃপ্ত মানবাৰ্তিই এই নারী । কবির অতৃপ্ত মন তার কাছে বার বার ফিরে যেতে চায় বলেই তিনি বলে ওঠেন , ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় ‘ । স্পষ্টতই কবিতাটিতে কবি যুদ্ধবিরোধী মনোভাব নিয়ে বিশ্বশান্তির বার্তা প্রেরণ করেছেন পাঠকের কাছে ।

Click Here To Download The Pdf

জ্ঞানচক্ষু| দশম শ্রেণী |প্রশ্ন- উত্তর সমাধান|Gyanchokkhu|Class 10| Question-Answer Solved

1

জ্ঞানচক্ষু

আশাপূর্ণা দেবী

বহুবিকল্পীয় প্রশ্ন:প্রতিটি প্রশ্নের মান

. কাকে দেখে তপনের চোখ মার্বেলের মতন হয়ে গেল ?—

(ক) দিদিকে (নতুন মেসোমশাইকে (গ) বাবাকে (ঘ) নতুন পিসেমশাইকে

. নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন() লেখক (খ) গায়ক (গ) বই প্রকাশক (ঘ) চিকিৎসক

. “ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয়।”—ছোটোমাসি ধাবিত হয়

() ছোটোমেসোর দিকে (খ) রান্নাঘরের দিকে (গ) তপনের দিকে (ঘ) ছাদের দিকে

৪. তপনের লেখা গল্প তার মেসোমশাইকে কে দিয়েছিল ?—

(ক) মা (খ) বড়োমাসি () ছোটোমাসি (ঘ) বাবা

. “তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে

(ক)  আনন্দ পায় (খ) উল্লসিত হয় (গ) খুশি হয় () পুলকিত হয়।

. “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।”—এখানেজহুরিবলা হয়েছে

(ক) তপনের মাসিকে (খ) তপনের বাবাকে (গ) তপনের মাকে () তপনের নতুন মেসোকে

. “মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা”–“উপযুক্ত কাজটা হল

() তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দেওয়া

(খ) তপনের গল্পটা কারেকশান করে দেওয়া

(গ) তপনকে লেখায় উৎসাহ দেওয়া

(ঘ) তপনকে গল্প লেখার নিয়মকানুন শিখিয়ে দেওয়া।

. তপনের মেসোমশাই কোন্ পত্রিকার সম্পাদককে চিনতেন? —

(ক) শুকতারা (খ) আনন্দমেলা () সন্ধ্যাতারা (ঘ) দেশ।

. যে পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথা হয়েছিল

(ক) শুকতারা () সন্ধ্যাতারা গ) একতারা (ঘ) সাহিত্যধারা

১০. ছোটোমেসোমশাই তপনের গল্প হাতে পেয়ে কী বলেছিলেন?—

(ক) আর-একটা গল্প লেখার কথা (খ) আরও দুটো গল্প দেওয়ার কথা

() এই গল্পটাই একটু কারেকশান করার কথা (ঘ) কোনোটাই নয়

১১. ছোটোমেসো শ্বশুরবাড়িতে কিছুদিন ছিলেন, কারণ

(ক) ছোটোমাসির শরীর ভালো ছিল না () তার কলেজের ছুটি চলছিল

(গ) কিছু জরুরি কাজ ছিল তাঁর (ঘ) কোনোটাই নয়

১২. লেখার আসল মূল্য বুঝবে

(ক) ছোটোমাসি () ছোটোমেসো (গ) বড়োমেসো (ঘ) তপনের মা

১৩. “তপনের হাত আছে”—কথাটির অর্থ হল

(ক) হস্তক্ষেপ () ভাষার দখল (গ) মারামারি (ঘ) জবরদস্তি

১৪. তপনের মেসোমশাই কোন্ পত্রিকায় তপনের লেখা ছাপানোর কথা বলেছিলেন?—

ক) ধ্রুবতারা (খ) শুকতারা () সন্ধ্যাতারা (ঘ) রংমশাল

১৫. তপনের লেখা গল্পটি নিয়ে কে চলে গিয়েছিলেন?—

() তপনের মেসোমশাই (খ) তপনের ছোটোমাসি

(গ) তপনের মা                  (ঘ) তপনের বাবা

১৬. তপন বিয়েবাড়িতে কী নিয়ে এসেছিল?—

ক) ব্যাট ও বল (খ) গল্পের বই গ) গানের খাতা () হোমটাস্কের খাতা

১৭. তপন তার গল্পটা লিখেছিল

() দুপুরবেলা (খ) সন্ধেবেলা গ) বিকেলবেলা (ঘ) গভীর রাতে

১৮. তপনের চিরকালের বন্ধু ছিল?—

(ক) ছোটোমেসো (খ) তপনের মা (গ) ছোটোমামা () ছোটোমাসি

১৯. তপনের ছোটোমাসি তার থেকে কত বছরের বড়ো ছিলেন ?—

() আট (খ) ছয় (গ) সাত (ঘ) দশ

২০. “ছুটি ফুরিয়ে এসেছে।”—

(ক) পুজোর () গরমের (গ) বড়দিনের (ঘ) পরীক্ষা প্রস্তুতির ছুটিটি ছিল ।

২১. বাড়িতে তপনের নাম হয়েছিল

(ক) গল্পকার, লেখক (খ) কবি, লেখক

() কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী (ঘ) কথাশিল্পী, গল্পকার ।

২২. তপন তার লেখা গল্পটা প্রথম শুনিয়েছিল

(ক) বন্ধুদের (খ) তার মাকে (গ) ছোটোমেসোকে () ছোটোমাসিকে

২৩. মামার বাড়িতে থেকে তপন প্রথম গল্পটি লিখেছিল

() দুপুরবেলা       (খ) সকালবেলা গ) বিকেলবেলা (ঘ) রাত্রিবেলা

২৪. তপন গল্প লেখার জন্য কী নিয়ে দুপুরবেলা তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গেল?—

(ক) খাতা ও গল্পের বই () একটা খাতা পেন

(গ) একটা খাতা (ঘ) পেন ও গল্পের বই

২৫. “গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের”—এর কারণ হল

(ক) অজানা আতঙ্ক             () স্বরচিত গল্প পাঠের অনুভূতি

গ) ভৌতিক গল্প পাঠের ফলশ্রুতি   (ঘ) নতুন মেসোর ব্যবহার

২৬. ঠাট্টাতামাশার মধ্যে তপন যে কটি গল্প লিখেছে

(ক) একটি           () দুটিতিনটি                (গ) তিনটি-চারটি                              (ঘ) চার-পাঁচটি

২৭. “যেন নেশায় পেয়েছে”—যে নেশার কথা বলা হয়েছে

(ক) গল্প ছাপানোর নেশা (খ) মেসোর সমকক্ষ হওয়ার নেশা

() গল্প লেখার নেশা    (ঘ) বাড়িতে সম্মান বাড়ানোর নেশা

২৮. কোন্ পত্রিকায় তপনের লেখা ছাপা হয়েছিল?—

ক) ধ্রুবতারা    (খ) ভারতী               (গ) সাহিত্যচর্চা  () সন্ধ্যাতারা 

২৯. তপনের লেখা গল্পটার নাম কী ছিল?  —

(ক) ছুটি                খে) অবসর          ) প্রথম দিন     ঘ) কোনোটাই নয়

৩০. তপনের লেখা গল্প সংশোধন করে দিয়েছিল

) তপনের ছোটোমেসো         (খ) তপনের ছোটোমাসি

(গ) তপনের মা                                  (ঘ) তপনের এক বন্ধু

৩১. ছোটোমেসো কী নিয়ে তপনদের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন?—

(ক) গল্পের বই  () সন্ধ্যাতারা পত্রিকা

(গ) নতুন জামা (ঘ) ভারতী পত্রিকা

৩২. “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।”—তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে

(ক) নতুন মেসোকে দেখে              (খ) তার গল্পটা ছাপা হয়েছে দেখে

() মেসোর হাতে সন্ধ্যাতারা পত্রিকা দেখে (ঘ) নিজের নাম ছাপার অক্ষরে দেখে।

৩৩. সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সূচিপত্রে তপনের কী নাম লেখা ছিল? —

() শ্ৰীতপন কুমার রায়             (খ) তপন রায়

(গ) তপন                                                             (ঘ) কোনোটাই নয়

