মরশুমের দিনে
সুভাষ মুখোপাধ্যায়
১.১ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থটির নাম কী ?
উত্তর। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থটির নাম ‘পদাতিক’।
১,২ তার লেখা একটি গদ্যের বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর। তার লেখা একটি গদ্যের বইয়ের নাম ‘কাচা-পাকা’।
২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.২ ধান শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে?
উত্তর। ধান শব্দটি সংস্কৃত শব্দ ধান্য থেকে এসেছে।
২.২ অগ্রহায়ণ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর। অগ্রহায়ণ কথার অর্থ হল বছরের শুরু।
২.৩ এদেশের সমস্ত পালাপার্বণ, আনন্দ–উৎসব—এসবের মূলে কী রয়েছে?
উত্তর। এদেশের সমস্ত পালাপার্বণ, আনন্দ-উৎসব এসবের মূলে আছে চাষবাস।
২.৪ বসুধারা ব্রত কোন্ ঋতুতে হয়?
উত্তর। বসুধারা ব্ৰত এদেশে গ্রীষ্ম ঋতুতে হয়।
২.৫ মেঘকে নামাবার জন্য মেয়েরা দল বেঁধে ছড়া করে তাকে কী কী নামে ডাকে?
উত্তর। মেঘকে নামাবার জন্য মেয়েরা দল বেঁধে ছড়া করে কালো মেঘা, ফুলতোলা মেঘা, ধুলোট মেঘা, আড়িয়া মেঘা, হাড়িয়া মেঘা, কুড়িয়া মেঘা ইত্যাদি নাম ডাকে।
৩. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণ এবং বিশেষণ শব্দগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত কর :
মফসসল, বৎসর, খর, ব্রত, বিস্তর, পর্বত, ঝড়।
উত্তর।
বিশেষ্য বিশেষণ
মফসল মফসলীয়
বৎসর বাৎসরিক
বিস্তারিত বিস্তার
খরতা খর
ঝড় ঝোড়ো।
পর্বত পার্বত্য।
ব্রত ব্রতী
৪. নীচের বাক্যগুলি গঠনগতভাবে কোটি কী ধরনের লেখ (সরল/যৌগিক/জটিল) :
৪.১ গ্রামের যাত্রীরা নেমে নেমে যাবে মাঝরাস্তায়।
উত্তর। সরল বাক্য।
৪.২ সেখানে ঘাসের চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না, হঠাৎ চোখে পড়বে সেখানে যেন কে সবুজ জাজিম পেতে রেখেছে।
উত্তর। জটিল বাক্য।
৪.৩ আয় বৃষ্টি ঝেপে, ধান দেব মেপে।
উত্তর। সরল বাক্য।
৪.৪ খড় কিংবা টিনের চাল।
উত্তর। জটিল বাক্য।
৫. নীচের বাক্যগুলি থেকে শব্দ বিভক্তি এবং অনুসর্গ খুঁজে নিয়ে লেখ :
৫.১ কেউ এসেছিল দোকানের জন্য মাল তুলতে।
উত্তর। দোকানের জন্য—অনুসর্গ—“জন্য।
৫.২ বৃষ্টির ঝমঝম শব্দে অন্য সমস্ত আওয়াজ ডুবে যায়।
উত্তর। শব্দবিভক্তি-শব্দে-‘এ’ বিভক্তি।
৫.৩ সন্ধে নাগাদ উলু দিয়ে ব্রত শেষ হয়।
উত্তর। শব্দবিভক্তি-সন্ধে না ‘এ’। অনুসর্গ-‘দিয়ে।
৫.৪ ছেলেরা হই হই করে ছোটে আমবাগানে।
উত্তর। শব্দ বিভক্তি—আমবাগানে-‘এ’।
৬. পাঠ থেকে নিম্নলিখিত শব্দগুলির সমার্থক শব্দ খুঁজে লেখে ।
অম্বর, ধরা, মৃত্তিকা, প্রান্তর, তটিনী।
উত্তর। অম্বর—আকাশ। ধরা—পৃথিবী। মৃত্তিকা—মাটি। প্রান্তর—মাঠ, জমি, খেত। তটিনী—নদী।
৭. নীচের সমোচ্চারিত/প্রায়–সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দগুলির অর্থ লেখো :
ধোয়া—পরিষ্কার করা।
ধোঁয়া–বাম্প/ধূম।
বাধা–বন্ধন।
বাধা–বিপদ
জলে—পানিতে
জ্বলে—জ্বালা করে।
গায়ে—শরীরে।
গাঁয়ে—গ্রামে।
ঝরে—বিচ্যুত হয়ে।
ঝড়ে—প্রবলবেগে প্রবাহিত বায়ুতে।
৮. শব্দ বানানটিতে | চিহ্ন দাও :
উত্তর। ৮.১ মুহুর্ত/মূহূর্ত/মুহূর্ত।
