১.৪ মাইকেল মধুসূদন দত্ত যেই জাহাজ থেকে তাঁর বন্ধু গৌরদাস বসাককে চিঠি লিখেছিলেন সেটির নাম—
ক)ভার্সাই খ)সীলোন গ)মলটা ঘ) টাইটানিক
২ খুব সংক্ষেপে নীচের প্রশ্নের উত্তর দাও
২.১’ মান্ধাতারই আমল থেকে/ চলে আসছে এমনি রকম’ – কোন প্রসঙ্গে কবি একথা বলেছেন?
উঃ উদ্ধৃত পঙ্কতিটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বোঝাপড়া’ কবিতাটি থেকে নেওয়া হয়েছে।
মানুষের ভাগ্য চিরদিন একইরকম থাকে না। প্রত্যেক মানুষই একে অপরকে কখোনো না কখোন ফাঁকি দেয়। তাই একজন মানুষ কিছুটা সুখ ভোগ করার পরেই আসে দুঃখ, তখন হয়তো অপর ব্যাক্তি সুখ ভোগের সৌভাগ্য লাভ করে। মানুষের উদ্ভবের আদিকাল থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে । এই প্রসঙ্গেই কবি বলেছেন যে মান্ধাতার আমল থেকে সুখ দুঃখের আবর্তন ঘটে চলেছে।
২.২’ আমা অপেক্ষা আপনার ঘোরতর বিপক্ষ আর নাই’—বক্তার একথা বলার কারণ কি?
উঃ উদ্ধৃত উক্তিতির বক্তা হলেন আরব সেনাপতি। মুর সেনাপতি অজান্তেই তাঁর শ্ত্রু শিবিরে এসে আশ্রয় গ্রহন করেছিলেন। আরবদের অতুলনীয় আতিথেয়তা উপভোগ করে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান এবং গল্প করতে করতে প্রকাশ পায় যে মুর সেনাপতি আরব সেনাপতির পিতার হত্যাকারী। তাই প্রতিশোধপরায়ন আরবসেনাপতি বলেছিলেন যে এই বিপক্ষ শিবিরে তিনি মুর সেনাপতির সবথেকে বড় শত্রু।
২.৩ ‘অ্যান্টিগোনাস! তোমার এই ঔদ্ধত্যের জন্য তোমায় আমার সাম্রাজ্য থেকে নির্বাসিত করলাম।‘-আন্টিগোন্স কোন ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে?
উঃ আন্টিগোনস সেকেন্দারের সেনাবাহিনীর একজন সেনাধ্যক্ষ। কিন্তু তিনি বয়স ও সম্মানে বড় সেনাপতি সেলুকাসকে সম্রাট সেকেন্দারের সামনেই বিস্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করেন এবং তরবারি বের করে তাঁর সঙ্গে সমরে নিযুক্ত হন। সম্রাটের বিচারের অপেক্ষা না করেই, নিজে সেনাপতিকে সম্রাটের সামনে আঘাত করে তিনি চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিল।
২.৪ ‘ তোদের মত উল্লুকের সঙ্গে পিকনিকের আলোচনাও ঝকমারি !’—কোন কথা প্রসঙ্গে টেনিদা এমন মন্তব্য করেছিল?