৩৪. তপনকে তার ছাপার আকারে লেখা গল্পটা পড়ে শোনাতে বলেছিলেন

() তপনের মা                               (খ) তপনের বাবা

(গ) তপনের দিদা              (ঘ) তপনের ছোটোমাসি

৩৫. তপনের পুরো নাম ছিল

(ক) তপন কুমার সেন     (খ) শ্ৰীতপন কুমার বিশ্বাস

গ) তপনকান্তি পাল          () শ্ৰীতপনকুমার রায়।

৩৬. ‘প্রথম দিনগল্পটির লেখক

(ক) তপন রায়    () শ্ৰীতপন কুমার রায়

গ) তপনচন্দ্র রায়               (ঘ) তপনপ্রসাদ রায়।

৩৭. “ক্রমশ কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে।”—কথাটা হল

ক) গল্প লেখার কথা                  খে) গল্প কারেকশানের কথা

(গ) তপনের দ্বিতীয় গল্পের কথা   (ঘ) তপনের গল্প ছাপা হওয়ার কথা।

৩৮. “আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম”-উক্তিটির বক্তা

(ক) ছোটোমাসি (খ) তপনের বন্ধুরা

() মেজোকাকু (ঘ) মেসো।

৩৯. “এর মধ্যে তপন কোথা ?”—তপন যার মধ্যে নিজেকে দেখতে পায়নি, সেটা হল

(ক) বাড়ির বড়োদের আলোচনার মধ্যে

(খ) সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হওয়া গল্পলেখকদের মধ্যে

(গ) মেসোর ভালোবাসার মধ্যে

() তার পাঠানো গল্পের মধ্যে।

৪০. “তপন আর পড়তে পারে না। কারণ

) তপনের গল্পটা আগাগোড়াই কারেকশান করা হয়েছে

(খ) সকলের প্রশংসায় সে কাবু হয়ে গেছে

(গ)বড়োদের সামনে পড়তে সে লজ্জা পাচ্ছে

(ঘ) নতুন মেসোকে দেখে সে ঘাবড়ে গেছে।

৪১. “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ?”—অলৌকিক ঘটনাটি হল

(ক) এক লেখকের সঙ্গে তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়েছে

খে) বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী

() তপনের লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হয়েছে

(ঘ) তপন দেখল ছাপানো গল্পের একটি লাইনও তার নিজের নয়

৪২ আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিনদিনটিকে সবচেয়ে দুঃখের দিন মনে হয়েছিল , সেটি ছিল

(A) ছোটোমাসির বিয়ের দিন

(B) মামাবাড়িতে আসার দিন

(C) নিজের গল্প ছাপা অক্ষরে দেখার দিন 

(D) মামাবাড়ি থেকে চলে যাওয়ার দিন

৪৩ছাপা হয় হোক , না হয় না হোক ’— এর মধ্যে তপনের যেমানসিকতা প্রকাশ পায় , তা হল 

(A) মরিয়া

(B) বিরক্তি

(C) দুঃখ

(D) অভিমান 

৪৪ তপনকে যেন আর কখনো শুনতে না হয় যা নাশোনার কথা বলা হয়েছে , তা হল – 

(A) সে গল্প লিখতে পারে না

(B) ছোটোমেসো গল্প লিখে দিয়েছেন

(C) ছোটোমাসি সুপারিশ করেছেন

(D) অন্য কেউ তার গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন

৪৫তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! ‘ — যে বিষয়ে কথা বলা হয়েছে , তা হল— (A) নিজের গল্প ছাপা না – হওয়া

(B) নিজের গল্পে অন্যের  লেখা লাইন পড়ে শোনানো

(C) বাড়ির লোকেদের ঠাট্টাতামাশা

(D) নিজের গল্প লিখতে না – পারা

৪৬ তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা , কিন্তু যখন দেখে মেসোর মুখে করুণার ছাপ , তখন আহ্লাদে _____ হয়ে যায়  

(A) আনন্দিত

(B) দুঃখিত

(C) কাঁদো কাঁদো 

(D) বিহ্বল

 অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন : প্রতিটি প্রশ্নের মান

রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই কথাটির অর্থ কী ?

উঃকেবলমাত্র গুণী ব্যক্তিই অপরের গুণের কদর করতে পারে । তাই তপনের লেখা গল্পের প্রকৃত সমঝদার যদি কেউ থাকেন তবে তিনি তার লেখক মেসোমশাই ।

তপনের গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই কী বলেন

উঃ তপনের লেখা গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন , গল্পটা ভালোই হয়েছে , একটু কারেকশন করে দিলে সেটা ছাপানোও যেতে পারে । 

বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা কোন্ কথাটা

উঃ লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলেছে , এই কথাটা বিকেলে চায়ের টেবিলে উঠেছিল ।

তপনদের মতোই মানুষ ‘ — কথা বলার কারণ কী

উঃলেখক যে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় আর সকলের মতোই সাধারণ মানুষ ; নতুন মেসোকে দেখে তপন এই সত্য টের পায় ।

সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়শোরগোলের কারণ কী

উঃতপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে , এই শুনে সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়।

মেসো তেমনি করুণার মূর্তিতে বলেনকী বলেন ?

উঃ মেসো তেমনি করুণার মূর্তিতে তপনের মাসিকে বলেন যে , তিনি ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র সম্পাদককে বলে তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দেবেন ।

তা ঘটেছে , সত্যিই ঘটেছেকী ঘটেছে ?

উঃ তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ।

জ্ঞানচক্ষুগল্পটি কার লেখা ? এর উৎস উল্লেখ করো

উঃ আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটির উৎস হল তাঁর ‘ কুমকুম ‘ নামক ছোটোদের গল্পসংকলন । 

কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল। কোন কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল

উঃ লেখকরা ভিন্ন জগতের প্রাণী — এটিই ছিল তপনের ধারণা । কিন্তু তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক শুনে বিস্ময়ে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল । 

১০সত্যিকার লেখক ’— এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের কোন্ ভাব প্রকাশিত হয়েছে বলে তোমার মনে হয়

উঃ এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । লেখকরা আদৌ বাস্তব জগতের মানুষ নন – এই অলীক ভাবনা নতুন মেসোর সঙ্গে পরিচয়ে ভেঙে যাওয়াতেই এমন উক্তি । 

১১আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন কোন্ সুযোগে তপন কী দেখতে পাচ্ছে

উঃ লেখক মেসোমশাইকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে তপন বুঝতে পারে লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় , তাদেরই মতো মানুষ । 

১২ তপনের মনে লেখক হওয়ার বাসনা জাগল কেন ?

উঃ লেখক নতুন মেসোমশাইকে দেখে তপন বুঝেছিল লেখকরা আসলে তাদের মতোই সাধারণ মানুষ । তাই উৎসাহিত তপন তার এতদিনের গল্প পড়ার ও শোনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে লেখক হতে চায় । 

১৩তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ’— কে , কেন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ?

উঃ ছোটোমেসো তপনের লেখাটা ছাপানোর কথা বললে তপন প্রথমে সেটাকে ঠাট্টা বলে ভাবে । কিন্তু মেসোর মুখে করুণার ছাপ দেখে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় । 

১৪না করতে পারবে না ‘ – কে , কাকে , কী বিষয়ে নাকরতে পারবে না

উঃ তপনের লেখক ছোটোমেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকার সম্পাদককে তপনের লেখা গল্পটা ছাপানোর জন্য অনুরোধ করলে সম্পাদকমশাই না করতে পারবেন না ।

১৫ তপনের বয়সি আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের লেখার সঙ্গে তপনের লেখার তফাত কী

উঃ তপনের বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি , খুন – জখম – অ্যাকসিডেন্ট অথবা না – খেতে পেয়ে মরা- এইসব বিষয়ে গল্প লেখে । কিন্তু তপনের লেখার বিষয় ছিল তার প্রথম দিন স্কুলে ভরতির অভিজ্ঞতা । 

১৬ এটা খুব ভালো , ওর হবে কে , কোন প্রসঙ্গে কথা বলেছেন

উঃ তপন তার স্কুলে ভরতির প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে  একটি গল্প লিখেছিল । তার লেখার নিজস্বতা দেখে মেসো এমন মন্তব্য করেছেন ।

১৭মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল এর কারণ কী ছিল

উঃ নতুন মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তপন নিজেই চেষ্টা করে একটা গল্প লিখে ফেলে । নিজের সৃষ্টিতে রোমাঞ্চিত হয়ে তার মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে ।

১৮ভালো হবে না বলছি ’— কে , কাকে , কেন এই কথা বলেছে ?

উঃ তপনের লেখা গল্পটা কিছুটা পড়েই ছোটোমাসি তার প্রশংসা করেন । তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন লেখাটা অন্য কোনো স্থান থেকে টোকা কিনা । তখন বিরক্ত হয়ে তপন আলোচ্য উদ্ধৃতিটি করে ।

১৯কিন্তু গেলেন তোগেলেনই যে ! – কার প্রসঙ্গে কথা বলা হয়েছে

উঃ তপনের লেখা গল্প সামান্য কারেকশন করে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছাপিয়ে দেবেন বলে ছোটোমেসো তা নিয়ে যান । তারপর অনেকদিন কেটে গেলেও সে – ব্যাপারে কোনো সংবাদ না পাওয়ায় এ কথা বলা  হয়েছে ।

২০যেন নেশায় পেয়েছে কোন নেশার কথা বলা হয়েছে ?