৮.২ অগ্রহায়ন/অগ্রহায়ন/অগ্রহায়ণ/
৮.৩ বিলক্ষণ/বিলক্ষন/বিলখন
৮.৪ মরিচিকা/মরীচিকা/মরীটীকা।
৯. বেলা, ডাল, সারা, চাল—এই শব্দগুলিকে দুটি পৃথক অর্থে ব্যবহার করে দুটি করে বাক্য লেখো।
উত্তর। বেলা—(সৈকত)—সমুদ্র বেলায় ঝিনুক কুড়াতে ভালো লাগে।
বেলা—(সময়)—শীতকালে সকালবেলা ঘাসে শিশির জমে থাকে।
ডাল-(দানাশস্য বিশেষ)- ডাল চাল মিশিয়ে খিচুড়ি তৈরী হয়।
ডাল—(গাছের শাখা)—গাছের উঁচু ডালে একটি পাখি বসে আছে।
সারা—(সমস্ত)—সে সারাদিন ধরে কাজ করে,তার পরিশ্রম সফল হোক।
সারা—(সম্পন্ন করা)—তোমার কাজ সারা হলে আমরা খেলতে যাব।
চাল-(বাড়ির ছাউনি)—টিনের চাল রোদ পড়লে ঝকঝক করে।
চাল-(দানা শস্য) —বাজারে বিভিন্ন ধরনের চাল পাওয়া যায়।
১০. টীকা লেখ : মরীচিকা, বসুধারা, ব্ৰত, মেঘরানির কুলো, ভাদুলি।
উত্তর। মরীচিকা :মরীচিকা হচ্ছে একটি আলোকীয় অলীক ঘটনা। মরুভূমিতে সূর্যের প্রচণ্ড তাপে বালি খুব তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়। এখন এই উত্তপ্ত মরুভূমিতে দূরে কোনো গাছ থেকে আলোকরশ্মি পথিকের চোখে আসার সময় গাছের উল্টা বিম্ব দেখতে পায়। ফলে পথিকের চোখে মনে হবে আলোর প্রতিফলন হয়েছে। তার কাছে মনে হবে সামনে কোনো জলাশয় আছে এবং তাতে প্রতিফলন ঘটেছে। পথিকের কাছে এই জলাশয় দেখার ঘটনাই মরীচিকা।
বসুধারা ব্রত : গরমে যখন নদী, খাল-বিল, শুকিয়ে যায়, চারিদিকে জলের জন্য হাহাকার পড়ে যায়। মানুষ যখন, ছায়া খোঁজে, নদীর জল শুকিয়ে যায় তখন আকাশের কাছে জল চেয়ে বসুধারা ব্রত পালন করা হয়।
মেঘরানির কুলো : বৃষ্টির অভাব দেখা দিলে ‘মেঘরানির কুলো’ নামাবার প্রথা আছে। কুলো, জল ঘট নিয়ে চাষি ঘরের অল্পবয়সি মেয়েরা দলে দলে পাড়ায় বেরিয়ে পড়ে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে গান গায়। গান গেয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে তারা চাল, তেল, সিঁদুর পায়, কখনও দু চারটে পয়সা আর পান সুপারি পায়। দল বেঁধে তারা মেঘকে নানা নামে ডেকে তাকে তোয়াজ করে জল নামানোর জন্য।
ভাদুলি : বর্ষার শেষাশেষি মেয়েরা করে ভাদুলি ব্রত। মাটিতে আঁকে আল্পনা ; সাতসমুদ্র। তেরো নদী, নদীর চড়া, কাটার পূর্বত, বন, তেল, বাঘ, মোষ, কাক, বক, তালগাছে বাবুইয়ের বাসা।-এ ব্রত সেই দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন এদেশে সওদাগররা সাতডিঙা ভাসিয়ে সমুদ্রে বাণিজ্যে যেত। ব্রতের ছড়ায় আজও সে ছবি ধরা আছে।
১১, নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১১.১ বাস– ডিপোয় অপেক্ষামান যাত্রীদের ছবি কীভাবে পাঠাংশে ধরা পড়েছে?
উত্তর। বাস-ডিপোয় বাস দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রীরা বাসের ভিতরে নিজের নিজের জায়গায় হাতের জিনিস রেখে অনেকেই বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। চায়ের দোকানে বসে থাকা ড্রাইভারের দিকে নজর রেখে যাত্রীর দল কাছে পিঠে ঘুরতে থাকে।তারা গরমের সময় হাওয়া খায় ও শীতের সময় রোদ পোহায়।
১১,২ গ্রামের সঙ্গে শহরের যে এখনও নাড়ির টান’–এই নাড়ির টানের প্রসঙ্গ রচনাংশে কীভাবে এসেছে?
