হিমালয় দর্শন
বেগম রোকেয়া
হিমালয় দর্শন অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১ ‘হিমালয় দর্শন’-এর রচয়িতা কে?
উঃ বেগম রোকেয়া
২ ‘হিমালয় দর্শন‘ রচনাটির প্রকৃত নাম কি?
উঃ কূপমণ্ডুকের হিমালয় দর্শন’
৩ নিম্ন উপত্যকায় ‘নির্মল শ্বেত কুঞ্ঝাটিকা দেখে লেখিকার কি মনে হচ্ছিল?
উঃ নদী
৪ গাড়িগুলি এঁকেবেঁকে চলার সময় একটি বিশেষ ধরনের শব্দ করে। শব্দটি হল –
উঃ কটাটটা
৫‘আমি পূর্বে দেখি নাই।‘—লেখিকা পূর্বে কী দেখেননি?
উঃ বড়ো বড়ো ঘাস
৬ একটি বড়ো ঝরনার কাছে ট্রেন থেমেছিল কেন?
উঃ জল পরিবর্তনের জন্য
৭ কারসিয়ং স্টেশনের উচ্চতা কত?
উঃ ৪,৮৬৪ ফুট
৮ ৱেল পথে যাওয়ার সময় জলপ্রপাত বা ঝরনা দেখে লেখিকার কী মনে হল?
উত্তর : লেখিকার মনে হল জলপ্রপাত ও ঝরনার সৌন্দর্য বর্ণনার অতীত, তা ছাড়া ভীমবেগে প্রবাহিত জলধারা পাষাণ হৃদয় বিদীর্ণ করছে।
৯ কীভাবে লেখিকার মনোৱথ পূর্ণ হল?
উত্তর : রেলগাড়ি একটি বড় ঝরনার কাছে ইঞ্জিনে জল নেওয়ার জন্য থেমে যাওয়ায় লেখিকার ঝরনা দেখার মনোরথ পূর্ণ হয়।
১০ লেখিকাৱা বাসায় হাজির হয়েও গৃহসুখ অনুভব করতে পারলেন না কেন?
উত্তর : গৃহসুখ অনুভব করতে পারলেন না, কারণ ভ্রমক্রমে তাঁদের ট্রাংকগুলি দার্জিলিং-এ -এর ঠিকানায় চলে যায়।
১১ আসবাবপত্র ফিরে আসায় গৃহসুখে থেকে লেখিকাৱ কী উপলব্দি হল?
উত্তর : গৃহসুখে থেকে লেখিকার এই উপলব্ধি হল যে, আশ্রয় পেলেই গৃহসুখ আসে না, সেজন্য প্রয়োজনীয় আসবাব সরঞ্জামও চাই।
১২ প্রাকৃতিক শোভা কীসের জন্য শতগুণ বৃদ্ধি পয়েছে ?
উত্তর : সবুজ চা-বাগানগুলির জন্য পার্বত্য অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন শতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৩ কাকে ধৱণীৱ সীমান্তের মত দেখায়?
উত্তর : দূর থেকে সারিবদ্ধ চা-বাগানের মধ্য দিয়ে মানুষের চলার সরু পথগুলিকে ধরণীর সীমান্তের মত দেখায়।
১৪ ‘হিমালয় দর্শন’ ৱচনাংশে লেখিকা কীসেৱ সৌন্দর্যকে বর্ণনাতীত বলেছেন?
উত্তর : লেখিকা হিমালয়ান রেলপথ ধরে কারসিয়াং যাওয়ার সময় কতকগুলি জলপ্রপাত দেখেছিলেন, সেগুলির সৌন্দর্যকে বর্ণনাতীত বলেছেন।
১৫‘কেবল ভূ–তত্ত্ব গ্রন্থে পাঠ করিয়াছিলাম’ ভূতত্ত্ব গ্রন্থে লেখিকা কী পাঠ করেছিলেন?