উঃ নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে – গল্প লিখেছিল তা মাসির উৎসাহে মেসো ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন । এরপর থেকে  তপনকে গল্প লেখার নেশায় পায় । 

২১বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠার কারণ কী ছিল ?

উঃ গল্প ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘদিন অদৃশ্য থাকার পর হঠাৎই একদিন ছোটোমাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকা হাতে নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসেন । তাতে তার গল্প ছাপার কথা ভেবে তপনের বুকের রক্ত ছলাত করে ওঠে ।

২২ পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? – এখানে কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে

উঃ পত্রিকায় তপনকুমার রায়ের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া এবং সেই পত্রিকা বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকেই ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে । 

২৩বাবা , তোর পেটে পেটে এত ! ‘ — কে , কোন প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন ?

উঃ ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর বাড়িময় শোরগোল পড়ে যায় । তখন তপনের মা এই কথাটি তপনের সুপ্ত প্রতিভা সম্পর্কে বলেন ।

২৪ক্রমশ কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে ’— কোন্ কথা ছড়িয়ে পড়ে

উঃ ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় তপনের গল্প মেসো কারেকশন করে ছাপারে ব্যবস্থা করেছেন — এই কথাটিই ছড়িয়ে পড়ে । 

২৫তপনের লেখা সম্পর্কে তার বাবার কী বক্তব্য  

উঃ তপনের বাবা মনে করেন , তপনের লেখক ছোটোমেসো তপনের লেখাটা কারেকশন করে দিয়েছিলেন বলেই এত সহজে সেটা পত্রিকায় ছাপানো সম্ভব হয়েছে । 

২৬ তপনের লেখা পত্রিকায় ছেপে বেরোতে দেখে তার মেজোকাকু কী বলেন ?

উঃ তপনের লেখা ছেপে বেরোনোর কৃতিত্ব তপনকে না – দিয়ে মেজোকাকু ব্যঙ্গ করে বলেন , তাঁদের ওরকম লেখক – মেসোমশাই থাকলে তাঁরাও গল্প লেখার চেষ্টা করে দেখতেন । 

২৭তাই জানতো না’- কে , কী জানত না ?

উঃ জলজ্যান্ত একজন লেখককে যে এত কাছ থেকে দেখা যায় , ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন তাই জানত না । 

২৮তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে তপনবসে বসে দিন গোনে কেন

উঃ পত্রিকায় গল্প ছাপা হওয়ার আশায় তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে ।

২৯গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনেরতপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল কেন

উঃ তপনের নিজের লেখা গল্প , যা কারেকশনের পর সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল তা পাঠ করে তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল ।

৩০জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের মেসো কোন্ মহত্ত্ব দেখিয়েছিলেন ?

উঃ লেখক মেসোমশাই সকলের সামনে তপনের গল্পের প্রশংসা করেন এবং গল্পটি সংশোধন করে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন ।

৩১বইটা ফেলে রেখে তপন কী করে ?

উঃ বইটা ফেলে রেখে তপন ছাতে উঠে গিয়ে শার্টের তলাটা তুলে চোখের জল মোছে । 

৩২এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপনসংকল্পটি কী

উঃ তপন সংকল্প করেছিল , ভবিষ্যতে  যদি কখনও আর কোনো লেখা ছাপাতে হয় , তবে সে নিজে হাতে সেই লেখা পৌঁছে দিয়ে আসবে পত্রিকার অফিসে ।

৩৩তপনকে যেন আর কখনো না শুনতে হয় ….. —এখানে কী শোনার কথা বলা হয়েছে

উঃ তপনকে যেন আর কখনও শুনতে না – হয় যে , অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে ।

৩৪তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , — কীসের কথা বলা হয়েছে

উঃ আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গঙ্গে তপনের মনে হয়েছে নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার চেয়ে দুঃখের আর কিছুই নেই । 

৩৫দুপুরবেলা , সবাই যখন নিথর নিথর’- তখন তপন কী করেছিল ?

উঃ বিয়েবাড়ির দুপুরবেলা সবাই যখন নিথর , তখন তপন হোমটাস্কের খাতা নিয়ে তিনতলায় উঠে একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলেছিল । 

ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর :
. কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল”—কোন্ কথা শুনে কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল? +

উঃ তপন এতদিন ভেবে এসেছে লেখকরা বুঝি অন্য জগতের মানুষ । সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের কোনো মিলই নেই । তাই যখন সে শুনল যে তার ছোটো মেসোমশাই বই লেখেন , আর সেই বই ছাপাও হয় তখন তার বিস্ময়ের সীমা রইল না । নতুন মেসোমশাই একজন সত্যিকারের লেখক । এই আশ্চর্য খবরটা শুনেই তপনের চোখ মার্বেলের মতো গোল গোল হয়ে গেল । 
. সে সব বই নাকি ছাপাও হয় ’— উক্তিটিতে যেবিস্ময় প্রকাশিত হয়েছে , তা পরিস্ফুট করো

উঃ উক্তিটিতে প্রকাশিত বিস্ময় উত্তর / আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপন নামের বালকটি তার ছোটোমাসির সদ্যবিবাহিত স্বামী অর্থাৎ তার মেসো যে একজন লেখক , এ কথা জেনে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায় । লেখকেরা যে সাধারণ মানুষ এবং তার মেসোমশাই একজন লেখক , যাঁর বই ছাপা হয় — এ তথ্য তার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল । আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে বালক তপনের মনের সেই বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । 

রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই / —কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো  

উঃ উদ্ধৃতিটি আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত । ‘ জহর ’ অর্থাৎ মূল্যবান রত্ন বিশেষজ্ঞকে জহুরি বলা হয় । এক্ষেত্রে জহুরি বলতে নতুন মেসোকে বোঝানো হয়েছে । লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা আস্ত গল্প লিখে মাসিকে দেখায় । মাসি তা নিয়ে সারাবাড়িতে শোরগোল বাধিয়ে মেসোকে দেখাতে যান । তপন ব্যাপারটায় আপত্তি তুললেও মনে মনে পুলকিত হয় এই ভেবে যে , তার লেখার মূল্য একমাত্র কেউ যদি বোঝে তবে ছোটোমেসোই বুঝবে , কেন – না জহুরির জহর চেনার মতো একজন লেখকই পারে কোনো লেখার মূল্যায়ন করতে ।

তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয় / — মাসি কেন হইচই করেছিলেন ?

উঃ গরমের ছুটিতে মামার বাড়িতে এসে নতুন মেসোকে দেখে তপনের মনে লেখক সম্পর্কে যেসব ধারণা ছিল তা ভেঙে যায় । জলজ্যান্ত লেখকের সঙ্গে কাটিয়ে তপন অনুপ্রাণিত হয়ে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । আর তা মাসির হাতে পড়ায় মাসি হইচই শুরু করে দেয় এবং তা নিয়ে তার লেখক স্বামীর কাছে যায় । এতে লাজুক তপন অপ্রস্তুত হলেও মনে মনে পুলকিত হয় , কারণ তার লেখার প্রকৃত মূল্য কেউ বুঝলে তা নতুন মেসোই বুঝবে ।

মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা / —কোন্ কাজকে মেসোর উপযুক্ত কাজ বলা হয়েছে

উঃ লেখকরা যে সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে নতুন মেসোকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল । তপন নতুন মেসোকে অহরহ কাছ থেকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটা আস্ত গল্প লিখে তার মেসোর উপযুক্ত কাজ প্রিয় ছোটোমাসিকে দেখায় । গল্পটি নিয়ে ছোটোমাসি রীতিমতো হইচই ফেলে দেয় । শুধু তাই নয় , তিনি গল্পটি তার লেখক স্বামীকেও দেখান । গল্প দেখে তিনি সামান্য কারেকশন করে দিলে সেটা  যে ছাপা যেতে পারে এ কথা বলেন । আর এ কথা শুনেই মাসি সেটা ছাপিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান , যেটা কিনা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ।

তপনের হাত আছে চোখও আছে এখানেহাতচোখআছে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

উঃ তপনের গল্প শুনে আর সবাই হাসাহাসি করলেও নতুন মেসো তার প্রতিবাদ করে আলোচ্য উক্তিটি করেন । এখানে ‘ হাত ’ আছে বলতে বোঝানো হয়েছে যে , তপনের লেখার ক্ষমতা আছে , বা ভাষার দখল আছে । আর ‘ চোখ ‘ আছে । কথার অর্থ হল তপন তার চারপাশের দুনিয়াটা ভালো করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখতে ও উপলব্ধি করতে পারে । তার গল্প লেখার বিষয় নির্বাচন থেকেই এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় ।

 . “গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের”—তপনের গায়ে কখন এবং কেন কাটা দিয়ে উঠল ? +

উঃ জীবনের প্রথম গল্পটি লিখে ফেলার পর তপন নিজে যখন সেটা পড়েছিল তখনই তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল। 

একদিন দুপুরে যখন চারিদিক নিস্তব্ধ, সে একটা খাতা আর কলম নিয়ে মামাবাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে বসে সারাদুপুর ধরে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে। গল্প লেখার পর সে নিজেই গোটা গল্পটা লিখেছে ভেবে অবাক হয়ে যায়। গল্প শেষ করার পর আনন্দে, উত্তেজনায় তপনের সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।

১০আঃ ছোটোমাসি , ভালো হবে না বলছি কার উক্তি ? এই হুমকির কারণ কী ?

