হাওয়ার গান
বুদ্ধদেব বসু
প্রশ্ন ও উত্তর
https://youtu.be/D_xEoby0aPo
হাতে কলমে
১.১ বুদ্ধদেব বসু রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উঃ বুদ্ধদেব বসু রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘বন্দীর বন্দনা’ ও ‘কঙ্কাবতী।
১.২ তিনি কোন পত্রিকা সম্পাদনা করতেন ?
উঃ বুদ্ধদেব বসু কল্লোল পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।
২ নীচের প্রশ্নগুলির একটি/দুটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১ দুর্বার ইচ্ছায় হাওয়া কী কী ছুঁয়ে গেছে ?
উঃ দুর্বার ইচ্ছায় হাওয়া পৃথিবীর সমস্ত জল ও তীরকে ছুঁয়ে গিয়েছে।
২.২ তার কথা হাওয়া কোথায় শুধায় ?
উঃ তার কথা হাওয়া জলে, স্থলে, তীরে তীরে পাহাড়ে, বন্দরে, নগরের ভিড়ে, অরণ্যে, প্রান্তরে, পার্কের বেঞে, ঝরাপাতায়, দেয়ালে, শার্সিতে, চিমনির নিস্বনে এবং কাননের ক্রন্দনে শুধায়।
২.৩ মাস্তুলে দীপ জ্বলে কেন ?
উঃ জাহাজ যেহেতু অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে চলাচল করে, তাই অন্যদের কাছে তার উপস্থিতির কথা জানাতে মাস্তুলে দীপ জ্বালিয়ে রাখা হয়।
২.৪ পার্কের বেঞ্চিতে আর শার্সিতে কাদের উপস্থিতির চিহ্ন রয়েছে ?
উঃ পার্কের বেঞ্চিতে ঝরা পাতার এবং শার্সিতে দেয়ালের পঞ্জরের উপস্থিতির চিহ্ন রয়েছে।
২.৫ নিশ্বাস কেমন করে বয়ে গেছে ?
উঃ নিশ্বাস সমস্ত দিন- রাতের বুক-চাপা কান্নায় উত্তাল হয়ে অস্থিরভাবে বয়ে গিয়েছে।
৩ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখ :
৩.১ হাওয়ার চোখে ঘরের যে ছবি পাওয়া যায়, কবিতা অনুসরণে লেখ।
উঃ কবি বুদ্ধদেব বসুর ‘হাওয়ার গান’ কবিতায় হাওয়াকে এক জীবন্ত স্বত্ত্বা দিয়েছেন। সে যখন ঘরে উঁকি মারে তখন এক একটি সুন্দর মনোরম ছবি দেখতে পায়। সেখানে দোলনায় একটি সুন্দর শিশু ঘুমিয়ে আছে। কার্পেটের উপর আবছা অন্ধকারে এক কুকুর ঘুমিয়ে রয়েছে। সাধারন জীবনের নরম স্বপ্ন যেন মোমের স্নিগ্ধ আলো হয়ে সুখি গৃহকোণটিকে ঘিরে রেখেছে।
৩.২ সমুদ্রের জাহাজের চলার বর্ণনা দাও।
উঃ সমুদ্রে চলাচল করা যাত্রীবাহী জাহাজের মাস্তুল থেকে রাতে দীপ জ্বালানো হয় যাতে অন্ধকারে অপর জাহাজ এসে তাতে ধাক্কা না দেয়। জাহাজের যাত্রীরা অবসর সময় কাটানোর জন্য সিনেমা হলে ছায়াছবি দেখতে থাকে, কেউ বা জাহাজে নাচ ও গানের আসরে মত্ত হয়। অবশেষে রাত বাড়লে যাত্রীরা নিদ্রামগ্ন হয়। জাহাজ তার নির্জন ডেক নিয়ে হাওয়ায় ভেসে রাতের সমুদ্রে সামনের দিকে এগিয়ে চলে ।
৩.৩ পৃথিবীর কোন্ কোন্ অংশে হাওয়া ঘুরে বেড়ায় লেখ।
উঃ পৃথিবীর সমস্ত জলাশয়, সমুদ্র তীর, গম্ভীর পাহাড়, অসংখ্য বন্দর, শহরের জনবহুল অঞল, বনজঙ্গল, খোলা মাঠ বা তেপান্তর সর্বত্রই হাওয়ারা ঘুড়ে বেড়ায়। তারা পার্কের বেঞ্চিতে শুকনো পাতা উড়িয়ে জালনার শার্সি কাঁপিয়ে, কখনো বা চিমনিতে হাহাকার তুলে অথবা বাগানের কেঁদে কেঁদে ঘুরে বেড়ায়। হাওয়া মিষ্টি শিশুকে দোলনায় দোল দিয়ে, ঘুমন্ত কুকুরের পাশ দিয়ে জাহাজের মাস্তুলে , নির্জন ডেকে , সমুদ্রে গর্জন তুলে ঘুরে বেড়ায় ।
৪ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর বিশদে লেখো :
৪.১ হাওয়াদের কী নেই ? হাওয়ারা কোথায়, কীভাবে তার খোঁজ করে ?