উঃ টেনিদা , হাবুল , প্যালা ও ক্যাবলা পিকনিকের পরিকল্পনা করছিল। টেনিদা মুর্গ মুসল্লম, বিরিয়ানি, পোলাও, চাউ চাউ ইত্যাদি ভালো ভালো খাবারের নাম বললেও প্যালা হঠাৎ করেই আলুভাজা, শুক্ত, বাটিচচ্চড়ি ইত্যাদি খাবারের কথা উল্লেখ করে। এরপরেই ক্যাবলা টেনিদার বিরক্তি বাড়িয়ে বলে ওঠে কুঁদরুর তরকারি দিয়ে ঠেকুয়া খেতেও বেশ লাগে। ভালো ভালো খাবারের মাঝে এইসব সাধারন খাবারের নাম শুনেই বিরক্ত হয়ে ও রেগে গিয়ে টেনিদা এই মন্তব্য করেছিল।
উঃ কবি তারাপদ রায়ের ঘরে একটি চড়ুই পাখি বাসা বেঁধেছে। সে কৌতুহলী চোখে কবির ঘরের জানলা, দরজা, টেবিলের উপরে রাখা ফুলদানি, বই, খাতা ইত্যাদি দেখে। আসলে মানুষের ব্যবহার করা নানা জিনিষ সম্পর্কে তার বিশেষ কৌতূহল। এছাড়া এসব জিনিস দেখে সে মনে মনে হয়তো ভাবে কবি না থাকলে হয়তো এই সব অদ্ভুত জিনিসগুলি একদিন তার হয়ে যাবে।
৩ নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর দাও
৩.১ ‘সবুজ জামা’ কবিতার ভাববস্তু আলোচনা কর।
উঃ আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘সবুজ জামা’ কবিতায় শান্তিকামী, প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা মানুষের শাশ্বত চাওয়াকে রূপ দিয়েছেন। কবিতায় উপলদ্ধির বিষয় হল, তোতাইবাবুর চাওয়া একটি সবুজ জামা। এই সবুজই শেষপর্যন্ত জগৎ ও জীবনের রক্ষক, ধারক ও প্রতিপালক হয়ে ওঠে।
‘সবুজ’ শব্দটিতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। ‘সবুজ রং সজীবতা ও প্রাণসত্তার প্রতীক। গাছের ক্ষেত্রে সবুজ তার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যে একাত্ম হয়ে থাকে। সেই গাছের সাপেক্ষে ‘কিন্তু ব্যবহার করে কথক যখন তোতাইবাবুকে ‘অ-আ-ক-খ শিখবি’ বলেন, তখন বুঝতে দেরি হয় না, শিশুর সহজাত বৈশিষ্ট্যকে এই জটিল পৃথিবীতে বেশিদিন বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। স্বার্থদুষ্ট সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সার্বিক সুস্থতা আনতে গাছের মত সবুজ, সতেজ ও মানবপ্রেমিক বন্ধু হতে হবে।
অন্যদিকে কবিতার শেষাংশে কবি যখন বলেন “তবেই না তার ডালে প্রজাপতি বসবে”। তখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে—প্রজাপতির আগমন প্রাকৃতিক এবং একই সঙ্গে সে বংশবিস্তারে সহযোগী একটি প্রজাতি পতঙ্গ। তার শারীরিক বর্ণগত বৈচিত্র্য মনকে প্রসারিত করে, উদার করে, সৌন্দর্যে ভরিয়ে দেয়। তোতাই-ও যদি সবুজ জামা পরে তবেই তার কোলের ওপর নেমে আসবে—“একটা, দুটো, তিনটে লাল-নীল ফুল। তার নিজের…”। এরকম স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠলে শিশুর একদিন সুষম বিকাশ হবে। এই সত্যকেই কবি কবিতার মাধ্যমে বলতে চেয়েছেন।
৩.২ বন্ধু রাজনারায়ণ বসুকে লেখা চিঠিতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর লেখা ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ সম্পর্কে কীরূপ অভিমত ব্যক্ত করেছেন?
উঃমেঘনাদবধ কাব্যের জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে মাইকেল মধুসূদন দত্ত দেশি-বিদেশি একাধিক কবি ও কাব্যের কথা বলেছেন। বিদেশি কবি মিলটন, ভার্জিল ও তাসের প্রসঙ্গও সেক্ষেত্রে উঠে এসেছে। আর সেইসঙ্গে দেশি কবি কালিদাসের প্রসঙ্গও এনেছেন। মিলটন ও তাঁর কাব্য ‘প্যারাডাইস লস্ট’-এর প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন—মিলটনের সঙ্গে তুলনায় তাঁর কাব্য উৎকৃষ্টতর নয়, কারণ মিলটনের কাব্য স্বর্গীয়। তবে ভার্জিল, তাসো কিংবা কালিদাসের সমতুল্য হওয়া অসম্ভব নয়। তিনি এও শুনেছেন যে, অনেক হিন্দু মহিলা বইটি পড়ে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন। তাই বন্ধু গৌরদাস বসাকের স্ত্রীও যাতে বইটি পড়তে পারেন, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা করার পরামর্শও তিনি বন্ধুকে দিয়েছেন। যদিও মধুসূদন দত্ত তাঁর বন্ধুর উদ্দেশ্যে বলেছেন, হাজার-হাজার জয়ধ্বনির থেকেও তার বন্ধুর অভিমত তাঁর কাছে অনেক নির্ভরযোগ্য
৩৩ ‘পরবাসী’ কবিতায় শেষ চারটি পঙক্তিতে কবির প্রশ্নবাচক বাক্য ব্যবহার করার তাৎপর্যয় বিশ্লেষণ কর।
উঃ বিষ্ণু দে-র ‘পরবাসী’ কবিতাটির শেষ স্তবকের চারটি বাক্যে কবি চারটি জিজ্ঞাসা চিহ্ন ব্যবহার করেছেন, যা কবিতাটিকে বিশেষ মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।
বিরামচিহ্নের ব্যবহার ভাষার একক বাক্যের স্বরূপকে নির্দেশ করে। আবার এর মাধ্যমে কবি কাব্যালংকার, বিশেষ করে, শ্লেষ অলংকারের প্রয়োগ করেন। ‘পরবাসী’ কবিতার শেষ স্তবকে সেই কাব্যালংকারের বিশিষ্ট প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। কবি যেন তির্যক, তীক্ষ্ণ প্রশ্নের কশাঘাতে মানুষের, বিশেষত ব্যাবসাজীবী, মানুষের বিবেককে জাগিয়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছেন। সভ্যতার আগ্রাসনে পৃথিবীর নদী, পাহাড়, গাছ লুপ্ত হচ্ছে। বনবাসী প্রাণীরা হারিয়ে যেতে বসেছে। নিজের দেশেই মানুষ উদ্বাস্তুর মত ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হয়েছে। তারা স্থায়ী স্বাভাবিক, চিরপ্রত্যাশিত নিজস্ব বাসস্থান গড়ে তুলতে পারে না। কবি এখানেই প্রকৃতির স্বাভাবিকতাকে পেতে আগ্রহী। শেষ স্তবকে কবির একাধিক প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে আমরা তাঁর বন্যপ্রাণ, বণ্যপ্রাণী তথা প্রকৃতি প্রেমের পরিচয় পাই।
৩.৪ ‘—কিন্তু এই রাতটির কথা ভালোভাবেই আমার মনে আছে।‘—‘পথচলতি’ রচনাংশে অনুসরণে লেখকের সেই রাতের অভিজ্ঞতার বিবরণ দাও।
উঃ ‘পথচলতি’ গদ্যাংশ থেকে আমরা জানতে পারি, দু-চারটি ফারসি বলতে পারার ক্ষমতা লেখককে কাবুলিওয়ালাদের দখল নেওয়া কামরায় ওঠবার সাহস দিয়েছিল। এই কাবুলিওয়ালারা খাস কাবুলির মত ফারসি জানে না। তাই লেখকেরও সুবিধা হল। হিন্দি আর বাংলায় আলাপ হল। একজন সম্পর্কে জানা গেল, সে বরিশালের পটুয়াখালিতে শীতবস্ত্র, হিং বিক্রি আর চাষিদের টাকা ধার দেওয়ার কাজ করে। অন্যজন লেখককে তাদের হিসাবনিকাশ করার জন্য কেরানি বা ম্যানেজারের মর্যাদা দিল।