উঃ প্রশ্নোধৃত উদ্ভিটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় কার উক্তি চরিত্র তপনের । → লেখক – মেসোমশাইয়ের দৃষ্টাস্তে উদ্বুদ্ধ তপন একটি গল্প লিখে তার ছোটোমাসিকে দেখায় । তিনি তপনের গল্পটি সবটা কারণ । না পড়েই তার প্রশংসা করেন এবং তা কোথাও থেকে নকল করা কিনা তা জিজ্ঞেস করেন । এ কথায় রেগে গিয়ে তপন প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটি করে । 

১১যেন নেশায় পেয়েছে কাকে , কীসের নেশায় প্রশ্ন পেয়েছে বুঝিয়ে বলো  

উঃ আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনকে গল্প লেখার নেশায় পেয়েছে । আগে তপন মনে করত গল্প লেখা ভারী কঠিন কাজ , সাধারণ মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয় । লেখকরা বুঝি ভিন্ন গোত্রের মানুষ । কিন্তু লেখক- ছোটোমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন সাহস করে লিখে ফেলে আস্ত গল্প । ছোটোমাসির হাত ঘুরে সেই গল্প ছোটোমেসোর হাতে পড়ে । তিনি তপনকে উৎসাহ দিতে গল্পটা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে কথা দেন । উৎসাহিত তপন গল্প লেখার নেশায় মেতে ওঠে ।

১২ ওর লেখক মেসো ছাপিয়ে দিয়েছে – “ কে ? লেখকমেসোর কী ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে

উঃ ‘ ও ’ বলতে আলোচ্য অংশে গল্পকার আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বালক তপনের কথা বলা হয়েছে । → তপনের লেখক মেসো তাঁর পরিচয় ও প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছিলেন । এই সত্য জানার পর তপনের কোনো কোনো আত্মীয় তার কৃতিত্বকে খাটো করে দেখিয়ে প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছিলেন ।

১৩আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম আমাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের কোন চেষ্টার কথা বোঝানো হয়েছে

উঃআলোচ্য উদ্ধৃতিটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত । উদ্ধৃতির বস্তুা তপনের মেজোকাকু ‘ আমাদের ’ বলতে এখানে নিজেকে এবং বাড়ির ‘ আমাদের কারা অন্য ব্যক্তিদেরকে বুঝিয়েছেন । লেখক মেসোর দৌলতে তপনের আনাড়ি হাতের লেখা গল্পও নামি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল । বালক তপনকে তাদের চেষ্টা উৎসাহ দেওয়ার পরিবর্তে তার মেজোকাকু উদ্ধৃত উক্তিটির দ্বারা সুযোগ পেলে যে তাঁরাও গল্প লিখতে পারতেন তাই বোঝাতে চেয়েছেন । 

১৪আজ আর অন্য কথা নেই –‘আজদিনটির বিশেষত্ব কী ? সেদিন আর অন্য কথা নেই কেন

উঃআশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে ‘ আজ ’ বলতে সেই দিনটির ‘ আজ ’ দিনটির বিশেষত্ব কথা বোঝানো হয়েছে , যেদিন তপনের মাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সেই সংস্করণটি নিয়ে এলেন , যাতে তপনের লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছিল । বালক তপনের লেখা গল্প যে সত্যি সত্যিই কোনো পত্রিকায় ছাপা হতে পারে , তা কেউই বিশ্বাস করেনি । কিন্তু যেদিন সত্যিই সেই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটল , সেদিন সকলের কেন অন্য কথা নেই মুখে মুখে বারবার এই ঘটনার কথাই আলোচিত হচ্ছিল ।

১৫তারপর ধমক খায় , তপনের ধমক খাওয়ার কারণ কী ছিল

উঃ ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন পত্রিকায় প্রকাশিত নিজের লেখা গল্পটি সকলকে পড়ে শোনাতে উদ্যত হয় । কিন্তু পড়তে গিয়ে সে আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করে যে , তার লেখক মেসোমশাই তার গল্পটি সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন । এই ঘটনায় হতবাক তপনের অভিমানে গলা বুজে আসে । এদিকে গল্প পড়তে না – শুরু করায় সকলে অধৈর্য হয়ে গাকে ধমক দিতে শুরু করে ।

১৬সন্ধ্যাতারাপত্রিকায় তপনের গল্প ছেপে বেরোয় তবু তপনের এত দুঃখ হয়েছিল কেন

Ans: তপন ভাবত লেখকরা কোনো স্বপ্নের জগতের মানুষ । কিন্তু লেখক – মেসোকে দেখে তার ভুল ভাঙে । উৎসাহিত তপন নিজেই লিখে ফেলে একটা গল্প । ছোটোমেসোর উদ্যোগে সামান্য কারেকশনের পর সেটা ছেপেও বেরোয় সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় । পত্রিকার সূচিপত্রে নিজের নাম ছাপার অক্ষরে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয় তপন । কিন্তু গল্পটা পড়া শুরু করতেই সে বুঝতে পারে কারেকশনের নাম করে ছোটোমেসো তার গল্পটা আগাগোড়াই পালটে দিয়েছেন । নিজের লেখার পরিবর্তে একটা সম্পূর্ণ অচেনা লেখা দেখে তপনের আনন্দ মিলিয়ে যায় । 

১৭শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীর সংকল্প করে তপন , দুঃখের মুহূর্তটি কী ? তপন কী সংকল্প করেছিল

উঃদুঃখের মুহূর্ত উত্তর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের নায়ক তপনের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্তটি একপলকে দুঃখের মুহূর্তে পর্যবসিত হয় । কারণ সে প্রকাশিত গল্পটি পড়তে গিয়ে টের পায় , লেখক – মেসো গল্পটিকে সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন । এ গল্পকে আর যাই হোক তার নিজের লেখা বলা যায় না । এই ঘটনায় তপন সংকল্প করেছিল যে , যদি কোনোদিন নিজের কোনো লেখা ছাপতে দেয় , তবে নিজে গিয়ে ছাপতে কৃত সংকল্প দেবে । ছাপা হোক বা না হোক অন্তত তাকে এ কথা শুনতে হবে না যে , কেউ তার লেখা প্রভাব খাটিয়ে ছাপিয়ে দিয়েছে ।

১৮তপনকে যেন আর কখনো শুনতে না হয় কী নাশোনার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক বালক তপন গল্প লেখায় যতই আনাড়ি হোক না কেন , সে মনেপ্রাণে একজন লেখক । তার লেখা । গল্পের ওপরে তার লেখক মেসোর সংশোধনের নামে খোলনলচে বদলে দেওয়া তপনের কাছে অপমানজনক । এই ঘটনায় সে অভিমানে বাদ্ধ হয়ে যায় । আত্ম – অসম্মানে আহত তপন সংকল্প নেয় যে , পরবর্তীকালে লেখা ছাপাতে দিলে সে নিজে দেবে । তবু এ কথা তাকে শুনতে হবে না । যে , অন্য কেউ তা ছাপিয়ে দিয়েছে ।

১৯তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! — ‘ তার চেয়ে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

উঃআশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে আলোচ্য অংশে ‘ তার চেয়ে ’ বলতে তপনের নিজের লেখা গল্প লেখক মেসোর হাতে পড়ে নির্বিচারে পরিবর্তিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা পড়াটা তার কাছে গভীর দুঃখের ও অপমানের বলে মনে হয়েছিল । এই আত্মসম্মানবোধ থেকেই তৃপনের অন্তর্মনে মৌলিকতার অনুপ্রেরণা জেগে ওঠে ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর 
আর সবাই তপনের গল্প শুনে হাসে সকলের তপনের গল্প শুনে হাসার কারণ কী ? তার গল্পের যথাযথ মূল্যায়ন কে , কীভাবে করেছিলেন ?
অথবা , ‘ বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা চায়ের টেবিলে ওঠা কথাটি সম্পর্কে বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ? নতুন মেসোরইবা এই ঘটনায় বক্তব্য কী ছিল ? হাসার কারণ