উত্তর : কেবল ভূতত্ত্ব গ্রন্থে লেখিকা বেগম রোকেয়া পাঠ করেছিলেন যে, কারবনিফেরাস যুগে বড়ো বড়ো ঢেকিগাছ ছিল।
১৬‘মেঘখণ্ডকে তাড়াইয়া লইয়া চলিল। মেঘখণ্ডকে কে তাড়িয়ে নিয়ে চলল?
উত্তর; বাতাস ও মেঘের লুকোচুরি খেলায় উলটো দিক থেকে বয়ে আসা বাতাস মেঘখণ্ডকে তাড়িয়ে নিয়ে চলল।
১৭ কাৱসিয়াং–এ লেখিকার কী দেখে আনন্দ হল?
উত্তর : কারসিয়াং-এ কারবনিফেরাস যুগের ঢেঁকিগাছ দেখে লেখিকা বেগম রোকেয়ার ভারী আনন্দ হল।
১৮ কাদেৱ কী তামাশা দেখে লেখিকা সময় অতিবাহিত করেন?
উত্তর : অস্তগামী সূর্যের সোনা রোদ মেখে সুকুমার মেঘগুলি বায়ু ভরে ইতস্তত ছোটাছুটি করে, সেই তামাশা দেখে লেখিকা সময় কাটান।
১৯ হিমালয়ান রেলগাড়ি আকৃতিতে, উচ্চতায় ও গাততে কেমন?
উত্তর : হিমালয়ান রেলগাড়ি আকারে ছোটো খেলনা গাড়ির মত, উচ্চতা খুব নীচু, গতি কম, অনায়াসে ওঠা-নামা সম্ভব।
২০“বেশ সুন্দর দেখায়” এখানে লেখিকা কোন্ দৃশ্যের কথা বলেছেন?
উত্তর : হিমালয়ান রেলগাড়ির ছোটো গাড়িগুলি খেলনার মত বেশ সুন্দর, লেখিকা বেগম রোকেয়া সেই দৃশ্যের কথা বলেছেন।
২১‘সহসা নদী বলিয়া ভ্রম জন্মে।–নদী বলে কাকে ভ্ৰম জন্মায়?
উত্তর : নীচে উপত্যকায় নির্মল শ্বেত কুয়াশা দেখে লেখিকা বেগম রোকেয়ার ভ্ৰম জন্মায়।
২২“একথা সহসা বিশ্বাস হয় কি?” কোন্ কথা বিশ্বাস কৱাৱ কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর : রেলপথ থেকে দৃশ্যমান জলপ্রপাতের মধ্যে কোন একটি বিশালকায় জাহ্নবীর উৎস, এ কথা বিশ্বাস করার কথা বলা হয়েছে।
২৩ পার্বত্য অঞলে নির্ভয়ে বেড়াতে পাৱাৱ কথা লেখিকা কেন বলেছেন?
উত্তর : পার্বত্য অঞলে লেখিকা বেগম রোকেয়া নির্ভয়ে বেড়াতে পারার কথা বলেছেন, কারণ কারসিয়াং- এর বনে বাঘ নেই।
২৪ কাৱসিয়াং–এর ভুটিয়া মেয়েৱা জোককে ভয় পায় না কেন?
উত্তর ; ভয় পায় না, কারণ জোঁক ক্ষতি করে না, রক্ত শোষণের কাজ শেষ হলে চলে যায়।
২৫ভুটিয়া মেয়েদের পোশাক কেমন?
উত্তর ; পোশাক হল পরনে সাত গজ কাপড়ের ঘাঘরা, কোমরে টুকরো কাপড় জড়ানো, গায়ে জ্যাকেট, মাথা ঢাকা বিলিতি শালে।
২৬ ভুটিয়ারা নিজেদেৱ কী বলে পরিচয় দেয় আর পাহাড়ের নীচের মানুষদেৱ কী বলে?
উত্তর : ভুটিয়ানিরা নিজেদের পাহাড়নি’ বলে পরিচয় দেয় আর পাহাড়ের নীচের মানুষজনকে বলে ‘নীচেকা আদমি’।
২৭ ভুটানি মেয়েরা কীৱকম স্বভাবের মেয়ে?
উত্তর : ভুটানি মেয়েরা শ্রমশীলা, কার্যপ্রিয়, সাহসী ও সত্যবাদী স্বভাবের।
২৮ ভুটানি মেয়েরা কী কাৱণে সদগুণরাজি হাৱাচ্ছে ?
উত্তর : ভুটানি মেয়েরা ‘নীচেকা আদমি’-দের সঙ্গে মেলামেশার ফলে ক্রমশ তাদের সদ গুনরাজি হারাচ্ছে।
২৯ ভুটানি রমণীরা কীভাবে নীচেকা আদমি’ দেৱ কাছ থকে অসৎ বিষয় শিখছে ?
উত্তর : ভুটানি রমণীরা নীচেকা আদমি’-দের কাছ থেকে শিখছে বাজারের পয়সা চুরি করা ও দুধে জল মেশানো।
৩০ বড় ঝরনাৱ কল্লোল গীতি শুনে ঈশ্বৱভক্তিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে লেখিকা কী বলতে চাইলেন?
উত্তর : লেখিকা বলতে চাইলেন যে, প্রবহমান নির্ঝরের মত প্রাণটাও ঈশ্বরের পদপ্রান্তে কেন লুটিয়ে পড়ে না।
৩১ পাহাড়ে এসে লেখিকা কী মনে করছেন?
উত্তর : পাহাড়ে এসে লেখিকা নিজেকে সুখী ও ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ মনে করছেন।
৩ নম্বরের প্রশ্ন- উত্তর
১। বেগম রোকেয়ার অনুসরণে শিলিগুড়ি থেকে কারসিয়াং যাত্রাপথের বর্ণনা দাও।
উঃ বেগম রোকেয়ার রচিত ‘ হিমালয় দর্শন’ লেখ্য থেকে জানতে পারি যে তিনি দার্জিলিং চলেছেন। এখানে তিনি শিলিগুড়ি থেকে কারসিয়াং যাত্রাপথের অপরূপ বর্ননা দিয়েছেন। লেখিকা হিমালয়ান রেলওয়ের টয়ট্রেনে চড়ে পাহারে উঠছেন। পাহাড়ের আঁকিবুঁকি রাস্তা চিরে , মেঘের মধ্যে দিয়ে ‘কটাটটা’ শব্দ করতে করতে রেলগাড়ি এগিয়ে চলেছে। পথের দুই ধারের মনোরম দৃশ্য লেখিকার মন ছুয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ের চুড়ো, নীচে নেমে যাওয়া উপত্যকার পাশাপাশি চারিপাশের লতা, ঘাসপাতা ইত্যাদিও লেখিকার মনোরম লাগছে। এসবের মধ্যে বিশেষ ভাবে লেখিকার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে পাহাড়ি ঝর্ণা বা জলপ্রপাত। যান্ত্রিক কারণে ট্রেন একটি জলপ্রপাতের সামনে থামলে লেখিকা মন ভরে তার শোভা পর্যবেক্ষণ করেন। এভাবেই তিনি পাহাড়ের মায়াবী রাজ্যের মধ্যে দিয়ে নিজের গন্তুব্যস্থলে পৌঁছান।
২। বাসায় পৌঁছানোর বেগম রকেয়া কি অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বুঝিয়ে বলো।
বা
কাৱসিয়াং–এর বাসায় লেখিকা কিছু সময়ের – জন্য গৃহসুখ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন কেন এবং এ ব্যাপারে তাঁর অভিজ্ঞতাই বা কী?