উঃ বুদ্ধদেব বসুর লেখা ‘হাওয়ার গান কবিতায় হাওয়াদের কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই অর্থাৎ, তাদের কোন বাড়ি নেই।
হাওয়াদের বাড়ি না-থাকায় তারা পৃথিবীর সমস্ত জলাশয়, সমুদ্র তীর, গম্ভীর পাহাড়, অসংখ্য বন্দর, শহরের জনবহুল অঞল, বনজঙ্গল, খোলা মাঠ বা তেপান্তর সর্বত্রই ঘুরে বেড়ায়। তারা পার্কের বেঞ্চিতে শুকনো পাতা উড়িয়ে জালনার শার্সি কাঁপিয়ে, কখনো বা চিমনিতে হাহাকার তুলে অথবা বাগানে কেঁদে কেঁদে তাদের স্থায়ী ঠিকানা খুঁজে বেড়ায়।হাওয়া মিষ্টি শিশুকে দোলনায় দোল দিয়ে, ঘুমন্ত কুকুরের পাশ দিয়ে বয়ে, জাহাজের মাস্তুলে , নির্জন ডেকে , সমুদ্রে গর্জন তুলে ঘরের সন্ধানে মত্ত হয়। তারা চিরকাল বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ায় আর বাড়ির খোঁজ করে।
৪.২. “চিরকাল উত্তাল তাই রে”-কে চিরকাল উত্তাল ? কেন সে চিরকাল উত্তাল হয়ে রইল ?
উঃ বুদ্ধদেব বসুর ‘হাওয়ার গান’ কবিতায় প্রশ্নোক্ত উক্তিটি নেওয়া হয়েছে। এখানে হাওয়ারা চিরকাল উত্তাল সেকথা বলা হয়েছে।
হাওয়াদের কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই অর্থাৎ, তাদের কোন বাড়ি নেই। পৃথিবীর আদিকাল থেকে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ দিনের শেষে থিতু হবার ও শান্তিতে নিদ্রা যাবার মতো কোন নিশ্চিন্ত আশ্রয় তাদের নেই। এই বিশ্বের কোণায় কোণায় তাদের আনাগোনা, কিন্তু এত সন্ধানের পরেও তারা স্থির হওয়ার মতো কোন স্থান খুঁজে পাই নি এবং চিরকাল তাদের এই ভাবেই ঘুরে মরতে হবে। এই হতাশাতেই হাওয়া উত্তাল হয়ে সর্বত্র গর্জন করে ঘুরে বেড়ায়।
৪.৩ কবিতাটির নাম ‘হাওয়ার গান’ দেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী যুক্তি কবির মনে এসেছিল বলে তোমার মনে হয় ?