উঃ ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্প থেকে গৃহীত অংশটিতে ‘ সবাই ’ বলতে তপনের বাড়ির লোকজনকে বোঝানো হয়েছে । বাড়ির বড়োদের চোখে সে ছিল নেহাতই ছোটো , তার গুরুত্ব কম । সে যে রাতারাতি একটা গল্প লিখে ফেলতে পারে , আর সে – গল্প যে ছাপানোর যোগ্য হতে পারে তা প্রথমে কেউই বিশ্বাস করতে পারেননি । তাই সকলে তপনের গল্প শুনে হেসেছিলেন । বাড়ির সকলে তার লেখা গল্পকে গুরুত্ব না দিলেও , তার লেখক নতুন মেসো কিন্তু এই গল্পের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়েছিলেন । তপনের মাসি তার গল্পটি মেসোকে দেখালে , তিনি তা একটি পত্রিকায় গল্পের মূল্যায়ন কে , কীভাবে করেছিলেন ? প্রকাশ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন । বিকেলে চায়ের টেবিলে সকলে তপনের লেখা গল্প নিয়ে হাসাহাসি ত করলেও , লেখক – মেসো কিন্তু তপনের প্রশংসা করেন । তিনি বলেন যে , না তপনের লেখার হাত ও দেখার চোখ দুই – ই আছে । কারণ তার বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি , খুন , জখম , অ্যাকসিডেন্ট , নয়তো না – খেতে পেয়ে মরে যাওয়া প্রভৃতি বিষয়ে গল্প লেখে । কিন্তু তপন সেসব না – লিখে তার ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প লিখেছে । তপনের লেখক মেসোর মতে , এ খুব বিরল লক্ষণ । এইভাবে তপনের মেসো তার লেখা গল্পের মূল্যায়ন করেছিলেন । তবে তপনের গল্পে আনাড়ি হাতের ছাপ থাকায় , তিনি তা সংশোধন করে দিয়েছিলেন । 

 জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো
উঃ আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের তপনের মধ্যেও সব শিশুর মতোই আশা – আকাঙ্ক্ষা , স্বপ্ন – স্বপ্নভঙ্গ , কল্পনা বাস্তব , আনন্দ – অভিমানের টানাপোড়েন দেখা যায় । তবে তার চরিত্রের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য তাকে আলাদা করে রাখে । তপন মনে মনে তার কল্পনার জগৎকে সাজিয়ে নিতে ভালোবাসে । তাই তার কল্পনার জগতে লেখকরা ছিলেন ভিন কল্পনাপ্রবণ গ্রহেরপ্রাণী । সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের বুঝি বা কোনো মিলই নেই । সাহিত্যপ্রেমী সাহিত্যের প্রতি তপনের ঝোঁক ছোটোবেলা থেকেই । সে অনেক গল্প শুনেছে ও পড়েছে । লেখকদের সম্পর্কেও তার কৌতূহল অসীম । ছোটোমেসোকে দেখে তার মনেও লেখক হওয়ার ইচ্ছে জাগে । উৎসাহী হয়ে বেশ কয়েকটা গল্পও লিখে বয়স অনুপাতে তপন একটু বেশিই সংবেদনশীল । সমবয়সি ছেলেমেয়েদের মতো রাজারানি , খুন – জখম ও অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে না – লিখে , তার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি সংবেদনশীল ও অন্তর্মুখী ২ ঠাট্টাতামাশা বা মাসি মেসোর উৎসাহদান কোনোটাতেই সে প্রকাশ্যে তার প্রতিক্রিয়া দেখায় না । এটা তার অন্তর্মুখী স্বভাবেরই পরিচয় । তাই কারেকশনের নামে মেসো তার গল্পটা আগাগোড়া বদলে দিলে তপন তার কষ্ট লুকোতে ছাদে গিয়ে কাঁদে । 

 তপনের আত্মমর্যাদা বোধ ছিল প্রবল । তার গল্প ছোটোমেসো কারেকশনের নাম করে আগাগোড়াই বদলে দিলে তপনের লেখকসত্তা আহত হয় । সে মনে মনে শপথ নেয় , ভবিষ্যতে লেখা ছাপাতে হালে সে নিজে গিয়ে লেখা দিয়ে আসবে পত্রিকা অফিসে । তাতে যদি তার মতো নতুন লেখকের লেখা ছাপা না হয় , তাতেও দুঃখ নেই । 

৩ ছোটোগল্প হিসেবে আশাপূর্ণা দেবী রচিতজ্ঞানচক্ষুগল্পের সার্থকতা বিচার করো  

উঃশুধু আয়তনে ছোটো হলেই কোনো গল্প ছোটোগল্পের পর্যায়ে পড়ে না । ছোটোগল্পের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে । সেই বৈশিষ্ট্যগুলির সাপেক্ষে ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটিকে বিচার করলে বোঝা যাবে ছোটোগল্প হিসেবে সেটি কতটা সার্থক  ছোটোগল্প শুরু হয় হঠাৎ করে । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পতেও এই বৈশিষ্ট্যটি লক্ষ করা যায় । ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল’— এই বাক্যটি দিয়ে আচমকাই গল্পটি শুরু হয় । হঠাৎ শুরু গল্প লেখাকে কেন্দ্র করে তপনের মোহ এবং সেই মোহভঙ্গের কাহিনিকে ঘিরেই এই গল্প । গল্পে অন্য কোনো উপকাহিনি গড়ে একটি মাত্র য় বিষয়কেন্দ্রিকতা ওঠেনি । তাই গল্পটি তার সংক্ষিপ্ত পরিধির মধ্যে একটি মাত্র বিষয়েই সীমাবদ্ধ । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপন ছাড়াও যে চরিত্রগুলির ভূমিকা নজর কাড়ে , তাঁরা হলেন তপনের ছোটোমাসি এবং মেসো । বাকি কম চরিত্রের উপস্থিতি চরিত্রগুলি নেহাতই গৌণ । এক্ষেত্রেও ছোটোগল্পের বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রয়েছে । অতিরিক্ত চরিত্রের ভিড় নেই । ছোটোগল্প যেমন হঠাৎ করে শুরু হয় , তেমনই হঠাৎই শেষ হয় । গল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও পাঠকের মনে এক ধরনের অতৃপ্তি থেকে যায় । ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটিও এর ব্যতিক্রম নয় । ছাপার অক্ষরে অসমাপ্তির রেশ নিজের নামের মতোই নিজের লেখাকেও দেখতে চেয়েছিল তপন । তার সেই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়েই গল্পটি শেষ হয় । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটির মধ্যে ছোটোগল্পের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই রয়েছে । সুতরাং , ছোটোগল্প হিসেবে এটি নিঃসন্দেহে সার্থক ।

জ্ঞানচক্ষু গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? গল্পটি পড়ে তুমি কী শিক্ষা পেলে লেখো  
উঃ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির লেখিকা কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী । তিনি জ্ঞানচক্ষু কী ? জ্ঞানচক্ষু ’ বলতে মানুষের আত্ম – অনুভূতি এবং অন্তদৃষ্টি লাভের বিষয়টিকে তুলে ধরতে চেয়েছেন । ” জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির নায়ক তপন । ছোট্ট তপন তার সীমিত জীবনবৃত্তে কখনও কোনো লেখককে দেখেনি । তাই সত্যিকারের লেখক নতুন মেসোকে দেখে সাহিত্যিক সম্পর্কে তার সমস্ত ভুল ধারণার নিরসন হয় । মেসোকে হাতের কাছে পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে সে নিজেই এবার একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । 

এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং লেখক মেসোর প্রভাবে সেই গল্পটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । সে মনে মনে বেশ গর্বও অনুভব করে । কিন্তু ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে টের পায় সংশোধন করতে গিয়ে লেখক – মেসো গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে সঙ্গ পড়ে প্রাপ্ত শিক্ষা ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই কোথাও খুঁজে পায় না । ফলে তপনের লেখকমন আহত হয় । সে দুঃখে , লজ্জায় ও অসম্মানে একলা হাতে গিয়ে কেঁদে ফেলে । এমন গভীর খারাপ লাগার দিনে দাঁড়িয়ে সে সংকল্প করে ; ভবিষ্যতে কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । আসলে কাউকে অবলম্বন করে কিছু পেতে গেলে যে আত্মসম্মান খুইয়ে নিজের মনের আয়নায় নিজেকেই ছোটো হয়ে যেতে হয় এই শিক্ষাই তপন লাভ করে আর আমরাও তার সঙ্গে টের পাই স্বকীয়তা এবং আত্মমর্যাদাবোধের সঙ্গে আপস করে কখনই জীবনে কিছু লাভ করা যায় না । 

Click Here To Download  The PDF

শহীদ যতীন্দ্রনাথ |ষষ্ঠ শ্রেণী |প্রশ্ন-উত্তর সমাধান Shohid Jodindranath| Class 6| Question-Answer Solved

1

শহীদ যতীন্দ্রনাথ

আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়

. আশিসকুমার মুখোপাধ্যায় কোন্ খেলার ধারাভাষ্যকার ছিলেন ?