উত্তর। মাঠে ফসল উঠলে গ্রামের লোকেদের হাতে পয়সা আসে। তারা তকন নানা কাজে শহরে যায়। বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে, মামলার খোঁজ নিতে, পুজো দিতে,জিনিস কিনতে ও সিনেমা দেখতে তারা শহরে আসে ও বেশ কিছু অর্থ খরচ করে। এই ভাবেই গ্রামের লোকেদের হাত ধরে শহরের উকিল মোক্তার, ঘটক, ডাক্তারদের রোজগার হয়। বোঝা যায়যে গ্রামের সঙ্গে শহরের এক নাড়ীর যোগ রয়েছে।
১১.৩ ধানের সবচেয়ে বড় বন্ধু বৃষ্টি–বৃষ্টির সময়ে ধানখেতের ছবিটি কেমন? অন্য যে যে সময়ে ধান চাষ হয়ে থাকে, তা লেখ।
উত্তর। বৃষ্টি পড়লে ধানগাছের আনন্দের সীমা থাকে না। গাছগুলো বৃষ্টির জল পেয়ে বাড়তে থাকে। ধানখেত সবুজ বর্ণ ধারণ করে। সবুজ ধানগাছগুলি হাওয়ায় দুলতে থাকে, মাথা নুয়ে পড়ে। ধানগাছের সবুজ বর্ণ দেখে কৃষকের হৃদয় আনন্দে ভরে ওঠে।
বর্ষাকাল ছাড়াও গ্রীষ্মে আউশ ধান এবং শীতে বোরো ধানের চাষ হয়ে থাকে।
১১.৪ আগে বছর আরম্ভ হতে অগ্রহায়ণে’–এর সম্ভাব্য কারণ কী?
উত্তর। আগে বছর আরম্ভ হত অগ্রহায়ণে।কারন অগ্র মানে প্রথম হায়ণ মানে বছর। অগ্রহায়ণ মানে বছরের গোড়া। হায়ণ কথাটার আর এক মানে ফসল। মানুষ বছরের শুরুতে সৌভাগ্য কামনা করত বলে বছর অগ্রহায়ণ মাসে শুরু হত।
১১.৫ এদেশের যত পালা–পার্বণ, উৎসব–আনন্দ, সবকিছুরই মূলে রয়েছে চাষবাস।‘—বাংলার উৎসব–খাদ্য– সংস্কৃতির সঙ্গে চাষবাস কতটা জড়িত বলে তুমি মনে কর ?
উত্তর। বাংলা কৃষিপ্রধান দেশ। অধিকাংশ বাঙালি পরিবার কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। কৃষিজাত ফসল বিক্রি করে তারা তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনে। তাদের জীবিকানির্বাহ মূলত কৃষিজ ফসল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। তাই চাষের সঙ্গে তাদের উৎসব ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। ফসল কাটার উৎসব, ফসল বোনার উৎসব, বৃষ্টিকে আহ্বান জানানোর উৎসব তাই গ্রামে গঞ্জে নানা রূপে পালিত হয়।
১১.৬ শহর ছাড়লেই দু–পাশে দেখা যাবে’—শহরের চিত্রটি কেমন? তা ছাড়িয়ে গেলে কোন দৃশ্য দেখা যাবে?
উত্তর। শহর গ্রাম অপেক্ষা অনেক উন্নত জায়গা। সেখানে বড়ো-বড়ো বাড়ি, অফিস-আদালত, কোর্ট-কাছারি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, বড়ো বড়ো পাকা রাস্তা থাকে। নানারকম যানবাহন চলাচল করে। শহর ছাড়লেই দু-পাশে দেখা যাবে মাথার ওপর নীল আকাশ। বাস রাস্তার দুধারে বট, পাকুড়, শাল,সেগুনের গাছ। তার ডালে দৃষ্টি মাঝে মাঝে আটকে যাবে। কালো কুচকুচে বাঁকানো রাস্তা! মাঝে মাঝে বাঁক নিয়ে সোজা সামনে চলে গেছে।
১১.৭ এই রাস্তার ওপরই এক ভারি মজার দৃশ্য দেখা যায়’—মজার দৃশ্যটি কেমন, তা নিজের ভাষায় লেখ৷
উত্তর। গরমকালে চারিদিকে যখন প্রচণ্ড দাবদাহে রাস্তা তেঁতে ওঠে। রাস্তার ওপর দিয়ে বাস চলার সময় দূরে তাকিয়ে মনে হয় যেন জল চিকচিক করছে। আর সেই জল উলটো হয়ে পড়েছে দু-পাশের গাছের ছায়া বা সামনের গাড়ির ছায়া। কাছে এগিয়ে গেলে কোথাও জল বা গাছের ছায়া দেখা যাবে না। তা ঠিক মরুভূমির মরীচিকার মত যা ধরাছোঁয়ার বাইরে।।
১১.১০ ধান কাটার পর একেবারে আলাদা দৃশ্য’—এই দৃশ্যে কোন্ ঋতুর ছবি ফুটে উঠেছে? সেই ঋতু সম্পর্কে কয়েকটি বাক্যে একটি অনুচ্ছেদ রচনা কর।
উত্তর। এই দৃশ্যে গ্রীষ্ম ঋতুর ছবি ফুটে উঠেছে।
Click Here To Download The Pdf