উঃ কবি বুদ্ধদেব বসু কবিতাটির নাম রেখেছেন ‘হাওয়ার গান’। কোনো সাহিত্যখন্ডের নাম তার বিষয়বস্তু বা অন্তরনিহিত ভাবকে নির্দেশ করে ।এই নামকরণ করার পিছনে যে-সমস্ত যুক্তি কবির মনে এসেছিল সেগুলি হল-
প্রথমত : কবিতাতে হওয়াদের এক জীবন্ত স্বত্ত্বায় কল্পনা করা হয়েছে যারা “আমাদের” বলে নিজের পরিচয় দিয়েছে। তারা সমস্ত পৃথিবী ঘুরে নিজেদের বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছে, আর তাদের হাহাকার যেন কোনো বিলাপের সুর।
দ্বিতীয়ত : হাওয়ারা পার্কের বেঞ্চিতে শুকনো পাতা উড়িয়ে জালনার শার্সি কাঁপিয়ে, কখনো বা চিমনিতে হাহাকার তুলে অথবা বাগানের কেঁদে কেঁদে ঘুরে বেড়ায়। তাদের শনশন শব্দ, গর্জন আসলে গানের সুরের মতোই ধ্বনিত হয়েছে।
তৃতীয়ত : হাওয়াদের যে বাড়ি নেই, সেই কথাটিকে তারা কবিতার মধ্যে দু-বার বলেছে, গানের সঞ্চারীর মতো করে। তাদের বেদনাতুর হৃদয়ের কান্নাই আসলে হাওয়ার গান।
৫নীচের পঙক্তিগুলির মধ্যে ক্রিয়াকে চিহ্নিত কর এবং অন্যান্য শব্দগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক দেখাও :
৫.১ ঘরে ঘরে জ্বলে যায় স্বপ্নের মৃদু মোম
জ্বলে যায় = ক্রিয়াপদ। ‘ঘরে ঘরে’ শব্দদ্বয়ের সঙ্গে তার ‘অধিকরণ কারকগত’ সম্পর্ক এবং মৃদু মোম’ শব্দদ্বয়ের সঙ্গে তার ‘কর্মকারকগত সম্পর্ক।
৫.২ আঁধারে জাহাজ চলে।
চলে = ক্রিয়াপদ। ‘আঁধারে’ শব্দটির সঙ্গে ‘অধিকরণ কারকগত সম্পর্ক এবং ‘জাহাজ’ শব্দটির সঙ্গে ‘কর্তৃকারকগত সম্পর্ক।
৫.৩ শার্সিতে কেঁপে–ওঠা দেয়ালের পঞ্জর।
কেঁপে ওঠা = ক্রিয়াপদ। ‘শার্সিতে’ শব্দটির সঙ্গে ‘অধিকরণ কারকগত’ সম্পর্ক। ‘পঞ্জর’ শব্দটির সঙ্গে কর্তৃকারকগত সম্পর্ক।
৫.৪ অকূল অন্ধকারে ফেটে পড়ে গর্জন।
ফেটে পড়ে = ক্রিয়াপদ। ‘অকূল অন্ধকারে’ শব্দদ্বয়ের সঙ্গে ক্রিয়ার ‘অধিকরণ কারকগত সম্পর্ক। ‘গর্জন’ শব্দটির সঙ্গে ক্রিয়ার ‘কর্তৃকারকগত সম্পর্ক।
৬ ‘বন্দর, বন্দর নগরের ঘন ভিড়‘—পঙক্তিটির প্রথমে একই শব্দ দুবার ব্যবহার করা হয়েছে। এই রকম আরও চারটি পঙক্তি উদ্ধৃত কর। কবিতার ক্ষেত্রে এই ধরনের শব্দ ব্যবহারের কৌশল অবলম্বনের কারণ কী ?
উঃ কবিতার মধ্যে একই শব্দ দুবার ব্যবহৃত হয়েছে এমন চারটি পঙক্তি হল—–
১. ছুঁয়ে গেছি বার-বার দুর্বার ইচ্ছায়।
২. ঘরে ঘরে জ্বলে যায় স্বপ্নের মৃদু মোম।
৩. কেঁদে কেঁদে মরি শুধু ভাইরে।
৪. খুঁজে খুঁজে ঘুরে ফিরি বাইরে।
কবিতার একই শব্দ পর পর দু-বার ব্যবহার করে কবিতার পঙক্তিকে শ্রুতিমধুর করা যায়, দুটি আলাদা অর্থ বোঝানো যায়। অনেক সময় একই শব্দ দুবার বসিয়ে অলংকার সৃষ্টি করা যায় ।
৭ ধ্বনি পরিবর্তনের দিক থেকে শূন্য অংশগুলি পূর্ণ করো :
চন্দ্র > চন্ন > চাঁদ
রাত্রি > রাত্তির
পঞ্জর > পাঁজর
৮ “হাওয়ার গান কবিতায় ব্যবহৃত পাঁচটি ইংরেজি শব্দ লেখো। এই শব্দগুলির বদলে দেশি/বাংলা শব্দ ব্যবহার করে পঙক্তিগুলি আবার লেখো।
It’s so good👍