এক ভূতুড়ে কান্ড
শিবরাম চক্রবর্তী
১.১ শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম কী?
উত্তর। শিবরাম চক্রবর্তীর পোশাকি নাম চঞ্চল।
১.২ তাঁর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর। তাঁর লেখা দুটি বিখ্যাত বইয়ের নাম ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ এবং ‘হাসির টেক্কা’।
২। নীচের বাক্যগুলি কী ধরনের (সরল/ যৌগিক/জটিল) তা নির্দেশ করে।
২.১ ভূত বলে কিছু আছে?
উত্তর। সরলবাক্য।
২.২ যেখানে সন্ধে সেইখানেই সাইকেলের টায়ার ফাসে।
উত্তর। জটিল বাক্য।
২.৩ একটা পরস্মৈপদী সাইকেল হাতে পেয়ে হুডুর দিকে পাড়ি জমিয়েছিলাম, কিন্তু মাইল খানেক না যেতে যেতেই তার একটা টায়ার ফেসে গেল।
উত্তর। যৌগিক বাক্য
২.৪ আমার টর্চবাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে প্রাণপণে ঘােরাতে লাগলাম।
উত্তর। সরলবাক্য।
২.৫ যেখানটায় ড্রাইভার, থাকবার কথা সেখানে কেউ নেই।
উত্তর। জটিলবাক্য।
৩. নীচের বাক্যগুলিতে কী কী অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়েছে লেখো :
৩.১ সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে।
উত্তরঃ- করে।
৩.২ কয়েক মিনিট বাদে সেখান থেকে নামলাম।
উত্তরঃ- থেকে।
৩.৩ তার চেয়ে বাঘের পেটের মধ্যে দিয়ে স্বর্গে যাওয়া ঢের শর্টকাট।
উত্তরঃ- চেয়ে, দিয়ে।
৩.৪ আপনা থেকেই আমার মুখ দিয়েই বেরিয়ে গেল।
উত্তরঃ- থেকেই, দিয়েই।
৪. নীচের বাক্যগুলিকে কর্তাখণ্ড ও ক্রিয়াখণ্ডে ভাগ করো :
৪.১ আসতে আসতে গাড়িটা আমার সামনে এসে পড়ল।
৪.২ দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভিতরে।
৪.৩ চিরদিনই আমি আশাবাদী।
৪.৪ এগিয়ে এস বললেন ভদ্রলোক।
উত্তর। কর্তাখণ্ড ক্রিয়াখণ্ড
৪.১ আসতে আসতে গাড়িটা আমার সামনে এসে পড়ল।
৪.২ দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভিতরে।
৪.৩ চিরদিনই আমি আশাবাদী।
৪.8 ভদ্রলোক এগিয়ে এসে বললেন।
৫. নীচের বাক্যগুলির মধ্যে থেকে সন্ধিবদ্ধ শব্দ বেছে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো।
৫.১ কিন্তু গাড়িটার থামবার কোনো লক্ষণ নেই।
উত্তর। কিন্তু – কিম্ + তু
৫.২ আমার পাশ কাটিয়ে যাবার দুর্লক্ষণ দেখে আমি মরিয়া হয়ে উঠলাম।
উত্তর। দুর্লক্ষণ = দ + লক্ষণ।
৫.৩ শেষ পর্যন্ত আস্তে আস্তে আসছিল গাড়িটা।
উত্তর। পর্যন্ত = পরি + অন্ত।
৫.৪ কাল সকালে উদ্ধার করা যাবে।
উত্তর। উদ্ধার = উৎ + হার।
৬.নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও :
৬.১ ‘সাইবেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে!’ লেখকের গন্তব্য কোথায়? সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে কেন?
উত্তর। লেখক শিবরাম চক্রবর্তীর গন্তব্যস্থল ছিল রাঁচির হুড্রু জলপ্রপাত।
মাইল সাতেক পথ অতিক্রম করার পর লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়।পথটা ছিল জন মানবহীন আর আশেপাশের অঞ্চল জঙ্গলাকীর্ণ ছিল। আরও পাঁচ মাইল গেলে তবে একটি গ্রামের দেখা মিলবে। কিন্তু এতটা পথ তিনি কীভাবে ফিরবেন সেটা বুঝতে পারছিলেন না। ফলে সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে।
৬.২ ‘যেখান বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়‘—প্রবাদটির মর্মার্থ কী? একই ভাব বোঝাতে তুমি আরেকটি প্রবাদ উল্লেখ করো।
উত্তর। যেখানে বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়’—এই প্রবাদটির মর্মার্থ যেখানে বিপদ আসার ভয় সেখানেই বিপদ এসে যায়।
এরকম আরেকটি প্রবাদ হল—’এগুলো সর্বনাশ পিছলে নির্বংশ।’
৬.৩ ‘চিরদিনই আমি আশাবাদী‘ এই আশাবাদের গুণে লেখক কীভাবে পুরস্কৃত হলেন?
উত্তরঃ- লেখক চিরকালই আশাবাদী , তিনি মনে করেন তার জীবনে বিপদ এলে তা থেকে মুক্ত হওয়ার একটি পথ তিনি অবশ্যই পেয়ে যাবেন।
রাঁচি যাওয়ার পথে লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেসে যায়। তিনি অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করেও কোনো যানবাহন পেলেন না এবং একটি লরি তাকে অবজ্ঞা করে ফেলে চলে গেল। কিন্তু তবু সেই জঙ্গলে ঘেরা ফাঁকা রাস্তায় তিনি আশায় বুক বেঁধে দাঁড়িয়ে থেকে অবশেষে আশার আলো দেখলেন। একটি বেবি অস্টিন গাড়ি ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছিল। সেই গাড়িতে চেপে তিনি রাঁচির কাছাকাছি পৌছালেন। এভাবেই তার আশাবাদের গুনে তিনি পুরস্কৃত হয়েছিলেন।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :
৭:১ অনর্থক কেবল টচটাকে আর নিজেকে টর্চার করা‘—কোন্ ঘটনা প্রসঙ্গে উদ্ধৃতিটির অবতারণা? আর টিচার’ শব্দের প্রয়োগে যে শব্দ নিয়ে খেলা তৈরি হয়েছে, গল্প থেকে খুঁজে এমন কয়েকটি উদাহরণ দাও। তুমি নিজে এ জাতীয় কয়েকটি বাক্য লেখো।
উত্তর। একবার রাঁচির রাস্তায় সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যাওয়ায় লেখক খুব বিপদে পড়েন। তখন তিনি ফেরার জন্য গাড়ির অপেক্ষায় রইলেন। কিন্তু কোনো গাড়ির দেখা পেলেন না। এমন সময় একটা লরি এলেও সে লেখকের টর্চের সংকেতবে উপেক্ষা করে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে লেখক উদ্ধৃতিটির অবতারণা করেছেন।
উদাহরণগুলি হল—(১) রাজপথ না হলেও সেটা বেশ দরাজ পথ। (২) অঘটনগুলো ঘটবে না। (৩) এসপার ওসপার যা হোক। (৪) কিন্তু পেরে লাভ। লাভ তো ডিমের। (৫) হুশ হুশ করে ট্রেনটা চলে যাবার পর আমার হুঁশ হল।
৭.২ গল্প অনুসরণে সেই নির্জন বনপথে লেখকের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় বর্ণনা
উত্তর। লেখক রাচী থেকে ফেরার পথে তার সাইকেলের টায়ার ফেসে যাওয়ায় তিনি জঙ্গলে ঘেরা নির্জন পথে আটকে পড়েন। অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পর একটা লরির দেখা মিললেও তা থামে না, কিন্তু কিছুক্ষন পর একটি বেবি অস্টিন গাড়ি খুব ধীর গতিতে আসতে দেখা যায়। লেখক গাড়িটিকে টর্চের ঈশারা করলেও তা না থামলে লেখক জোর করে গাড়িতে উঠে পড়েন। কিন্তু চরম আতঙ্কে তিনি দেখেন যে গাড়িতে কোনও চালক নেই। এভাবেই লেখক বনের মধ্যে এক ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন।
৭.৬ বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ওরকম উদার হতে পারে না।‘- কোন্ উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে? লেখকের কাছে সেই ‘দৃষ্টিভঙ্গি‘ কতটা উদারতা নিয়ে এসেছিল, তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর। এখানে বেবি অস্টিন গাড়িটির উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে। লেখক রাঁচির রাস্তায় সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যাওয়ার জন্য অন্য গাড়ির অপেক্ষায় অনেকক্ষণ ধরেছিলেন। সেই জঙ্গলে সম্প্রতী বাঘের উপদ্রব দেখা দিয়েছিল। তাই দূর থেকে আলো দেখা গেলে বাঘের চোখ বলে ভুল হলেও অবশেষে একটি বেবি অস্টিন গাড়ি ধীর গতিতে ওই রাস্তার ওপর দিয়ে এল। লেখক ওই গাড়িতে উঠে পাড়ে রাঁচির কাছে ফিরতে পারবেন এই ভেবেই ওই গাড়ীর আলো অর্থাৎ দৃস্টিকে তার উদার মনে হয়েছিল।
৭.৪ ‘এই হয়ত সশরীরে রাঁচি ফেরার শেষ সুযোগ’-কোন্ সুযোগের কথা বলা হয়েছে? লেখক কীভাবে সেই সুযোগকে কাজে লাগালেন।
উত্তর। লেখক রাঁচি ফেরার জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন কিন্তু কোনো যানবাহন পেলেন না। অবশেষে একটি বেবি অস্টিন গাড়ি ধীর গতিতে আসছিল। ওই ধীরগতিসম্পন্ন বেবি অস্টিন গাড়িতে চেপে রাঁচি পৌঁছানোর সুযোগের কথা বলা হয়েছে।