উঃকারসিয়াং রেলস্টেশনে নেমে লেখিকা বেগম রোকেয়া কিছুটা দূরে বাসায় পৌঁছেছিলেন। ভুল করে তাঁদের আসবাবপত্রের ট্রাংক দার্জিলিং-এর ঠিকানায় চলে যাওয়ায় তাঁরা কিছু সময় গৃহসুখ থেকে বঞ্চিত হন। অবশ্য সন্ধ্যার গাড়িতে ট্রাংকগুলি ফিরে আসে। তখন সেগুলি যথারীতি বাসায় পৌঁছায়। লেখিকা তারপর গৃহসুখ অনুভব করতে পারেন। লেখিকার মনে হয়, তাঁরা দার্জিলিং যাওয়ার আগে তাঁদের জিনিসপত্র দার্জিলিং-এর বায়ু সেবন করে নিজেদের চরিতার্থ করে। এই ঘটনা থেকে লেখিকার অভিজ্ঞতা হল যে, কেবল বাস করার আশ্রয় পেলেই বাস করা সুখের হয় । প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসবাব সরঞ্জাম থাকলে তবেই গৃহে সুখপ্রাপ্তি পূর্ণতা পায় ।
৩। “ইহাদেৱ এই তামাশা দেখিতেই আমার সময় অতিবাহিত হয়।–“ইহাদেৱ’ বলতে কী? তাদেৱ তামাশাৱ বর্ণনা দাও।
উত্তর: ‘ইহাদের’ বলতে বায়ুভরে ইতস্তত ছুটে বেড়ানো মেঘেদের কথা বলা হয়েছে।
কারসিয়াং-এর বাতাস যেমন পরিষ্কার তেমনি হালকা। বাতাস আর মেঘের লুকোচুরি খেলা দেখতে চমৎকার লাগে। মেঘ একদিকে থাকে আর বাতাস থাকে তার উলটো দিকে। যেই বাতাস ধেয়ে এল, অমনি মেঘখণ্ড তাড়া খেয়ে চলতে লাগল। প্রতিদিন বেলা শেষে ওই পার্বত্যদেশে অপূর্ব দৃশ্যের ছবি তৈরি হয়। অস্তগামী সূর্য বাতাস আর মেঘ নিয়ে অতি মনোহর সৌন্দর্যের রাজ্য গড়ে তোলে। অস্তমান সূর্য পশ্চিম আকাশের গায়ে পাহাড়ে যেন তরল সোনা ঢেলে দেয়। মেঘগুলি গায়ে সেই সোনা রং মেখে এখানে-ওখানে ছোটাছুটি করতে থাকে। লেখিকার মনে হয় এ যেন বিচিত্র তামাশা। মেঘ ও বাতাসের ওই বিচিত্র তামাশা দেখে লেখিকা সময় অতিবাহিত করেন।
৪। ‘পাহাড়নি‘ এবং‘নিচেকা আদমি‘ কারা? তাদের সম্পর্কে লেখিকা যা বলেছেন তা বুঝিয়ে বল?
উঃ লেখিকা বেগম রোকেয়া পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে সেখানকার স্থানীয় ভুটিয়া মহিলাদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন। এই ভুটিয়া সম্প্রদায়ের মহিলারা নিজেদের ‘পাহাড়নি’ ও সমতল থেকে আসা মানুষদের ‘নীচেকা আদমি’ বলেন।
লেখিকাদের ভুটিয়া চাকরাণীর নাম ছিল ভালু। তাকে পর্যবেক্ষণ করে লেখিকা ‘পাহাড়নি’-দের সম্পর্কে যা উপলব্ধি করেছেন তা হল- তারা অত্যন্ত সাহসী, পরিশ্রমী ও সৎ। তারা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পরিশ্রম করতে পারে এবং বেঁচে থাকার জন্য তারা পুরুষদের উপর নির্ভরশীল নয়। তবে সমতলের মানুষদের সঙ্গদোষে তারা তাদের সদগুণগুলি হারিয়ে ফেলছে। অল্প চুরি, অসততা ও মিথ্যে কথা বলা সিখে ফেলছে তারা।
৫। ‘এসব কথা মুখে উচ্চারণের প্রয়োজন হয় না।‘ কোন কথার কথা বলা হয়েছে? তা মুখে উচ্চারণের প্রয়োজন হয় না কেন?