উত্তর। আশিসকুমার মুখোপাধ্যায় ফুটবল খেলার ইংরাজি ধারাভাষ্যকার ছিলেন।

. তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর। তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম হল ‘স্বাধীনতার রূপকার নেতাজি সুভাষ।

. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :

. যতীন দাশ কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?

উত্তর। ১৯০৪ সালের ২৭ অক্টোবর উত্তর কলকাতার শিকদার বাগান অঞ্চলে মামার বাড়িতে যতীন দাশ জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

. যতীন দাশের পিতার নাম কী ছিল?

উত্তর। যতীন দাশের পিতার নাম ছিল বঙ্কিমবিহারী দাশ।

. যতীন দাশের পিতা কোথায় চাকরি করতেন?

উত্তর। যতীন দাশের পিতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে চাকরি করতেন।

. যতীন দাশের ছদ্মনাম কী ছিল?

উত্তর। যতীন দাশের ছদ্মনাম ছিল ‘রবীন’ ও ‘কালীবাবু’।

. হিন্দ নওজোয়ান সভা কে প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর। বিপ্লবী ভগৎ সিংহ হিন্দ নওজোয়ান সভা প্রতিষ্ঠা করেন।

. মি. প্যাট্রি কে ছিলেন?

উত্তর। মি. প্যাট্টি তৎকালীন ইংরেজ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন।

. লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের কোন্ জেলে বদলি করা হয়?

উত্তর। লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের লাহোর সেন্ট্রাল জেলে বদলি করা হয়।

. কারা যতীনের জামিনের প্রস্তাব ঘৃণাভরে অগ্রাহ্য করেন?

উত্তর। যতীনের পিতা বঙ্কিমবিহারী দাশ ও তাঁর ছোটোভাই কিরণচন্দ্র দাশ জামিনের প্রস্তাব ঘৃণাভরে অগ্রাহ্য করেন।

. নীচের বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে এবং বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো :

অংশ, উত্তীর্ণ, ঐতিহাসিক, আক্রান্ত, জীবন, ভোজন, পিতা, সন্দেহ, জাতীয়, মেয়াদ।

উত্তর।

বিশেষ্য বিশেষণ 
অংশ আংশিক
জীবন জীবিত
জাতি জাতীয়
উত্তরণ উত্তীর্ণ
ভোজন ভোজ্য
মেয়াদ মেয়াদি
ইতিহাস ঐতিহাসিক
পিতা পৈতৃক
আক্রমণ আক্রান্ত
সন্দেহ সন্দিগ্ধ

. সন্ধিবিচ্ছেদ করো :

পর্যন্ত, কিন্তু, প্রত্যক্ষ, সিদ্ধান্ত, যতীন্দ্র, ব্যগ্র।

=উত্তরপর্যন্ত = পরি + অন্ত।

কিন্তু = কিম্ + তু।

প্রত্যক্ষ = প্রতি + অক্ষ।

সিদ্ধান্ত = সিদ্ধ + অন্ত।

যতীন্দ্র= যতি + ইন্দ্ৰ।

ব্যগ্র = বি + অগ্র।

. নীচে কতকগুলি শব্দ দেওয়া হল। শব্দগুলির সঙ্গে উপসর্গ যুক্ত করে নতুন শব্দ তৈরি করো :

জীবন, শেষ, বেশ, পথ, ঠিক, দারুণ, উপায়, জ্ঞান, করণীয়

উত্তর। জীবন—আজীবন।

শেষ—পরিশেষ।

বেশ—প্রবেশ।

পথ—বিপথ।

ঠিক-বেঠিক।

দারুণ—নিদারুণ।

উপায়—নিরুপায়।

জ্ঞান—অজ্ঞান।

করণীয়—অনুকরণীয়।

. নীচে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাল তারিখ নীচে দেওয়া হল। ঘটনাগুলি গল্প থেকে খুঁজে লেখো :

উত্তর। 

২৭ অক্টোবর ১৯০৪শহিদ বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাশের জন্ম। 

এপ্রিল ১৯২৯দিল্লিতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে সভ্যদের আসনের পাশে ভগৎ সিংহ ও বটুকেশ্বর দত্তের দ্বারা শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ।

২৫ জুন ১৯২৯ যতীন দাশ ও তাঁর ১৫ জন সহযোদ্ধাকে লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হিসেবে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে বদলি করা হয়।

১১ আগস্ট ১৯২৯বড়োলাট লর্ড আরউইন এক বিশেষ জরুরি ঘোষণায় অনশনকারীদের দাবিদাওয়া সব মেনে নিলেন এবং প্রত্যেক প্রদেশে জেল অনুসন্ধান কমিটি স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিলেন।

১৩ সেপ্টেম্বর ১৯২৯শনিবার ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯২৯ তারিখে ঠিক ১ টা ১৫ মিনিট অমর বিপ্লবী যতীন দাশ চিরনিদ্রায় ঢলে পড়লেন।

. নীচের বাক্যগুলি থেকে সংখ্যাবাচক পূরণবাচক শব্দ বেছে লেখো :

. তাঁরা সব মিলিয়ে দশ ভাই বোন ছিলেন

 উত্তর। দশ–সংখ্যাবাচক শব্দ

. যতীন ভবানীপুরের মিত্র ইন্সটিটিউশন থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

উত্তর। প্রথম—পূরণবাচক শব্দ।

. বিচারে তাঁর ছয়মাসের জেল হয়।

উত্তর। ছয়-সংখ্যাবাচক শব্দ।

. তাঁর দ্বিতীয় ছদ্মনাম কালীবাবু।

উত্তর। দ্বিতীয়—পূরণবাচক শব্দ।

. নীচের বাক্যগুলির উদ্দেশ্য বিধেয় অংশ ভাগ করে দেখাও :

. কিশোর বিপ্লবী হিসেবেই যতীন্দ্রনাথ দাশের নাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল।

. ছেলেবেলা থেকে তিনি একটি স্বপ্ন লালন করে আসছেন মনে মনে।

. শুরু হয় অগ্নিযুগের এক অবিস্মরণীয় রক্তে রাঙা অধ্যায়।

. শেষ পর্যন্ত এল শেষের সেই ভয়ংকর দিনটা।

উদ্দেশ্য বিধেয়
কিশোর বিপ্লবী হিসেবেই যতীন্দ্রনাথ দাশের নাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল।

 

ছেলেবেলা থেকেই তিনি একটি স্বপ্ন লালন করে আসছেন মনে মনে।
অগ্নিযুগের এক অবিস্মরণীয় রক্তে রাঙা অধ্যায় শুরু হয়।
শেষের সেই ভয়ংকর দিনটা শেষ পর্যন্ত এল।

. নীচের বাক্যগুলির মধ্যে যেসব বিভক্তিযুক্ত শব্দ এবং অনুসর্গ আছে তা খুঁজে লেখো ::

৯.১ জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে মত পার্থক্যের জন্য ভগৎ সিংহ, ভগবতী চরণ শুক্লা এবং আরও কয়েকজন কংগ্রেসের প্রতি আনুগত্য প্রত্যাহার করেন।

উত্তর। বিভক্তি—কংগ্রেসের ‘এর’ মত পার্থক্যের—‘এর’, অনুসর্গ-সঙ্গে, জন্য, প্রতি।

. ছেলেবেলা থেকে তিনি একটি স্বপ্ন লালন করে আসছেন মনে মনে।

উত্তর। বিভক্তি মনে মনে—‘এ’। অনুসর্গ—থেকে।

. সাতটি দিন নিরুপদ্রবে কেটে গেল।

উত্তর। বিভক্তি—নিরুপদ্রবে—‘এ’ বিভক্তি।

. শরীর সব দিক থেকেই ভেঙে পড়ছে।

উত্তর। অনুসর্গ—‘থেকেই।

১০. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :

১০. যতীন দাশের পিতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের স্থায়ী চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন কেন? এর ফল কী হয়েছিল?

উত্তর। ১৯০১ সালের দশহারার দিনে যতীন দাশের বাবা বঙ্কিমবাবু সপরিবারে গঙ্গাস্নান করে একটা ফিটন গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে রেড রোডে কয়েকটি ব্রিটিশ টমি তাঁদের জোর করে ওই গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে নিজেরা গাড়িটি চেপে চলে যায়। বঙ্কিমবাবুকে ছেলেমেয়ে নিয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়। ওই কারণে তিনি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের স্থায়ী চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন!

এর ফলে তিনি একটা স্টেশনারি দোকান খুলে সংসার চালাতেন। সেজন্য তাঁকে দুঃখ দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল।

১০. …… তোমার মতো মহান বিপ্লবীর জন্যও একটা কাজ আমায় অবশ্যই করতে হবে‘- কে, কাকে একথা বলেছিলেন?

উত্তর। অগ্নিযুগের একজন বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাশ একথা বলেছিলেন। তিনি বিপ্লবী বীর ভগৎ সিংকে একথা বলেছিলেন।

১০. কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে কী ঘটেছিল?