লেখক তার টর্চ ঘুরিয়ে ও হাঁক ডাক করেও গাড়িটি থামাতে পারলেন না। ধীর গতিতে চলা বেবি অস্টিনটি চলে গেলে লেখককে হেটে ফিরতে হবে। এই কথা ভেবে তিনি মরিয়া হয়ে কারো অনুমতির অপেক্ষা না করেই দরজার হাতল ঘুরিয়ে লাফিয়ে গাড়িটিতে উঠে পরেছিলেন।
৭.৫ ‘আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকলাম‘- লেখক কেন তাঁর কথা অসমাপ্ত রেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন।
উত্তর। জঙ্গলের রাস্তায় আটকে পড়া লেখক ধীর গতির বেবি অস্টিন গাড়ি পেয়ে জোর করে তাতে উঠে পড়লেন। গাড়িতে উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে বিস্ময়ে ভয়ে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তিনি দেখলেন ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই। ইঞ্জিন বিকল অথচ গাড়িটি ধীরে ধীরে ঠিকপথে চলছিল। এই অদ্ভুতুরে কান্ড দেখে লেখক তাঁর কথা অসমাপ্ত রেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন।
৭.৬ ‘বে–ড্রাইভার গাড়ি যেমন চলছিল তেমনি চলতে লাগল‘—’বে–ড্রাইভার গাড়ি‘ গাড়ি চলার প্রকৃত কারণটি কীভাবে গল্পে উন্মোচিত হল?
উত্তর। লেখক রাঁচির রাস্তায় বেবি অস্টিন গাড়িতে উঠে দেখলেন গাড়িতে কোনো ড্রাইভার নেই। কিন্তু হেঁটে ফেরার আলস্যে তিনি গাড়িতে চেপে বসে থাকলেন। ঘণ্টা দুয়েক গাড়িটা চলার পর লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে যখন প্রায় রেল লাইনের সামনে এসে পড়েছে তখনও যখন গাড়ি থামল না, দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় লেখক গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন। এমন সময় চশমা পরা একজন লোক মোটরের পেছন থেকে এসে লেখককে বললেন ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় তিনি আটমাইল দূর থেকে গাড়িটা ঠেলতে ঠেলতে আসছেন। লেখককে তিনি গাড়ি ঠেলার জন্য অনুরোধ করলেন। এইভাবেই ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি চলার প্রকৃত কারণ উন্মোচিত হল।
৭.৭ “এবারও আমার আলস্য জয়ী হলো শেষটায়।‘—গল্প অনুসরণে লেখকের উৎকণ্ঠা, আলস্য ও কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তর। জঙ্গলের রাস্তায় আটকে পড়া লেখক ধীর গতির বেবি অস্টিন গাড়ি পেয়ে জোর করে তাতে উঠে পড়লেন। গাড়িতে উঠে নিজের গন্তব্যস্থলের কথা বলতে গিয়ে বিস্ময়ে ভয়ে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তিনি দেখলেন ড্রাইভারের সিটে কেউ নেই। ইঞ্জিন বিকল অথচ গাড়িটি ধীরে ধীরে ঠিকপথে চলছিল। কিন্তু এই ভুতুড়ে গাড়ি থেকে নেমে যাবার পরিবর্তে তিনি দু ঘণ্টা যাবত সেই গাড়িতেই বসে রইলেন কারন বাকি পথ হেটে যেতে তার আলস্য বোধ হচ্ছিল। কিন্তু রেল ক্রসিঙ্গের কাছে এসেও যখন গাড়ি থামার কোনো লক্ষণ দেখা গেলো না তখন তিনি উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠল। তবে তার কর্মতৎপরতার জন্য তিনি তৎক্ষণাৎ সেই গাড়ি থেকে নেমে পড়েছিলেন।
৭.৮ শেষ পর্যন্ত লেখক সেই ‘বেবি অস্টিন‘ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কেন? এরপর তিনি কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন?
উত্তর। ভূতুড়ে গাড়ি করে লেখক যখন শেষ পর্যন্ত স্টেশনের কাছে লেভেল ক্রসিং পেরুলেন কিন্তু তখন গাড়ি থামার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। তখন রেললাইনের কাছে গাড়ির ইন্জিনের শব্দ শুনে নিজের প্রাণ বাঁচাতে তিনি বেবি অস্টিন গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। এরপর গাড়ির পিছন থেকে চশমা পরা এক ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন। যিনি গাড়িটাকে আটমাইল দুর থেকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে আসছিলেন। তিনি লেখককে অনুরোধ করলেন হাত লাগিয়ে গাড়িটাকে ঠেলার জন্য যাতে তিনি গাড়িটাকে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেন। এরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন লেখক।
Click Here To Download The PDF
Nice