উঃ লেখিকা পাহাড়, ঝর্ণা, শ্যামল প্রকৃতির রূপে বিভোর হয়ে যান এবং সেই সময় তার স্রষ্টার কথা মনে পড়ে। তার মনে হয় যে মহা শিল্পী এত চমৎকার চিত্র অঙ্কন করতে পারেন তার নৈপুণ্য কল্পনাতীত। তিনি ভাবেন যে আমাদের চোখে এই হিমালয় কি বিপুল ও বিশাল , কিন্তু মহাবিশ্বের সৃস্তিকর্তার কাছে তা এক কণা বালির তুল্য। তাই যার সৃষ্টি এত সুন্দর তার উপাসনা করার সময় মন প্রাণ আপনিই আবেগে বিগলিত হয়ে যায়। তাই প্রকৃতির কাছে এলে, প্রকৃতির রূপ উপলব্ধি করলে মন আপনা থেকেই ঈশ্বরের জয়ধ্বনি করে, আলাদা করে কোন প্রার্থনা বাক্য উচ্চারণের প্রয়োজন হয় না।
৬। হিমালয় দর্শনের বেরিয়ে বেগম রোকিয়া যে স্থানীয় জনজীবনের পরিচয় পেয়েছিলেন তার বর্ণনা দাও।
উঃ লেখিকা হিমালয় দর্শণে এসে সেখানকার সাধারণ মানুষের সঙ্গস্পর্শে এসেছিলেন। লেখিকাদের ভুটিয়া চাকরাণীর নাম ছিল ভালু। তারা সাত গজ লম্বা কাপড় ঘাঘরার মতো করে পরে, কোমরে একখণ্ড কাপড় জড়ানো থাকে, গায়ে জ্যাকেট এবং বিলাতি শাল দ্বারা মাথা ঢাকে। তারা অত্যন্ত সাহসী ও পরিশ্রমী। পিঠে দুই এক মন বোঝা নিয়ে অনায়াসে বন্ধুর পাহাড়ি পথ বেয়ে ওঠে। তারা উদরান্নের জন্য পুরুষদের প্রত্যাশী নয়; সমভাবে উপার্জন করে । বরং অধিকাংশ স্ত্রীলোকদিগকেই পাথর বয় যা পুরুষদের তুলনায় বেশি।ভুটিয়ানিরা ‘পাহাড়নি’ বলে নিজেদের পরিচয় দেয়।স্বভাবত তারা শ্রমশিলা, কার্যপ্রিয়, সাহসী ও সত্যবাদী । .
৭‘এখন সে সাধও পূর্ণ হইল।’—কী সাধ কীভাবে পূর্ণ হল?