উত্তর। ১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশন চলছিল। সেই অধিবেশন যখন চলছিল তখন সভ্যদের আসনের পাশে বিপ্লবী বীর ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত একটি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। তাঁদেরকে ওখানে গ্রেফতার করা হয়।

১০. ১৪ জুন ১৯২৯ যতীন দাশকে কেন গ্রেফতার করা হয়?

উত্তর। তদানীন্তন ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মি. প্যাট্রি (Mr. Pattry) নিজে তদন্ত করে ত্রিশটি নামের একটি তালিকা বার করেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন যতীন দাশ। কালবিলম্ব না করে Lahore Conspiracy case এর অন্যতম অভিযুক্ত আসামি হিসেবে কলকাতার প্রকাশ্য রাজপথ থেকে যতীন দাশকে গ্রেফতার করা হয়।

১০. ১৯২৯ সালের ১৩ জুলাই অনশন শুরু হয় কেন?

উত্তর। ২ জুলাই, ১৯২৯ যতীন দাশ গোপনে বটুকেশ্বর দত্ত ও ভগৎ সিং এর সঙ্গে দেখা করে বলেন যে, সেন্ট্রাল জেলে তাঁদের ওপর যে অমানুষিক পুলিশি নির্যাতন চলছে, তার প্রতিবাদে তাঁরা ১৬ জন সমবেতভাবে অনশন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই ১৯২৯, ১৩ জুলাই থেকে অনশন শুরু হয়।

১০. অনশন করার আগে যতীন তাঁর সহযোদ্ধাদের কী অঙ্গীকার করান? তিনি অনশন ভঙ্গ করবেন না কেন?

উত্তর। অনশন আরম্ভ করার ঠিক দুএক দিন আগে যতীন তাঁর সহযোদ্ধাদের অঙ্গীকার করিয়ে নেন যে, তাঁদের দাবিগুলোর যথাযথ মীমাংসা হয়ে গেলে তাঁরা অবশ্যই অনশন ভঙ্গ করবেন।

যতীন দাশ মনে করতেন তাঁর পক্ষে এই অনশনই হবে মাতৃভূমির শৃঙ্খলমোচনের এক অভাবনীয় সুযোগ। এটাই তাঁর ছেলেবেলার স্বপ্ন এবং এ বিষয়ে তাঁর পিতা বঙ্কিমবিহারী দাশের অনুমতি আগেই তিনি পেয়ে গেছেন। তাই তিনি অনশন ভঙ্গ করবেন না।

১০. জেলে অনশনের সময় যতীন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন কেন?

উত্তর। আট দিনের পর যতীনের অনশন ভঙ্গের জন্য (২০ জুলাই তারিখে) ভোরবেলা জেল সুপার, জেল-ডাক্তার ও আটজন বেশ হৃষ্টপুষ্ট পাঠানকে সঙ্গে নিয়ে যতীনের সেলে প্রবেশ করেন। ডাক্তার একটি সরু নল যতীনের নাকের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দুধ ঢালতে শুরু করে দেন। আর কোনো উপায় না দেখে যতীন ইচ্ছাকৃতভাবে জোরে জোরে কাশতে থাকেন। ফলে ওই নলটির মুখ খাদ্যনালি থেকে সরে গিয়ে শ্বাসনালির মধ্যে ঢুকে যায় এবং কিছুটা দুধও যতীনের ফুসফুসে ঢুকে যাওয়ায় যতীন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

১০. জেলে যতীন দাশের পাশে স্লেট পেনসিল রাখা হয়েছিল কেন?

উত্তর। জ্ঞান ফিরে পাবার পর যতীন দাশের গলার আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। সে জীবনে আর কথা বলতে পারবে না। কণ্ঠ দিয়ে আর আওয়াজ বেরুবে না। তাই তাঁকে ওই স্লেট পেনসিলের ব্যবহার করে পেনসিল দিয়ে স্নেটে লিখে জানাতে হবে। তাই যতীন দাশের পাশে স্লেট-পেনসিল রাখা হয়েছিল।

১০. কিরণ দাশকে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে আনা হয়েছিল কেন?

উত্তর। জেলে যতীন দাশের শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। গলা দিয়ে তাঁর কোনো আওয়াজ বেরুচ্ছে না। যতীনের এই শোচনীয় অবস্থা উপলব্ধি করে বড়োলাট লর্ড আরউইন তাঁর বিশেষ ক্ষমতা বলে যতীনকে দেখাশোনা করার জন্যই যতীনের ভাই কিরণ দাশকে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে আনিয়ে নিয়েছিলেন।

১০.১০ যতীন দাশের সহযোদ্ধারা পথ অবরোধ করে শুয়েছিলেন কেন?

উত্তর। এক সর্বজন নিন্দিত গুপ্তচরের জামিনে যতীনকে মুক্ত করা হয় পঞ্চান্ন দিনের দিন (৫/৯/১৯২৯)। পরের দিন একেবারে কাকভোরে ডাক্তার ও জেল সুপার অ্যাম্বুলেন্স ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী নিয়ে জেলে আসেন। তাঁরা যাতে যতনের কাছে গিয়ে অসুস্থ অবস্থায় যতীনকে তুলে নিয়ে না যেতে পারে, তাই যতীনের সহযোদ্ধারা তাঁর সেলের চারপাশে ব্যারিকেড রচনা করে পথ অবরোধ করে শুয়েছিলেন।

Click Here To Download  The Pdf

বঙ্গ আমার জননী আমার |ষষ্ঠ শ্রেণী|প্রশ্ন-উত্তর সমাধান Bongo Amar Jononi Amar| Class 6| Question-Answer Solved

4

বঙ্গ আমার জননী আমার

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

. দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত দুই কাব্যগ্রন্থের নাম হল—‘মন্ত্র’, ‘আষাঢ়ে’।

. কবি দ্বিজেন্দ্রলালের কবিতার মূল সুর কী ছিল?

উত্তর। কবি দ্বিজেন্দ্রলালের কবিতার মূল সুর ছিল স্বদেশ প্রেম।

. নীচের বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে রপান্তরিত করো :

উত্তর।

বিশেষ্য বিশেষণ
মলিনতা মলিন
মনিল  মধুর
দৈন্য দীন
প্রণাম প্ৰণত
আসন আসীন

. নীচে কতগুলি উপসর্গযুক্ত শব্দ দেওয়া হল। শব্দগুলি থেকে উপসর্গ আলাদা করে দেখাও :

উত্তর। উপনিবেশ, অশোক, আলোক, প্রণত৷

উপসর্গ শব্দ
উপ নিবেশ
শোক
লোক
প্র ণত

. নীচের বাক্যগুলির উদ্দেশ্য বিধেয় অংশ ভাগ করে দেখাও :

৪.১ কেন গো মা তোর মলিন বেশ?

৪.২ অশোক যাঁহার কীর্তি ছাইল গান্ধার হতে জলধি শেষ।

৪.৩ একাকী যাহার বিজয়-সেনানী হেলায় লঙ্কা করিল জয়।

৪.৪ ন্যায়ের বিধান দিল রঘুমণি।

৪.৫ নবীন গরিমা ভাতিবে আবার ললাটে তোর।

উত্তর।

উদ্দেশ্য বিধেয়
মা কেন গো তার মলিন বেশ
অশোক যাঁহার কীর্তি ছাইল গান্ধার হতে জলধি শেষ।
একাকী যাহার বিজয় সেনানী হেলায় লঙ্কা করিল জয়।
রঘুমণি ন্যায়ের বিধান দিল
নবীন গরিমা ভাতিবে আবার ললাটে তোর।

. নীচের বিশেষ্য সর্বনাম শব্দগুলি নির্দেশমতো লেখো :

(উদাহরণ : মা + নিমিত্ত + একবচন = মায়ের জন্য)

৫.১ আমি + সম্বন্ধপদ + বহুবচন

আমাদেব

৫.২ আমি + কর্তৃকারক + বহুবচন = আমরা।

৫.৩ তুই + সম্বন্ধপদ + একবচন = তোর।

৫.৪ যিনি + সম্বন্ধপদ + একবচন= যাঁর।

. এইরকম অর্থযুক্ত শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো :

গৌরব, সুর, মুক্তি, নতুন, জলধি।

উত্তর। গৌরব—গরিমা। সুর-তাল। মুক্তি—মোক্ষ। জলধি—সাগর। নতুন—নবীন।

৭। নিম্নলিখিত প্রত্যেক ব্যক্তি প্রতিটি স্থান সম্পর্কে দু চারটি বাক্য লেখো :

বুদ্ধ, রঘুমণি, নিমাই, চণ্ডীদাস

উত্তর। বুদ্ধ : ভগবান বুদ্ধদেব নেপালের কপিলাবস্তু নগরে শাক্য বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাল্য নাম ছিল সিদ্ধার্থ। সাধনায় সিদ্ধিলাভ করার পর তাঁর নাম হয় বুদ্ধদেব। তাঁর প্রচারিত ধর্ম বৌদ্ধধর্ম নামে পরিচিত।