এবার পশতু ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি খুশ-হাল খাঁ খট্টকের গজল প্রসঙ্গ এল। একজন তাঁকে সেই গজল গেয়ে শোনাল। এল আদম খাঁ’ ও দুরখানির কিসসা প্রসঙ্গ। জনৈক উৎসাহী পাঠান তার কর্কশ-গুরুগম্ভীর কণ্ঠে সেই কিসসার কিছুটা গান ও কিছুটা পাঠ করে শোনাল। এভাবেই পশতু-সাহিত্য গোষ্ঠী বা সম্মেলন শেষ হল।
এই সময় রোজা চলছিল। তাই শোবার তোড়জোড় শুরুর আগেই সবাই সান্ধ্য আহার সেরে নিল। সে রাত্রে লেখক বেশ ভালই ঘুমিয়েছিলেন। সেই ক্ষণিকের সহযাত্রী, ভিন্ন জাতির কতকগুলির বন্ধনে আন্তরিক সাহচর্য পাওয়ায় সেই রাতের কথা লেখকের বেশ মনে আছে।
৪ নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও
৪.১ দল বিশ্লেষণ করে দল চিহ্নিত করো
ইস্টিশান= ইস + টি+ শান ( ইস ও শান রুদ্ধদল , টি মুক্তদল )
বাগুইআটি= বা +গুই+ আ + টি ( বা, গুই, আ, টি চারটি মুক্তদল)
দর্শনমাত্র= দর + শন + মাত+ র (দর, শন, মাত, তিনটি রুদ্ধদল র একটি মুক্তদল )
ক্ষিপ্রহস্ত= ক্ষিপ+ র+ হস+ ত ( ক্ষিপ, , হস, ত তিনটি রুদ্ধদল র একটি মুক্তদল )
অদ্ভুতরকম= অদ+ ভূত+ র+ কম ( অদ, ভূত, কম তিনটি রুদ্ধদল র একটি মুক্তদল )
৪.২ উদাহরণ দাও
মধ্যস্বরাগম= কর্ম > করম
স্বরভক্তি= ভক্তি>ভকতি
অন্তঃ স্থ শ্রুতি=দু’এক > দুয়েক
অন্ত্যস্বরলোপ অনোন্য স্বরসংগতি= যদু>যোদো
যার কর্ম তার সাজে, অন্য লোকে লাঠি বাজে।
( যে যোগ্য সেই সফল্ভাবে কাজ করতে পারে)
–নবীন ডাক্তার ব্ল্যাড ডোনেশন ক্যাম্পের কাজগুলি সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করলেও পরেশ শুধু চিৎকার চেচামচি জুড়েছিল। একেই বলে যার কর্ম তার সাজে অন্য লোকে লাঠি বাজে।
নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
( দারিদ্রের অসহ অবস্থা)
–লকডাউনে বহু শ্রমিকের কাজ চলে যাওয়ায় তাদের পরিবারের এখন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।
গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না।
(অতি ঘনিষ্ঠ জনের গুনের কদর হয় না)
পাড়ার অনুষ্ঠানে অর্থ খরচা করে গায়িকা ডাকা হলেও পাড়ার মেয়ে ললিতা সুন্দর গান গাওয়া স্বত্তেও তাকে আমন্ত্রন জানানো হয় নি। একেই বলে গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না।
মারি তো গণ্ডার , লুটি তো ভাণ্ডার
( বড়ো কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করা)
–এলাকার জলের সমস্যা দূর করার জন্য প্রায় ১০ বিঘা জায়গার উপর শীতলখোলা জলাধার প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। এ যেন মারি তো গণ্ডার , লুটি তো ভাণ্ডার।
একহাতে তালি বাজে না।
(দু পক্ষের দোষ থেকেই বিবাদ হয়)
–অপরাধীদের মনস্তত্ত্ব বিচার করলে দেখা যায় বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দুপক্ষের দোষ ছিল, একহাতে তালি বাজে না।