উঃ লেখিকার সাধ হল হিমালয় দর্শনের সাধ। তিনি বঙ্গোপসাগর দেখেছেন। তাতে তাঁর সাগর দেখার সাধ পূর্ণ হয়েছে। তবে অপূর্ণ থেকেছে পাহাড় দেখার সাধ। সৌভাগ্যবশত হিমালয় দর্শনের সুযোগ এসে যায়। লেখিকা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যথাসময়ে শিলিগুড়ি স্টেশনে এসে যান। হিমালয়ান রেলগাড়ি চড়ে রওনা হওয়ায় তাঁর পাহাড় দেখার অপূর্ণ সাধ পূর্ণ হওয়ার পথে এগিয়ে চলে। কারসিয়াং-এর বাসায় অবস্থানকালে সেই সাধ পূরণের কথা তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন।
৮. ‘প্রাণটাও কেন ঐ নিঝৱেৱ ন্যায় বহিয়া গিয়া পরমেশ্বৱেৱ চৱণপ্রান্তে লুটাইয়া পড়ে না? –উদ্ধৃতিৱ প্রসঙ্গ নির্দেশসহ তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
: কারসিয়াং-এ লেখিকা বেগম রোকেয়ার বাসা থেকে মাইলখানেক দূরে একটা বড়োসড়ো ঝরনা ছিল। বাসা থেকে ওই ঝরনার দুধের মত সাদা দেখাত। স্রোতের কলগীতি দিনরাত্তির লেখিকার কানে আসত। ওই কল্লোল গীত শুনে ঈশ্বরের প্রতি লেখিকার ভক্তির আবেগ ও উচ্ছ্বাস দু-তিন গুণ বেগে প্রবাহিত হত।তার মনে প্রশ্ন জাগত ওই নিঝরের প্রবাহিত জলধারার মত প্রাণ কেন ধাবিত হয়ে ঈশ্বরের চরণপ্রান্তে লুটিয়ে পড়ছে না। এখানে বেগবান জলধারার সঙ্গে প্রাণের এবং ভূমিতলে পতিত জলধারার সঙ্গে ঈশ্বরের চরণে লুটিয়ে পড়া প্রাণের তুলনা করা হয়েছে।
বড় প্রশ্ন
লেখিকা বেগম রোকেয়াৱ লেখা ‘হিমালয় দর্শন’ রচনাৱ ভ্রমণবৃত্তান্ত অনুসৱণে পাহাড়ের প্রকৃতির বর্ণনা কর।
উত্তর: সুখ্যাত লেখিকা বেগম রোকেয়ার ‘হিমালয় দর্শন’ রচনায় পাহাড়ের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন। লেখিকাদের শিলিগুড়ি রেলস্টেশন থেকে কারসিয়াং পর্যন্ত হিমালয়ান রেলগাড়িতে ভ্রমণবৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘পথের দুই ধারে মনোরম দৃশ্য—কোথাও অতি উচ্চ চূড়া, কোথাও নিবিড় অরণ্য’ পার্বত্য অঞ্চলে অরণ্য প্রকৃতির বিশেষ ভূমিকা আছে।ভ্রমণযাত্রী লেখিকার চোখে ‘তরু, লতা, ঘাস, পাতা, সকলই মনোহর। নিবিড় শ্যামল বন যেন ধরিত্রীর কেশপাশ, আর তার মাঝ দিয়ে পায়ে হাঁটা পথ যেন আঁকাবাঁকা সিঁথি।
কারসিয়াং-এ থাকার এ সময় প্রকৃতির সঙ্গে লেখিকার সরাসরি পরিচয় হয়। বাতাস আর মেঘের লুকোচুরি খেলা দেখতে চমৎকার লাগে। অস্তগামী সূর্য বাতাস আর মেঘ নিয়ে অতি মনোহর সৌন্দর্যের রাজ্য গড়ে তোলে। অস্তমান সূর্য পশ্চিম আকাশের গায়ে পাহাড়ে যেন তরল সোনা ঢেলে দেয়। মেঘগুলি গায়ে সেই সোনা রং মেখে এখানে-ওখানে ছোটাছুটি করতে থাকে। ২০/২৫ ফুট উঁচু ঢেঁকি গাছ দেখে তাঁর ভারী আনন্দ হয়। কারসিয়াংএর কোনো কোনো জায়গায় খুব ঘন বন দেখেন। বনে বেড়ানো ছিল বেশ নির্ভয়। কারণ ওই বনে বাঘ নেই। লেখিকা পাহাড়, ঝর্ণা, শ্যামল প্রকৃতির রূপে এতটাই বিভোর হয়ে যান যে তার স্রষ্টার কথা মনে পড়ে। তার মনে হয় যে মহা শিল্পী এত চমৎকার চিত্র অঙ্কন করতে পারেন তার নৈপুণ্য কল্পনাতীত।
Click Here To Download The Pdf
Very very Thanks you🙂🙂🙂🙂
Thanks a lot
My name ujjwal