রঘুমণি : রঘুমণির পুরোনাম রঘুনাথ শিরোমণি। তিনি নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ন্যায়শাস্ত্রে সুপন্ডিত মানুষ ছিলেন। তিনি মিথিলার বিখ্যাত পণ্ডিত পদ্মধর মিশ্রকে ন্যায়যুদ্ধে পরাস্ত করেন। তিনি চৈতন্য দেবের সমসাময়িক ছিলেন।

নিমাই : শ্রীচৈতন্যদেবের আসল নাম ছিল নিমাই। তিনি নদিয়ার নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন জগন্নাথ মিশ্র ও শচীদেবীর সন্তান। ভক্তি আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব চৈতন্যদেব বৈঘ্নবধর্ম প্রচারক হিসেবে রাধাকৃষ্ণের পদাবলিকে সারা ভারতে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। বৈষুব ধর্মাবলম্বীরা তাঁকে প্রেমের ঠাকুর হিসেবে শ্রদ্ধাভক্তি করেন।

চণ্ডীদাস : বাংলা পদাবলি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি চণ্ডীদাস। আদি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচয়িতা হিসেবে বড়ু চণ্ডীদাসের নাম পাই। পদাবলি সাহিত্যে একাধিক চণ্ডীদাসের পদ পাওয়া যায়। রাধাকৃষ্ণের | প্রেমলীলা বিষয়ক তাঁর পদগুলি আজও সকলকে মুগ্ধ করে।

. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখো :

. কবি দেশকে কী কী নামে সম্বোধন করেছেন?

উত্তর। কবি দেশকে মা, বঙ্গ, জননী, দেবী, ধাত্রী, সাধনা, স্বর্গ নামে সম্বোধন করেছেন।

.কেন গো মা তোর মলিন বেশ’ ‘মাবলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন? তাকে মা বলা হয়েছে কেন?

উত্তর। ‘বঙ্গ আমার! জননী আমার!’ কবিতায় কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর জন্মভূমি ‘বঙ্গ’ তথা ভারতবর্ষকে মা | বলে বুঝিয়েছেন। 

কবি ভারতবর্ষের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। মা যেমন তার সন্তানকে লালন পালন করে তাকে বড়ো করে তোলে তেমনি কবি জন্মভূমির বুকে লালিত পালিত হয়েছেন। কবি জন্মভূমি মায়ের শীতল স্পর্শ পেয়েছেন। এই কারণে জন্মভূমিকে ‘মা’ বলা হয়েছে।

.মাএর বেশ মলিন কেশ রুক্ষ কেন?

উত্তর। ‘পরাধীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনে দেশমাতা লাঞ্ছিত ও অপমানিত। ভারতের মানুষ ইংরেজদের হাতে অত্যাচারিত।মায়ের লাঞ্ছনা ও অপমান কবিও বেদনাবোধ করছেন।ভারতমাতার ত্রিশকোটি সন্তান দেশমাতৃকার শৃঙ্খল মোচন করতে পারেনি। তাই ভারতমাতার মলিন বেশ ও রুক্ষকেশ।

. অশোক কোথায় কোথায় তাঁর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন?

উত্তর। সম্রাট অশোক মগধের রাজা ছিলেন। কলিঙ্গ জয়ের পর অশোক যুদ্ধবিজয় পরিত্যাগ করে ধর্মবিজয়ে মনোনিবেশ করেন। তিনি সুদূর সিংহলে বৌদ্ধধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে পুত্র মহেন্দ্র ও কন্যা সংঘমিত্রাকে পাঠান। সুদূর গান্ধার থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত এমনকি ভারতের বাইরেও অশোক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।

.অর্ধজগৎ ভক্তি প্ৰণত চরণে যাঁর’—‘অর্ধজগৎবলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? কার চরণে তা প্রণত হয়েছে?

উত্তর। অর্ধ-জগৎ বলতে এখানে কবি অর্ধেক পৃথিবীকে বোঝাতে চেয়েছেন।

ভগবান বুদ্ধদেব তাঁর শান্তি ও মুক্তির বাণী সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর প্রচেষ্টায় বৌদ্ধধর্ম তৎকালীন সময়ে পৃথিবীর নানা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। ভগবান বুদ্ধের চরণে অর্ধেক পৃথিবী প্রণত হয়েছিল।

.যুদ্ধ করিল প্রতাপাদিত্য’—প্রতাপাদিত্য কে ছিলেন? তিনি কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন?

উত্তর। বাংলাদেশের বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম ছিলেন প্রতাপাদিত্য। তিনি যশোহরের যথেষ্ট শ্রীবৃদ্ধি ঘটান এবং অনেক জনহিতকর কাজ করেন।

তিনি দিল্লির মোগল সম্রাট আকবরের সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। প্রথমে আকবরের পাঠানো সেনাপতি তাঁর কাছে পরাজিত হয়ে ফিরে যান। তিনি মোগল সম্রাটকে কর দেওয়া বন্ধ করে দেন। মোগল সেনাপতি মানসিংহের হাতে তিনি পরাজিত হন এবং বন্দি অবস্থায় দিল্লি যাত্রাকালে পথে বারাণসীতে তাঁর মৃত্যু হয়

.ধন্য আমরা’—‘আমরাবলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? আমরা কখন নিজেদের ধন্য বলে মনে করতে পারি ?

উত্তর। ‘আমরা’ বলতে এখানে কবি বলতে চেয়েছেন যারা বঙ্গভূমিতে বসবাস করছে সেই বঙ্গমাতার সন্তানদের বঙ্গমাতা তথা ভারতমাতার হাতে পরাধীনতার শৃঙ্খল। বিদেশি শাসন মুক্ত স্বাধীন ভারত গঠনের দায়িত্ব তাঁর সন্তানদের। আমরা যদি সংবদ্ধ হয়ে ভারতমাতার সেই পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করতে পারি তাহলে জন্মভূমি স্বমহিমায় গৌরবের আসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। তখন আমরা নিজেদেরকে ধন্য বলে মনে করতে পারব।

. নবীন গরিমা কীভাবে ললাটে ফুটে উঠবে?

উত্তর। কবি যখন কবিতাটি রচনা করেন তখন ব্রিটিশ শাসকরা ভারত শাসন করছিলেন। ভারতমাতার হাতে পড়েছিল পরাধীনতার শৃঙ্খল। ভারতমাতা ইংরেজদের হাতে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছিল। ভারতবর্ষ থেকে বিদেশি ইংরেজ শাসককে তাড়াতে পারলে ভারত জননীর শৃঙ্খল মোচন হবে। ভারতজননী তথা বঙ্গজননী নবীন গৌরবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এবং তার ললাটে স্বাধীনতার সূর্য উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেবে।

.১০ আমরা কীভাবে বঙ্গজননীর দুঃখদৈন্য, লজ্জা দূর করতে পারি?

উত্তর। আমরা ভারত তথা বঙ্গজননীর সন্তান। কবিতাটি যখন লেখা হয় তখন ভারতের জনসংখ্যা ছিল ত্রিশ কোটি।

পরাধীনতার গ্লানি, অপমান ভারতমাতাকে মলিনবেশ, রুক্ষ্ম চুলে পরিণত করেছে। তাঁর সমস্ত গৌরব ধুলিসাৎ। কবি মনে করেন ত্রিশ কোটি ভারতবাসী যদি দেশমাতার পরাধীনতার শৃঙ্খলমোচনের জন্য সম্মিলিতভাবে শপথ গ্রহণ করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাহলে অবশ্যই বিদেশি শাসক ভারতের বুক থেকে বিদায় নিতে বাধ্য। এইভাবেই আমরা বঙ্গজননীর দুঃখদৈন্য, লজ্জা দূর করতে পারি।

. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর দাও :

.যদিও মা তোর দিব্য আলোকে ঘিরে আছে আজ আঁধার ঘোর‘—কবির কেন মনে হয়েছে যে বঙ্গ জননীকে আঁধার ঘিরে আছে?

উত্তর। কবি যখন এই কবিতাটি রচনা করেন তখন ভারতবর্ষ পরাধীনতার অন্ধকারে নিমজ্জিত। এখানে পরাধীনতাবে আঁধারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ভারত তথা বঙ্গমাতা পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ। বঙ্গ জননীর সৌরভ ধুলোয় লুণ্ঠিত পরাধীনতার গ্লানি তিনি বহন করে চলেছেন। যদিও কবি আশাবাদী, তিনি মনে করেন ভারতবর্ষ আবার স্বাধীনতার সূর্য লাভ করবে। পরাধীন অবস্থাকালীন পরিস্থিতিকে কবি আঁধারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

Click Here To Download The Pdf

error: Content is protected !!