মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
দশম শ্রেনী
ইতিহাস(পার্ট- ৪)
১ ‘ক’ – স্তম্ভের সাথে ‘খ’ – স্তম্ভ মেলাও
ক স্তম্ভ | খ স্তম্ভ |
ক) নিম্নবর্গের ইতিহাস | (iii) রনজিৎ গুহ |
খ) লক্ষ্মীর ভাণ্ডার | (i) সরলাদেবী চৌধুরানি |
গ) অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন | (ii) ডিরোজিও |
২ সত্য বা মিথ্যা নির্ণয় করো
(ক) সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। মিথ্যা
(খ) “সর্বধর্ম সমন্বয়’-এর আদর্শ প্রচার করেছিলেন রামকৃষ্ণু পরমহংসদেব। সত্য
(গ) সুই মুন্ডা ছিলেন কোল বিদ্রোহের নেতা। সত্য
৩।দুটি বা তিনটি বাক্যে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
(ক) ইন্টারনেট ব্যবহারের দুটি সুবিধা লেখ।
উঃ কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ইন্টারনেট বলা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে বর্তমান যুগে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে। তাই বর্তমান যুগকে তথ্য-বিস্ফোরণের যুগ’ বলা হয়। ইন্টারনেটের সাহায্যে ইতিহাসের অনেক তথ্য পাওয়া যায় তবে ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের যেমন সুবিধা আছে তেমনি বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে।
দুটি সুবিধাঃ-
- i) তথ্যের সহজলভ্যতা : ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসে দেশ-দুনিয়ার অসংখ্য তথ্য নিমেষের মধ্যে জানা যায়। ইন্টারনেট থেকে সহজে বহু তথ্যসংগ্রহ করে ইতিহাস রচনা করা যায়।
- ii) সময় সাশ্রয় :বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বই বা অন্য উৎস থেকে তথ্যসংগ্রহ করা প্রচুর সময়সাপেক্ষ। কিন্তু ইন্টারনেটের সাহায্যে অল্প সময়ে প্রচুর তথ্যসংগ্রহ করা যায়।
(খ) ডেভিড হেয়ার কেন স্মরণীয়?
উঃ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে যে কয়েকজন ইউরোপীয়-এর কাছে ভারতবাসীকে চিরকৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ থাকতে হয় তাদের মধ্যে মানবতাবাদী, ভারত প্রেমিক স্কটল্যান্ড নিবাসী ঘড়ি ব্যবসায়ী ডেভিড হেয়ার অন্যতম।তিনিই প্রথম কলকাতায় একটি আধুনিক ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের কথা চিন্তা করেন।এরই ফলশ্রুতিতে 1817 খ্রিস্টাব্দের 20 জানুয়ারি স্থাপিত হয় হিন্দু কলেজ। বর্তমানে এটি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত। এছাড়াও ডেভিড হেয়ার স্কুল বুক সোসাইটি ,ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি এবং হেয়ার স্কুল প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। নারী শিক্ষার প্রসারে তিনি যথেষ্ট উৎসাহী ছিলেন। তাঁরই আন্তরিক প্রচেষ্টায় কলকাতায় কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের মাধ্যমে আধুনিক ভারত গড়ার জন্য তাঁর অবদান অপরিসীম। তাই সাধারণ মানুষের কাছে ইংরেজি শিক্ষার জনক’ রূপে ডেভিড হেয়ার স্মরণীয়।
(গ) বারাসাত বিদ্রোহ’ কী ?
উঃ বারাসাত বিদ্রোহঃ- জমিদার, নীলকর ও কোম্পানির কর্মচারিদের শাসন, শোষণ, অত্যাচার ও বাড়তি করের বিরুদ্ধে তিতুমির বিদ্রোহী হন। চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাতের নারকেলবেড়িয়া গ্রামে তিনি একটি বাঁশেরকেল্লা বা দুর্গ নির্মাণ করে এর বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ ঘোষণা করেন। ইংরেজদের গোলায় তার বাঁশের কেল্লা ধ্বংস হয়। 1831 খ্রিস্টাব্দের 19 নভেম্বর যুদ্ধে তিনি নিহত হন। ইতিহাসে এটি বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
৪।প্রাচ্য–পাশ্চাত্য শিক্ষা বিষয়ক দ্বন্দ্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ– ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতবাসীর শিক্ষার উন্নতিকল্পে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা ব্যয়ের নির্দেশ দান করেন। কিন্তু এই টাকা কীভাবে ব্যয় করা হবে তার সুনির্দিষ্ট নির্দেশ ছিল না। তাই এক গোষ্ঠী প্রাচ্য শিক্ষার জন্য এবং অপর গোষ্ঠী পাশ্চাত্য শিক্ষার জন্য দাবি তোলেন। প্রামা শিক্ষার সমর্থকরা প্রাচ্যবাদী বা ওরিয়েন্টালিস্ট এবং পাশ্চাত্য শিক্ষার সমর্থকরা পাশ্চাত্যবাদী বা অ্যাংলিসিস্ট নামে পরিচিত। ইতিহাসে এটি ‘প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব’ নামে পরিচিত।
মিশনারি ও ভারতীয় বুদ্ধিজীবীকাদের দাবি : ভারতে ইংরেজ মিশনারিরা প্রথম থেকেই ইংরেজি শিক্ষা প্রবর্তনের ব্যাপারে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, তাঁরা মনে করেন ভারতীয়রা ইংরাজি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে হিন্দুরা তাদের ধর্মের অসারতা বুঝতে পারবে এবং তারা খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হবে অপরদিকে ভারতীয়দের বুদ্ধিজীবীরা মনে করেন ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হলে গৌরা হিন্দুরা কুসংস্কার ও কুপ্রথা মুক্ত হয়ে মনুষ্যত্ব লাভ করবে।
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ : ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদে ভারতে শিক্ষাখাতে ব্যয় করার জন্য এক লক্ষ টাকা ধার্য করা হয় এর পর জনশিক্ষার ব্যাপারে নির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু হয়।
রামমোহনের অভিমত : রামমোহন চেয়েছিলেন সনদ আইনে বরাদ্দ টাকা এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ব্যয় হোক এ ব্যাপারে তিনি লর্ড আমহাস্টকে একটি পত্রে তার মত জানিয়েছিলেন। অবশেষে প্রাচ্য না পাশ্চাত্য–কোন্ খাতে টাকা ব্যয় করা হবে তা নিয়ে দ্বন্দ্বের সূচনা ঘটে।
মেকলে মিনিটঃ– ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি জনশিক্ষা মিটির সভাপতি স্যার টমাস ব্যাবিংটন মেকলে গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের কাছে এক স্মারকলিপি পেশ করেন। এটি মেকলে মিনিট’ নামে পরিচিত। এতে পাশ্চাত্য শিক্ষার জন্য সরকারি অর্থব্যয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সরকারি শিক্ষানীতিঃ– প্রাচ্যবাদীদের বি্রোধিতা সত্ত্বেও বেন্টিঙ্ক ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ মার্চ এক নির্দেশিকায় পাশ্চাত্য শিক্ষার জন্য সরকারি অর্থব্যয়ের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। এর ফলে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য । দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে।
উপসংহারঃ– ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাপদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে ইউরোপের উদার নীতিবাদ, নবজাগরণ, ফরাসী বিপ্লব ও সেখানকার মনিষীদের রচনা পড়ে শিক্ষিত ভারতীয়রা জাতীয় চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে।